দেশসেবা

দেশসেবা কথার কথা নয় দেশসেবা মানবের শ্রেষ্ঠ সাধনা। স্বার্থ-গন্ধ থাকবে না, নাম-যশের আকাঙ্ক্ষা থাকবে না, প্রাণের ভয় পর্যন্ত থাকবে না, এক দিকে দেশসেবক নিজে, আর দিকে তার দেশ, মাঝে আর কিছু থাকবে না। যশ, অর্থ, দুঃখ, পাপ, পুণ্য, ভাল, মন্দ সব যে দেশের জন্য বলি দিতে পারবে, দেশসেবা তার দ্বারাই হবে।

রাষ্ট্রীয় সাধনাতে নারীকেও নাবতে হবে—দেশের স্বাধীনতার জন্য নারী-পুরুষের সম্মিলিত সাধনা চাই, তা নইলে কিছু হবে না। আমি জানি ছেলেরা আর মেয়েরা যদি এক সঙ্গে কাজে নামে, তাহলে দেশের লোক নানারকম কুৎসা রটাবেই—তা রটাক। নিন্দুক তার কাজ করবেই, কিন্তু তাই বলে কি আমরা কাজ বন্ধ রাখবো? দেশের জন্য যে সুনামের প্রতিষ্ঠা ত্যাগ করতে পারবে না, তার আবার ত্যাগ কোথায়?

দেশের স্বাধীনতা কেউ চায় না—সবাই চায় নাম প্রতিষ্ঠা, বড় বড় বচন ঝেড়ে নেতা হতে—সত্যিকার ক’টা লোক পরাধীনতার জ্বালা অনুভব করে? দেশের কি দেখে আশান্বিত হব? আমার দেশের ছেলেরা ম্যালেরিয়ায় ভুগে মরবে, তবু দেশের জন্য মহিমময় মৃত্যুবরণ করতে পারবে না। দেশের জন্য লাঞ্ছনা সওয়া, দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া সে কি সোজা সৌভাগ্য? দেশ উঠবে কি করে? দেশের জন্য কি কেউ প্রাণ দিতে চায়? দেশের জন্য কি কেউ ত্যাগ স্বীকার করতে চায়? আবার যেদিন দেশে নগরে স্বার্থত্যাগী সন্তান জন্মাবে, সত্যিকার দেশের কাজ সেই দিন সম্ভব হবে।