সাম্প্রতিক সংযোজন
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » দশম কল্প : উইলপাঠ
মোহনলালবাবু সৰ্ব্বদাই ব্যস্ত, সৰ্ব্বক্ষণ চঞ্চল। কি জন্য যে তত ব্যস্ততা, সকল লোকে সেটা অনুভব কোত্তে পাল্লে না। মোহনলালের শোক অপেক্ষা উদ্বেগ অধিক, সেটা আমি বেশ বুঝতে পাল্লেম। সংসারের প্রকৃতি এই যে, যাদের সঙ্গে শোণিত-সম্পর্ক, যাদেরContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » নবম কল্প : খুন!!!
চৈত্রমাস অতিক্রান্ত। বৈশাখ মাস আগত। বৈশাখে গ্রীষ্মাতিশয্য অনুভব হয়, প্রায় প্রত্যহ অপরাহ্ণে, আকাশে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণের মেঘোদয় হয়, এক একদিন বাতাসে উড়ায়, এক একদিন বৃষ্টি পড়ে; ছোট ঝটিকা প্রায় প্রতিদিন; তথাপি এ দেশে বৈশাখমাসে বসন্ত-ঋতুরContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » অষ্টম কল্প : সব নূতন
>ভূমিষ্ঠ হবার পর ক্রমশঃ জ্ঞানোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশু যেমন জগৎসংসারের সমস্ত পদার্থই নূতন দেখে, বর্দ্ধমানে সর্ব্বানন্দবাবুর পবিত্র আশ্রমে আশ্রয় পেয়ে আমিও সেইরূপ সমস্ত পদাথই নূতন দেখতে লাগলেম। যা দেখি, সমস্তই নূতন; যা যা শুনি, আমারContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » সপ্তম কল্প : জামাইবাবু
বাবুর নাম সর্ব্বানন্দ মুস্তফী;—বসু মস্তফী। পুত্রসন্তান নাই, তিনটী কন্যা। জ্যেষ্ঠা কন্যার নাম শ্যামাসুন্দরী, মধ্যমা উমাকালী, কনিষ্ঠা আশালতা। বড়মেয়েটী বিধবা, মেজোটী সধবা, ছোটটী অবিবাহিতা, বয়ঃক্রম প্রায় দশ বৎসর। বাবুর বাড়ীতেই আমি থাকলেম। বাবু মহৎলোক, নামলব্ধ জমীদার,Continue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » ষষ্ঠ কল্প : নূতন আশ্রয়
রাস্তার ধারে ধারে অনেকগুলি বাড়ী। ঠাঁই ঠাঁই ভাল ভাল অট্টালিকা। কোন কোন বাড়ীতে কি কি রকমের লোক থাকেন, বোধ হয়, ঘনশ্যামের জানা ছিল, সে আমার হাত ধোরে ধীরে ধীরে এক একখানা বাড়ীর দেউড়ীতে গিয়ে দাঁড়ালো,Continue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » পঞ্চম কল্প : দালালী ইস্তাহার
ঘনশ্যাম হঠাৎ আমাকে জিজ্ঞাসা কোল্লেন, “কেমন ছোকরা! এখানকার কাজকর্ম্মের ধরণ-ধারণ সব দেখলে শুনলে? অনেক লোক এখানে অনেক রকম কাজ করে, বেশ দশ টাকা রোজগার করে; কোন কাজে তোমার মন যায়, সেইটী জানবার জন্যই এই বাড়ীতেContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » চতুর্থ কল্প : দালালের বাড়ী
আমি বকুলতলায়। বাড়ীর পশ্চিমদিকে বকুলগাছ। যাকে আমি বাড়ীর ভিতর দেখেছিলেম, তার চেহারা-বর্ণনে বোলে রেখেছি, বর্ণ-ঘনশ্যাম। ঠাকুরাণীর সহিত তার যখন কথোপকথন হয়, তখন শুনেছি, ঠাকুরাণী তাকে ঘনশ্যাম বোলে সম্বোধন কোরেছিলেন। আমার বর্ণনা নিরর্থক হয় নাই। লোকটারContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » তৃতীয় কল্প : পরামর্শ
সন্ধ্যা হলো। পল্লীগ্রামের সন্ধ্যাকাল। সহরের সন্ধ্যাকালের ন্যায় রাজমার্গগুলি আলোর মণ্ডিত হয় না, জনকোলাহল বাড়ে না, ঢোলকতবলা বাজে না, স্বরলহরী উঠে না, পাহারার আঁটা-আঁটি হয় না, চোর-গাঁটকাটা ঘোরে না, গাড়ী-ঘোড়াও ছোটে না, এ প্রকার কিছুই হয়Continue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » দ্বিতীয় কল্প : উপায় কি?
