সাম্প্রতিক সংযোজন
পল্লী-সমাজ » উনিশ : সেইদিন অপরাহ্নে
সেইদিন অপরাহ্নে একটা অচিন্তনীয় ঘটনা ঘটিল। আদালতের বিচার উপেক্ষা করিয়া কৈলাস নাপিত এবং সেখ মতিলাল সাক্ষীসাবুদ সঙ্গে লইয়া রমেশের শরণাপন্ন হইল। রমেশ অকৃত্রিম বিস্ময়ের সহিত প্রশ্ন করিল, আমার বিচার তোমরা মানবে কেন বাপু? বাদী-প্রতিবাদী উভয়েইContinue Reading
পল্লী-সমাজ » আঠার : কারা-প্রাচীরের বাহিরে
কারা-প্রাচীরের বাহিরে যে তাহার সমস্ত দুঃখ ভগবান এমন করিয়া সার্থক করিয়া দিবার আয়োজন করিয়া রাখিয়াছিলেন, বোধ করি উন্মত্ত বিকারেও ইহা রমেশের আশা করা সম্ভবপর ছিল না। ছয় মাস সশ্রম কারাবাসের পর মুক্তিলাভ করিয়া সে জেলেরContinue Reading
পল্লী-সমাজ » সতর : বিশ্বেশ্বরী ঘরে ঢুকিয়া
বিশ্বেশ্বরী ঘরে ঢুকিয়া অশ্রুভরা রোদনের কণ্ঠে প্রশ্ন করিলেন, আজ কেমন আছিস মা রমা? রমা তাঁহার মুখের পানে চাহিয়া একটুখানি হাসিয়া বলিল, আজ ভাল আছি জ্যাঠাইমা। বিশ্বেশ্বরী তার শিয়রে আসিয়া বসিলেন এবং মাথায় মুখে হাত বুলাইতেContinue Reading
পল্লী-সমাজ » ষোল : প্রতি বৎসর রমা
প্রতি বৎসর রমা ঘটা করিয়া দুর্গোৎসব করিত। এবং প্রথম পূজার দিনেই গ্রামের সমস্ত চাষাভুষা প্রভৃতিকে পরিতোষপূর্বক ভোজন করাইত। ব্রাহ্মণ-বাটীতে মায়ের প্রসাদ পাইবার জন্য এমন হুড়াহুড়ি পড়িয়া যাইত যে, রাত্রি একপ্রহর পর্যন্ত ভাঁড়ে-পাতায় এঁটোতে-কাঁটাতে বাড়িতে পাContinue Reading
পল্লী-সমাজ » পনর : এমনি একটা আশঙ্কা
এমনি একটা আশঙ্কা যে রমেশের মাথায় একেবারেই আসে নাই তাহা নহে। তথাপি পরদিন সন্ধ্যার সময়ে গোপাল সরকার সদর হইতে ফিরিয়া আসিয়া যখন সত্য সত্যই জানাইল যে, ভৈরব আচার্য তাহাদের মাথার উপরেই কাঁঠাল ভাঙ্গিয়া ভক্ষণ করিয়াছেContinue Reading
পল্লী-সমাজ » চৌদ্দ : বর্ষা শেষ হইয়া
বর্ষা শেষ হইয়া আগামী পূজার আনন্দ এবং ম্যালেরিয়াভীতি বাঙ্গলার পল্লীজননীর আকাশে, বাতাসে এবং আলোকে উঁকিঝুঁকি মারিতে লাগিল, রমেশও জ্বরে পড়িল। গত বৎসর এই রাক্ষসীর আক্রমণকে সে উপেক্ষা করিয়াছিল; কিন্তু এ বৎসর আর পারিল না। তিনContinue Reading
পল্লী-সমাজ » তের : আজ দুই মাস
আজ দুই মাস হইতে চলিল, কয়েকজন ডাকাতির আসামীর সঙ্গে ভজুয়া হাজতে। সেদিন খানাতল্লাশিতে রমেশের বাড়িতে সন্দেহজনক কিছুই পাওয়া যায় নাই এবং ভৈরব আচার্য সাক্ষ্য দিয়াছিল, সে রাত্রে ভজুয়া তাঁহার সঙ্গে তাঁহার মেয়ের পাত্র দেখিতে গিয়াছিল,Continue Reading
