প্রলয়োল্লাস

তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্-বোশেখীর ঝড়! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য-পাগল, সিন্ধু-পারের সিংহ-দ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল! মৃত্যু-গহন অন্ধকূপেContinue Reading

বিদ্রোহী

বলবীর – বলউন্নত মম শির! শিরনেহারি আমার নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির! বলবীর – বলমহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি, চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি, ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া, উঠিয়াছি চিরবিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাতৃর! মমললাটে রুদ্রContinue Reading

রক্তাম্বরধারিণী-মা

রক্তাম্বর পরো মা এবার জ্বলে পুড়ে যাক শ্বেত বসন দেখি ওই করে সাজে মা কেমন বাজে তরবারি ঝনন ঝন। সিঁথির সিঁদুর মুছে ফেলো মা গো, জ্বালো সেথা জ্বালো কাল-চিতা তোমার খড়্গ-রক্ত হউক স্রষ্টার বুকে লালContinue Reading

আগমনী

এ কী রণ-বাজা বাজে ঘন ঘন – ঝন রনরনরন ঝনঝন! সে কী দমকি দমকি ধমকি ধমকি দামা দ্রিমি দ্রিমি গমকি গমকি    ওঠে চোটে, চোটে, ছোটে লোটে ফোটে!    বহ্নি ফিনিক চমকি চমকি    ঢাল-তলোয়ারেContinue Reading

ধূমকেতু

আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুনঃ মহাবিপ্লব হেতু এই স্রষ্টার শনি মহাকাল ধূমকেতু!    সাত সাত শো নরক-জ্বালা জ্বলে মম ললাটে, মম ধূম-কুণ্ডলী করেছে শিবের ত্রিনয়ন ঘন ঘোলাটে! আমি অশিব তিক্ত অভিশাপ, আমি স্রষ্টার বুকেContinue Reading

কামাল পাশা

[তখন শরৎ-সন্ধ্যা। আশমানের আঙিনা তখন কারবালা ময়দানের মতো খুনখারাবির রঙে রঙিন। সেদিনকার মহা-আহবে গ্রিক-সৈন্য সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হইয়া গিয়াছে। তাহাদের অধিকাংশ সৈন্যই রণস্থলে হত অবস্থায় পড়িয়া রহিয়াছে। বাকি সব প্রাণপণে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিতেছে। তুরস্কের জাতীয় সৈন্যদলের কাণ্ডারীContinue Reading

আনোয়ার

স্থান – প্রহরী-বেষ্টিত অন্ধকার কারাগৃহ, কনস্ট্যান্টিনোপল। কাল – অমাবস্যার নিশীথ রাত্রি। চারিদিক নিস্তব্ধ নির্বাক। সেই মৌনা নিশীথিনীকে ব্যথা দিতেছিল শুধু কাফ্রি-সান্ত্রির পায়চারির বিশ্রী খটখট শব্দ। ওই জিন্দানখানায় মহাবাহু আনোয়ারের জাতীয় সৈন্যদলের সহকারী এক তরুণ সেনানীContinue Reading

রণভেরী

[গ্রিসের বিরুদ্ধে আঙ্গোরা-তুর্ক-গভর্নমেন্ট যে যুদ্ধ চালাইতেছিলেন, সেই যুদ্ধে কামাল পাশার সাহায্যের জন্য ভারতবর্ষ হইতে দশ হাজার স্বেচ্ছাসৈনিক প্রেরণের প্রস্তাব শুনিয়া লিখিত।] ওরে আয়! ঐ মহাসিন্ধুর পার হতে ঘন রণভেরি শোনা যায় – ওরে আয়! ঐContinue Reading

শাত-ইল-আরব

শাতিল-আরব! শাতিল আরব!! পূত যুগে যুগে তোমার তীর। শহিদের লোহু, দিলিরের খুন ঢেলেছে যেখানে আরব-বীর। যুঝেছে এখানে তুর্ক-সেনানী, য়ুনানি মিসরি আরবি কেনানি;– লুটেছে এখানে মুক্ত আজাদ বেদুইনদের চাঙ্গা-শির! নাঙ্গা-শির – শমশের হাতে, আঁশু-আঁখে হেথা মূর্তিContinue Reading

খেয়া-পারের তরণী

যাত্রীরা রাত্তিরে হ’তে এল খেয়া পার, বজ্রেরি তুর্যে এ গর্জেছে কে আবার? প্রলয়েরি আহ্বান ধ্বনিল কে বিষাণে ঝঞ্ঝা ও ঘন দেয়া স্বনিল রে ঈশানে! নাচে পাপ-সিন্ধুতে তুঙ্গ তরঙ্গ! মৃত্যুর মহানিশা রুদ্র উলঙ্গ! নিঃশেষে নিশাচর গ্রাসেContinue Reading

