যাহা কিছু ছিল মোর মাঝে অসুন্দর

অশিব ভয়াল মিথ্যা অকল্যাণকর

আত্ম-অভিমান হিংসা দ্বেষ-তিক্ত ক্ষোভ –

নিমেষে লুকাল কোথা, স্নিগ্ধশ্যাম ছোপ

সুন্দরের নয়নের মণি লাগি মোর প্রাণে!

পুবের পরিরে নিয়া অস্তদেশ পানে

এইবার দিনু পাড়ি। নটনটী-রূপে

গ্রীষ্মদগ্ধ তাপশুষ্ক মারী-ধ্বংস-স্তূপে

নেচে নেচে গাই নবমন্ত্র সামগান

শ্যামল জীবন-গাথা জাগরণ-তান!

*

এইবার গাহি নেচে নেচে,

রে জীবন-হারা, ওঠ বেঁচে!

রুদ্র কালের বহ্নি-রোষ

নিদাঘের দাহ গ্রীষ্ম-শোষ

নিবাতে এনেছি শান্তি-সোম,

ওম্ শান্তি, শান্তি ওম!

জেগে ওঠ্ ওরে মূর্ছাতুর!

হোক অশিব মৃত্যু দূর!

গাহে উদ্‌গাতা সজল ব্যোম,

ওম্ শান্তি, শান্তি ওম!

ওম্ শান্তি, শান্তি ওম!

ওম্ শান্তি, শান্তি ওম॥

*

এসো মোর শ্যাম-সরসা

ঘনিমার হিঙুল-শোষা

বরষা প্রেম-হরষা

প্রিয়া মোর নিকষ-নীলা

শ্রাবণের কাজল গুলি

ওলো আয় রাঙিয়ে তুলি

সবুজের জীবন-তুলি,

মৃতে কর প্রাণ-রঙিলা॥

আমি ভাই পুবের হাওয়া

বাঁচনের নাচন-পাওয়া,

কারফায় কাজরি গাওয়া,

নটিনীর পা-ঝিনঝিন!

নাচি আর নাচনা শেখাই

পুরবের বাইজিকে ভাই,

ঘুমুরের তাল দিয়ে যাই –

এক দুই এক দুই তিন॥

বিল ঝিল তড়াগ পুকুর

পিয়ে নীর নীল কম্বুর

থইথই টইটম্বুর!

ধরা আজ পুষ্পবতী!

শুশুনির নিদ্রা শুষি

রূপসি ঘুম-উপোসি!

কদমের উদমো খুশি

দেখায় আজ শ্যাম যুবতি॥

হুরিরা দূর আকাশে

বরুণের গোলাব-পাশে

ধারা-জল ছিটিয়ে হাসে

বিজুলির ঝিলিমিলিতে!

অরুণ আর বরুণ রণে

মাতিল ঘোর স্বননে

আলো-ছায় গগন-বনে

‘শার্দূল বিক্রীড়িতে।’

*