ভাটির দেশ
জল-জঙ্গলের দেশ সুন্দরবন। সে দেশে জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। আর আছে বাঘ-কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা সবহারানো কিছু মানুষ। গত শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকে এই কাদামাটি আর বাদাবনের দেশেই এক সাহেব আদর্শ সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। ড্যানিয়েল হ্যামিলটনের সেই স্বপ্নের সূত্র ধরেই লেখা শুরু হল ভাটির দেশের নতুন ইতিহাস। অলিখিত বিধি-বাঁধনের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে বাদাবনের সমাজ-সংস্কৃতি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক পিয়ালি রয় আর দিল্লির কেতাদুরস্ত ব্যবসায়ী কানাই দত্তের সেখানে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে টলমল করে ওঠে সে পটভূমির সূক্ষ্ম ভারসাম্য। কানাইয়ের মাসি নীলিমা স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার। নীলিমার স্বামী, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্মল ছিল প্রগতিশীল রাজনৈতিক মতবাদে বিশ্বাসী। ১৯৭৯ সালে মরিচঝাঁপির উদ্বাস্তু বিতাড়নের ঘটনার ঠিক পর পরই রহস্যময় পরিস্থিতে মৃত্যু হয় তার।
পিয়া সুন্দরবনে এসেছে সেখানকার বিরল প্রজাতির ডলফিনের বিষয়ে গবেষণার জন্য। তার পথপ্রদর্শক স্থানীয় জেলে ফকির। নদীখাঁড়িতে ঘোরাঘুরির সময় পিয়ার দোভাষীর কাজ করে দেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গ ধরল কানাই। আর তার পরেই ঘুরতে শুরু করল কাহিনির স্রোত।
মহাকাব্যপ্রতিম এই উপন্যাসে আঠারো ভাটির দেশের জীবন আর প্রকৃতি, ইতিহাস আর লোকপুরাণকে জীবন্ত চেহারায় উপস্থিত করেছেন অমিতাভ ঘোষ।
অমিতাভ ঘোষের ‘The Hungry Tide’ উপন্যাসের অনুবাদ করেছেন অচিন্ত্যরূপ রায়, বাংলায় নাম রেখেছেন ‘ভাটির দেশ’। প্রথম প্রকাশ ২০০৪ সালে।
এই উপন্যাসে ব্যবহৃত সমস্ত নাম, চরিত্র, স্থান এবং ঘটনা কাল্পনিক। কোথাও কোনওভাবে যদি কোনও বাস্তবের সঙ্গে মিল ঘটে থাকে তা নিতান্তই কাকতালীয়।
প্রথম আনন্দ সংস্করণ নভেম্বর ২০০৯; পঞ্চম মুদ্রণ এপ্রিল ২০১৯। উৎসর্গ : লীলাকে।