পল্লী-সমাজ » বার : ছেলেবেলায় একদিন
ছেলেবেলায় একদিন রমেশ রমাকে ভালবাসিয়াছিল। নিতান্ত ছেলেমানুষী ভালবাসা তাহাতে সন্দেহ নাই; কিন্তু সে যে কত গভীর সেদিন তারকেশ্বরে ইহা সে প্রথম অনুভব করিয়াছিল এবং সর্বাপেক্ষা বেশি করিয়াছিল যেদিন সন্ধ্যার অন্ধকারে রমার সমস্ত সম্বন্ধ সে একেবারেContinue Reading
পল্লী-সমাজ » এগার : দুইদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টিপাত
দুইদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টিপাত হইয়া অপরাহ্নবেলায় একটু ধরন করিয়াছে। চণ্ডীমণ্ডপে গোপাল সরকারের কাছে বসিয়া রমেশ জমিদারির হিসাবপত্র দেখিতেছিল; অকস্মাৎ প্রায় কুড়িজন কৃষক আসিয়া কাঁদিয়া পড়িল—ছোটবাবু, এ যাত্রা রক্ষে করুন, আপনি না বাঁচালে ছেলেপুলের হাত ধরে আমাদেরContinue Reading
পল্লী-সমাজ » দশ : মাস-তিনেক পরে
মাস-তিনেক পরে একদিন সকালবেলা তারকেশ্বরের যে পুষ্করিণীটিকে দুধ-পুকুর বলে, তাহারই সিঁড়ির উপর একটি রমণীর সহিত রমেশের একেবারে মুখোমুখি দেখা হইয়া গেল। ক্ষণকালের জন্য সে এমনি অভিভূত হইয়া অভদ্রভাবে তাহার অনাবৃত মুখের পানে চাহিয়া দাঁড়াইয়া রহিলContinue Reading
পল্লী-সমাজ » নয় : যত রাগ করিয়াই
যত রাগ করিয়াই রমেশ চলিয়া আসুক, বাড়ি পৌঁছিতে না পৌঁছিতে তাহার সমস্ত উত্তাপ যেন জল হইয়া গেল। সে বার বার করিয়া বলিতে লাগিল—এই সোজা কথাটা না বুঝিয়া কি কষ্টই না পাইতেছিলাম। বাস্তবিক, রাগ করি কাহারContinue Reading
পল্লী-সমাজ » আট : আয় বাবা, ঘরে আয়
জ্যাঠাইমা! কে, রমেশ? আয় বাবা, ঘরে আয়। বলিয়া আহ্বান করিয়া বিশ্বেশ্বরী তাড়াতাড়ি একখানি মাদুর পাতিয়া দিলেন। ঘরে পা দিয়াই রমেশ চমকিত হইয়া উঠিল। কারণ, জ্যাঠাইমার কাছে যে স্ত্রীলোকটি বসিয়াছিল তাহার মুখ দেখিতে না পাইলেও বুঝিল—এContinue Reading
পল্লী-সমাজ » সাত : হাঁ রে যতীন
হাঁ রে যতীন, খেলা করছিস, ইস্কুলে যাবিনে? আমাদের যে আজ কাল দু’দিন ছুটি দিদি! মাসি শুনিতে পাইয়া কুৎসিত মুখ আরও বিশ্রী করিয়া বলিলেন, মুখপোড়া ইস্কুলের মাসের মধ্যে পনর দিন ছুটি! তুই তাই ওর পিছনে টাকাContinue Reading
পল্লী-সমাজ » ছয় : বিশ্বেশ্বরীর সেদিনের কথাটা
