উৎসর্গ

সুর-সুন্দর শ্রীনলিনীকান্ত সরকার

করকমলেষু

বন্ধু আমার! পরমাত্মীয়! দুঃখ-সুখের সাথী!

তোমার মাঝারে প্রভাত লভিল আমার তিমির রাতি।

চাওয়ার অধিক পেয়েছি–বন্ধু আত্মীয় প্রিয়জন,

বন্ধু পেয়েছি–পাইনি মানুষ, পাইনি দরাজ মন।

চারিদিক হতে বর্ষেছে শিরে অবিশ্বাসের গ্লানি,

হারায়েছি পথ–আঁধারে আসিয়া ধরিয়াছ তুমি পাণি।

চোখের জলের হয়েছ দোসর, নিয়েছ হাসির ভাগ,

আমার ধরায় রচেছে স্বর্গ তব রাঙা অনুরাগ।

হাসির গঙ্গা বয়েছে তোমার অশ্রু-তুষার গলি,

ফুলে ও ফসলে শ্যামল করেছে ব্যথার পাহাড়তলি!

আপনারে ছাড়া হাসায়েছ সবে হে কবি, হে সুন্দর;

হাসির ফেনায় শুনিয়াছি তব অশ্রুর মরমর!

তোমার হাসির কাশ-কুসুমের পার্শ্বে বহে যে ধারা,

সেই অশ্রুর অঞ্জলি দিনু, লহো এ ‘বাঁধন-হারা’।

কলিকাতা

২৪ শ্রাবণ ১৩৩৪।

নজরুল