ভোরের ট্রেনে গাঁয়ে ফিরে এলেন শনু পণ্ডিত।

ন্যুব্জ দেহ, রুক্ষ চুল, মুখময় বার্ধক্যের জ্যামিতিক রেখা।

অনেক আশা ভরসা নিয়েই গিয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, কিছু টাকা পয়সা সাহায্য পেলে আবার নতুন করে দাঁড় করাবেন স্কুলটাকে। আবার শুরু করবেন গাঁয়ের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর কাজ। কত আশা। আশার মুখে ছাই।

কেউ সাহায্য দিলো না স্কুলটার জন্য। না চৌধুরীরা। না সরকার। সরকারের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তো রীতিমত ধমকই খেলেন শনু পণ্ডিত। শিক্ষা বিভাগের বড় সাহেব শমসের খান বললেন, রাজধানীতে দুটো নতুন হোটেল তুলে, আর সাহেবদের ছেলেমেয়েদের জন্য একটা ইংলিশ স্কুল দিতে গিয়ে প্রায় কুড়ি লাখ টাকার মতো খরচ। ফান্ডে এখন আধলা পয়সা নেই সাহেব। অযথা বার বার এসে জ্বালাতন করবেন না আমাদের। পকেটে যদি টাকা না থাকে, স্কুল বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকুন। এমনভাবে ধমকে উঠেছিলেন তিনি যেন স্কুলের জন্য সাহায্য চাইতে এসে ভারী অন্যায় করে ফেলেছেন শনু পণ্ডিত।

হেঁট মাথায় সেখান থেকে বেরিয়ে চলে এলেও; একেবারে আশা হারাননি তিনি। ভেবেছিলেন সরকার সাহায্য দিলে না, চৌধুরী সাহেব নিশ্চয়ই দেবেন। এককালে তো চৌধুরী সাহেবের সহযোগিতা পেয়েই না স্কুলটা দিয়েছিলেন শনু পণ্ডিত।

সে আজ বছর পঁচিশেক আগের কথা—

আশেপাশে দু’চার গাঁয়ে স্কুল বলতে তখন কিছুই ছিলো না।

লেখাপড়া কাকে বলে তা জানতোই না গাঁয়ের লোক।

তখন সবেমাত্র এন্ট্রান্স পাশ করে বেরিয়েছেন শনু পণ্ডিত। বাইশ বছরের জোয়ান ছেলে।

চৌধুরীরও তখন যৌবনকাল। নতুন বিয়ে করা বৌ নিয়ে গাঁয়েই থাকতেন তিনি। গাঁয়ে থেকে জমিদারীর তদারক করতেন। বর্ষার মওসুমে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে দক্ষিণের ঝিলে যেতেন বুনো হাঁস আর কালো বক মারতে। অবসর সময় তাস, পাশা আর দাবা খেলতেন বসে বসে। কথায় কথায় গায়ে একটা স্কুল প্রতিষ্ঠার ইচ্ছেটা তাঁর কাছে ব্যক্ত করেছিলেন শনু পণ্ডিত। জুলু চৌধুরীও বেশ আগ্রহ দেখালেন। বললেন, সেতো বড় ভালো কথা, গাঁয়ের লোকগুলো সব গণ্ডমূর্খ রয়ে যাচ্ছে। একটা স্কুল দিয়ে যদি ওদের লেখাপড়া শেখাতে পারো সেতো বড় ভালো কথা। কাজ শুরু করে দাও। টাকা পয়সা যতদূর পারি সাহায্য করবো।

টাকা পয়সা খুব বেশি কিছু না দিলেও, স্কুলের জন্য একটা অনাবাদী জমি ছেড়ে দিয়েছিলেন জুলু চৌধুরী। শহর থেকে ছুতোর মিস্ত্রী এনে গুটি কয়েক ছোট ছোট টুল আর টেবিলও তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি। একমাত্র সম্বল দু’ টুকরো ধেনো জমি ছিল শনু পণ্ডিতের। সে দুটো বিক্রি করে স্কুলের জন্য টিন, কাঠ আর বেড়া তৈরির বাঁশ কিনেছিলেন তিনি।

