ঝিঁঝিঁর খেলা
ভাজা চাল, ভিজা ছোলা—
মুটি মুটি খায়,
আপনার গাভী পানে
নয়ন হেলায়।
শামলী ধবলী গাভী
কেমন দেখায়,
খুঁটি খুঁটি ঘাস খায়
গুটি গুটি যায়।
বড় বড় বিঁঝিঁগুলা
মাথার উপরে,
ঝাঁকে ঝাঁকে অবিরত
ঝল ঝল করে,
হলুদ মাখান পাখা
অতি সে চিকণ,
কাল কাল আঁজি তায়,
শিরের মতন;
উলটি পালটি যায়,
ফর ফর করি,
মুখে মুখ দিয়া যায়
বহু দূরে সরি;
পাখায় পাখায় লাগে
লাফাইয়া উঠে,
তীর বেগে এক দিকে
চলি যায় ছুটে,
থক থক করি ফিরে
থামা দিতে দিতে;
চরকির মত কভু
লাগয়ে ঘুরিতে।
আতসে মাতয়ে ঝিঁঝিঁ,
খেলায় বাতাসে;
পাতলা পাতলা ছায়া
ভেসে যায় ঘাসে।
উড়িতে উড়িতে ঝিঁঝিঁ
বিরামের তরে,
গা-ভাসান দিয়া সব
দাঁড়ায় নিথরে,—
নীল চাঁদোয়ায় যেন
পাখী আঁকিয়াছে,
জোড়া জোড়া পাখা কেন?
ভুল করিয়াছে!
ভুল নয়! ভুল নয়!
আঁকে নাই কেহ,
আকাশের গায়ে অই
ফড়িঙের দেহ,
ঈষৎ বাতাস আসে
ঝর ঝর করে,’
থক থক ঝল ঝল
ঝিঁঝিঁ যায় সরে।
দুটি দুটি জলপান
মুটি মুটি গণে,—
রাখাল চিবাতেছিল
আপনার মনে,
আপনার গাভী পানে
পুন পুন চায়,
গাভী পিঠে ঝিঁঝিঁ ছায়া
উড়িয়া বেড়ায়;
উপরে নয়ন হেলি
দেখিল আকাশে
আতসে মাতিয়া ঝিঁঝিঁ
খেলায় বাতাসে;
মৃদু মৃদু ভুরু ভুরু
রব শুনা যায়,
চখে ঝলমল লাগে;
—আতসে ছায়ায়।
আবেশে অবশ হল
রাখালের মন
না নড়ে চোয়াল তার,
নিচল নয়ন।
ঝরণা ছায়িয়া বায়ু
ঝর ঝর আসে,
নিথর করিল তারে
শীতল বাতাসে।