গর্জনতলা

শেষবার নদী পেরোনোর পর ফকিরের নৌকো এসে থামল অগভীর জলে, পাড় থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে। পিয়ার আন্দাজ একেবারে ঠিক প্রমাণিত হয়েছে, সন্দেহের কোনও অবকাশই নেই আর–সাউন্ডিং-এর ফলাফল অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে বাঁকের মুখে, নদীর কনুইয়ের ঠিক ভেতরের দিকটায় কিলোমিটার খানেক জায়গা জুড়ে বেশ খানিকটা গম্ভীর হয়ে গেছে খাতটা। চারপাশ থেকে আস্তে আস্তে ঢালু হয়ে এসে কিডনি আকৃতির একটা বেসিন সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। কোথাও কোথাও সেটা নদীর খাতের থেকে আট মিটারের মতো বেশি গম্ভীর হলেও, গড়ে সে গভীরতা মিটার পাঁচেকের বেশি নয়। সংক্ষেপে, শুখা মরশুমে জল কমে এলে মেকং নদীর নীচের যে ‘পুকুর’গুলিতে ওর্কায়েলারা এসে জমা হয়, প্রায় সবদিক থেকেই সুন্দরবনের এই নদীখাতের দহের সঙ্গে তার ভীষণ মিল।

জল এখন অনেকটাই ওপর দিয়ে বইছে। হাত কয়েকের বেশি আর দেখা যাচ্ছে না। পাড়ের কাদা। বনের গাছগুলোও ঠিক চোখের সমান উচ্চতায়–নৌকোর থেকে উঁচুতেও নয়, নিচুতেও নয়। পাড়ের কাছে এ জায়গাটা এতই অগভীর যে এখানে আর সাউন্ডিং-এর কোনও মানেই হয় না। বেশ কয়েকঘণ্টা পর এতক্ষণে একটু গা ঢিলে দিল পিয়া। দূরবিনটা নামিয়ে চোখ রাখল পাড়ের সবুজের দিকে। তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ কাদার মধ্যে ইটের টুকরোর মতো কী যেন একটা নজরে এল। দূরবিন দিয়ে ভাল করে একবার দেখল পিয়া। হ্যাঁ, ঠিকই মনে হয়েছিল, ইটের টুকরোই বটে। একটা টুকরো শুধু নয়, পাড় জুড়ে রাশি রাশি পড়ে রয়েছে ওরকম ভাঙা ইট। ওপরের ঘন জঙ্গলের দিকে নজর করে দেখা গেল গায়ে গায়ে লেগে থাকা গাছগুলোর মধ্যে কয়েকটা গজিয়ে উঠেছে পুরনো মাটির দেওয়ালের ওপর, আর কয়েকটার শেকড়-বাকড়ের মধ্যে জড়িয়ে রয়েছে থাক থাক ইট।

ফকিরকে ডাকল পিয়া, “লুক–দেয়ার।” পাড়ের দিকে একবার ফিরে দেখে মাথা নাড়ল ফকির। হাত দিয়ে সেদিকে দেখিয়ে বলল, “গর্জনতলা”। পিয়া আন্দাজ করল হয়তো কোনও একদিন এই নামে কোনও বসতি ছিল এখানে। “গর্জনতলা?” মাথা নেড়ে সায় দিল ফকির। নামটা জেনে খুশি হল পিয়া, চটপট টুকে নিল নোটবইয়ে। ঠিক করল এই পরিত্যক্ত গ্রামের নামেই ভাটার সময় ডলফিনদের জড়ো হওয়ার জায়গাটার নামকরণ করা হবে–‘গর্জনতলা, দহ’।

হঠাৎ লাফিয়ে উঠল টুটুল। অল্প দুলে উঠল নৌকোটা। নোটবই থেকে চোখ তুলে পিয়া দেখল খানিক দূরে পাড়ের একটা গাছের দিকে আঙুল তুলে দেখাচ্ছে ও। আশপাশের অন্য গাছের তুলনায় সেটা বেশি লম্বা, এই বাদাবনের গাছের মতো নয় ঠিক, খানিকটা যেন বার্চের মতো দেখতে–পাতলা ডালপালা, হালকা রঙের বাকল, বনের অন্যসব গাছের ঘন সবুজের সামনে এর পাতাগুলোকে মনে হচ্ছিল প্রায় রুপোলি।

