স্তব্ধ বাদল

নীল-গগনের নয়ন-পাতায়
নামল কাজল-কালো মায়া।
বনের ফাঁকে চমকে বেড়ায়
তারই সজল আলোছায়া॥
তমাল তালের বুকের কাছে
ব্যথিত কে দাঁড়িয়ে আছে
দাঁড়িয়ে আছে।
ভেজা পাতায় ওই কাঁপে তার
আদুল ঢলঢল কায়া॥
যার
শীতল হাতের পুলক-ছোঁয়ায়
কদমকলি শিউরে ওঠে,
জুইকুঁড়ি সব নেতিয়ে পড়ে
কেয়াবধূর ঘোমটা টুটে।
আহা!
আজ কেন তার চোখের ভাষা
বাদল-ছাওয়া ভাসা-ভাসা–
জলে-ভাসা?
দিগন্তরে ছড়িয়েছে সেই
নিতল আঁখির নীল আবছায়া॥
ও কার
ছায়া দোলে অতল কালো
শালপিয়ালের শ্যামলিমায়?
আমলকি-বন থামল ব্যথায়
থামল কাঁদন গগন-সীমায়।
আজ
তার বেদনাই ভরেছে দিক,
ঘরছাড়া হায় এ কোন পথিক,
এ কোন পথিক?
এ কী
স্তব্ধতারই আকাশ-জোড়া
অসীম রোদন-বেদন-ছায়া।

কুমিল্লা

আষাঢ় ১৩২৯