কামিনীর প্রতি উক্তি | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

(রূপক) তোমাতে লো ষড় ঋতু পয়ার অপরূপ দেখ একি, শরীরে তোমার।একঠাঁই  ষড় ঋতু, করিছে বিহার ||নিদাঘ, বরষা, আর, শরদ হেমন্ত।নিরখি শিশির আর দুরন্ত বসন্ত ||এ সবার সেনা আদি, তোমাতে বিহরে।গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরদাদি, কহি পরে পরেContinue Reading

গদ্য | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ছাত্র হইতে প্রাপ্ত গগনমণ্ডলে বিরাজিতা কাদম্বিনী উপরে কম্পায়মানা শম্পা সঙ্কাশ ক্ষণিক জীবনের অতিশয় প্রিয় হওত মূঢ় মানবমণ্ডলী অহরহঃ বিষয় বিষার্ণবে নিমজ্জিত রহিয়াছে। পরমেশ প্রেম পরিহার পুরঃসর প্রতিক্ষণ প্রমদা প্রেমে প্রমত্ত রহিয়াছে। অম্বুবিম্বুপম জীবনে চন্দ্রার্ক সদৃশContinue Reading

চন্দ্রদূত | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

(রূপক) ত্রিপদী দ্বিযাম যামিনী যায়,    আ মরি কি শোভা তায়,নিরখি নির্ম্মল নদী তীরে।নিরমল নীলাকাশ,       সীমা বিনা সুপ্রকাশ,মাঝে হেরি মধুর শশিরে ||যেন কোন নব বালা,        পাইয়া বিরহ জ্বালা,মলিনতা মধুর বদনে।গগন গহন বনে,            মনোদুখে মরি মনে,ভ্রমিতেছে গজেশContinue Reading

জীবন ও সৌন্দর্য্য অনিত্য | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

চৌপদী যামিনী যামেক যায়, সেবিতে শীতল বায়,সঙ্গে করি ললনায়, রসময় বসিয়া।বসি নিশাকর করে, ধরিয়ে প্রেয়সীকরে,প্রেম আলাপন করে, সরসেতে রসিয়া।।শুন ওলো প্রাণেশ্বরি, তবু মুখ রূপ ধরি,ওই কি গগনোপরি, রূপে মনো হরে লো।বুঝি বা সে শশী হবে,Continue Reading

দূরদেশ গমনের বিদায় | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

পতি ললিত একবার দেখি আর,             দেখি দেখি এইবার,দেখি ফিরে বিধুমুখ,            দেখি আঁখি ভরি লো।আজিকার নিশি ভোরে          লয়ে যাবে কোথা মোরে,কত দিন তোমা বিনে           রহিব কি করি লো ||বিদরে বিদরে বুক,             হেরিব না বিধুমুখ,বিধুমুখ হাসি ভরা,            Continue Reading

পদ্য | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

(হুগলী কলেজে ছাত্রাবস্থায় লিখিত) চন্দ্রাস্য সহাস্য করে, ঊষাকালে সতী।প্রিয়করে করি করে, কহে পতি প্রতি।।প্রিয়া প্রতি পতি তার, করিছে উত্তর।চরণে চরণে দেয়, উত্তর সত্বর।। প্রথমে চরণে স্ত্রীর উক্তিদ্বিতীয় চরণে পতির উত্তরপয়ার স্ত্রীং। কহ না কি হেতু,Continue Reading

বর্ষা বর্ণনাছলে দম্পতির রসালাপ | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

কামিনী ত্রিপদী দেখি কি হে ভয়ঙ্কর,             গরজিয়ে  গর গর,ব্যাপিল গগনে নবঘনে।নবনীল নিরূপম,          অর্দ্ধ তমস্বিনী সম,দুলিছে দামিনী ক্ষণে ক্ষণে ||ঘন ঘোর গরজনে,         বিদারে গগনে বনে,তীক্ষ্ণ তীর সম বরিষয়।বল বল প্রাণনাথ,         কেন কেন অকস্মাৎ,গরজন বরিষণ হয় ||Continue Reading

বর্ষাঋতু | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

স্বনাথ শশধর বিরহিণী বিঘোর তমসাম্বরাবৃতা গভীরা নিশীথিনী সঙ্কাশ নিবিড় জলধারমাল গগনমণ্ডলে নিয়ত নিরীক্ষণ করিতেছি। মন্মথোন্মথিত জনরাজী হৃদয় বিদারক ঘোরঘন নির্ঘোষ নিনাদ শ্রবণে চমকিতচিত্ত চাপল্য প্রাপ্ত হইতেছে। নিবিড় নীলঙ্গিনি যমুনাপুলিনে শ্রীরাধা চাতকী নীরদ কদম্ববিহারি শ্যাম শরীরোপরিContinue Reading

বর্ষার মানভঞ্জন | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

নায়কের উক্তি ত্রিপদীবিধুমুখি করে মান,        কিরূপে দেখালে প্রাণহেরিতেছি অপরূপ ভাব।বরষার আবির্ভাবে,         প্রফুল্ল সরস ভাবে,রহিয়াছে সকল স্বভাব।বন উপবন চয়,               রসময় সমুদয়রসপূর্ণ যত জীবগণ।কিন্তু কি আশ্চর্য্য কর,     এ সবার মাঝে তবকেন প্রিয়ে বিরস বদন।বুঝেছি কারণ তার,      দোষContinue Reading

বসন্তের নিকট বিদায় | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ত্রিপদী হা বসন্ত মনোহর,           হা মোহন রূপধর,হা রে হৃদি বিচঞ্চলকর।লইয়ে রূপের ভার,        কেন কর পরিহার,এ মহী মণ্ডল মনোহর ||আর কিছু দিন ওরে,       রহ রে ধরণী পরে,বিদায় তোমারে নারি দিতে।জানি জানি মরি মরি,       এ পাপ পৃথিবীContinue Reading

বাল্যরচনা | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

এই কবিতাগুলি লেখকের পঞ্চদশ বৎসর বয়সে লিখিত। লিখিত হওয়ার তিন বৎসর পরে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত হইয়া বিক্রেতার আলমারীতেই পচে-বিক্রয় হয় নাই। তাহার পর আর এ সকল পুনর্মুদ্রিত করিবার যোগ্য বিবেচনা করি নাই, এখনওContinue Reading

বিচিত্র নাটক | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

(তিন মিত্রের কথোপকথন) প্রথম মিত্রকি বিষাদে মুখখানি, হাসি-ভরা নাই।বেণা-বনে বোসে কেন, উঠ উঠ ভাই || দ্বিতীয় মিত্রদেখিয়া দেশের গতি, কেঁদে মরি মনে।সে দুখে বসিয়া আছি, বিরস বদনে || তৃতীয় মিত্রসখা রে বচন ধর,           মিছা দুখContinue Reading