সকাল থেকেই মেঘ করছিলো সারা আকাশটা।

দুপুর গড়াতেই বৃষ্টি নামলো জোরে।

বাইরে শুধু বৃষ্টির একটানা রিমঝিম রিমঝিম শব্দ। মাঝে মাঝে দমকা বাতাসে সে বৃষ্টির বেগ বাড়ছিলো। আবার কমছিলো। রাস্তায় পায়ে চলা পথিকের সাড়াশব্দ ছিলো না। শুধু, দূর রেস্তোরাঁ থেকে ভেসে আসছিলো গানের টুকরো টুকরো কলি, অস্পষ্ট তার সুর। তবু বেশ লাগছিলো তাঁর। আধপোড়া বিড়িটায় আগুন ধরিয়ে, ক্লান্ত দৃষ্টি মেলে বাইরে তাকিয়েছিলেন আনোয়ার সাহেব।

সবেমাত্র ফিরেছেন অফিস থেকে।

একটু পরেই আবার বেরুতে হবে বাইরে। টিউশনির টাকাগুলো আজ পাবার কথা। আজ দেবেন কাল দেবেন করে অনেক ভুগিয়েছেন ভদ্রলোক। এদিকে টাকার ভীষণ দরকার আনোয়ার সাহেবের। পাওনাদাররা তাড়া দিচ্ছে সকাল বিকেল। তার ওপর- হঠাৎ কড়া নড়ে উঠলো জোরে। বাবু চিঠি।

চিঠিটা হাতে নিয়ে আধভাঙ্গা চশমাটা ধীরে নাকের ডগায় বসিয়ে দিলেন আনোয়ার সাহেব। হাসিনার চিঠি।

অতি পরিচিত একটা সম্বোধনের পর লিখেছে—

ওগো! এমন করে আর কতদিন দূরে ঠেলে রাখবে আমায়। আজ পুরো একটি বছর হতে চললো প্রায়, বাড়ি আসনি তুমি। একটিবারের জন্যেও তোমায় দেখিনি এ একটি বছর। আগে বছরে কতবার আসতে তুমি, মনে আছে, সেবার খুব ঘন ঘন এসেছিলে। মা বলছিলেন কিরে তমু। এবার খুব তাড়াতাড়ি এলি। অফিস বন্ধ নাকি?

মায়ের প্রশ্নটা মৃদু হেসে এড়িয়ে গিয়েছিলে তুমি। রাতের বেলা আমার কানে কানে বলেছিলে; কেন এত ঘন ঘন আসি জানো?

কেন?

তোমায় বারবার দেখতে ইচ্ছে করে, তাই।

হুঁ। মিথ্যে কথা।

কে বললো তোমায় মিথ্যে। বলে আমার চিবুকে আলতো নাড়া দিয়েছিলে তুমি। কিন্তু, সেই তুমি আজ এমন হয়ে গেছো কেন? একি তোমার অভিমান; না আর কিছু। কিন্তু কেনই বা তুমি অভিমান করবে। আমি তো কোন অন্যায় করেছি বলে মনে হয় না। আর যদি করেই থাকি, তুমি কি ক্ষমা করে দিতে পারো না আমায়। ওগো তোমাকে কেমন করে বোঝাই কত কষ্টে দিন কাটে আমার।

এখানে এসে হঠাৎ থামলেন আনোয়ার সাহেব। যদিও চিঠিটা শেষ হয়নি এখনও। এখনও অনেক অনেক কিছু লেখা আছে তার ভেতর তবু থামলেন তিনি। কেননা ইতিমধ্যেই মাথাটা কেমন গরম হয়ে উঠছে তাঁর। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে এসে।

চিঠিটা টেবিলের ওপর বই চাপা দিয়ে রেখে ধীরে উঠে দাঁড়ালেন আনোয়ার সাহেব। কলগোড়ায় গিয়ে চোখেমুখে পানি দিলেন বেশ কিছুক্ষণ। তারপর আবার ফিরে এলেন ঘরে।

কি মনে করে হঠাৎ বাক্স থেকে পুরোনো চিঠিগুলোকে একে একে বের করলেন আনোয়ার সাহেব। গত এক বছরে কম চিঠি লিখেনি হাসিনা। অনেক অনেক লিখেছে।

কিন্তু কেন লিখেছে?

কার কাছে লিখেছে হাসিনা?

আনোয়ার সাহেবের কাছে?

