সাম্প্রতিক সংযোজন
আশ্চর্য পুকুর » হারলেও হাসে
টিফিনের সময় মিটিং বসল। এ ধরনের গোপন এবং জরুরি মিটিং আমরা সাধারণত করি স্কুলের পেছন দিকটায়। ঝাঁকড়া জামরুল গাছটার নীচে। সকলে গাছের তলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসি। পল্টু শুধু বসে গাছের ওপরে, ডালে পা ঝুলিয়ে। এইContinue Reading
আশ্চর্য পুকুর » আশ্চর্য পুকুর
আমাদের স্কুলে যিনি বাংলা ব্যাকরণ পড়াতেন তিনি ছিলেন চিমটি স্পেশালিস্ট। বিভিন্ন ধরনের চিমটি আবিষ্কার করে তিনি ছাত্র মহলে খুবই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। খ্যাতির কারণ চিমটি নয়, চিমটির নাম। চিমটির তিনি চমৎকার চমৎকার সব নাম দিতেন।Continue Reading
আরেক ফাল্গুন » নয়
লালবাগে যখন প্রথম পুলিশ ভ্যানটা এসে পৌঁছলো বেলা তখন পশ্চিমে হেলে পড়েছে। শুকনো ধুলো উড়ছে বাতাসে। হলদে রোদ চিকচিক করছে লালবাগের মাঠের ওপর। যেখানে এককালে সেই একশো বছর আগে দেশী সিপাহী বিদ্রোহ করেছিলো। বিদেশী বেনিয়াদেরContinue Reading
আরেক ফাল্গুন » আট
ভোরে আসার কথা ছিলো। আসতে বেলা হয়ে গেলো ওর। ছাইদানের ওপর রাখা সিগারেট থেকে শীর্ণ ধোঁয়ার রেখা সাপের মত এঁকেবেঁকে উঠে বাতাসে মিইয়ে যাচ্ছে। বিছানা শূন্য। কৌচেও কেউ বসে নেই। বাথরুমে ঝাঁপঝপ শব্দ হচ্ছে পানিContinue Reading
আরেক ফাল্গুন » সাত
সারারাত এক লহমার জন্যে ঘুমোল না ওরা। মেডিকেল হোস্টেল, মুসলিম হল, চামেলী হাউস, ইডেন হোস্টেল, ফজলুল হক হল, সতর্ক প্রহরীর মত সারারাত জেগে রইল ওরা। কেউবা জটলা বেঁধে কোরাসে গান গাইলো, ভুলবো না, ভুলবো না,Continue Reading
আরেক ফাল্গুন » ছয়
সদরঘাটের মোড়ে কবি রসুলের সঙ্গে দেখা হয়ে গেলো লেখক বজলে হোসেনের। পরনে একটা ট্রপিক্যাল প্যান্ট, গায়ে লিলেনের সার্ট পায়ে একজোড়া সদ্য পালিশ করা চকচকে জুতো। লেখক বজলে হোসেন যান্ত্রিক প্রর্সি ছড়িয়ে বললো, আরে রসুল যে,Continue Reading
আরেক ফাল্গুন » পাঁচ
পরদিন বিদ্যালয়ের গেটে যেখানে নোটিশ বোর্ডগুলো টাঙ্গানো ছিলো, তার পাশে সাঁটানো, লাল কালিতে লেখা একটি দেয়াল পত্রিকার উপর দল বেঁধে ঝুঁকে পড়লো ছেলেমেয়েরা। কারো পরনে শাড়ি, কারো সেলওয়ার। দেয়াল পত্রিকাটা পড়ছিলো আর গম গম স্বরেContinue Reading
আরেক ফাল্গুন » চার
শাহেদ চলে যাবার পর, টেবিলে বসে অনেকক্ষণ ধরে একটা বই নাড়াচাড়া করলো সালমা। বইতে আজ মন বসছে না তার। বড় চাচার শেষের কথাগুলো বারবার কানে বাজছে। আর রওশনের মুখখানা ভেসে উঠছে বইয়ের পাতায়। বসে বসেContinue Reading
আরেক ফাল্গুন » তিন
কলতাবাজারে ওদের ছোট বাসা বাড়িটায় যখন ফিরে এল সালমা তখন অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে চারপাশে। স্বচ্ছ নীলাকাশে একটি দুটি করে তারা জ্বলতে শুরু করেছে। কাপড় ছেড়ে হাত-মুখ ধুলো সালমা। আলনা থেকে ভোয়ালেটা নামিয়ে মুখ-হাত মুছলো। তারপরContinue Reading
আরেক ফাল্গুন » দুই
ক্লাশে মন বসছিলো না সালমার। প্রফেসর নার্ভাস সিসটেমের উপর বক্তৃতা দিচ্ছিলেন আর সে ভাবছিলো তার কারারুদ্ধ স্বামীর কথা। মাঝে মাঝে এমনি হয় তার। মনটা খারাপ থাকলে অথবা কোনো আন্দোলনের সামনে এসে দাঁড়ালে, কোন মিছিল দেখলে,Continue Reading