ব্যয়ের পরিমাণটা তাঁরই বেশি ছিলো, তবু চৌধুরীর নামেই স্কুলটার নামকরণ করেছিলেন তিনি জুলু চৌধুরীর স্কুল। আটহাত কাঠের মাথায় পেরেক আঁটা চারকোণী ফলকের ওপর জুলু চৌধুরীর নামটা জ্বলজ্বল করতো সকাল বিকেল।

আজও করে।

যদিও আকস্মিক ঝড়ে মাটিতে মুখ থুবরে ভেঙ্গে পড়েছে স্কুলটা। আর তার টিনগুলো জং ধরে অকেজো হয়ে গেছে বয়সের বার্দ্ধক্য হেতু।

স্কুলটা ভেঙ্গে পড়েছে। সেটা আবার নতুন করে তুলতে হলে অনেক টাকার দরকার। শনু পণ্ডিত, ভেবেছিলেন, সরকার সাহায্য দিলো না, জুলু চৌধুরী নিশ্চয়ই দেবেন। কিন্তু ভুল ভাঙলো। সাহায্যের নামে রীতিমত আঁতকে উঠলেন জুলু চৌধুরী। বললেন, পাগল, টাকা পয়সার কথা মুখেও এনো না কখনো। দেখছো না কত বড় স্টাব্লিশমেন্ট। চালাতে গিয়ে রেগুলার হাঁসফাঁস হয়ে যাচ্ছি। আধলা পয়সা নেই হাতে। এদিক দিয়ে আসছে। ওদিক দিয়ে যাচ্ছে। শনু পণ্ডিত বুঝলেন, গাঁয়ের ছেলেগুলো লেখাপড়া শিখুক, তা আর চান না চৌধুরী সাহেব।

না চৌধুরী, না সরকার, কেউ না।

অগত্যা গাঁয়ে ফিরে এলেন শনু পণ্ডিত।

ভেঙ্গে পড়া স্কুলটার পাশ দিয়ে আসবার সময় দু’চোখে পানি উপচে পড়ছিলো শনু পণ্ডিতের। লুঙ্গির খুঁটে চোখের পানিটা মুছে নিলেন। গাঁয়ের লোকগুলো উন্মুখ হয়ে প্রতীক্ষা করছিলো তাঁর। ফিরে আসতেই জিজ্ঞেস করলো, কি পণ্ডিত, টাকা পয়সা কিছু দিলো চৌধুরী সাহেব।

না, গম্ভীর গলায় উত্তর দিলেন শনু পণ্ডিত। চৌধুরীর আশা ছাইড়া দাও মিয়ারা। এক পয়সাও আর পাইবা না তার কাছে থাইকা। সেই আশা ছাইড়া দাও।

পণ্ডিতের কথা শুনে কেমন ম্লান হয়ে গেলো উপস্থিত লোকজন। বুড়ো হাশমত বললো, আমাগো ছেইলা পেইলাগুলো বুঝি মূর্খ থাইকবো। তা, আমার কি কইরবার আছে কও। আমিতো আমার সাধ্যমত করছি। আস্তে আস্তে বললো শনু পণ্ডিত।

বুড়ো হাশমত বললো, তুমি আর কি কইরবা পণ্ডিত। তুতি তো এমনেও বহুত কইরছ। বিয়া কর নাই শাদি কর নাই। সারা জীবনটাই তো কাটাইছ ওই স্কুলের পিছনে। তুমি আর কি কইরবা।

