রাজশাহীতে কর্মরত কর্মকর্তাদের পরিচিতি

রাজশাহীতে আমি নিম্নলিখিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করেছি—

  1. কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসের সদস্য ছিলেন। আমার রাজশাহী অবস্থানের বেশির ভাগ সময় তিনি রাজশাহীর কমিশনার ছিলেন। তাঁর পরিবার ঢাকায় থাকত। তিনি একা রাজশাহীতে থাকতেন। তাঁর বাড়িতে দুবার আমি ডিনার খেতে গিয়েছিলাম।
  2. অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ খলিলুর রহমান। মোহাম্মদ খলিলুর রহমান ১৯৫৭ ব্যাচের সিএসপি কর্মকর্তা ছিলেন। অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে রাজশাহীতে বদলির আগে তিনি ছিলেন বরিশাল জেলার জেলা প্রশাসক। বরিশালে থাকাকালীন তাঁর সন্দেহ হয় যে ভারতীয় সেনাবাহিনী বরিশাল দখলের জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। তার সন্দেহের কারণ হলো অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কোনো কোনো বিমান খুব নিচু দিয়ে উড়ে যেত। তাঁর সন্দেহ হলো উপকূলের নারকেলগাছের ডাব এবং নারকেলের মধ্যে বিশেষ বার্তা লিখে ভারতীয়রা স্থানীয় হিন্দুদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিল। তিনি এই নিরাপত্তাঝুঁকির কথা পূর্ব পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র বিভাগকে জানান। স্বরাষ্ট্র বিভাগ তদন্ত করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে খলিলুর রহমানের সন্দেহের কোনো যুক্তিসংগত ভিত্তি নেই। খলিলুর রহমান এই প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট না হয়ে সরাসরি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে তাঁর বক্তব্য লিখে পাঠান। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরকে এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দেন। সেনাবাহিনী থেকে একটি বড় তদন্ত দল পাঠানো হয়। তারা বরিশালে এসে সরেজমিনে তদন্ত করে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনকে সমর্থন করেন। তারা মন্তব্য করেন ডেপুটি কমিশনার মহোদয় সম্ভবত কাজের চাপে ক্লান্ত। তাই তিনি এ ধরনের অভিযোগ কল্পনা করছেন। তাঁরা পরামর্শ দেন, তাঁকে কিছুদিনের জন্য কম দায়িত্বের একটি পদে পদায়ন করলে হয়তো তাঁর মানসিক সমস্যা কেটে যাবে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তান সরকার তাঁকে রাজশাহীতে অ্যাডিশনাল কমিশনার পদে নিয়োগ দেন এবং সিদ্ধান্ত নেন। যে তাঁকে নেদারল্যান্ডস সরকারের বৃত্তিতে পরবর্তী ব্যাচে ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সে পড়ার জন্য পাঠানো হবে। রাজশাহীতে তিনি বেশি দিন ছিলেন না। আমি রাজশাহী থেকে বদলি হওয়ার দু-এক মাস পরে তিনি নেদারল্যান্ডস চলে যান। নেদারল্যান্ডস থেকে ফিরে আসার পর সচিবালয়ের করিডরে একবার তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখন তিনি স্যুট-কোট পরা সাহেব। পাইপ টানেন এবং ইংরেজিতে কথা বলেন। পরে শুনলাম তিনি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়েছেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব নিযুক্ত হন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তখন পুরোনো হাইকোর্ট বিল্ডিংয়ে অবস্থিত ছিল। পুরোনো হাইকোর্ট বিল্ডিংয়ে একটি মাজার রয়েছে। একদিন তার অফিসে বেশি কাজ করতে গিয়ে তার বাড়ি ফিরতে দেরি হয়। যখন তিনি কাজ শেষ করে বেরোচ্ছিলেন তখন মাজারের পাশে এক জ্যোতির্ময় ব্যক্তির সঙ্গে তার দেখা হয়। তারপর নাকি প্রায়ই তাঁর সঙ্গে কথা হতে থাকে। তিনি স্যুট-কোট ছেড়ে দিয়ে পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা শুরু করেন। তিনি নিয়মিত নামাজ-রোজা করতেন। আমি অনেক দিন দেশের বাইরে ছিলাম। দেশে ফিরে আসার পর আমি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপসচিব হিসেবে পদস্থ হই। ওই সময়ে খলিলুর রহমান ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং আমি সরাসরি তাঁর কাছে নথি পেশ করতাম। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আমার যথেষ্ট কাজ ছিল না। তাই অফিসে বসে আমি বই পড়তাম। অফিসে আসার সময় ব্রিফকেসে মোটা মোটা বই নিয়ে আসতাম। এই ব্রিফকেস লিফটে তোলার সময় বেশ কষ্ট হতো। খলিলুর রহমান একদিন জিজ্ঞেস করলেন, ব্রিফকেসে কী আছে? আমি বললাম, বই আছে। তিনি বললেন, বই কেন পড়ো? আমি বললাম, জ্ঞানের জন্য। তিনি বললেন, জ্ঞানের জন্য কোরআন শরিফ ছাড়া আর কিছু পড়ার প্রয়োজন নেই।