আরো দুই মাস কেটে গেল। গুরুপত্নী মুখ ফুটে আমাকে কিছু বোলতে পারেন না, আমিও নিজের ভাগ্যফল নিজে কিছু জানতে পারি না, মন কিন্তু সৰ্ব্বদাই অস্থির। যাঁর আশ্রয়ে থাকা, তাঁর অবস্থা প্রতিকূল, তিনি তাঁর নিজের আরContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » প্রথম কল্প : পাঠশালা
শিশুকাল থেকে চতুর্দ্দশ বর্ষ বয়সক্ৰম পৰ্য্যন্ত আমি গুরুগৃহে ছিলেম। আমার গুরুদেবের বাসস্থান কোথায় ছিল, শিশুকালে ঠিক জানতে না পেরে, পূর্ব্বে আমি বোলেছিলেম সুবর্ণগ্রাম। কথাটা ভুল ছিল; দেশের ভূগোলে তখন আমার জ্ঞান ছিল না, এখন বুঝ্তেContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রথম খণ্ড » প্রথম খণ্ড : অতি আশ্চর্য্য
অতি আশ্চর্য্য ১৩১০ বঙ্গাব্দ। সূচনা : আমি কে? আমি হরিদাস। বত্রিশ বৎসর পূর্ব্বে আমি এই বাঙ্গালাদেশেই ছিলাম। সেই সময় আমার বাল্যজীবনের কতক কতক পরিচয় দিয়াছি। জন্মাবধি কতদিন পর্য্যন্ত মাতাপিতা জানিতাম না, আপন বলিয়া কাহাকেও চিনিতামContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » প্রকাশকের নিবেদন
“……কিন্তু কাব্যের সঙ্গে দ্বিতীয়বার পরিচয় ঘটলো এবং বেশ মনে পড়ে এইবারে পেলাম তার প্রথম সত্য পরিচয়। এরপরে এ বাড়ির উকীল হবার কঠোর নিয়ম-সংযম আর ধাতে সইলো না; আবার ফিরতে হলো আমাদের সেই পুরোনো পল্লী-ভবনে। কিন্তুContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
সাহিত্যিক ভুবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (১৮৪২-১৯১৬) একজন বাঙালী অনুবাদক, সম্পাদক, সাহিত্যিক। তিনি ১৮৪২ সালের ১০ জুলাই মাতামহাশ্রম চব্বিশ পরগণার অন্তর্গত বারুইপুর সন্নিহিত শাসন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যে ভুবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রধানত মিশনরী স্কুলে অধ্যয়ন করেন। অল্প বয়স হতেইContinue Reading
হরিদাসের গুপ্তকথা » হরিদাসের গুপ্তকথা
গ্রন্থপরিচয় ‘হরিদাসের গুপ্তকথা’ নামের বইটি বেশ দুষ্প্রাপ্য। বইটি সম্পর্কে অনেকের ধারণা যে এটি বোধহয় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আপাত নিষিদ্ধ ধরনের কোন বই। কিন্তু বইটি এককালে বেশ জনপ্রিয় ছিল। বইটির লেখক শ্রীভুবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়Continue Reading
ঈশ্বরের বাগান » ষোল
জানালা থেকে রোদ নেমে গেলেই কাবুলের চঞ্চলতা বাড়ে। বড় সুসময় বয়ে যাচ্ছে। বাবুর্চিপাড়া, বাবুপাড়া, কেরাণী পাড়ার ঘরগুলিতে এখন পুরুষদের সংখ্যা কম। কাজ কম্মের ধান্দায় দশটার আগেই পাড়া খালি করে তারা বের হয়ে যায়। তখন কাবুলContinue Reading
কল্লোল যুগ » বার
রবীন্দ্রনাথকে প্রথম কবে দেখি? প্রথম দেখি আঠারোই ফাল্গুন, শনিবার, ১৩৩০ সাল। সেবার বি-এর বছর, ঢুকিনি তখন “কল্লোলে”। রবীন্দ্রনাথ সেনেট হলে কমলা-লেকচার্স দিচ্ছেন। ভবানীপুরের ছেলে, কলকাতার কলেজে গতিবিধি নেই, কোণঠাসা হয়ে থাকবার কথা। কিন্তু গুরুবলে ভিড়Continue Reading
কল্লোল যুগ » এগার
ফুটবল খেলার মাঠে দু’জন সাহিত্যিককে আমরা আবিষ্কার করি। শিবরাম চক্রবর্তী সেন্টারের কাছে গ্যালারির প্রথম ধাপে দাঁড়াত—তাকে টেনে আনতে দেরি হত না আমাদের দশচক্রে। গোলগাল নধরকান্তি চেহারা, লম্বা চুল পিছনের দিকে ওলটানো। সমস্তটা উপস্থিতি রসে-হাস্যে সমুজ্জল।Continue Reading
কল্লোল যুগ » দশ
জিজ্ঞাসা ও নৈরাশ্য, সংগ্রাম ও অপূর্ণতা এই দুই যতির মধ্যে দুলছে তখন “কল্লোলে”র ছন্দ। সে সময়কার প্রেমেনের দুটো চিঠি—প্রথমটা এই— “অচিন, আমি অধঃপাতে চলেছি। তাও যদি ভালো ভাবে যেতে পারতুম! জীবন নিয়ে কি করতে চাইContinue Reading
কল্লোল যুগ » নয়
সান-ইয়াৎ-সেন আসত “কল্লোলে”। সান-ইয়াৎ-সেন মানে আমাদের সনৎ সেন। সনৎ সেনকে আমরা সান-ইয়াৎ-সেন বলতাম। ‘অৰ্ধাঙ্গিণী’ নামে একখানা উপন্যাস লিখেছিল বলে মনে পড়ছে। আধপোড় চুরুট মুখে দিয়ে প্রায়ই আসত আড্ডা দিতে, প্রসন্ন চোখে হাসত। দৃষ্টি হয়তো সাহিত্যেরContinue Reading
কল্লোল যুগ » আট
“কল্লোল”কে নিয়ে যে প্রবল প্রাণোচ্ছাস এসেছিল তা শুধু ভাবের দেউলে নয়, ভাষারও নাটমন্দিরে। অর্থাৎ “কল্লোলে”র বিরুদ্ধতা শুধু বিষয়ের ক্ষেত্রেই ছিল না, ছিল বর্ণনার ক্ষেত্রে। ভঙ্গি ও আঙ্গিকের চেহারায়। রীতি ও পদ্ধতির প্রকৃতিতে। ভাষাকে গতি ওContinue Reading