না না, আনোয়ার সাহেবের কাছে লিখবে কেন সে। আনোয়ার সাহেব তো কেউ নন তার। যদিও সব। তবুও কেউ নন।

হায়রে। হাসিনা যদি জানতো।

ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস বুক চিরে বেরিয়ে আসে আনোয়ার সাহেবের। চিঠিগুলোকে অন্যমনস্কভাবে নাড়াচাড়া করেন কিছুক্ষণ। হঠাৎ পুরোনো একখানা চিঠির উপর আলতো চোখ বুলোতে থাকেন তিনি। টাকা পেয়েছি। মাসে মাসে বাজার খরচের টাকা ক’টি পাটিয়েই যদি তুমি তোমার দায়িত্ব শেষ বলে মনে করো তা হলে আর বলার কিছুই নেই আমার।

যাক, মানু এখন সব সময় বাবা বাবা ডাকে। যে বাবাকে জন্মের পর থেকে একবারটির জন্যেও দেখেনি। সে বাবার নামটাকেই প্রথম উচ্চারণ করেছে সে। কি আশ্চর্য দেখতো।

পুরোনো চিঠিটাকে খামের ভেতর পুরে রেখে আবার নতুন চিঠিটা হাতে তুলে নেন আনোয়ার সাহেব। মানুর জন্য মন কেমন কেঁদে ওঠে তাঁর। আহা। মেয়েটাকে যদি একবার দেখতে পেতেন তিনি। কেমন হয়েছে মেয়েটা? সে কি দেখতে ঠিক তার বাবার মতই হয়েছে?

মানুর কথা ভাবতে গিয়ে আর একটা মুখের আদল ভেসে উঠলো আনোয়ার সাহেবের চোখের ওপর— সুন্দর গোলগাল একখানা মুখ। প্রশস্ত কপালের ওপর তেলবিহীন উস্কোখুস্কো চুল। মুখভরা খোঁচা দাড়ি; হপ্তায় মাত্র একবার সেইভ করতো তসলিম।

আনোয়ার সাহেব বকতেন খুব। এ আবার কেমন স্বভাব বলতো। দাড়ি রাখতে হোলে রীতিমত রেখে দাও। আর যদি মুখটাকে ন্যাড়া রাখবারই ইচ্ছে হয়ে থাকে, তাহলে রোজ একবার করে সেইভ করো। এমন মুখভরা খোঁচাখোঁচা দাড়ি— একটা সৌন্দর্যজ্ঞান থাকা ও তো দরকার।

বকুনি খেয়ে এরপর কয়দিন ঠিকমতো দাড়ি কামাত তসলিম। চুলে তেলও লাগাতো বেশ পরিপাটি করে।

তারপর আবার সেই অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল।

মাঝে মাঝে ঠাট্টা করে আনোয়ার সাহেব বলতেন আচ্ছা তসলিম। তোমার এ স্বভাবের জন্য বৌয়ের কাছ থেকে বকুনি খাও না তুমি?

আর বকুনি। কথাই বলে না বৌ। বলে মৃদু হাসতো তসলিম। বড় লাজুক মেয়ে কিনা তাই। তারপর একটু চুপ থেকে আবার বলতো। কবিরা এ রকম একটু উচ্ছৃঙ্খল হয়ই আনোয়ার সাহেব। শুধু আমার বেলা নয়। কবিদের এটা স্বভাব ধর্ম।

তসলিম কবিতা লিখতো। অফিসের কাজের ফাঁকে ফাঁকে ওটাই ছিল ওর একমাত্র নেশা।

আনোয়ার সাহেব ছিলেন ওর কবিতার প্রথম শ্রোতা আর প্রথম সমালোচক। শুনতে না চাইলেও জোর করে শোনাত তসলিম। তবু না শুনলে ক্ষুণ্ন হতো সে। মাঝে মাঝে, অভিমানে কথা বলাই বন্ধ করে দিতো সে। মান ভাঙতে আনোয়ার সাহেবের কর্ম সাবাড়। দেখো তসলিম। আমায় শুনিয়ে কি লাভ বলতো। আমি না কবি, না সাহিত্যিক। আমি কি বুঝবো তোমার ও কবিতার। তুমি বলো।

মুখ টিপে হাসতো তসলিম। আলবত বুঝবেন। বুঝবেন না কেন? একটু চুপ থেকে আবার বলতো সে। পড়বো, শুনবেন?

পড় না, শুনি। বলতেন আনোয়ার সাহেব।

হাত নেড়ে নেড়ে পড়তো তসলিম। পড়তো না ঠিক যেন অভিনয় করতো সে। পড়া শেষ হলে যদি বলতেন ভালো হয়েছে। তা হলে খুব খুশি হতো তসলিম। আর যদি বলতেন কেমন যেন ভাল লাগলো না আমার। তা হলে মুখ কালো করে বলতো সে, কবিতা বোঝেনই না আপনি।

কিন্তু আজ দীর্ঘ এক বছর পর হঠাৎ হাসিনার চিঠি হাতে নিয়ে তসলিমের কথা মনে পড়লো কেন আনোয়ার সাহেবের?

