» » গোচারণের মাঠ

বর্ণাকার

গোচারণ

রাখাল গোপাল-লয়ে

গোচারণে যায়,

হাতেতে পাঁচনবাড়ি,

টোকাটি মাথায়,

মালকোঁচা কটিতটে,

কোঁচড়েতে চা’ল

‘ধেই ধেই’ করি গোরু

করিছে সামাল।

পুকুরের পাড় ছাড়ি

ধরিল জাঙাল,

বটতলা পিছে ফেলি

চলিল গোপাল।

রাঁখাল দাঁড়ায়ে রয়

বটতরু ঘিরে,

গোচারণ মাঠে গাভী

চরে ধীরে ধীরে;

অমল শামল ঘাসে

ঢাকা ধরাতল,

বহুদূর ভরপূর

সবুজ কেবল।

 রাখাল দাঁড়ায়ে রয়

বট তরু ঘিরে,

গোচারণ মাঠে গাভী

চলে ধীরে ধীরে;

তিন, চারি, পাঁচ, ছয়,

—দলে দলে চলে,

মচ মচ করি ঘাস

ছিড়ঁয়ে দুকলে;

শামলী ধবলী রাঙী

কেমন দেখায়,

খুটি খুঁটি ঘাস খায়,

গুটি গুটি যায়;

এক পা দুই পা যায়,

মাছী লাগে গায়,

শিঙ্‌ ঝাড়ে, মাথা নাড়ে,

লাঙুল দোলায়;

তড়িত চালনা মত

শরীর কাঁপায়,

বসিতে না পারে মাছী

উড়িয়া বেড়ায়;

ডাহিনে বামেতে ফিরে,

সোজা নাহি চলে,

নতুন নতুন ঘাস

খায় দুই কলে।

কুটি কাটি নাহি মাঠে,

অতি নিরমল,

নীহারে ভিজান তৃণ,

সুচারু শামল,

কাঁথার মতন পুরু,

  কেমন কোমল,

তুলার তোষকে যেন

ঢাকা মখমল;

তরুণ তপন আভা

খেলে তদুপরি,

চক্‌ চক্‌ করে মাঠ 

যে দিকে নেহারি।

দেখিতে দেখিতে রবি

গগনে উঠিল,

দেখিতে দেখিতে মাঠ

ঝকিতে লাগিল।