সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
মামা সমগ্রউপন্যাস
সাপে আর নেউলে
এক
বেলা তখন ক’টা হবে, সকাল আট কি সাড়ে আট। বলা নেই কওয়া নেই চারজন ষণ্ডামার্কা লোক তরতর করে আমাদের দোতলায় উঠে এল। দক্ষিণের হলঘরের মতো বড় ঘরটায় ঢুকে ফার্নিচার-মার্নিচার যা ছিল সব ধরাধরি করে বাইরের বারান্দায় বের করতে লাগল। মেজোমামা পুবের জানলার ধারে জলপাইগুড়ি থেকে আনা আরামদায়ক একটা বেতের চেয়ারে বেশ ফলাও হয়ে বসে দর্শনের বই পড়ছেন। এতটাই ডুবে গেছেন বিষয়ে যে, ঘরের মধ্যে চারটে দৈত্যের মতো লোক কীসব টানাহ্যাঁচড়া করছে, সেদিকে কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই। আমার মেজোমামা এইরকমই। পড়তে বসলে আর জ্ঞান থাকে না। ইদানীং ব্যায়াম করা ছেড়ে দিয়েছেন বলে বেশ একটু মোটা হয়েছেন, রংটাও বেশ ফরসা হয়েছে। এতদিনের ব্যায়াম হঠাৎ ছাড়ার কারণ, বড়মামা একদিন একটা মেডিকেল জার্নাল সামনে ফেলে দিয়ে বললেন, ‘মেজো, পড়ে দ্যাখো, ব্যায়ামের কুফল। মাথামোটা হয়ে যায়। দর্শন, বিজ্ঞান, গণিত সেই বোদামাথায় আর ঢুকবে না। ভালো চাও তো হোঁত হোঁত ডনবৈঠক মারা ছেড়ে শুধু মর্নিং ওয়াকের ওপর থাকো’।
এই ওয়াকিংটা মেজোমামা কোনওকালেই পছন্দ করেন না। অকারণে হাঁটার কোনও মানে হয়! ফলে হপ্তায়-হপ্তায় ওজন বাড়ছে। যে-বইটায় তলিয়ে আছেন বিষয়টা তার জানি, বিজ্ঞান ও ভগবান। ভগবান কি আছেন!
মেজোমামার পেছনে দেওয়াল ঘেঁষে একটা বড় টেবিল। এইবার সেই টেবিলটা বেরোচ্ছে। হুটপাট শব্দ শুনে মাসিমা এসে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেখছেন ব্যাপারস্যাপার। বলা নেই কওয়া নেই, এরা কারা! মেজোমামা যেমন গ্রাহ্য করছেন না, ওরাও তেমনই গ্রাহ্য করছে না। টেবিলটাকে চারজনে মিলে তুলেছে। পেছনে একটা ড্রয়িং বোর্ড খাড়া করা ছিল, সেটা সপাটে পড়ল।
মাসিমা তখন একটা হুঙ্কার ছাড়লেন, ‘মেজদা।’
মেজোমামার কানের রকমটা আমি জানি। মোটা, ভোঁতা, গম্ভীর শব্দ কানে যায় না। সরু, তীক্ষ্ন আওয়াজে চমকে ওঠেন। ধড়মড় করে উঠে দাঁড়ালেন চেয়ার ছেড়ে।
মাসিমা বললেন, ‘তোমার ঘরে এরা কারা?’
মেজোমামা এই প্রথম লোক চারজনকে দেখে মাসিমাকেই প্রশ্ন করলেন, ‘এরা কারা?’
‘ঘরের আদ্দেক জিনিস বাইরে বেরিয়ে গেল, তুমি জানো না এরা কারা! কোন জগতে ছিলে?’
মেজোমামা ভুবনভোলানো সেই বিখ্যাত হাসিটি হেসে বললেন, ‘কুসি, আমি এখানে ছিলুম না রে!’ লোক চারজন টেবিল ধরে থমকে দাঁড়িয়ে আছে। ভয় পেয়ে গেছে ভয়ানক। মাসিমার চেহারাটা ঠিক মা-দুর্গার মতো তেজস্বী।
মাসিমা বললেন, ‘তোমরা কে?’
