বিদায়-বেলায়
তুমি
অমন করে গো বারে বারে জল-ছল-ছল চোখে চেয়ো না,
জল ছলছল চোখে চেয়ো না।
ঐ
কাতর-কন্ঠে থেকে থেকে শুধু বিদায়ের গান গেয়ো না,
শুধু বিদায়ের গান গেয়ো না॥
হাসি দিয়ে যদি লুকালে তোমার সারা জীবনের বেদনা,
আজো তবে শুধু হেসে যাও, আজ বিদায়ের দিনে কেঁদো না।
ঐ ব্যথাতুর আঁখি কাঁদো-কাঁদো মুখ
দেখি আর শুধু হুহু করে বুক!
চলার তোমার বাকি পথটুকু—
পথিক! ওগো সুদূর পথের পথিক—
হায়,
অমন করে ও অকরুণ গীতে আঁখির সলিলে ছেয়ো না,
ওগো আঁখির সলিলে ছেয়ো না॥
দূরের পথিক! তুমি ভাব বুঝি
তব ব্যথা কেউ বোঝে না,
তোমার ব্যথার তুমিই দরদী একাকি,
পথে ফেরে যারা পথ-হারা,
কোন
গৃহবাসী তারে খোঁজে না,
বুকে
ক্ষত হয়ে জাগে আজো সেই ব্যথা-লেখা কি?
দূর
বাউলের গানে ব্যথা হানে বুঝি শুধু ধূধূ মাঠে পথিকে?
এ যে
মিছে অভিমান পরবাসী! দেখে ঘর-বাসীদের ক্ষতি কে!
তবে জান কি তোমার বিদায়-কথায়
কত বুকভাঙা গোপন ব্যথায়
আজ কতগুলি প্রাণ কাঁদিছে কোথায়—
পথিক! ওগো অভিমানী দূর পথিক!
কেহ
ভালবাসিল না ভেবে যেন আজও
মিছে ব্যথা পেয়ে যেয়ো না,
ওগো
যাবে যাও, তুমি বুকে ব্যথা নিয়ে যেয়ো না॥
দৌলতপুর, কুমিল্লা
বৈশাখ ১৩২৮