» » মামা সমগ্র

বর্ণাকার

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

মামা সমগ্র

গ্রন্থকথা

লেখক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে সত্যজিত রায় চিঠি লিখে জানান “সন্দেশ” পত্রিকার জন্য একটি গল্প লিখে দিতে, সেই লেখার জন্য ছবি আঁকবেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়। লেখা হলো “বড় মামার নারায়ণ সেবা” আর গল্প পড়ে সত্যজিৎ পছন্দ করে ফেললেন। তারপর থেকেই একে একে লেখা হয়েছে মামাদের নিয়ে গল্প ও উপন্যাস। সেই সব লেখার সংকলন এই “মামা সমগ্র”।

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন—

শ্রদ্ধেয় বিশ্ববরেণ্য সত্যজিৎ রায় মহোদয় স্বহস্তে আমাকে একটি চিঠি লিখলেন, ‘সন্দেশ’ পত্রিকার পূজাসংখ্যার জন্যে আপনার একটি গল্প প্রার্থনা করি। লেখাটি যথাসময়ে পাঠাবেন, কারণ ছবি আঁকব আমি।

এই চিঠিটি পেয়ে আমি পুলকিত, বিস্মিত, স্তম্ভিত এবং ভীত। তাঁর পছন্দ হবে, এমন একটি গল্প কি আমি লিখতে পারব?

দুর্জয় সাহসে একটি গল্প লিখলাম, ‘বড় মামার নরনারায়ণ সেবা’। আশ্চর্য! লেখাটি পড়ে অসামান্য রায়মহাশয় আর একটি চিঠি লিখে জানালেন, গল্পটি তাঁর খুব ভাল লেগেছে।

তিনিই খুলে দিলেন দরজা। শুরু হল মামাদের পথ চলা। কল্পনা ও বাস্তবের মেলবন্ধনে একের পর এক গল্প ও উপন্যাস লেখা হল। ‘সন্দেশ’ পত্রিকাতেও প্রকাশিত হল অনেক।

শ্রদ্ধেয় রায়মহাশয় লিখিত শেষ চিঠিটি একটি অক্ষয় স্মৃতি। লিখলেন, এবারের লেখাটি তাড়াতাড়ি চাই। আমার শরীর ভাল যাচ্ছে না। ছবি আমি নিজে আঁকব।

এই চিঠিটি আমার বুকে লেখা আছে। আমার হৃদস্পন্দনে তাঁর গম্ভীর কণ্ঠস্বর চিরধ্বনিত। জনৈক প্রকাশক রায়মহাশয়ের আঁকা ছবি সহ গল্পগুলির একটি সংকলন প্রকাশ করেছিলেন। আমার সংগ্রহে ছিল, এখন আর নেই। সেই সময়টা কালের পথে এখন দূর অতীত। বাস্তবের দুই মামা আর মাসিমা পৃথিবীতে নেই। তাঁদের নিয়ে লিখতে বসলে মন হুহু করে। হাসির বদলে কান্না আসে।

অতঃপর গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা—এই সংকলন সম্ভব হত না, যদি না আমাদের দুই সাহিত্যপ্রেমী ও সংগ্রাহক, বর্ধমান নিবাসী সুহৃদ রঞ্জন মুখোপাধ্যায় আর সন্দীপ মণ্ডল তাঁদের সংগ্রহ অবারিত করতেন। এঁদের জন্যে শুধু ধন্যবাদ যথেষ্ট নয়; স্নেহের আলিঙ্গন।

তবু, এই সদ্যোজাত প্রকাশন সংস্থাটি ‘মামা সমগ্র’ প্রকাশে উদ্যোগী হয়ে আমার ধন্যবাদার্হ। তাঁদের পথ চলায় মঙ্গলশঙ্খ ধ্বনিত হোক; তাঁরা এই পথে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হবেন, এই আমার প্রার্থনা শ্রীপদে। পাঠক-পাঠিকাদের জন্যে আমার চিরকৃতজ্ঞতা রেখে যাই এই প্রারম্ভিক বক্তব্যে। এই গল্পগুলি বড়ই স্মৃতিমেদুর। বাস্তব ভূমির ওপর রচিত কল্পনার জগত, হাসি আর আনন্দে ভরপুর।

১৪.১২.২০২০
কলকাতা

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়


কমলা-গীতা-বীণা প্রকাশনী

প্রথম প্রকাশ – জানুয়ারি ২০২১

প্রচ্ছদ – সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়

অলংকরণ – নচিকেতা মাহাতো


উৎসর্গ

যাঁর সঙ্গে হয়েছিল মনের সেতুবন্ধন,

হৃদয়ের আদান প্রদান, অন্তরের অন্তরতম

কৃতী সেই কর্মযোগী, শিক্ষাবিদ

প্রয়াত নবারুণ দেকে আমার এই

স্মরণাঞ্জলি।

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

বি.দ্র. সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে প্রকাশিত।