না। আজ বলে নয়। প্রতিদিন, যখনি হাসিনার চিঠি এসেছে তখনই তসলিমকে মন পড়েছে আনোয়ার সাহেবের। বড্ড বেশি করে মনে পড়েছে যেন। রোগা লিকলিকে ছেলেটার কথা বারবার করে চোখের ওপর ভেসে উঠেছে তাঁর।

বড্ড বেশি কথা বলতে পারতো তসলিম। যতক্ষণ ঘরে থাকতো, ঘরটাকে সরগরম রাখতো সে।

সেদিন বিকেলে অফিস থেকে ফিরে এসে অশান্ত পদক্ষেপে তসলিমকে ঘরময় পায়চারি করতে দেখে প্রথমটায় কেমন যেন ঘাবড়ে গেলেন আনোয়ার সাহেব। কি ব্যাপার তসলিম। পাগলের মতো এমন ছুটোছুটি করছো কেন। কি হয়েছে?

কেন। আপনি কিছুই শোনেননি? উত্তেজিত কণ্ঠে বলছিলো তসলিম। ঘাড় নেড়েছিলেন আনোয়ার সাহেব। কই, না তো। কেন কি হয়েছে? গুলি। গুলি করেছে সাহেব। আর কি হয়েছে। ইউনিভার্সিটির ছেলে আর একটাও বেঁচে নেই। গিয়ে দেখে আসুন।

সে-কি? যেন আকাশ থেকে পড়েছেন আনোয়ার সাহেব।

খুব যে অবাক হচ্ছেন। বানিয়ে বলছি নাকি? গিয়ে একবার দেখে আসুন না। মেডিক্যাল কলেজের সামনে একহাঁটু রক্ত জমেছে। বিবেক বিরুদ্ধ যে কোন কথাকেই বাড়িয়ে বলা তসলিমের স্বভাব ছিলো। কিন্তু তসলিম মিছে কথা বলতো না কোনদিন।

তাই সব কিছু বিশ্বাস না হলেও গুলি চলার খবরটা যে সত্য তা বিশ্বাস না করে পারেন নি আনোয়ার সাহেব।

গুলি সত্যিই চলেছিল।

কিন্তু, সে গুলি যে তার পরদিন তসলিমের বুকেও এসে বিঁধবে তা কি সেদিন ভাবতে পেরেছিলেন আনোয়ার সাহেব?

উঃ। আজ দীর্ঘ এক বছর পর তসলিমের কথাটা মনে না পড়লেই ভাল হতো।

মাথাটা ভীষণ ধরেছে আনোয়ার সাহেবের। টেবিলের ওপর হাসিনার পুরোনো চিঠিগুলোর দিকে একবার তাকালেন। এ এক বছরে কম চিঠি লিখেনি হাসিনা। অনেক অনেক লিখেছে।

বাড়ি না আসার কি কারণ থাকতে পারে তোমার? আমি যদি কোন অপরাধ করে থাকি, না হয় আমার ওপর রাগ করেছো তুমি। কিন্তু, তোমার নবজাত শিশু, সেতো কোন অপরাধ করেনি। তাকে দেখবার জন্যেও কি একবার বাড়ি আসতে পারো না তুমি?

মিনুর বিয়ের বয়স হয়েছে। তার বিয়ে শাদির বন্দোবস্ত একটা করতে হবে বইকি। মা তো তোমার মুখের দিকেই তাকিয়ে আছেন। তুমি ছাড়া পরিবারে আর কেই বা আছে যে তার বিয়ে শাদির বন্দোবস্ত করবে? চিঠিটা মুড়ে আবার খামের ভেতর রেখে দিলেন আনোয়ার সাহেব। দু’হাতের তালুতে মুখ গুঁজে করে বসে রইলেন কিছুক্ষণ। একটা গভীর অন্তর্দ্বন্দে মনের ভেতরটা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে তাঁর।

না না মানু মিনু সবাইকে ভুলে চান তিনি। ভুলে যেতে চান হাসিনাকে। আম্মাকে। সবাইকে। গোটা পরিবারটাকে। তবু, ভুলতে পারেন কই আনোয়ার সাহেব? যত ভাবেন সম্পর্কটা এবার চুকিয়ে দেবেন। তত যেন মনের ভেতর আরো বেশি করে শিকড় গাড়ছে ওরা। সারাদিন ওদের কথাই শুধু ভাবেন আনোয়ার সাহেব।

উঃ এ প্রহসন আর কতদিন চালাবেন তিনি।

স্মৃতিপটে আবার উঁকি মারছে তসলিম। তসলিমের রক্তাক্ত দেহ। কিন্তু, দেহের কথাটা নিছক কল্পনাই করেছেন আনোয়ার সাহেব। গুলিবিদ্ধ তসলিমের রক্তাক্ত দেহটা দেখেননি তিনি। দেখেননি বলে তো একটা গভীর সন্দেহে আজো মন তোলপাড় করছে তাঁর। সত্যিই কি মরেছে তসলিম?

