ঐতিহাসিক সমগ্র
সিরাজের বিজয় অভিযান : ছয়
সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের ঝগড়া বাধল কেন? এর উত্তরে দেখানো যায় একাধিক কারণ।
রাজা রাজবল্লভ ছিলেন ঢাকার একজন পদস্থ রাজকর্মচারী। তহবিল তছরুপাতের অভিযোগে তিনি কারারুদ্ধ হন। সেই খবর পেয়ে তাঁর পুত্র কৃষ্ণবল্লভ পিতার সমস্ত অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে গোপনে কলকাতায় পালিয়ে যান এবং ইংরেজরাও তাঁকে আশ্রয় দিয়ে করে অন্যায়কে সমর্থন।
এই বেআইনি কার্যের প্রতিবাদ করে সিরাজ কলকাতায় ইংরেজদের কাছে দূত প্রেরণ করেন। উদ্ধত ইংরেজরা দূতকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ হচ্ছে অতিশয় গুরুতর। আলিবর্দির নির্দেশ ছিল, ইংরেজরা আর কোনও নতুন কেল্লা তৈরি করতে পারবে না এবং ইংরেজরাও মেনে নিয়েছিল এই নির্দেশ।
কিন্তু গুপ্তচরের মুখে সিরাজ খবর পেলেন, ইংরেজরা কেবল কলকাতার পুরাতন দুর্গেরই সংস্কার করছে না, বাগবাজারের খালের ধারে একটি নতুন উপদুর্গও নির্মাণ করেছে। শর্ত অনুযায়ী ইংরেজরা এ কাজ করতে পারে না এবং এটা হচ্ছে নবাবের তাঁবেদার হয়েও তাঁর প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করা। কোনও স্বাধীন নৃপতিই এমন অপমান সহ্য করতে পারেন না।
সে সময়ে সিরাজের হাত ছিল জোড়া। তাঁর আত্মীয় পূর্ণিয়ার নবাব সওকত জং তখন বিদ্রোহী হয়েছেন, নিজেকে বঙ্গ-বিহার-ওড়িশার অধীশ্বর বলে ঘোষণা করেছেন। আগে এই বিদ্রোহ দমন করা দরকার। অতএব শর্তভঙ্গ করার জন্যে প্রতিবাদ করে ইংরেজদের কাছে এক দূত পাঠিয়ে সিরাজ মুর্শিদাবাদ থেকে সসৈন্যে বেরিয়ে পড়লেন সওকতের নবাবির স্বপ্ন পণ্ড করে দেওয়ার জন্যে।
যথাসময়ে কলকাতায় গিয়ে উপস্থিত হল সিরাজের দূত। ড্রেক ছিলেন তখন কলকাতার গভর্নর। নির্বোধের মতো তিনি দেখালেন মেজাজ। নবাবের অধীন হয়েও ব্যবহার করলেন স্বাধীন রাজার মতো। তিনি পিয়নদের হুকুম দিলেন, ‘নবাবের দূতকে কলকাতা থেকে দূর করে দাও।’ তাই হল।
সিরাজ তখন যুদ্ধযাত্রা করে রাজমহলের পথ ধরেছেন। দূত যে কলকাতা থেকে গলাধাক্কা খেয়ে ফিরে এসেছে, তাঁর কানে উঠল এ খবর।
সিরাজের ক্রোধের আর সীমা রইল না। সংখ্যায় মুষ্টিমেয় একদল বিদেশি সওদাগর পদে পদে যদি নবাবের আদেশ লঙ্ঘন ও তাঁকে অপমান করতে সাহস পায়, তবে তাঁর মানমর্যাদা থাকে কোথায়?
সওকত জং দেখুক আরও দুদিন নবাবির স্বপ্ন, আগে ফিরিঙ্গিদের দর্পচূর্ণ করে তবে অন্য কাজ।
সিরাজ সেনানীদের হুকুম দিলেন, ‘আপাতত ফৌজের মুখ ফেরাও। কলকাতায় চলো, আগে কলকাতায় চলো!’