দুপুরের তপ্ত রোদে তখন খাঁ খাঁ করছিলো মাঠ ঘাট, প্রান্তর, দূরে খাসাড়ের মাঠে গরু চরাতে গিয়ে বসে বসে বাঁশি বাজাচ্ছিলো কোন রাখাল ছেলে। বাতাসে বেগ ছিল না। আকাশটা মেঘশূন্য। সবাইকে চুপচাপ দেখে আমিন বেপারি বললো, আর রাইখা দাও লেখাপড়া। আমাগো বাপ দাদা চৌদ্দ পুরুষে কোনদিন লেখাপড়া করে নাই। ক্ষেতের কাজ কইরা খাইছে। আমাগো ছেইলা পেইলারাও তা কইরবো। লেখাপড়ার দরকার নাই।

তা–মন্দ কও নাই বেপারি। তাকে সমর্থন জানালো মুন্সি আক্রম হাজী। লেখাপড়ার কোন দরকার নাই। আমাগো বাপ দাদায় লেখাপড়া কারে কয় জাইনতোও না।

বাপ দাদায় জানতোও না দেইখা বুঝি আমাগো ছেইলা পেইলাগুলোও কিছু জাইনবো না। ইতা কিতা কও মিয়া। তকু শেখ রুখে উঠলো ওদের ওপর।

শনু পণ্ডিত বললো, আগের জামানা চইলা গেছে মিয়া। এই জমানা অইছে লেখাপড়ার জমানা। লেখাপড়া না জাইনলে এই জামানায় মানুষের কদর অয় না।

তা তোমরা কি কেবল কথা কইবা না কিছু কইরবা। জোয়ান ছেলে তোরাব আলী অধৈর্য হয়ে পড়লো। বললো, চৌধুরীরা তো কিছু দিবো না তা বুঝাই গেলো। আর গরমেন্টো— গরমেন্টোর কথা রাইখা দাও। গরমেন্টোও মইরা গেছে। এহন কি কইরবা, একডা কিছু কর।

হুঁ। কি কইরবা কর। চিন্তা কর মিয়ারা বিড়বিড় করে বললো শনু পণ্ডিত। বুড়ো হাশমত চুপচাপ কি যেন ভাবছিলো এতক্ষণ। ছেলে দুটো আর বাচ্চা নাতিটাকে অনেক আশা ভরসা নিয়ে স্কুলে দিয়েছিল সে। আশা ছিলো আর কিছু না হোক লেখাপড়া শিখে অন্তত কাচারির পিয়ন হতে পারবে ওরা। গভীরভাবে হয়ত তাদের কথাই ভাবছিলো সে। হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে বললো, যতসব ইয়ে আইছে— যাও ইস্কুল আমরাই দিমু। কারো পারোয়া করি না। না গরমেন্টো—না চৌধুরী, বলে কোমরে গামছা আঁটলো হাশমত।

বুড়ো হাশমতকে কোমরে গামছা আঁটতে দেখে জোয়ান ছেলে তোরাব আলীও লফিয়ে উঠলো। বললো, টিনের ছাদ যদি না দিবার পারি। অন্তত ছনের ছাদতো দিবার পারমু একটা। কি মিয়ারা?

হ-হ ঠিক। ঠিক কথাই কইছ আলির পো। গুঞ্জরণ উঠলো চারদিকে। হাশমত বললো, মোক্ষম প্রস্তাব। ছনের ছাদই দিমু আমরা। ছনের ছাদ দিতে কয় আঁটি ছন লাইগবো? কি পণ্ডিত, চুপ কইরা রইলা ক্যান। কওনা?

কমপক্ষে তিরিশটা লাইগবো। মুখে মুখে হিসেব করে দিলো শনু পণ্ডিত। তকু বললো, ঘাবড়াইবার কি আছে, আমি তিনডা দিমু তোমগোরে। আমি দুইডা দিমু পণ্ডিত। আমরডাও লিস্টি কর। এগিয়ে এসে বললো কদম আলী।

তোরাব বললো, আমার কাছে ছন নাই ছন দিবার পারমু না আমি। আমি বাঁশ দিমু গোটা সাত কুড়ি। বাঁশও তো সাত আট কুড়ির কম লাইগবো না।