    একদিন কবি-সাহিত্যিকদের নিয়ে কথা হচ্ছিল। তিনি বললেন, কোনো কবিতা পাঠের প্রয়োজন নেই। পৃথিবীতে একটি কবিতাই আছে, সেটি হলো পার্সি ভাষায় রচিত রসুলের বন্দনা, বালাগুল ওলা বি কামালিহি…। এই সময়ে তার বিশ্বাস হয় সৃষ্টিকর্তার তরফ থেকে তার কাছে ওহি পাঠানো হচ্ছে। এই ওহি সম্পর্কে বলার জন্য তিনি বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে স্ব-উদ্যোগে যোগ দেওয়া শুরু করেন। যখনই তিনি ওহি পাওয়ার কথা বলতেন, তখনই উপস্থিত জনতার মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিত। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ বিষয় সম্পর্কে অবগত ছিলেন। একদিন খলিলুর রহমান মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে একটি নোট পাঠিয়ে লেখেন, তিনি শরীয়তপুরে একটি ওয়াজ মাহফিলে যোগ দেওয়ার জন্য দুদিন পর ঢাকা থেকে শরীয়তপুরে যাবেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব লিখে পাঠালেন, আপনাকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলো না। যেদিন তাঁর শরীয়তপুর যাওয়ার কথা, সেদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব অফিসে এসে দেখেন, খলিলুর রহমান GAIGE fol63769, By order of Almighty Allah, I am going to Shariatpur.’তর বেদাত বক্তব্যের জন্য শরীয়তপুরের মুসল্লিরা তাঁকে আক্রমণ করে। পুলিশ তাকে কোনো রকমে রক্ষা করে ঢাকা ফেরত পাঠিয়ে দেয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব কেরামত আলী তাঁকে ওয়াজ মাহফিলে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি সে পরামর্শ শোনেননি। পুরান ঢাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে তিনি আবার বেদাত বক্তব্য দেন। পুলিশ বহু কষ্টে তাঁকে সে ওয়াজ মাহফিল থেকে বের করে আনে। এরপর সরকার তাঁকে চাকরিতে না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়। খলিলুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে বিএ অনার্স ও এমএ পাস করেন এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সারা পাকিস্তানে পঞ্চম স্থান অধিকার করে সিএসপি হন। মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হওয়ায় তিনি শেষ পর্যন্ত চাকরিতে টিকে থাকতে পারেননি।