কলকাতার পথে পড়ে কাশিমবাজার। সেখানে আছে ইংরেজদের কুঠি ও কেল্লা। ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে ২৪ জুন তারিখে সেইখানে সিরাজের প্রথম সংঘর্ষ হয় ইংরেজদের সঙ্গে। কিন্তু সে সংঘর্ষ নামমাত্র। নবাবের সৈন্যরা অবলীলাক্রমে কেল্লা দখল করে ফেললে। কুঠি হল লুণ্ঠিত। বেশিরভাগ ইংরেজ হল গ্রেপ্তার। কেউ কেউ দিলে পিঠটান—তাদের মধ্যে ছিলেন ওয়ারেন হেস্টিংস।
কাশিমবাজারে ছিলেন কান্তবাবু। লোকে তাঁকে ‘কান্তমুদি’ বলেও ডাকত, কারণ তাঁর একখানি মুদির দোকান ছিল। হেস্টিংস চম্পট দিয়ে তাঁর আশ্রয় প্রার্থনা করলেন, তিনিও তাঁকে নিজের বাড়ির ভিতরে লুকিয়ে রাখলেন। হেস্টিংস এ উপকার ভোলেননি। পরে তিনি যখন হন এদেশে ইংরেজদের সর্বেসর্বা, কান্তবাবুকে বহু সম্পত্তি দিয়ে রাজ-উপাধিতে ভূষিত করেন। কাশিমবাজারের মহারাজারা কান্তবাবুরই বংশধর।
সিরাজ যে রণনীতিতে অনভিজ্ঞ ছিলেন না, এইবারে তারও পরিচয় পাওয়া গেল।
তিনি বুঝলেন, সংঘর্ষ যখন বেধেছে, তখন শত্রুদের আর হাঁপ ছাড়তে দেওয়া উচিত নয়। কারণ অবসর পেলেই তারা আটঘাট বেঁধে প্রস্তুত হয়ে উঠবে। তখন তাদের দমন করতে গেলে রীতিমতো বেগ পেতে হবে।
কাশিমবাজার দখল করবার পর বারো দিনের ভিতরেই সমস্ত তোড়জোড় ঠিক করে ফেলে সিরাজ দ্রুতবেগে ধাবমান হলেন কলকাতার দিকে।
সেখান থেকে কলকাতা হচ্ছে একশো ষাট মাইল। তখন রেলগাড়িও ছিল না, মোটরও ছিল না। কিন্তু বৃহৎ এক সেনাবাহিনী এবং আনুষঙ্গিক লোকজন ও প্রচুর লটবহর নিয়ে সিরাজ ঠিক এগারো দিনের মধ্যেই সেই একশো ষাট মাইল পথ পার হয়ে উপস্থিত হলেন কলকাতার উপকণ্ঠে।
ইংরেজদের বুক কেঁপে উঠল। সিরাজের এমন সংহার-মূর্তি, এমন ঝড়ের গতি তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি।
কলকাতায় সাজ সাজ রব উঠল।
কিন্তু শিয়রে শত্রু, সাজবার ফুরসত কোথায়?
নবাব বলতে বোঝায় তো মূর্তিমান বিলাসিতা—কাজকর্মে জড়ভরত। নবাব যে এমন দেখবার-বোঝবার আগে চিলের মতো হুস করে কলকাতার উপরে ছোঁ মারবেন, কারুর হিসাবে এটা আসেনি। ইংরেজরা ভেবেছিলেন, চোখ রাঙিয়ে আর বাক্য বীরত্ব দেখিয়েই সিরাজকে একেবারে দমিয়ে দেবেন—কিন্তু এখন এ যে উলটা বুঝিলি রাম!
ইংরেজদের সৈন্যসংখ্যা মোট চারশো তিরিশজন—তার মধ্যে খালি ইংরেজ নয়, পোর্তুগিজ, আর্মেনিয়ান ও ইউরেশিয়ান বা ট্যাঁস ফিরিঙ্গিরাও আছে। মতান্তরে ইংরেজদের দলে ছিল পাঁচশো পনেরো জন লোক।
ইংরেজদের তখন ‘ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সরদারের’ মতো অবস্থা। পুরাতন দুর্গের প্রাচীর নড়বড়ে, তারই উপরে বসানো আছে কতকগুলো সেকেলে মরচে-ধরা কামান। বারুদ স্যাঁতসেঁতে ও অকেজো।
১৬ জুন তারিখে নবাবসৈন্যরা বাগবাজারে খালের ধারে নতুন উপদুর্গ আক্রমণ করলে, কিন্তু বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারলে না, তবে অনেক সেপাই নানা জায়গায় খাল পার হয়ে শহরের ভিতরে এসে পড়ল।
ইংরেজরা স্থির করলে তারা খালি সাহেবপাড়ায় (লালদিঘির পূর্ব ও দক্ষিণ দিক) থেকে নবাবসৈন্যদের বাধা দেবে। তারা আগুন ধরিয়ে দিলে দেশিপাড়ায়, সে আগুন নিবতে লেগেছিল অনেকক্ষণ। ইউরোপীয়ানদের স্ত্রী-পুত্র ও কন্যা প্রভৃতিও দুর্গের ভিতরে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করলে।
