(সিংহ-বিক্রীড় ছন্দে)

নাচায় প্রাণ
রণোন্মাদ-
বিজয়-গান,
গগনময়
মহোৎসব।
রবির পথ
অরুণ-যান
কিরণ-পথ
ডুবায় মেঘ-
মহার্ণব॥
মেঘের ছায়
শীতল কায়
ঘুমায় থির
দিঘির জল
অথই থই।
তৃষায় ক্ষীণ
‘ফটিক জল’
‘ফটিক জল’
কাঁদায় দিল
চাতক ওই॥
মাঠের পর
সোহাগ-ঢল
জলদ-দ্রব
ছলাৎছল
ছলাৎছল
পাহাড়-গায়
ঘুমায় ঘোর
অসিত মেঘ-
শিশুর দল
অচঞ্চল॥
বিলোল-চোখ
হরিণ চায়
মেঘের গায়,
চমক খায়
গগন-কোল,
নদীর-পার
চখির ডাক
‘কোয়াককো’
বনের বায়
খাওয়ায় টোল॥
স্বয়ম্ভূর
সতীর শোক-
ধ্যানোম্মাদ-
নিদাঘ-দাব
তপের কাল
নিশেষ আজ!
মহেশ্বর
উমার গাল
চুমার ঘায়
রাঙায় লাল॥
*
(অনঙ্গশেখর ছন্দে)
এবার আমার
বিলাস শুরু
অনঙ্গশেখরে।
পরশ-সুখে
শ্যামার বুকে
কদম্ব শিহরে।
কুসুমেষুর
পরশ-কাতর
নিতম্ব-মন্থরা
সিনান-শুচি
স-যৌবনা
রোমাঞ্চিত ধরা॥
ঘন শ্রোণির,
গুরু ঊরুর,
দাড়িম-ফাটার ক্ষুধা
যাচে গো আজ
পরুষ-পীড়ন
পুরুষ-পরশ-সুধা।
শিথিল-নীবি
বিধুর বালা
শয়ন-ঘরে কাঁপে,
মদন-শেখর
কুসুম-স্তবক
উপাধানে চাপে॥
আমার বুকের
কামনা আজ
কাঁদে নিখিল জুড়ি,
বনের হিয়ায়
তিয়াস জিয়ায়
প্রথম কদম-কুঁড়ি।
শাখীরা আজ
শাখায় শাখা
পাখায় পাখায় বাঁধা,
কুলায় রচে,
মনে শোনে
শাবক শিশুর কাঁদা॥
তাপস-কঠিন
উমার গালে
চুমার পিয়াস জাগে,
বধূর বুকে
মধুর আশা
কোলে কুমার মাগে!
তরুণ চাহে
করুণ চোখে
উদাসী তার আঁখি,
শোনে, কোথায়
কাঁদে ডাহুক
ডাহুকের ডাকি!
এবার আমার
পথের শুরু
তেপান্তরের পথে,
দেখি হঠাৎ
চরণ রাঙা
মৃণাল-কাঁটার ক্ষতে।
ওগো আমার
এখনও যে
সকল পথই বাকি,
মৃণাল হেরি
মনে পড়ে
কাহার কমল-আঁখি!