হ-হ ঠিক ঠিক । সবাই সায় দিলো ওর কথায়।

দু’দিনের মধ্যে জোগাড়যন্ত্র সব শেষ।

বাঁশ এলো, ছন এলো। তার সাথে বেতও এলো বাঁশ আর ছন বাঁধবার জন্য।

আয়োজন দেখে আনন্দে বুকটা নেচে উঠলো শনু পণ্ডিতের।

এতক্ষণ গম্ভীর হয়ে কি যেন ভাবছিলো আমিন বেপারি। সবার যাতে নজরে পড়ে এমন একটা জায়গায় বসে গলা খাঁকরিয়ে বললো সে, জিনিস পত্তরতো জোগাড় করইছ মিয়ারা। কিন্তুক যারা গতর কাইটাবো তাগোরে পয়সা দিবো কে?

হাঁ, তাইতো। কথাটা যেন এক মুহূর্তে নাড়া দিলো সবাইকে।

হঠাৎ হো হো করে হেসে উঠলেন শনু পণ্ডিত। এইডা বুঝি একটা কথা অইলো। নিজের কাম নিজে করমু, পইসা আবার কে দিবো? বলে বাঁশ কেটে চালা বাঁধতে শুরু করলেন তিনি। বললেন, নাও নাও যিয়ারা শুরু কর।

হুঁ। শুরু কর মিয়ারা। বললো তকু শেখ।

স্কুলের খুঁটি তৈরির জন্য লম্বা একটা গাছকে খাল পার থেকে টেনে নিয়ে এলো তোরাব। হুঁ, টান মারনা মিয়ারা। টান মার।

হুঁ। মারো জোয়ান হেঁইয়ো—সাবাস জোয়ান হেঁইয়ো। টান মার। টান মার।

আস্তে আস্তে। এত তড়বড় কোরলে অয়। বললো বুলির বাপ।

হুঁ। কামের মানুষ হেঁইয়ো। আপনা কাম, হেঁইয়ো। টান টান। মরা চৌধুরী হেঁইয়ো। চৌধুরীর লাশ হেঁইয়ো। হঠাৎ খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো তোরাব আর তকু।

হাসলো সবাই।

পকপক করে কেশে নিয়ে বুড়ো হাশমত বললো, মরা গরমেন্টো কইলা না মিয়ারা। মরা গরমেন্টো কইলা না।

হুঁ। মরা গরমেন্টো হেঁইয়ো। — গরমেন্টোর লাশ হেঁইয়ো। টান টান। করম মাঝি চুপ করেছিলো এতক্ষণ। বললো, ফুর্তিছে কাম কর মিয়ারা। আমি সিন্নি পাকাইবার বন্দোবস্ত করিগা।

বাহ্‌বা মাঝির পো, বাহ্‌বা। চালাও ফুর্তি। কলকণ্ঠে চিৎকার উঠলো চারদিক থেকে!

পাটারী বাড়ির রোগা লিকলিকে বুড়ো কাদের বক্সটাও এসে জুটেছে সেখানে। তাকে দেখে আমিন বেপারি ভ্রু কোঁচকাল। কি বাক্স আলী। সিন্নির গন্ধে ধাইয়া আইছ বুঝি? কয় দিনের উপাস?

যত দিনের অই, তোমার তাতে কি। বেপারির কথায় ক্ষেপে উঠলো কাদের বক্স। এত দেমাক দেহাও ক্যান মিয়া। উপাস ক্যাডা না থাকে। তুমিও থাক। সকলে থাকে।

ঠিক ঠিক। তকু সমর্থন করলো তাকে। চৌধুরীরা ছাড়া আর সকলেই এক আধ বেলা উপাস থাকে। এমন কোন বাপের ব্যাটা নাই যে বুক তাবড়াইয়া কইবার পারবো—জীবনে একদিনও উপাস থাকে নাই-ই। তকু আর কাদেরের কথায় চুপসে গেলো আমিন বেপারি।