বিশ্বেশ্বরীর সেদিনের কথাটা সেইদিনই দশখানা গ্রামে পরিব্যাপ্ত হইয়া গিয়াছিল। বেণী লোকটা নিজে কাহারও মুখের উপর রূঢ় কথা বলিতে পারিত না; তাই সে গিয়া রমার মাসিকে ডাকিয়া আনিয়াছিল। সেকালে নাকি তক্ষক দাঁত ফুটাইয়া এক বিরাট অশ্বত্থContinue Reading
পল্লী-সমাজ » পাঁচ : মধু পালের মুদীর দোকান
এ পাড়ার একমাত্র মধু পালের মুদীর দোকান নদীর পথে হাটের একধারে। দশ-বারদিন হইয়া গেল, অথচ সে বাকি দশ টাকা লইয়া যায় নাই বলিয়া রমেশ কি মনে করিয়া নিজেই একদিন সকালবেলা দোকানের উদ্দেশে বাহির হইয়া পড়িল।Continue Reading
পল্লী-সমাজ » চার : এইমাত্র শ্রাদ্ধ শেষ
বাহিরে এইমাত্র শ্রাদ্ধ শেষ হইয়া গিয়াছে। আসন হইতে উঠিয়া রমেশ অভ্যাগতদিগের সহিত পরিচিত হইবার চেষ্টা করিতেছে–বাড়ির ভিতরে আহারের জন্য পাতা পাতিবার আয়োজন হইতেছে, এমন সময় একটা গোলমাল হাঁকাহাঁকি শুনিয়া রমেশ ব্যস্ত হইয়া ভিতরে আসিয়া উপস্থিতContinue Reading
পল্লী-সমাজ » তিন : জ্যাঠাইমা!
জ্যাঠাইমা! ডাক শুনিয়া বিশ্বেশ্বরী ভাঁড়ার ঘর হইতে বাহিরে আসিলেন। বেণীর বয়সের সঙ্গে তুলনা করিলে তাহার জননীর বয়স পঞ্চাশের কম হওয়া উচিত নয়, কিন্তু দেখিলে কিছুতেই চল্লিশের বেশি বলিয়া মনে হয় না। রমেশ নির্নিমেষ-চক্ষে চাহিয়া রহিল।Continue Reading
পল্লী-সমাজ » দুই : কুঁয়াপুরের বিষয়টা
এই কুঁয়াপুরের বিষয়টা অর্জিত হইবার একটু ইতিহাস আছে, তাহা এইখানে বলা আবশ্যক। প্রায় শতবর্ষ পূর্বে মহাকুলীন বলরাম মুখুয্যে তাঁহার মিতা বলরাম ঘোষালকে সঙ্গে করিয়া বিক্রমপুর হইতে এদেশে আসেন। মুখুয্যে শুধু কুলীন ছিলেন না, বুদ্ধিমানও ছিলেন।Continue Reading
পল্লী-সমাজ » এক : বেণী ঘোষাল
বেণী ঘোষাল মুখুয্যেদের অন্দরের প্রাঙ্গণে পা দিয়াই সম্মুখে এক প্রৌঢ়া রমণীকে পাইয়া প্রশ্ন করিল, এই যে মাসি, রমা কই গা? মাসি আহ্ণিক করিতেছিলেন, ইঙ্গিতে রান্নাঘর দেখাইয়া দিলেন। বেণী উঠিয়া আসিয়া রন্ধনশালার চৌকাঠের বাহিরে দাঁড়াইয়া বলিলেন,Continue Reading
পল্লী-সমাজ » পল্লী-সমাজ
পল্লী-সমাজ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত উপন্যাস। এই উপন্যাসে মোট উনিশটি পরিচ্ছেদ রয়েছে। এর প্রথম নয়টি পরিচ্ছেদ ১৩২২ বঙ্গাব্দের আশ্বিন, অগ্রহায়ণ ও পৌষ সংখ্যা ‘ভারতবর্ষ’ মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এই নয়টি পরিচ্ছেদে উপন্যাসটি শেষ করার কথা ভাবলেওContinue Reading