সবচেয়ে কাহিল অবস্থা হল ইউরেশীয়ান বা ট্যাঁস ফিরিঙ্গিদের। ইংরেজরা তাদের আমল দেয় না এবং ভারতীয়দের দলেও তারা ভিড়তে পায় না। কাজেই তাদের হাল হল অনেকটা ত্রিশঙ্কুর মতো।
অবশেষে নবাবি সেপাইদের ভয়ে দলে দলে ইউরেশীয় স্ত্রী-পুরুষ দুর্গদ্বারে গিয়ে ধরনা দিতে বাধ্য হল। ইংরেজরা দুর্গদ্বার খুলে তাদের আশ্রয় দিতে নারাজ। কিন্তু তাদের কাতর ক্রন্দন এমন গগনভেদী হয়ে উঠল যে, অবশেষে তাদের জন্যেও দুর্গদ্বার খুলে দিতে হল।
ইতিমধ্যে সিরাজও কলকাতায় এসে উপস্থিত হয়েছেন। সিমলা অঞ্চলে ছিল আমিরচাঁদের বাগান, তাঁর আস্তানা হল সেইখানেই।
মেটেবুরুজেও ইংরেজদের থানা ফোর্ট নামে এক দুর্গ ছিল। ইংরেজদের তাড়িয়ে নবাবি ফৌজ সেই দুর্গ কেড়ে নিলে।
১৮ তারিখে কলকাতার উপর প্রধান আক্রমণ শুরু হল। নবাবি ফৌজ এল দুই দিক থেকে—শিয়ালদা ও পূর্ব এসপ্ল্যানেড। তারা ইংরেজদের দ্বারা পরিত্যক্ত বাড়িগুলো দখল করে ফোর্ট উইলিয়ম দুর্গের উপরে এমন প্রচণ্ড অগ্নিবৃষ্টি শুরু করলে যে, ইংরেজদের কামানগুলো হল নীরব—তারা কামানের মায়া ছেড়ে পাততাড়ি গুটিয়ে একেবারে দুর্গের অন্দরমহলে গিয়ে আশ্রয় নিলে।
সেই রাত্রেই অধিকাংশ নারীকে জাহাজে পাঠিয়ে দেওয়া হল। দুর্গরক্ষীদের অবস্থা শোচনীয়, তাদের দেহ শ্রান্ত ও উপবাসক্লিষ্ট—কারণ পাচকরা পলায়ন করেছে, খাবার রাঁধবার জন্যে কেউ নেই। তার উপরে গোলা-গুলি-বারুদও ফুরিয়ে এসেছে। যে গভর্নর ড্রেকের জন্যে এই বিপদ, তিনি তল্পিতল্পা গুটিয়ে লম্বা দিতে চাইলেন।
পরদিনের (১৯ জুন) অবস্থা আরও সঙ্গিন। আর্মেনিয়ান ও ইউরেশিয়ান সৈন্যরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আর লড়াই করতে চাইলে না। ইউরোপীয় সৈন্যদেরও প্রায় সেই অবস্থা, তারা অস্ত্রধারণ করে রইল অত্যন্ত নাচারভাবেই। অনেকেই দিশেহারা হয়ে কেল্লা ছেড়ে জাহাজে গিয়ে উঠে বসল। গভর্নর ড্রেক ও সেনাধ্যক্ষ মিঞ্চিনও প্রমাদ গুণে ‘য পলায়তি স জীবতি’ ভেবে চটপট চম্পট দিলেন জাহাজের উদ্দেশে।
আর্মেনিয়ান ও ইউরোশিয়ানদের বাদ দিলেও দুর্গের মধ্যে তখনও সক্ষম শ্বেতাঙ্গ যোদ্ধা ছিল একশো সত্তর জন। গভর্নর ও সেনাপতির কাপুরুষতা দেখে তারা খাপ্পা হয়ে উঠল। সকলে মিলে তাঁদের পদচ্যুত করে গভর্নর ও সেনাধ্যক্ষের পদে নিযুক্ত করলে হলওয়েলকে।
হলওয়েল শত্রুদের বাধা দেওয়ার শেষ চেষ্টা করলেন বটে, কিন্তু সফল হলেন না। নবাবের সেপাইদের অত্যুগ্র অগ্নিবৃষ্টির সামনে দুর্গপ্রাকারে তিষ্ঠানোই অসম্ভব, শ্বেতাঙ্গরা দলে দলে হল পপাতধরণীতলে।
সেই রাত্রে দুর্গের চারিদিককার বাড়িঘর দাউ দাউ করে জ্বলতে লাগল। ইংরেজ সৈন্যরাও তখন আর সেনানীদের হুকুম মানতে রাজি হল না, তারা মদের ভাণ্ডার লুটে বেহেড মাতাল হয়ে হই হই করে বেড়াতে লাগল। অনেক ইউরোপীয় সৈন্য দুর্গ থেকে বেরিয়ে পড়ে সিরাজের পক্ষে যোগদান করলে।
