» » মীরা-সৌদামিনী

বর্ণাকার

১২

আমি আর একটা দিন যে থাকিয়া গেলাম সে এক প্রকার আলস্যভরেই এবং অন্যায়ভাবেও,—কেন-না তরু রহিয়াছে, আর আমারই উপর এখন তাহার সম্পূর্ণ ভার।

শরীর-মন কি রকম এলাইয়া পড়িয়াছে, কলিকাতার কোন আকর্ষণ অনুভব করিতেছি না। নিছক কর্তব্যজ্ঞানই সব সময় জীবনকে সচল করিতে পারে না, আরও কিছু চাই।

পরদিন একটা সুযোগে অনিলকে সব কথা বলিলাম, অবশ্য অম্বুরীর কথাটা বাদ দিয়া। অনিল প্রথমটা যেন বিশ্বাসই করিতে পারিল না, ক্রমে তাহার মুখটা ধীরে ধীরে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। ওর স্বভাবের মধ্যে উচ্ছ্বাস নাই বড় একটা, শান্তকণ্ঠেই বলিল, “তুই যে কি স্বার্থত্যাগ করলি, যার জন্যে করা সেও বোধ হয় কখনও জানতে পারবে না, তবু পৃথিবীতে অন্তত একজনের জানা রইল, আর জানলেন ভগবান। লোকে যে কথা যত কম জানতে পারে তাঁর কাছে সে কথা তত বেশি ক’রে পৌঁছোয় শৈল।”

জীবনে এক-একটা কেমন অদ্ভূত ঘটনাসাদৃশ্য আসে! চারিদিন পূর্বে কলিকাতা অভিমুখী গাড়িতে বসিয়া আমি যে ধরনের চিন্তা করিতেছিলাম, চারিদিন পরে কলিকাতা অভিমুখী আর একখানি গাড়িতে, সন্ধ্যায়ই, আবার সেই ধরনের চিন্তা। কিন্তু দুইদিনের চিন্তার মধ্যে সাদৃশ্যের চেয়ে যেটুকু পার্থক্য সেইটেই বেশি অদ্ভুত। সেদিন ছিল মীরা, আর আজ, এই চারিদিনের ব্যবধানে তাহার জায়গা লইয়াছে সৌদামিনী। সেদিন প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম মীরার কাছে ক্ষমা চাহিব, আজকের প্রতিজ্ঞা সদুকে উদ্ধার করিতেই হইবে—যাহার অর্থ হয় মীরাকে ভোলা। মানুষের কত দম্ভের প্রতিজ্ঞা!

বাসায় আসিতেই প্রথমে তরুর সঙ্গে দেখা। আনন্দের চোটে আমার জড়াইয়া ধরিয়া বলিল “মাস্টারমশাই, কে আজকে এসেছেন বলুন তো, বুঝব বাহাদুর।”

বাহিরের কাহারও এখানে আসা যাওয়া খুবই কম, বিশেষ করিয়া আজকাল, যখন অপর্ণা দেবী, মীরা কেহই নাই। আন্দাজ করিতেছিলাম, তরুর আর ধৈর্য রহিল না, বলিল, “মা, দিদি!—একটুও ভাবতে পেরেছিলেন এত শীগগির আসবেন? সকালে উঠে পাঠশালায় বেরুব, হঠাৎ ট্যাক্সিতে ক’রে মা, দিদি, রাজু, মদন! ছুটে গিয়ে বাবাকে…”

কথার মধ্যেই আমার মুখের ভাব লক্ষ্য করিয়া তরু থামিয়া গেল। আমারও হুঁশ হইল; তাড়াতাড়ি সামলাইয়া লইয়া বলিলাম, “হঠাৎ যে চলে এলেন! শরীর ভাল আছে তো তরু?”

তরু আশ্বস্ত হইল, বলিল, “শরীরে কি হবে?—এই তো, পরশু আমরা এলাম; মা বললেন, তুই চলে আসতে একেবারে মন টেঁকছিল না তরু তাই…”

আমি প্রশ্ন করিলাম, “আর তোমার দিদি,—তিনি কি বললেন?”

তরু বলিল, “অত জিজ্ঞেস করতে যাইনি আমি। এলেন চলে, কেমন আমোদ হবে তা নয় কেন এলে, কি করতে এলে—এই ক’রে তাকে উস্তমধুস্তম ক’রে তাড়াই…মাস্টারমশাই যেন কী!”

