হন্তারক নরদানব
কালোদেড়ের প্রভাতি ভোজ
ওদিকে তরুণ নৌসেনাপতি লেফটেনাণ্ট মেনার্ড প্রস্তুত হচ্ছিলেন যুদ্ধের জন্যে।
বোম্বেটেদের জাহাজ তখন বাহির-সমুদ্রে ছিল না, একটা খাড়ির (স্থলভাগে প্রবিষ্ট সমুদ্রের অপ্রশস্ত অংশ) ভিতরে গিয়ে নোঙর ফেলে যুদ্ধের জন্যে অপেক্ষা করছিল।
মেনার্ড বুঝলেন, তার অধীনে ‘নইম’ ও পাল’ নামে যে দুখানা প্রকাণ্ড রণতরী আছে, গভীর সাগরের আনাগোনার উপযোগী করে তারা গঠিত। একে তো খাড়ির জলপথ সংকীর্ণ, উপরন্তু চড়া পড়েছে তার যেখানে-সেখানে—বড়ো জাহাজ ঢুকলেই চড়ায় আটকে অচল ও অকেজো হয়ে পড়বে। কালোদেড়ের চালাকি বুঝে নিয়ে রণকুশলী মেনার্ড তার ফাঁদে ধরা পড়তে রাজি হলেন না। তিনি ‘স্নুপ’ বা এক-মাস্তুলের দুখানা অপেক্ষাকৃত ছোটো ও হালকা জাহাজ নির্বাচন করলেন—তারা অগভীর জলেও চলা-ফেরা করতে পারবে অনায়াসেই। তার উপরে তাদের আরও হালকা করবার জন্যে ভারী ভারী কামানগুলোও সরিয়ে ফেলা হল। পরিবর্তে আমদানি করা হল গাদি গাদি বন্দুক—বড়ো কামানের অভাব পূরণ করবে তাদের সংখ্যাধিক্যই।
খবর নিয়ে জানা গেল, বোম্বেটেদের দলে পঁচিশজনের বেশি লোক নেই, কারণ কালোদেড়ে অতিরিক্ত লাভের লোভে দল অতিশয় হালকা করে ফেলেছে। মেনার্ড সঙ্গে নিলেন প্রায় পঞ্চাশজন সৈন্য। পঞ্চাশজন বন্দুকধারীর সামনে দাঁড়ালে পঁচিশজনকে পড়তে হবে যার-পর-নাই বেকায়দায়— এই ছিল তার ধ্রুবধারণা।