একুশের সারারাত এক মুহূর্তের জন্যেও ঘুমোয়নি সে। বসে বসে পোষ্টার লিখেছে, অসংখ্য পোষ্টার।

পরদিন সকালে যখন বাইরে বেরুচ্ছিলো তখন নিষেধ করেছিলেন আনোয়ার সাহেব। আজ তোমার বাইরে বেরোনো ঠিক হবে না তসলিম। যা মেজাজ তোমার। কি করতে কি করে বসবে ঠিক নেই। তার চাইতে ঘরে বসে বসে ভাষার লড়াই নিয়ে কবিতা লিখো। সেটাও একটা কাজ।

সে কথা শুনেও আমল দেয়নি তসলিম। তসলিম বলেছে আগে ভাষাকে বাঁচাতে হবে। ভাষাই যদি না থাকবে তো কবিতা লিখবো কি দিয়ে? বলে বেরিয়ে গেছে সে। সেদিন আর ফেরেনি।

তার পরদিন।

তার পরদিনও না।

থানায় খোঁজ করে দেখেছেন আনোয়ার সাহেব। জেল গেটে খোঁজ করেছেন। খোঁজ করেছেন হাসপাতালে কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি তাকে। অজানা আশঙ্কায় বুকটা কেঁপে উঠেছে আনোয়ার সাহেবের। অশান্ত পদক্ষেপে, অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। শেষে তাঁর এক সহকর্মী বজলু সাহেবের কাছ থেকে শুনেছেন আসল খবরটা। হাইকোর্টের মোড়ে গুলি চলবার সময় তসলিমকে একবার দেখেছিলেন তিনি।

আর দেখেন নি।

আর খোঁজ পাওয়া যায়নি তসলিমের। তসলিম মারা গেছে।

হঠাৎ ডুকরে কেঁদে উঠেছিলেন আনোয়ার সাহেব। এ কি হলো বজলু সাহেব। ওর বৌ পরিবারের কি হবে। ওদের যে কেউ নেই।

কেউ নেই। ধরা গলায় জিজ্ঞেস করেছিলেন বজলু সাহেব।

না। কেউ নেই। বলেছিলেন আনোয়ার সাহেব। ওর বৌ, মা, বোন ওদের কি হবে বজলু সাহেব?

কান্নায় রুদ্ধ হয়ে এসেছে তাঁর কণ্ঠস্বর।

অনেকটা মাতালের মতো টলতে টলতে ফিরে এসেছিলেন আনোয়ার সাহেব। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতেই নজরে পড়ছিলো তাঁর ডাক বাক্সে একখানা চিঠি। তসলিমের চিঠি। পরের চিঠি পড়ার অভ্যাস কোনদিনও ছিল না আনোয়ার সাহেবের, কিন্তু, সেদিন পড়েছেন।

বহু পরিচিত একটা সম্বোধনের পর, গোট গোট অক্ষরে মেয়েলি লেখা। আজ ক’দিন থেকে মিনুর জ্বর। আমারও শরীর খুব ভালো যাচ্ছে না। কানু শেখ তার পাওনা টাকার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করছে।  মাইনে পাওয়া মাত্র টাকা পাঠিয়ো। ঘরে চাল, ডাল কিছুই নেই। এক বেলা আলু আর এক বেলা ভাত খাচ্ছি।

চিঠিটা পড়ে মনটা আরো বেশি রকম খারাপ হয়ে গিয়েছিলো আনোয়ার সাহেবের। সারা রাত জেগে শুধু ভেবেছেন তিনি তসলিমের মৃত্যু খবরটা কি জানাবেন হাসিনাকে? চিঠি লিখে কি জানিয়ে দেবেন ওদের যে তসলিম মারা গেছে। ওদের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম লোকটা আর বেঁচে নেই।

এ আঘাত কি সইতে পারবে ওরা?

মাথার ভেতরটা আবার গরম হরে উঠেছে আনোয়ার সাহেবের। সামনে টেবিলের ওপর রয়েছে হাসিনার চিঠিগুলো। এ ক’বছরে কম চিঠি লিখেনি হাসিনা। অনেক অনেক লিখেছে।

সামনে এখনও খোলা আছে ওর শেষ চিঠিখানা।

ওগো, আর কতদিন বাড়ি আসবে না তুমি? তুকি কি মাস মাস টাকা পাঠিয়েই শুধু নিশ্চিন্ত থাকবে? মা যে তোমার জন্য কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গেলো।

ওগো……….।

Leave a Reply