পিয়ার নদী পারাপারের কাজ হয়ে যাওয়ার পর হঠাই নৌকোর মুখ এদিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল ফকির। একটু আশ্চর্য হয়েছিল পিয়া। এর আগে জঙ্গলের এতটা কাছে ও কখনও আসেনি, মনে হচ্ছিল যেন এই প্রথম এল বনের মুখোমুখি। আগে জঙ্গল যেটুকু দেখেছে সে হয় অর্ধেক জলে ডোবা, নয়তো দূরের উঁচু পাড় থেকে জলের ওপর ঝুঁকে থাকা কালো ছায়ার মতো। সামনাসামনি দেখে অবাক হয়ে গেল ও। চোখে যেন ধাঁধা লাগিয়ে দেয় এই গাছগাছালির সারি। পর্দা বা দেওয়ালের মতো যে জঙ্গলটা চোখের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তা শুধু নয়, যেন ধন্দে ফেলে দিচ্ছে মানুষের দৃষ্টিকে, যেন খুব ভেবেচিন্তে বানানো প্রহেলিকা। আকার, ঢং, বর্ণ আর বিন্যাসের এত বৈচিত্র্য এখানে যে চোখের সামনে থাকা জিনিসও হঠাৎ করে নজরে আসে না, লুকিয়ে থাকে অসংখ্য রেখার জটের মধ্যে–বাচ্চাদের হেঁয়ালি ছবির মতো।

শেষ একবার জোরালো বৈঠা মেরে ফকির দাঁড় তুলে নিল। পাড়ের কাদায় আস্তে একবার ধাক্কা খেয়ে থেমে গেল ডিঙিটা। ফকির উঠে দাঁড়িয়ে ম্যাজিকের মতো কবজির ছোট্ট একটা মোচড়ে পরনের লুঙ্গিটাকে ল্যাঙ্গোটের মতো বানিয়ে ফেলল। তারপর নৌকোর পাশের দিকে পা ঝুলিয়ে বসে ঝুপ করে নেমে পড়ল জলে, আর নৌকোটাকে আরও একটু ঠেলে দিল পাড়ের দিকে। ডিঙির একেবারে সামনে বসে পিয়া দেখল পাড়ের অনেকটা ওপরের দিকে বসে আছে ও, সামনের ঢাল জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে জটপাকানো ম্যানগ্রোভের দেওয়াল।

টুটুলকে কোলে তুলে নিয়ে হাত দিয়ে পিয়াকে ইশারায় ডাকল ফকির। পিয়া বুঝতে পারল নৌকো থেকে নেমে ওর পেছন পেছন যেতে বলছে। কিন্তু কোথায় যাচ্ছে ও? পিয়ার ইশারায় প্রশ্নের জবাবে শুধু হাত তুলে সামনের জঙ্গলের পেছনে দ্বীপের ভেতরের দিকটা দেখাল ফকির।

“ইন দেয়ার?”

আবার হাত নেড়ে ডাকল ওকে ফকির। ইশারা করল তাড়াতাড়ি যেতে। এক মুহূর্ত দ্বিধা করল পিয়া; কাদা, পোকামাকড়, ঘন বন–এসব ওর একটুও পছন্দ নয়। কিন্তু এ সবগুলিই প্রচুর পরিমাণে রয়েছে পাড়ের ওপর। অন্য যে-কোনও অবস্থাতেই কিছুতেই এরকম জঙ্গলের মধ্যে গিয়ে ঢুকত না পিয়া, কিন্তু ফকিরের সঙ্গে ও যেতে পারে। কেন যেন মনে হয় ওর সঙ্গে থাকলে বিপদের কোনও ভয় নেই।