তোরাব বললো, কি মিয়ারা, কিতা নিয়া তর্ক কর তোমরা। বেড়াটা ধর। টান মার। হুঁ। মার জোয়ান হেঁইয়ো—চৌধুরীর লাশ হেঁইয়ো—মরা চৌধুরী হেঁইয়ো। আহ্‌হারে চৌধুরী রে। খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো সবাই এক সাথে।

আক্রম হাজী রুষ্ট হলো ওদের ওপর। এত বাড়াবাড়ি ভালা না মিয়ারা। এত বাড়াবাড়ি ভাল না। এহনও চৌধুরীর জমি চাষ কইরা ভাত খাও। তারে নিয়া এত বাড়াবাড়ি ভালা না।

চাষ করিতো মাগনা চাষ করি নাকি মিয়া। তোরাব রেগে উঠলো ওর কথায়। পাল্লায় মাইপা অর্ধেক ধান দিয়া দিই তারে।

পাকা অর্ধেক। বললো কাদের।

সন্ধ্যা নাগাদ তৈরি হয়ে গেলো স্কুলটা।

শেষ বানটা দিয়ে চালার উপর থেকে নেবে এলেন শনু পণ্ডিত।

লম্বা স্কুলটার দিকে তাকাতে আনন্দে চিক্‌চিক্ করে উঠলো কর্ম ক্লান্ত চোখগুলো।

সৃষ্টির আনন্দ।

বিড়িতে টান মেরে কদম আলী বললো, গরমেন্টোর আর চৌধুরীরে আইনা একবার দেখাইলে ভালা অইবো পণ্ডিত। তাগোরে ছাড়াও চইলবার পারি আমরা।

হ-হ! তাগোরে ছাড়াও চইলবার পারি। ঘাড় বাঁকালো শনু পণ্ডিত। একটু দূরে সরে গিয়ে বটগাছটার নিচে বসতেই কাঠের ফলকটার দিকে চোখ পড়লো তকু শেখের। আট হাত লম্বা কাঠের ওপর পেরেক আঁটা ফলক। তার ওপর জুলু চৌধুরীর নামটা জ্বলজ্বল করে সকাল বিকেল।

ওইটা আর এইহানে ক্যান? বললো তকু শেখ। ওইটারে ফালাইয়া দে। ফালাইয়া দে ওইটা। ভাসাইয়া দে ওইটারে খালের ভিতর। তোরাব আলী বললো, ভাসাইয়া দে খালে; চৌধুরী খালে ভাসুক। হঠাৎ কি মনে করে আবার নিষেধ করলো তোরাব। থাম-থাম ফালাইস না। ইদিকে আন।

কালো চারকোণী ফলকটার ওপর ঝুঁকে পড়ে একখানা দা দিয়ে ঘষে ঘষে চৌধুরীর নামটা তুলে ফেললো তোরাব আলী। তারপর বুড়ো হাশমতের কল্কে থেকে একটা কাঠ কয়লা তুলে নিয়ে অপটু হাতে কি যেন লিখলো সে ফলকটার ওপর।

শনু পণ্ডিত জিরোচ্ছিলো বসে বসে। বললো, ওইহানে কি লেইখবার আছে আলীর পো। কিতা লেইখবার আছে ওইহানে?

পইড়য়া দেহ না পণ্ডিত, আহ পড়ইয়া দেহ। আট হাত লম্বা কাঠের ওপর পেরক আঁটা ফলকটাকে যথাস্থানে গেঁড়ে দিলো তোরাব।

অদূরে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত দৃষ্টি মেলে মৃদুস্বরে পড়লেন শনু পণ্ডিত। শনু পণ্ডিতের ইসকুল। পড়েই বার্ধক্য জর্জরিত মুখটা লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠলো তাঁর। বিড়বিড় করে বললেন, ইতা কিতা কইরছ আলীর পো। ইতা কইরছ?

ঠিক কইরছে। একদম ঠিক। ফোকলা দাঁত বের করে মৃদু হাসলো বুড়ো হাশমত।

লজ্জায় তখন মাথাটা নুয়ে এসেছে শনু পণ্ডিতের।

 

Leave a Reply