ভূমি জরিপ ও বন্দোবস্ত প্রশিক্ষণ (সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট ট্রেইনিং)

রাজশাহীতে যোগদানের আড়াই মাস পর আমাদের ব্যাচের ভূমি জরিপ এবং বন্দোবস্তের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এই প্রশিক্ষণের কেন্দ্র ছিল গোদাগাড়ী থানার প্রেমতলী নামক গ্রামে। স্থানীয় লোকেরা বিশ্বাস করেন, শ্রীচৈতন্য দেব প্রেমতলীতে এসেছিলেন। এই গ্রামে মেলার জন্য একটি বিরাট মাঠ ছিল। এই মাঠে আমাদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি তাঁবুর শহর গড়ে তোলা হয়। ক্লাসের জন্য ছিল বড় বড় তাবু আর থাকার জন্য ছিল ছোট তাঁবু। আমরা প্রত্যেকে আমাদের নিজস্ব অর্ডারলি সেখানে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারা বাজার করত এবং রান্না করত ও আমাদের সব কাজ করে দিত। প্রায় এক মাস ডিসেম্বরের শীতের মধ্যে আমাদের এই তাবুতে থাকতে হয়েছে। সেখানে কোনো শৌচাগার ছিল না। মাঠের এক কোণে মাটিতে গর্ত করে প্রস্রাব পায়খানা করতে হতো। যারা গ্রামে বড় হয়নি, তাদের জন্য এ ব্যবস্থা খুবই অস্বস্তিকর ছিল। তবে এর ভালো দিক হলো প্রশিক্ষণার্থীরা গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।

প্রতিদিন সকালবেলা আমাদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ হতো। সেখানে আমাদের ভূমি বিভাগের আমিনরা খানাপুড়ি (জমির মালিকানার দলিল), গান্টার (দুই ফুট লম্বা বিশেষ ধরনের স্কেল) ও চেইন (শিকল) ব্যবহার করে একটি মানচিত্রে প্রতিটি প্লট প্রদর্শন করে মানচিত্র তৈরি, খতিয়ান (ব্যক্তিগত মালিকানার নথি) তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। আমাদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। প্রতিটি গ্রুপের জন্য একটি ভূখণ্ড নির্দিষ্ট করা হয়। সেই ভূখণ্ডের জরিপ করে মানচিত্র তৈরির জন্য প্রতিদিন সকালে আমাদের জন্য নির্দিষ্ট করা ভূখণ্ডে যেতে হতো। ভূখণ্ডগুলো উঁচু ঘাসে আবৃত ছিল। অনেক সময় এই ঘাসের মধ্যে বিষধর সাপ দেখা যেত। আমরা লাঠি নিয়ে এই ঘাসের মধ্যে ঢুকতাম এবং গান্টার শৃঙ্খল ব্যবহার করে জমি মাপতাম। বিকেলবেলায় আমাদের ভূমি আইন এবং এ-সংক্রান্ত বিধিসমূহ সম্পর্কে ক্লাস হতো। ক্লাসে পড়াতেন জরিপের সঙ্গে জড়িত ইপিসিএস কর্মকর্তারা।