রাগের ভান করিতে গিয়া তরু হাসিয়া ফেলিল।

মীরার সঙ্গে দেখা হইল। এই দুইটি দিনে কত পরিবর্তন। মীরা রাঁচিতে স্বাস্থ্যের যাহা কিছু সঞ্চয় করিয়াছিল সব যেন দিয়া আসিয়াছে, বরং তাহার পূর্ব স্বাস্থ্য থেকে কিছু লইয়া। মুখে একটা আকুল, সশঙ্ক ভাব, খুব চাপা মেয়ে, তবু সেটা খুব প্রকট। নিজেই বলিল, “চলে এলাম। তরু চলে আসতে বাড়িতে যেন ফাঁকা ঠেকতে লাগল; এমন জানলে তরুকে আসতে দিতাম না।”

মুখের ভাবটা একটু অপ্রতিভ; বক্তা আর শ্রোতা দু-জনেই যখন ভিতরে ভিতরে জানে যে একটা মিথ্যা কথা বলা হইতেছে, সেই সময় বক্তার মুখের ভাবটা যেমন হয় আরকি।

মানানসই কিছু মুখে জোগাইল না, বলিলাম, “একটু তাড়াতাড়ি হ’য়ে গেল যেন!”

“তা গেল।”—বলিয়া একটু হাসিবার চেষ্টা করিয়া মীরা চলিয়া গেল। যাহা হউক প্রথম দেখা হওয়ার সংকোচটা কাটিল এক রকম করিয়া।

কিন্তু তাহার পর দিন-দিনই জীবন হইয়া উঠিতে লাগিল দুর্বহ। সমস্ত রাখিতে হইতেছে, …মেলামেশা, হাসি-আলাপ, কিন্তু প্রাণহীণ পরিশ্রম একটা; যেন তীব্র স্রোত আর প্রতিকূল বায়ুর বিরুদ্ধে গুণ টানিয়া একটা নৌকা বাহিয়া চলিয়াছি। মীরার মুখেও সেই ক্লান্তি আর অবসাদ।

তবে একটা বিষয় লক্ষ্য করিতেছি, বরং অনুভব করিতেছি বলা চলে, কেন-না মীরা যাহা ভাবে তাহা লক্ষ্যের বাহিরে রাখে;—অনুভব করিতেছি মীরা কিছু যেন বলিতে চায়। সুবিধা খুঁজিতেছে, কিন্তু চায় না এবার সুবিধাটা আমি সৃষ্টি করি—আমি একটু অগ্রসর হই, তাহা হইলে মীরা বলিবে কিছু।

কিন্তু আমি অগ্রসর হইতে পারিতেছি না। বেশ বুঝিতেছি দুইজনের মধ্যেই একটা ভ্রান্তি আছে কোথাও, দুইটা কথাতেই সব পরিষ্কার হইয়া যাইতে পারে; কিন্তু তবুও অগ্রসর হইতে পারিতেছি না। সৌদামিনী হইয়াছে বাধা, আমার পায়ের নিগড়।

ভাবি—কর্তব্যের গুরুভার লইয়াছি মাথায় তুলিয়া; আমার জীবনে প্রেমের হইয়াছে অবসান। যাহাকে বিদায় দিলাম আবার তাহাকে ফিরাইয়া আনিয়া, বিড়ম্বিত করি কেন?

শুধু এইটুকু নয়। আমার ক্ষুণ্ণ আত্মাভিমানও বিদ্রোহী হইয়া উঠে এক-একবার। ভাবি, আমার তো সবই আছে; মীরার স্বয়ংবর সভায় নিজেকে দাঁড় করাইয়া দেখিয়াছি মাত্র অর্থে আমি বড় নই এই অপরাধে মীরার ভালবাসা ও শুদ্ধভাবে আমায় স্পর্শ করিবে না?—তাহাতে থাকিবে ঘৃণায় খাদ মেশানো?—সমাজে সে আমায় লইয়া পড়িবে লজ্জায়?

তাহার চেয়ে আসুক সৌদামিনী। ও আমায় ভালবাসিবে ভালবাসার পূর্ণ নির্মলতায, যেমন অম্বুরী ভালবাসে অনিলকে—একেবারে আত্মবিলোপ। হয়তো ওকে আমিও একদিন প্রতিদান দিতে পারিব; আজ যাহা মাত্র করুণার আকারে দেখা দিয়াছে, আজ যেটাকে বলিতেছি সহানুভূতি, কাল তাহাই বোধ হয় অনাবিল প্রেম হইয়া ফুটিয়া উঠিবে, কে জানে? কতটুকুই বা তফাত এ-দুয়ের মধ্যে?…সদুর সঙ্গে সাক্ষাতে আরও একটা নূতন জিনিসের সন্ধান পাইলাম। প্রথমবারের কথাবার্তার বাঁধুনি আর এবারের কথাবার্তার বাঁধুনির মধ্যে অনেক প্রভেদ। প্রথম বারের লঘুভাবের কথাবার্তায় আত্মগোপন করিতে পারিয়াছিল, এবারে ভাবের উচ্ছ্বাসে পারে নাই। দেখিলাম ওর বলার ভঙ্গি, ওর ভাব, ওর আদর্শ, সবই উচ্চ-স্তরের। অনিল বলিয়াছিল সদু দুর্লভ নারী-রত্ন, গলার হার করিয়া পরিবার জিনিস। তা এক বর্ণও মিথ্যা নয়।