যে উত্তর দিল সে মনে হয় দলের নেতা, ‘আমরা বড়বাবুর লোক।’
‘বড়বাবুর লোক তো মেজোবাবুর ঘরে ঢুকে কী করছ?’
‘বড়বাবুর অর্ডার।’
‘বড়বাবুর অর্ডার! বড়বাবু কী অর্ডার দিয়েছে! টেবিল রাখো। উতারো।’
টেবিলটাকে মেঝেতে রেখে দলনেতা বলল, ‘মেঝেটা চটাব।’
‘চটাব মানে?’
‘মানে খুঁড়ে ফেলব।’
‘খুঁড়ে ফেলব মানে, এটা কি বড়বাবুর মামার বাড়ি!’
দলনেতা বেশ এয়ার নিয়ে বলল, ‘অর্ডার সেই রকমই।’
মাসিমা আমাকে জিগ্যেস করলেন, ‘বড়দা কোথায় রে?’
বেশ কিছুক্ষণ আগে বড়মামাকে তিনতলার ছোট ছাতে দেখেছিলুম। শর্টস পরে সিদ্ধাসনে বসে সাঁই-সাঁই প্রাণায়াম করছেন। সেই কথা বললুম।
মাসিমা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বললেন, ‘প্রাণায়ামের নিকুচি করেছে। শিগগির টেনে তুলে আনো।’
হঠাৎ কানে এল বড়মামার গলা। সুর করে বলছেন, ‘কুসি, হিয়ার আই অ্যাম। কুসি।’
একটু সরে গিয়ে আমরা ওপর দিকে তাকালুম। তিনতলার ছাদের বাহারি আলসের ফাঁকে বড়মামার হাসি-হাসি মুখ, ‘ম্যাডাম কুসি, দে আর জাস্ট এগজিকিউটিং মাই অর্ডার। গো অন আলম।’
‘তুমি নেমে এসো।’
‘নামছি, নামছি। জাস্ট অ্যানাদার রাউণ্ড অব ডিপ অ্যাণ্ড সিনসিয়ার ব্রিদিং।’
‘এইটাই তোমার লাস্ট ব্রিদ হবে, যদি এখুনি, এই মুহূর্তে না নেমে আসো।’
মেজোমামা ওপর দিকে তাকিয়ে যোগ করলেন, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু কাউণ্ট সরষে। ইউ উইল সি মাস্টার্ড ফ্লাওয়ার।’
মাসিমা তিরস্কার করলেন, ‘তোমার রাগ হচ্ছে না মেজদা!’
মেজোমামা হাসতে-হাসতে বললেন, ‘কী সুন্দর দুষ্টু-দুষ্টু মুখ দ্যাখো। রাগ করা যায়! অবিকল একটা লাউ। এসো, নেমে এসো ভ্রাতা, কুসির হাতে ছেঁচকি হবে।’
লোক চারজন অবাক হয়ে কাণ্ড দেখছে। এমন ফ্যামিলি এই বাজারে কে কোথায় দেখেছে।ফ্যামিলি ট্যুর প্যাকেজফ্যামিলি ট্যুর প্যাকেজ
বড়মামা সিঁড়ি দিয়ে তরতর করে নেমে আসছেন ছোট ছেলের মতো।
মেজোমামা বললেন, নামছে দেখেছিস, যেন অনুষ্টুপ ছন্দ!
মাসিমা বললেন, ‘পড়বে যখন, ছন্দ বেরিয়ে যাবে, হয়ে যাবে সিঁড়ি-ভাঙা অঙ্ক।’
বড়মামার এখন এই সাধনা চলছে, ‘থিঙ্ক ইয়াং অ্যাণ্ড ইউ উইল রিমেন এভার ইয়াং’। একটা বই কিনে এনেছেন, ‘লাফটার ইজ দা বেস্ট মেডিসিন’। একটা বড় আয়না কিনে এনেছেন, রোজ সেইটার সামনে দাঁড়িয়ে নানাভাবে নিজেকেই নিজে ভেংচি কাটেন। আপনমনে নানারকম পাগলামি করেন। নিজের সঙ্গেই আবোলতাবোল বকেন। এইসব নাকি মডার্ন মেডিসিন।
শর্টস আর স্যাণ্ডো গেঞ্জি পরা বড়মামাকে ফ্যানটাসটিক দেখাচ্ছে।
মাসিমা কোনওরকম ভনিতা না করে বললেন, ‘তুমি এদের বলেছ মেজদার মেঝে খুঁড়তে!’