পরদিন ২০ জুন রবিবার। হলওয়েলও হাল ছাড়তে বাধ্য হলেন। গঙ্গার বুকে তখনও জাহাজের উপরে গভর্নর ড্রেক প্রভৃতি পলাতক ইংরেজরা বিরাজ করছিলেন। হলওয়েল সঙ্কেত করে তাঁদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। ড্রেক ইচ্ছা করলেই নৌকা পাঠিয়ে হলওয়েল প্রভৃতিকে উদ্ধার করতে পারতেন। কিন্তু তখন তাঁর আক্কেল গুড়ুম হয়ে গিয়েছে, আবার এই বিপদজ্জনক স্থানে এসে নবাবি গুলি হজম করবার সাহস তাঁর হল না। তারপর বীরবর বোধকরি ‘চাচা আপন বাঁচা’ প্রবাদেরই কথা স্মরণ করে জাহাজ নিয়ে সরে পড়লেন পলতার বন্দরের দিকে।
বেলা চারটের সময়ে নবাবের সৈন্যরা চারিদিক থেকে পাঁচিল টপকে কেল্লার ভিতরে লাফিয়ে পড়ল। যারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা হল কচুকাটা। হলওয়েল তখন আত্মসমর্পণ করলেন সদলবলে। কলকাতার পতন হল।
কলকাতার ও বাংলার অন্যান্য জায়গায় বিলাতি কুঠি সিরাজের হস্তগত হওয়ার ফলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কিছু কম এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। সাধারণ ব্যক্তিদেরও হারাতে হয়েছিল এক কোটি ষাট লক্ষ টাকা। ওলন্দাজ ও ফরাসি বণিকরাও ভয়ে ভয়ে সিরাজের হাত তুলে দিয়েছিলেন যথাক্রমে সাড়ে চার লক্ষ ও সাড়ে তিন লক্ষ টাকা।
তিনদিন পরে কলকাতা জয় ও ফিরিঙ্গি দলন করে সিরাজ মুর্শিদাবাদে ফিরে গিয়ে বিজয়োৎসবের আয়োজন করলেন মহাসমারোহে। (আমাদের বক্তব্য বিষয় হচ্ছে—সিরাজের বিজয়-অভিযান। সুতরাং অন্ধকূপ-হত্যার প্রসঙ্গ এখানে অবান্তর। এবং ওই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা না করবার আর একটা কারণ হচ্ছে, ও ব্যাপারটা নিয়ে ঐতিহাসিকরা পরস্পরবিরোধী মত পোষণ করেন। অবরুদ্ধ কলকাতার গভর্নর হলওয়েল বলেন, ঘটনাটা ঘটেছিল—১৪৬ জন ইংরেজ কারারুদ্ধ হয়েছিল অন্ধকূপের মধ্যে। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় এবং আরও কেউ কেউ (যেমন মিঃ লিটল) প্রমাণ করবার চেষ্টা করেছেন, অন্ধকূপ-হত্যার কাহিনি একেবারেই অমূলক। এই মত অনুসারেই ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট পর্যন্ত অবশেষে কলকাতার লালদিঘি থেকে অন্ধকূপ হত্যার স্মৃতিস্তম্ভ সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিলেন। স্যার যদুনাথ সরকার এবং আরও কারুর কারুর মতানুসারে, অন্ধকূপ, হত্যা-কাহিনি হয়তো একেবারেই ভিত্তিহীন নয়। কিন্তু হলওয়েল অত্যুক্তি করেছেন, কারণ অন্ধকূপের ২৬৭ বর্গফুট আয়তনের মধ্যে ১৪৬ জন ইংরেজের স্থান সংকুলান হওয়া অসম্ভব। খুব সম্ভব বন্দি ইংরেজদের সংখ্যা ষাটজনের বেশি ছিল না।
এখানে আর একটা কথা উল্লেখযোগ্য। অন্ধকূপ বা ‘ব্ল্যাক হোল’ হচ্ছে ইংরেজদেরই দ্বারা নির্মিত কারাগার। সিরাজ কখনও তো চোখেও দেখেননি, তার আয়তনের কথাও জানতেন না। বন্দি ইংরেজ সৈনিকরা মাতাল হয়ে রক্ষীদের মারধর করতে থাকে। রক্ষীরা সিরাজের কাছে গিয়ে অভিযোগ করে। সিরাজ জিজ্ঞাসা করেন, ‘এখানে ফিরিঙ্গিদের কোনও কারাগার আছে?’ তারা অন্ধকূপের নাম করে। সিরাজ হুকুম দেন, মাতাল ফিরিঙ্গিগুলোকে যেন তার ভিতরে আটক করে রাখা হয়। যে ডালে বসেছিল মাতলামি করে সেই ডাল কাটতে গিয়ে দুর্বৃত্ত ইংরেজদের ঝাঁপ দিতে হয়েছিল ‘স্বখাত সলিলে’ই! অন্ধকূপ হত্যা আংশিকভাবে সত্য হলেও সিরাজের উপরে কোনওই দোষারোপ করা যায় না।