এক-এক সময় আবার সমস্ত তর্ক-বিতর্ক ছিন্ন করিয়া, অন্তরের সমস্তটা পূর্ণ করিয়া দাঁড়ায় মীরা, হৃদয়ের অধীশ্বরীর বেশে। বুঝি, একমাত্র ওকেই চাহিয়াছি জীবনে। যেমন প্রীতি দিয়া, তেমনি ঘৃণা দিয়া ও আমার প্রেমকে উদ্রিক্ত করিয়াছে।…বিস্মিত প্রশ্ন হইবে—ঘৃণা আবার ভালবাসা জাগায়?…হ্যাঁ, নারীর ঘৃণা ভালবাসাই জাগায়, কয়লার তীব্র চাপে মনের খনিতে হীরাহ উৎপন্ন হয়। এ-তত্ত্ব অবশ্য আপনাদের জানিবার কথা নয়। সাধ্বী চরণে বঙ্গললনার প্রীতি অর্ঘ্যই পাইয়া আসিয়াছেন বরাবর।…কী অসহ্য অবস্থা!—দেবতার মত সর্বক্ষণ পূজার পরিমণ্ডলের মধ্যে অবস্থান! অহরহ সেই একই মন্ত্রের পুনরাবৃত্তি শুনিতে থাকা!

কি বলিতে কোথায় আসিয়া পড়িলাম। হ্যাঁ, মীরা যেন চায় আমি ওকে একটু সুবিধা করিয়া দিই, এক সময় ও যেমন আমায় সুবিধা করিয়া দিয়াছিল ডায়মণ্ড হারবার রোডে। আমি একটু সুবিধা করিয়া দিলেই ও যেন আমায় কি বলিবে।

কিন্তু মনের এই নানা রকম দ্বিধাদ্বন্দ্বে আমি আর তার সুযোগ দিতেছি না, বরং সাধ্যমত এড়াইয়া চলিতেছি।

এই অবস্থা চলিয়াছে দিনের পর দিন ধরিয়া।

সাঁতরা হইতে আসিবার পরদিন সকালেই অপর্ণা দেবী ডাকিয়া পাঠাইলেন। বলিলেন, “কেমন আছ তাই জিজ্ঞেস করবার জন্যে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। রাঁচিতে শেষ দিকটা তোমায় খারাপই দেখলাম কি না। হঠাৎ চলে এসে, কিছু দেখলে না, শুনলে না…”

কিছু সন্ধান করিতেছেন এইভাবে মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন। আমার সেই এক কথা—নিম্নকণ্ঠে বলিলাম, “ভাবলাম—মিছিমিছি কলেজের পার্সেণ্টেজটা নষ্ট করব…”

বলিলেন “হ্যাঁ, সেকথা ঠিকই।” কিন্তু বেশ বুঝিলাম কথাটা বিশ্বাস করিলেন না, অবশ্য আশাও করি নাই যে বিশ্বাস করিবেন।

খানিকটা এদিক-ওদিক কথার পর সহসা প্রশ্ন করিলেন, “হ্যাঁ, মীরা হঠাৎ চলে এল কেন? জান তার কারণ?”

উনি উত্তর চাহেন নাই, আশাও করেন নাই, শুধু আমার মুখের ভাবটা লক্ষ্য করিবার জন্য প্রশ্নটা হঠাৎ করিলেন; করিয়াই নিজে হইতেই বলিলেন, “আর জানবেই বা কোথা থেকে তুমি?”

আমি অস্বস্তির ভাবটা কাটাইবার জন্যই বলিলাম, “আমায় তো বললেন—তরু চলে আসাতে…”

অপর্ণা দেবী বলিলেন, “সে তো আমায়ও বলেছিল।…তাই হবে বোধ হয়।”

একবার চোখ তুলিয়া চাহিয়া দেখি—মুখের পানে চাহিয়া আছেন।

অন্যান্য কিছু কথার পর উঠিয়া আসিলাম। আসিবার সময় একটি দীর্ঘশ্বাসের শব্দ কানে এল।

মিস্টার রায়ও জানেন। শুধু জানা নয়, তিনি ভাঙাটা জোড়া দেওয়ার জন্যও বোধ হয় সচেষ্ট।

তরু আমায় বলিল, “আপনার বিলেতে যাওয়া এক রকম ঠিক মাস্টার মশাই।”

প্রশ্ন করিলাম, “কি ক’রে টের পেলে।”