কোরবানী

ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্যাগ্রহ’ শক্তির উদ্বোধন! দুর্বল! ভীরু! চুপ রহো, ওহো খামখা ক্ষুব্ধ মন! ধ্বনি উঠে রণি’ দূর বাণীর, – আজিকার এ খুন কোরবানীর! দুম্বা-শির রুম্-বাসীর শহীদের শির সেরা আজি!- রহমান কি রুদ্র নন? ব্যাস!Continue Reading

মোহর্‌রম

নীল সিয়া আসমান, লালে লাল দুনিয়া– ‘আম্মা! লাল তেরি খুন কিয়া খুনিয়া।’ কাঁদে কোন্ ক্রন্দসী কারবালা ফোরাতে, সে কাঁদনে আঁশু আনে সিমারেরওছোরাতে! রুদ্র মাতম্ওঠে দুনিয়া-দামেশ্‌কে – ‘জয়নালেপরাল এ খুনিয়ারা বেশ কে?’ ‘হায় হায় হোসেনা’, ওঠেContinue Reading

আজ সৃষ্টি-সুখের উল্লাসে

   আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে– মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।       আজকে আমার রুদ্ধ প্রাণের পল্বলে    বান ডেকে ঐ জাগল জোয়ার দুয়ার – ভাঙাContinue Reading

দোদুল দুল

(আরবি ‘মোতাকারিব্’ ছন্দ)    দোদুল দুল দোদুল দুল্। বেণির বাঁধ আলগ্-ছাঁদ, আলগ্-ছাঁদ খোঁপার ফুল, কানের দুল খোঁপার ফুল দোদুল দুল দোদুল দুল!    অলক-ছায় কপোল ছায়, পরশ চায় অলস চুল বিনুন্-বিন্ কেশের উল দোদুল দুল!Continue Reading

বেলাশেষে

ধরণী দিয়াছে তার গাঢ় বেদনার রাঙা মাটি-রাঙা ম্লান ধূসর আঁচলখানি দিগন্তের কোলে কোলে টানি। পাখি উড়ে যায় যেন কোন্ মেঘ-লোক হতে সন্ধ্যাদীপজ্বালা গৃহপানে ঘরডাকা পথে। আকাশের অস্ত-বাতায়নে অনন্ত দিনের কোন্ বিরহিণী কনে জ্বালাইয়া কনক-প্রদীপখানি উদয়-পথেরContinue Reading

পউষ

পউষ এলো গো! পউষ এলো অশ্র”-পাথার হিম পারাবার পারায়ে ওই যে এলো গো- কুজঝটিকার ঘোম্‌টা-পরা দিগন-রে দাঁড়ায়ে॥ সে এলো আর পাতায় পাতায় হায় বিদায়-ব্যথা যায় গো কেঁদে যায়, অস্ত-বধূ (আ-হা) মলিন চোখে চায় পথ-চাওয়া দীপContinue Reading

পথহারা

বেলা শেষে উদাস পথিক ভাবে, সে যেন কোন অনেক দূরে যাবে – উদাস পথিক ভাবে।   ‘ঘরে এস’ সন্ধ্যা সবায় ডাকে, ‘নয় তোরে নয়’ বলে একা তাকে; পথের পথিক পথেই বসে থাকে, জানে না সেContinue Reading

ব্যথা-গরব

   তোমার কাছে নাই অজানা কোথায় আমার ব্যথা বাজে। ওগো প্রিয়! তবু এত ছল করা কি তোমার সাজে? কেন তোমার অনাদরে বক্ষ আমার ডুকরে ওঠে, চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়ে, কলজে ছিঁড়ে রক্ত ছোটে, এContinue Reading

উপেক্ষিত

কান্না-হাসির খেলার মোহে অনেক আমার কাটল বেলা, কখন তুমি ডাক দেবে মা, কখন আমি ভাঙব খেলা? অজানাকে আনতে জিনে, জগৎটাকে ফেলনু চিনে, চাই যারে মা তায় দেখি নে ফিরে এনু তাই একেলা পরাজয়ের লজ্জা নিয়েContinue Reading

সমর্পণ

   প্রিয়! এবার আমায় সঁপে দিলাম, তোমার চরণ-তলে তুমি শুধু মুখ তুলে চাও, বলুক যে যা বলে। তোমার আঁখি কাজল-কালো অকারণে লাগল ভালো লাগল ভালো, পথিক আমার পথ ভুলাল সেই নয়নের জলে। আজকে বনের পথContinue Reading