গোচারণের মাঠ
অমল শামল তৃণ
ঢাকা ধরাতল,
বহু দূর ভরপূর
সবুজ কেবল;
অতিদূরে সমুখেতে
রহিয়াছে কত,
থাক্ থাক্, কাল কাল,
ধোঁয়া ধোঁয়া মত,
ছোট ছোট শৈল-মালা
আকাশের গায়,
নিবিড় মেঘের মত
বেশ দেখা যায়।
বামেতে আকাশ আসি
পরশিছে মাটী,
হরিতে মিলেছে নীল
অতি পরিপাটী;
উপরে আকাশ-পট
কেমন সুনীল,
সাঁই সাঁই পাখা ছাড়ি
ভেসে যায় চীল।
পিছনে বসতি ঘর,
বাগান, সরাই,
পোঁতা উচা চালা ঘর,
পালুই, মরাই।
সুগভীর সরোবরে
ঢাকিয়াছে জল,
কমলের পাতা আর
কলমীর দল;
মাথায় বটের চূড়া
সেকেলে দেউল,
আশে পাশে অনাদরের
পুরাণ তেঁতুল;
বেউড় বাঁশের ঝাড়
মাথা নোয়াইয়া,
কট্ কট্ রব করে
থাকিয়া থাকিয়া।
নিকটে বিটপী বট
নিবিড়, অসাড়,
গট হয়ে বসে যেন
গাছের পাহাড়।
অতিশয় উচু পাড়ে
তিন সারি জাল,
আধ ভাঙা বাঁধা ঘাট,
চৌচীর চাতাল।
ডাহিনে গহন বন—
নীরব, বিশাল,
এক পদে যোগ সাধে
কত শত শাল;
পাছে কেহ গোল করে,
এই ভয়ে তারা,
সারি সারি তাল-তরু
রেখেছে পাহারা।