“ওকে। আই অ্যাম কামিং,” হাঁটু অব্দি প্যান্টটা গুটিয়ে নিয়ে নৌকোর পাশের দিক দিয়ে পা বাড়িয়ে দিল পিয়া। পায়ের তলা থেকে কাদা সরে গেল ওর ভারে। একটা ভেজা ভেজা খপাৎ শব্দ করে মাটির ভেতরে যেন টেনে নিল পা-টা। পিয়া একটুও প্রস্তুত ছিল না এর জন্যে, কারণ ফকির যখন নেমে দৌড়ে পাড়ে উঠে গেল তখন একবারও মনে হয়নি কাদা এত গভীর এখানে। সামান্য যেটুকু সামনে ঝোঁক দিয়ে নামতে হল নৌকো থেকে, এ কাদায় ব্যালান্স হারানোর জন্য সেটুকুই যথেষ্ট। কাদা যেন গোড়ালিটা কামড়ে ধরে টানছে পেছনের দিকে, শরীরটাকে সরিয়ে দিচ্ছে ভরকেন্দ্র থেকে। হঠাৎ পিয়া দেখল মুখ থুবড়ে উলটে পড়ে যাচ্ছে ও, হাতদুটো সামনে বাড়ানো–কাদা থেকে বাঁচার জন্য। কিন্তু ঠিক সময়ে ওর একেবারে সামনে এসে গেল ফকির। নিজের শরীর দিয়ে পিয়াকে ঠেকানোর জন্য দাঁড়িয়ে পড়ল ওর মুখোমুখি। ধপাস করে ফকিরের কাঁধের ওপর এসে পড়ল পিয়া, ওর গায়ের সেই নোনা গন্ধ আবার এসে লাগল নাকে। হাতের সামনে কোনও থাম কি গাছ পেলে পড়ন্ত মানুষ যেমন তাকে জড়িয়ে ধরে নিজেকে সামলায়, ফকিরকে সেরকম দু হাতে জড়িয়ে ধরল পিয়া। একটা হাতে আঁকড়ে ধরল ফকিরের স্কন্ধার হাড়। অন্য হাতটা পিছলে গেল ওর খালি গায়ের চামড়ার ওপর দিয়ে, একেবারে পিঠের শেষটায় এসে থামল। মুহূর্তের জন্য সংকোচে অবশ হয়ে গেল পিয়া। ঠিক সেইসময়ে টুটুলের গলা শুনতে পেল ও। পিয়ার দুরবস্থা দেখে মজা পেয়ে হাসছে–শিশুসুলভ আনন্দে। আস্তে আস্তে আঙুল সরিয়ে নিয়ে ফকিরের গা ছেড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল পিয়া। ওকে সোজা করে দাঁড় করাতে ফকির যখন কনুইয়ের তলা দিয়ে এক হাত গলিয়ে দিল, পিয়া দেখল ও-ও হাসছে। সে হাসিতে নিষ্ঠুরতা নেই। পিয়ার পড়ে যাওয়ার চেয়ে আচমকা গভীর কাদায় নামার পর ওর ভ্যাবাচ্যাকা ভাবটাতেই যেন বেশি মজা পেয়েছে ফকির।

পিয়া নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পর ছোট্ট একটু মূকাভিনয় করে দেখিয়ে দিল ফকির, কেমন করে হাঁটতে হবে এই কাদার মধ্যে। প্রথমে একটা পা তুলে বুড়ো আঙুলটা কঁকড়ার পঁাড়ার মতো কুঁকড়ে ধরল, তারপর কাদার মধ্যে যেন পুঁতে দিল পা-টাকে। পিয়া নিজে চেষ্টা করল এবার, কয়েক পা এগোল ঠিক মতো, তারপর পিছলে গেল আবার। সৌভাগ্যবশত ফকির পাশেই ছিল। ওর হাতটা ধরে কোনওরকমে টাল সামলে নিল। কাদা পার হয়ে পাড় বরাবর টানা দুর্ভেদ্য জঙ্গলে ঢুকে পড়া পর্যন্ত হাতটা ধরে রইল পিয়া।

ফকিরের সঙ্গে দেখা গেল একটা ধারালো দা আছে। পিয়াকে ছেড়ে এগিয়ে গেল ও, ডাইনে বাঁয়ে দা চালিয়ে ডালপাতা কেটে কেটে ঢুকতে লাগল ঘন বনের ভেতরে। সামান্য পরেই জঙ্গলের দেওয়াল ভেদ করে একটা খোলা জায়গায় এসে পড়ল ওরা। বনের মধ্যে একচিলতে ফাঁকা ঘাসজমি, কয়েকটা বেঁটে খেজুরগাছ ছাড়া আর কোনও গাছ নেই সেখানে।

ফাঁকা জায়গাটার শেষে ছোট একটা গুমটি মতো ঘর–কয়েকটা খুঁটির ওপর দাঁড় করানো। একদৌড়ে টুটুল সেটার সামনে চলে গেল। কাছে গিয়ে পিয়া দেখল গুমটি নয়, পাতা দিয়ে তৈরি একটা ছোট মন্দিরের মতো–ওটা দেখে ওর মায়ের পুজোর টেবিলের একটা সুদূর স্মৃতি ভেসে এল পিয়ার মনে। তফাত শুধু এ মন্দিরের মূর্তিগুলির সাথে পিয়ার চেনা হিন্দু ঠাকুর দেবতাদের কোনও মিল নেই। সবচেয়ে বড়টি স্ত্রী মূর্তি টানা টানা চোখ, শাড়ি পরা; তার পাশে আকারে একটু ছোট একটি পুরুষের মূর্তি। দু’জনের মাঝখানে নিচু হয়ে বসে আছে একটা বাঘ–গায়ের ডোরাকাটা দাগ দেখে বাঘ বলে আন্দাজ করা গেল সেটাকে।