আরেক ফাল্গুন » এক
রাত দুপুরে সবাই যখন ঘুমে অচেতন তখন বৃটিশ মেরিনের সেপাহীরা এসে ছাউনি ফেলেছিলো এখানে। শহরের এ অংশটার তখন বসতি ছিলো না। ছিলো, সার সার উর্ধ্বমুখী গাছের ঘন অরণ্য। দিনের বেলা কাঠুরের দল এসে কাঠ কাটতোContinue Reading
আরেক ফাল্গুন » আরেক ফাল্গুন
আরেক ফাল্গুন উপন্যাস বায়ান্নর রক্তস্নাত ভাষা-আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত কথামালা। প্রকাশিত হয় ১৯৬৯।Continue Reading
হাজার বছর ধরে » দশ
অবশেষে বুড়ো মকবুল মারা গেলো। ধলপহর দেখা দেবার অনেক আগে যখন সারাগ্রাম ঘুমে অচেতন তখন এ দুনিয়া থেকে বিদায় নিলো সে। সারারাতে কেউ ঘুমোল না। গনু মোল্লা, আবুল, রশীদ, সালেহা, মন্তু, টুনি, সবাই জেগে রইলContinue Reading
হাজার বছর ধরে » নয়
চৈত্র মাসের রোদে পুরো মাঠটা খা খা করছে। যেদিকে তাকানো যায় শুধু শুকনো মাটি। পাথরের চেয়েও শক্ত। আর অসংখ্য ফাটল। মাটি উত্তাপ সহ্য করতে না-পেরে ফেটে যায়। দাঁড়কাকগুলো তৃষ্ণায় সারাক্ষণ কা-কা করে উঠে বেড়ায় এContinue Reading
হাজার বছর ধরে » আট
দেখতে-না-দেখতে হীরনের বিয়ের দিনটা ঘনিয়ে এলো। একমাত্র মেয়ের বিয়ে, তাই আয়োজনের কোনো কার্পণ্য করেনি বুড়ো মকবুল। সাড়ে আট টাকা দাম দিয়ে একটা ছাগল কিনেছে সে। হাট থেকে চিকন চাল কিনে এনেছে আর অধসের ঘি। মিয়া-বাড়িContinue Reading
হাজার বছর ধরে » সাত
নবীনগরের ছোট খালে এসে নাওয়ের নোঙর ফেললো মন্তু। খালপাড়ে উঠে দাঁড়ালে টুনিদের বাড়ির লম্বা নারকেল আর তালগাছগুলো দেখা যায়। আর সেই তাল-নারকেলের বনের ফাঁকে ওদের দেউড়ি-ঘরটাও চোখে পড়ে এখান থেকে। নৌকা থেকে নামবার আগে মুখ-হাতটাContinue Reading
হাজার বছর ধরে » ছয়
কিছুদিন ধরে বেশ শীত পড়তে শুরু করেছে। দিনের বেলা ঈষৎ গরম। শেষরাতে প্ৰচণ্ড শীতে হাড়কাঁপুনি শুরু হয়। কাঁথার নিচেও দেহটা ঠকঠক করে কাঁপতে থাকে। এ সময়ে বাড়ির সবাই মাটির ভাঁড়ে তুসির আগুন জ্বেলে মাথার কাছেContinue Reading
হাজার বছর ধরে » পাঁচ
নৌকাটা ঘাটে বেঁধে রেখে একগাদা কাদা ডিঙিয়ে পাড়ে উঠে আসে ওরা। মন্তু আর করিম শেখ। হাটের এক কোণে মনোয়ার হাজীর চায়ের দোকানে বসে গরম দু’কাপ চা খায়। হাটের নাম শান্তির হাট। কিন্তু সারাদিন অশান্তিই লেগেContinue Reading
হাজার বছর ধরে » চার
খড়ম জোড়া তুলে নিয়ে হাত পা ধোয়ার জন্যে পুকুর ঘাটে চলে যায় মন্তু। অজু করে এসে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বে আজ। মাঝি-বাড়ি থেকে ধপাস ধপাস ঢেঁকির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। রাত জেগে আজও ধান ভানছে আম্বিয়া। বড়Continue Reading
হাজার বছর ধরে » তিন
এতক্ষণে ঘুম থেকে উঠলো টুনি। এত শিঘ্রী উঠত না সে, বুড়ো মকবুলের ধমক খেয়ে শুয়ে থাকাটা নিরাপদ মনে করলো না। মনে মনে বুড়োকে এক হাজার একশো অভিশাপ দিলো। চোখজোড়া জ্বালা করছে তাঁর। মাথাটা ঘুরছে। ঘরেরContinue Reading