রাজশাহী ভূমি জরিপের কর্মকর্তা ছিলেন খানে আলম খান নামে একজন অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার মর্যাদার ইপিসিএস কর্মকর্তা। তিনি ক্লাসে এসে অনেক হাসির গল্প বলতেন। তবে খুব বেশি একটা পড়াশোনা হতো না। তরফদার নামের একজন কর্মকর্তা ছিলেন তাঁবুর ভারপ্রাপ্ত অফিসার। তিনি ক্লাসে এসে অত্যন্ত নীরস ভাষায় আইনকানুন ব্যাখ্যা করতেন। তার ক্লাস আমার একেবারেই ভালো লাগত না। আমি ক্লাসের পেছনে বসে আমার পছন্দের বই পড়তাম। তরফদার সাহেব জানতে পান যে তার ক্লাসে আমরা কেউ কেউ তার বক্তৃতা শুনছি না। তাই তিনি আমার মতো কয়েকজনকে নোটিশ দেন যে আমরা কেন তার বক্তৃতা না শুনে ক্লাসে ‘আউট বই’ পড়ি, তার কারণ দর্শানোর জন্য। আমরা জানাই যে আমরা কোনো বই কখনো ক্লাসে রিড আউট করি না। এই কারণ দর্শানো থেকে তরফদারের সঙ্গে আমাদের খিটিমিটি লড়াই শুরু হয়। আসলে প্রতিবছরই জরিপ এবং বন্দোবস্ত প্রশিক্ষণে সিএসপি এবং ইপিসিএস অফিসারদের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতো। এখানে ইপিসিএস অফিসাররাই ছিলেন নিয়ন্ত্রক। সিএসপি অফিসাররা ইপিসিএস অফিসারদের নিয়ন্ত্রণ সহ্য করতে পারতেন না। এর ফলে শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দিত। কোনো কোনো ব্যাচে এই শৃঙখলা আদৌ রক্ষা করা সম্ভব। হয়নি। আমাদের পরবর্তী ব্যাচের কর্মকর্তারা এই প্রশিক্ষণে এত উচ্ছল ছিলেন যে তাঁদের কোনো বক্তব্য শুনতে রাজি ছিলেন না তদানীন্তন চিফ সেক্রেটারি সফিউল আজম। তিনি নাকি তাদের বলেছেন, ‘You are the worst batch in the CSP. You have no point. I am ashamed of you. Now get the hell out of my room.’[১]

আমাদের তাঁবুতে প্রশিক্ষণের সময় ইপিসিএস ও সিএসপি অফিসারদের ভুল-বোঝাবুঝির একটি বড় ঘটনা ঘটে। তখন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের ভূমি জরিপ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক ছিলেন জনাব টি হোসেন। টি হোসেন সিনিয়র স্কেল ইপিসিএস কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি প্রশিক্ষণ পরিদর্শন করতে এলে তাঁকে প্রশিক্ষণার্থীদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তার সম্মানে একটি নৈশভোজের ব্যবস্থা করা হয়। ভোজের অভ্যর্থনায় তিনি যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন তাঁবুর এক ধারে আগুন লেগে যায়। ইপিসিএস অফিসাররা সন্দেহ করেন এ কাজ সিএসপি অফিসাররা করেছেন। তাই তাঁরা সিএসপি অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন। এক মাসব্যাপী তাবুর প্রশিক্ষণ শেষ হলে আমাদের গ্রুপে ভাগ করা হয়।

একেক গ্রুপের কর্মকর্তাদের একেক স্থানে পাঠানো হয়। আমাদের গ্রুপে ছিলেন শাহ মোহাম্মদ ফরিদ, এ বি এম আবদুশ শাকুর, মামুনুর রশীদ। আমাদের পদায়ন করা হয় নাটোর শহরের সন্নিকটে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঝিলমিলিয়া ডাকবাংলোতে। ঝিলমিলিয়া ডাকবাংলোটি মৃতপ্রায় নারোদ নদের তীরে অবস্থিত। সেখানে অনেক গাছ এবং ফুলের চাষ করা হতো। ডাকবাংলোতে আমরা ১৫ দিন প্রশিক্ষণ নিই। আমাদের পাশে আরেকটি গ্রুপে ছিলেন মিজানুর রহমান শেলী এবং তাঁর তিনজন সহকর্মী। আমরা শেলী গ্রুপকে ঝিলমিলিয়া ডাকবাংলোতে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানাই। তাঁরা আমাদের এখানে আসেন এবং অনেক রাত পর্যন্ত জলসা চলে। এর পরের সপ্তাহে আমাদের পুঠিয়া ডাকবাংলোতে নৈশভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমরা একটি খোলা ঘোড়ার গাড়িতে পূর্ণিমার রাতে পুঠিয়া রওনা হয়ে যাই। ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে মনে হচ্ছিল আমরাই যেন এই অঞ্চলের জমিদার। পুঠিয়ায় রাজবংশের প্রতিষ্ঠা হয় সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে। এ বংশের প্রতিষ্ঠাতার নাম ছিল নীলাম্বর। ১৮৫০ সালে রানী হেমন্ত কুমারী পুঠিয়া রাজবাড়ী নির্মাণ করেন। এ রাজবাড়ীর পাশে পুঠিয়ার অনেক হিন্দু মন্দির গড়ে উঠেছিল। পুঠিয়া বর্তমানে রাজশাহীর একটি থানা সদর। পুঠিয়া রাজবাড়ীতে একটি অংশে চারটি কামরায় চারজন প্রশিক্ষণার্থী থাকতেন। তাদের এখানে প্রায় রাত ১২টা পর্যন্ত গল্পগুজব করে আমরা ফিরে যাই।