পিয়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল ফকির আর টুটুল মিলে একটু পুজো মতো করল সেখানে। প্রথমে কিছু ফুল পাতা নিয়ে এসে মূর্তিগুলির সামনে রাখল। তারপর মন্দিরের সামনে মাথা হেঁট করে জোড়হাতে দাঁড়িয়ে ফকির মন্ত্রের মতো কিছু একটা আওড়াতে লাগল। কয়েক মিনিট শোনার পর পিয়া ধরতে পারল মন্ত্রটার মধ্যে একটা লাইন ধুয়ার মতো ঘুরে ঘুরে আসছে। তার মধ্যে একটা শব্দ মনে হল ‘আল্লা’। এতক্ষণফকিরের ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামায়নি পিয়া, কিন্তু এখন মনে হল ও হয়তো মুসলমান। কিন্তু সেটা ভাবার পরেই খেয়াল হল মুসলমান হলে তো এরকম মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করবে না। ফকির যেটা করছে তার সাথে ওর মা যেরকম পুজো করত তার বেশ মিল রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রের শব্দগুলো শুনে আবার অন্যরকম মনে হচ্ছে।

তবে যাই হোক না কেন তাতে কীই বা আসে যায়? এখানে দাঁড়িয়ে এরকম একটা অদ্ভুত পুজো দেখার সুযোগ পেয়েই ও খুশি।

মিনিট কয় পরে আবার ফিরতি পথ ধরল ওরা। জঙ্গল ভেদ করে নদীর কাছে পৌঁছে পিয়া দেখল সূর্য হেলে পড়েছে পশ্চিমে, এদিকে নদীর জলও নামতে শুরু করেছে। এবার খুব সাবধানে পা টিপে টিপে কাদার মধ্যে দিয়ে হেঁটে ডিঙিটার কাছে গিয়ে পৌঁছল পিয়া। নৌকোয় উঠতে যাবে, এমন সময় হাত নাড়ল ফকির। কিছু একটা দেখাতে চাইছে কাদার মধ্যে। মিটার বিশেক দূরে হাঁটু গেড়ে বসে আছে ও মাটির দিকে ইশারা করছে হাত দিয়ে। পিয়া একটু এগিয়ে গেল। দেখল কাদার মধ্যে একটা গর্তের মতো কিছু দেখাচ্ছে ফকির। কাঁকড়া বিজবিজ করছে সেটার মধ্যে। ভুরুদুটো একটু তুলে সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকাল পিয়া। ফকির একটা হাত তুলে দেখাল, যেন ওকে বলতে চাইছে গর্তটা কীসের একটা হাতের ছাপ। ব্যাপারটা ঠিক মাথায় ঢুকল না পিয়ার। ভুরু কুঁচকে ভাবতে লাগল ফকির ছাড়া আর কে হাত দিতে যাবে ওই কাদার মধ্যে? হঠাৎ খেয়াল হল হাত’ নয়, ও বোধহয় ‘পা’ বোঝাতে চাইছে–মানে ‘থাবা”। “টাইগার?” শব্দটা উচ্চারণ করতে যেতেই আঙুল তুলে বারণ করল ফকির। পিয়া আন্দাজ করল নিশ্চয়ই কোনও কুসংস্কার আছে–নাম উচ্চারণ করা বা ইঙ্গিতেও প্রসঙ্গটার উল্লেখ করা চলবে না।

ছাপটার দিকে আবার তাকাল পিয়া। দেখে কিন্তু ফকির যা বলছে সেরকম কিছু বুঝল না ও। দাগটা যেখানে আছে তাতেই ওর বেশি সন্দেহ হচ্ছিল–ওই জায়গায় আসতে গেলে তো জঙ্গল থেকে পুরো বেরিয়ে আসতে হবে জন্তুটাকে। তা হলে তো জল থেকে ওর চোখে পড়ত। আর একটা বাঘ যদি কাছাকাছি থাকে তা হলে ফকিরই বা এরকম নিশ্চিন্তে থাকে কী করে? কিছুই ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।

ঠিক তখনই একটা শ্বাস ফেলার মতো শব্দ শুনতে পেল পিয়া। সঙ্গে সঙ্গে বাঘ-টাঘের সমস্ত চিন্তা উবে গেল ওর মাথা থেকে। দূরবিন তুলে দেখল কুঁজের মতো দুটো জিনিস জল কেটে ভেসে যাচ্ছে। সেই মা ডলফিন, ছানাটার সঙ্গে সাঁতরাচ্ছে। জল নামার সাথে সাথে আবার ফিরে এসেছে ডলফিনগুলো। যেরকম আন্দাজ করেছিল পিয়া, তার সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে ওদের গতিবিধির ধরন।