“বাবা আজ দিদিকে বলছিলেন কিনা, আমিও ছিলাম সেখানে। বলছিলেন, এম-এ-টা দিয়েই আপনি বিলেত চলে যাবেন ব্যারিস্টারি পড়তে। বললেন…আপনার সঙ্গে নাকি কথাও ঠিক হ’য়ে গেছে বাবার।”

বুঝিলাম যাহাতে স্থায়িভাবে একটা বিপর্যয় না ঘটে আমাদের মধ্যে, সেই জন্য মিস্টার রায় কন্যার সন্মুখে আমার ভবিষ্যতের উজ্জ্বল চিত্রটি খুলিয়া ধরিয়াছেন। হাসিও পাইল একটু; ভাবিলাম যৌবন গেলে যৌবনের সব কথাই কি ভোলে মানুষে? যশ-প্রতিষ্ঠার কল্পিত বাঁধ দিয়া প্রাণের ভাঙন রোধ করিতে যাওয়া!

আপনা হইতেই একটা প্রশ্ন বাহির হইয়া গেল, “তোমার দিদি কি বললেন?”

তরু উত্তর করিল, “বললেন—বেশ তো বাবা।”

একটি দ্বীর্ঘশ্বাসের শব্দ শুনিয়া তরু আমার মুখের পানে চাহিল।

সেদিন রাত্রে পড়িতে পড়িতে তরু বারকতক চকিত দৃষ্টিতে আমার মুখের পানে চাহিল, তাহার পর একবার প্রশ্ন করিয়া বসিল, “হ্যাঁ, একটা কথা শুনেছেন বোধ হয় মাস্টারমশাই?”

জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি কথা?”

“রণেনদা আসছেন যে!—রাঁচির রণেনদা, মনে আছে বোধ হয়?”

ভাবটা এমন দেখাইল যেন আচমকা মনে পড়িয়া গেছে, কিন্তু বেশ বুঝিলাম ও অনেকক্ষণ থেকেই কথাটা বলিবার চেষ্টা করিতেছিল, শুধু মন স্থির করিয়া উঠিতে পারিতেছিল না।

বলিলাম, “বেশ ভাল কথা। আলাপ করা যাবে, সেখানে ভাল ক’রে আলাপ হয়নি। কবে আসবেন?”

তরু আমার মুখের উপর আর একবার চকিতে দৃষ্টিপাত করিয়া চক্ষু নামাইয়া বলিল, “আসছেন রবিবার দিন; আজ বিকেলে টেলিগ্রাম এল। মা বলে দিয়েছেন কিনা কলকাতায় এলে নিশ্চয় দেখা করতে।”

আবার ক্ষণিকের জন্য চক্ষু তুলিয়া বলিল, “দিদিও বলে দিয়েছিলেন।”

বিকাল থেকেই কেমন একটা গুমট গরম, অকস্মাৎ যেন আরও বাড়িয়া গিয়াছে। উঠিয়া গিয়া জানালার সামনে দাঁড়াইয়া বাহিরের দিকে তাকাইয়া আছি। সন্ধ্যার আকাশে গুটি তিন-চার তারা ছিল, দিকরেখার উপর আর একটি স্পষ্ট হইয়া উঠিতেছে। অন্যমনস্ক হইয়া গিয়াছিলাম, নিরভিনিবেশ পাঠের গুনগুনানির মধ্যে তরু একবার প্রশ্ন করিয়া উঠিল, “আচ্ছা মাস্টারমশাই, ব্যারিস্টার ভাল, না ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট?”

কষ্টও হয়, হাসিও পায়, বেচারি তরুর মনে পর্যন্ত উদ্বেগের ছোঁয়াচ! কি উত্তর দেওয়া যায়? ব‍্যারিস্টারকে, অর্থাৎ ভাবী ব্যারিস্টার শৈলেন মুখার্জিকে ডেপুটি রণেন চৌধুরীর কাছে খুব ছোট করিয়া দিতে পারিতাম, কিন্তু স্বয়ং তরুর পিতাই ব্যারিস্টার, পেশাটাকে খেলো করা যায় না! মাঝামাঝি একটা উত্তর দিলাম, “ব্যারিস্টার অবশ্য স্বাধীন ব্যবসা, তার কথাই নেই, তবে ডেপুটিরাও শেষ পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট হ’য়ে একটা জেলার মালিক হ’য়ে বসতে পারে!”

উত্তরের জন্য যে তরুর বিশেষ কৌতূহল ছিল এমন নয়। বইয়ের উপর মাথাটা ঝুকাইয়া দিয়া বলিল, “হোকগে মালিক; আমি এখন গ্রামারটা আগে সেরে নিই। এত ক’রে পড়া দিয়ে দেয় নতুন সিস্টার!”

গুন্‌গুনানি আরম্ভ করিয়া দিল।