এরপর আমাদের দুজনের দলে ভাগ করা হয়। আমি এবং মামুনুর রশীদ এক দলে ছিলাম। আমাদের পাঠানো হয় দুর্গাপুর থানা সদরে। দুর্গাপুরে ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের একটি ডাকবাংলো ছিল। সেই ডাকবাংলো আমার এবং মামুনুর রশীদের নামে বরাদ্দ করা হয়। এই ডাকবাংলোতে থাকার সময় আইয়ুববিরোধী আন্দোলন শুরু হয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নশাস্ত্রের অধ্যাপক শামসুজ্জোহাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার আগে থেকেই বিভিন্ন স্থানে গন্ডগোল চলছিল। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারির ১৪-১৫ তারিখ থেকে আমাদের বিভিন্ন স্থানের ক্যাম্প থেকে রাজশাহী সার্কিট হাউসে নিয়ে আসা হয়। সপ্তাহ দুয়েক পর আমাদের প্রশিক্ষণের সর্বশেষ অংশে প্রশিক্ষণের জন্য ঢাকা ভূমি জরিপ এবং ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কীভাবে জরিপের নকশাসমূহ স্থায়ীভাবে রাখা হয় এবং কীভাবে তাদের নিজস্ব মুদ্রণালয়ে জরিপের মানচিত্র এবং খতিয়ান মুদ্রণ করা হয়, তা দেখানো হয়।

এই প্রশিক্ষণের পর আমরা যে যার কর্মস্থলে ফিরে যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমি প্রাদেশিক সরকারের সার্ভিসেস জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগ থেকে একটি পত্র পাই। পত্রে অভিযোগ করা হয়, আমি মামুনুর রশীদের খাতা থেকে নকল করেছি। সুতরাং আমার জন্য দ্বিতীয়বার সেটেলমেন্ট ট্রেনিং নেওয়া উচিত। তবে প্রাদেশিক সরকার আমাকে ও মামুনুর রশীদকে দ্বিতীয়বার প্রশিক্ষণে না পাঠিয়ে এই প্রশিক্ষণে ফেল করেছি–এ মর্মে রেকর্ড করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।

মামুনুর রশীদ সারগোদা স্কুলের ছাত্র ছিলেন। তখন তিনি বাংলা লিখতে জানতেন না। যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সে পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ নম্বর ছিল। প্রশ্নে প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে একটি খতিয়ান তৈরি করার। এ কাজ মামুনুর রশীদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই পরীক্ষার হলে প্রথমে আমি খতিয়ানটি তৈরি করি এবং মামুনুর রশীদের খাতা নিয়ে তাঁর খাতায় একই খতিয়ান নকল করি। শুধু খতিয়ান নয়, মামুনুর রশীদ ভূমি আইনকানুনও কিছু জানতেন না। ভূমি জরিপ প্রশিক্ষণের সময় তাঁর বিয়ে হয়। তিনি বেশির ভাগ সময়ই পালিয়ে ঢাকা চলে যেতেন এবং আদৌ কোনো লেখাপড়া করেননি। আমি প্রশ্নের উত্তর লিখি। তাঁকে বলি আমার খাতা দেখে কিছু পরিবর্তন করে তিনি যেন তার খাতায় উত্তরগুলো লেখেন। কিন্তু মামুনুর রশীদ কোনো পরিবর্তন না করে আমার খাতাকে হুবহু নকল করেন। এখন বুঝতে পারি এ কাজটি করতে দেওয়া আমার উচিত হয়নি। কিন্তু তখন বয়স কম ছিল এবং বন্ধুপ্রীতি এত বেশি ছিল যে এ কাজটি নৈতিক দিক নিয়ে আমি আদৌ চিন্তা করতে পারিনি। আমাকে যখন কৈফিয়ত তলব করা হলো, তখন আমি ইপিসিএস-সিএসপি দ্বন্দ্ব নিয়ে বিরাট একটি জবাব তৈরি করি। পরামর্শের জন্য জবাবটি সৈয়দ শামীম আহসানকে দেখালে তিনি তা তৎক্ষণাৎ ছিঁড়ে ফেলেন এবং বলেন, এ বক্তব্য আমার জন্য আত্মঘাতী হবে। তার পরামর্শে আমি লিখি যে আমি নকল করিনি এবং ভূমি জরিপ কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময়ে পরীক্ষা নিতে চাইলে আমি পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত আছি। সরকার আমার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এবং সিদ্ধান্ত দেয় যে ভূমি জরিপ বিভাগের বিরূপ মন্তব্য বহাল থাকবে।