  3. ডিসি খন্দকার আসাদুজ্জামান। খন্দকার আসাদুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স ও এমএ পাস করেন। এরপর তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণপ্রশাসনে এমপিএ পড়েন। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে ১৯৬০ সালে সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তিনি কানাডার কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় এমপিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি আগস্ট ১৯৬৮ সালে রাজশাহীতে ডেপুটি কমিশনার নিযুক্ত হন। তাঁর স্ত্রী কুলসুম জামান তার আত্মীয় ছিলেন এবং তিনি টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে আসাদুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অর্থসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বেগম কুলসুম জামান ও তার পরিবারের সদস্যরা সব সময়ই আমাকে বিশেষ যত্ন করেছেন। তাঁদের সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
  4. ডিসি সৈয়দ শামীম আহসান। সৈয়দ শামীম আহসান ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তার নানা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম উপাচার্য এবং ভারতীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য স্যার এ এফ রহমান। শামীম আহসানের পিতা ছিলেন বরিশালের শায়েস্তাবাদ জমিদার বংশের ছেলে এবং শিক্ষা বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। অল্প বয়সে তাঁর পিতা মারা যাওয়ায় শামীম আহসানকে বড় করেন তার মা। বিএ অনার্স পাস করার পরই তিনি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সিএসপির চাকরি পান। তিনি অল্প কিছুদিন বাগেরহাটের এসডিও ছিলেন। এরপর তিনি পূর্ব পাকিস্তানের তদানীন্তন গভর্নর আবদুল মোনেম খানের একান্ত সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে তিনি গভর্নরের সচিব নিযুক্ত হন। ওই সময় ঢাকার লাট ভবনে ব্রিগেডিয়ার ইস্কান্দার করিম নামে একজন বাঙালি সামরিক কর্মকর্তা নিযুক্ত ছিলেন। গভর্নর হাউসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বেগম শামীম আহসান অনেক গয়না পরতেন। ইস্কান্দার করিম প্রশ্ন তোলেন যে এসব গয়না নিশ্চয়ই সত্তাবে অর্জিত অর্থে কেনা হয়নি। তাঁর স্ত্রীর গায়ের গয়নাই প্রমাণ করে শামীম আহসান মোটেও সৎ নন। তাঁর এই গোপন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শামীম আহসানকে দুর্নীতিপরায়ণ ৩০৩ জন কর্মকর্তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শামীম আহসানকে চাকরিচ্যুত করা হয়, তবে তাকে আপিল করার জন্য একটি সুযোগ দেওয়া হয়। শামীম আহসান আপিল করেন। তিনি আদালতের সামনে তাঁর স্ত্রীর গয়নাগুলো দাখিল করেন। সঙ্গে সঙ্গে একই ধরনের আরেক সেট গয়না দাখিল করেন, যে গয়নাগুলোর মালিক ছিলেন তার খালা মিসেস সায়েদুল হাসান। দিল্লির যে দোকান থেকে এ গয়নাগুলো কেনা হয়েছিল, তার রসিদও দাখিল করেন। শামীম আহসান শেষ পর্যন্ত সামরিক আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হন যে তাঁর স্ত্রী যে গয়নাগুলো ব্যবহার করছেন, সেই গয়নাগুলো তার মায়ের। তাঁর মাকে ও তার খালাকে তাঁদের বিয়েতে একই ধরনের গয়না দিয়েছিলেন তাঁর নানা স্যার এ এফ রহমান। তিনি শুধু সরকারি চাকরিই করতেন না, তিনি জলপাইগুড়িতে যৌতুকসূত্রে তিন-চারটি চা-বাগানের মালিক ছিলেন। বাধ্য হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তার চাকরি ফেরত দেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রংপুরের ডেপুটি কমিশনার ছিলেন। তিনি ইউরোপিয়ান দেশসমূহের দূতাবাসে বাণিজ্যিক উপদেষ্টা ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি সেচ, টেলিফোন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন।
  5. এডিসি শাকিল আহমদ। তিনি ১৯৬৪ ব্যাচে সিএসপিতে যোগ দেন। তিনি পটুয়াখালীর মহকুমা প্রশাসক ছিলেন। রাজশাহীতে অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার পদে যোগ দেওয়ার পর তাকে এডিসি সাধারণ প্রশাসন পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
  6. এডিসি সাদাত হোসেন। তিনি একজন ইপিসিএস কর্মকর্তা ছিলেন এবং রাজস্ব বিভাগের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার ছিলেন।
  7. সদর এসডিও এস এ চৌধুরী। তিনি একজন ইপিসিএস কর্মকর্তা ও রাজশাহী সদরের এসডিও ছিলেন। তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমী কর্মকর্তা ছিলেন এবং আমাকে সদর মহকুমায় প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সুযোগ করে দেন।
  8. ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটরা। রাজশাহীতে তখন একঝাক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদস্থ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এখনো নাম মনে আছে নিম্নলিখিত কর্মকর্তাদের : (ক) আবদুর রহিম, (খ) আবদুর রব চৌধুরী, (গ) মো. নাসিম এবং (ঘ) সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

রাজশাহী ফৌজদারি আদালতের আইনজীবী

রাজশাহী ফৌজদারি আদালতের খুব বেশি আইনজ্ঞের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় হয়নি। কোর্টে তাদের সওয়াল-জবাব শুনেছি। তবে একজন আইনজ্ঞের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় হয়। এই আইনজ্ঞের নাম হলো আতাউর রহমান। তিনি রাজশাহীর বামপন্থী আন্দোলনের নেতা মাদার বক্সের জামাতা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মহিউদ্দিন আহমদ আমি রাজশাহীতে যোগদানের পরপরই তাকে আমার অফিসে নিয়ে আসেন। তিনি জামিনের আবেদন করলে মনোযোগ দিয়ে শোনার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। কেননা তিনি বিনা পয়সায় সমস্ত বামপন্থী কর্মীর প্রতিরক্ষার কাজ করতেন। প্রথম দিন যখন আমি আদালতে যাই, তখন আতাউর রহমান আমার কাছে একটি জামিন আবেদন পেশ করেন। আবেদনের পক্ষে তিনি বলেন, ষাড়, আমার মক্কেল সম্পূর্ণ নির্দোষ, পুলিশ তার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ নিয়ে এসেছে। ষাড়, তাকে এক্ষুনি জামিন দেওয়া উচিত।’ তার ষাড় সম্বোধনে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। কম বয়সে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ায় তিনি কি আমাকে বিদ্রূপ করছেন? ষাড় বলার জন্য কি এই মুহূর্তেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা রুজু করা উচিত? পরে ভাবলাম এ বিষয়ে আর একটু অনুসন্ধান করি। তবে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দিই। খাসকামরায় এসে আমি অন্যান্য ম্যাজিস্ট্রেটক আতাউর রহমান। আমাকে কেন ষাড় বলেছে, তার সম্ভাব্য কারণ জানতে চাই। তারা হেসে বললেন, স্যার, ওনার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের লোকজন ‘স’ উচ্চারণ করতে পারে না। তারা স্যারকে ষড়ই বলে থাকে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে লেখাপড়া করে যারা হাকিম হন, তারা এই অঞ্চলে ষাড়ের মর্যাদা লাভ করে থাকেন!