মামুনুর রশীদ ব্যাচে একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা ছিলেন। তার সঙ্গে ব্যাচের অনেকেরই ঝগড়া হয়েছে। আমার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত মধুর। আমি তাকে সব সময় সাহায্য করতাম। শুধু জরিপ প্রশিক্ষণেই নয়, চাকরির অন্যান্য পর্যায়েও তাকে আমি অব্যাহতভাবে সহায়তা করেছি। পাঁচ বছর সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিনি পিএইচডি না করে শুধু এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে সরকারের অর্থের অপচয় করেছেন–এ অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়। তাঁকে যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয় না। বছর দুয়েক এভাবে ঝুলিয়ে রাখার পর বলা হয়, দেশে আসার পর তার সম্পর্কে কোনো বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন নেই। সুতরাং ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে সে কাজ না করলে তাকে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব নয়। সে সময়ে সংস্থাপন বিভাগের জাদরেল অতিরিক্ত সচিব ইউসুফ হায়দারের হুমকিকে অগ্রাহ্য করে আমি তাকে এমডিএস পিএটিসি হিসেবে তাঁর মূল্যায়ন প্রতিবেদন লিখি। আমি দাবি করি যে তিনি প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আমাকে সহায়তা করেছেন (যা ছিল একেবারেই মিথ্যা) এবং তাঁকে ৯৯ ভাগ নম্বর দিই। তার প্রতিবেদন দুটিতে তৎকালীন ডিরেক্টর শেখ মাকসুদ আলীকে অনেক অনুরোধ করে প্রতিস্বাক্ষর আদায় করি। এর ভিত্তিতে তিনি যুগ্ম সচিব হন। পরবর্তীকালে আমি যখন অর্থসচিব, তখন তিনি বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থার এমডি পদে নিযুক্ত হন। সেখানে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আমি তদন্ত করতে দিইনি এবং তাঁকে বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে ৯৯ শতাংশ নম্বর দিয়েছিলাম। এর ভিত্তিতে তিনি অতিরিক্ত সচিব হন।

আমি সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করার প্রায় ১৪-১৫ বছর পর গ্রামীণ ব্যাংকের সম্পর্কে সরকার একটি তদন্ত কমিশন করে। গ্রামীণ ব্যাংকে আমি এবং রেহমান সোবহান সভাপতি ছিলাম। যেহেতু আমি প্রকাশ্যে ড. ইউনূসের ভূমিকা সমর্থন করছিলাম, সেহেতু সরকার থেকে আমার ও রেহমান সোবহানের বিরুদ্ধেও তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত কমিশনের সভাপতি হয়েছিলেন মামুনুর রশীদ। তার কমিশনের প্রতিবেদনে আমার কোনো বক্তব্য (যা আমি লিখিতভাবে কমিশনের কাছে দাখিল করেছিলাম) নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। সরকারের নিযুক্ত কমিশনের কাছ থেকে আমি তা আশাও করিনি। আমার দুঃখ হলো যে মামুনুর রশীদকে আমি বন্ধু মনে করতাম, কিন্তু তিনি আমাকে কখনো বন্ধু মনে করেননি। বন্ধু মনে করলে তিনি আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে কোনো দিনই রাজি হতেন না। বন্ধু মনে করেননি বলেই তিনি এ কাজটি করতে পেরেছেন। এ নিয়ে আমার কোনো দুঃখ নেই; দুঃখ হলো যে আমি ঠিক সময়ে বন্ধু চিনতে পারিনি।

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. Kamal Siddiqui. In One Life, The Memoirs of a Third World Civil Servant (Part 1) 2015, (Dhaka: Academic Press and Publishers Library), P-258