‘বলেছি।’
‘কেন বলেছ? এটা কী ধরনের শত্রুতা!’
‘শত্রুতা নয় বৎস, মিত্রতা। প্রবল মিত্রতা। ওর জন্মদিনে ওকে আমি মার্বেল পাথরের ধবধবে সাদা একটা মেঝে উপহার দেব বলে মনস্থির করেছি। আমার গভীর বিশ্বাস, আগামী বছরে ও নোবেল পুরস্কার পেয়ে জাতির মুখ উজ্জ্বল করবে।’
মাসিমা বললেন, ‘কীজন্যে পুরস্কার পাবে?’
‘ভগবানকে আবিষ্কার করার কারণে, আজ পর্যন্ত কেউ যা পারেনি।’
‘এই বংশে কেউ যদি নোবেল পুরস্কার পায়, সে পাবে পাগলামির জন্য। নমিনেশনের একেবারে এক নম্বরে থাকবে তোমার নাম। এমন সুন্দর লাল চকচকে মেঝেটো কী কারণে তোমার অসহ্য লাগছে! পয়সা বেশি হয়েছে? যদি হয়ে থাকে নষ্ট না করে গরিবকে দান করে দাও। তোমরা দুই পাগলে সংসার খরচটাকে কোথায় তুলেছ, কোনও ধারণা আছে? বিশ হাজার!’
বড়মামা বললেন, ‘কুসি, তোর এই এক আছে, টাকা টাকা, আরে টাকা কি তোর সঙ্গে যাবে! খরচ করতে শেখ। আমার কোষ্ঠীতে কী লেখা আছে জানিস, যত খরচ করবে, তত টাকা আসবে। আমি স্বপ্ন দেখছি রে! ভোরের স্বপ্ন। আমার গ্রেট, গ্রেট গ্র্যাণ্ডফাদার এসে বলছেন, মিস্টার মুখার্জি, আমি ইতালিয়ান মার্বেল পাথরের মেঝেতে, ভেলভেটের আসনে বসে রুপোর জামবাটিতে, নিজেদের চাষের গোবিন্দভোগ চাল আর আমাদেরই কালো গাইয়ের ক্ষীরের মতো দুধ দিয়ে তৈরি পায়েস খেতুম, তাতে কান্দাহারের পেস্তা, বাদাম, কিশমিশ গজগজ করত। আমাদের সেই পুরনো গৌরব ফিরিয়ে আন। কুসি, থিঙ্ক বিগ ইউ উইল বি বিগ। ছুঁচোর কথা ভাবিসনি, হাতি ভাব, ছুঁচের কথা ভাবিসনি, শাবলের কথা ভাব। মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার। আমি কী ভাবি জানিস, আমি নেপোলিয়ান, আমি কাইজার, আমি এম্পারার, আমি জার, আমি বিক্রমাদিত্য, আমি হর্ষবর্ধন…।’
মাসিমা ভীষণ রেগে গিয়ে বললেন, ‘তুমি একটি গোবর্ধন। গবা। তোমার মাথায় গোবর। মার্বেল পাথরের দাম জানো? এই কুড়ি বাই আঠারো ঘরে কত লক্ষ টাকার মার্বেল লাগবে, আইডিয়া আছে?’
‘কুসি, মার্বেল কি আমি মার্কেট থেকে কিনব রে ভাই! আমার এক পেশেন্ট একটা মার্বেল পাহাড় কিনেছে।’
‘নিশ্চয় মেন্টাল পেশেন্ট।’
‘আজ্ঞে না, সুগারের। আমি সেই সুগার ফ্যাকট্রিকে ম্যানেজ করেছি মানিক। সেই পাহাড়ের কিছুটা অংশ ধসিয়ে আমাকে দেবে। দি হোল হাউস উইল বি এ মার্বেল প্যালেস। ঘরে-ঘরে ঝাড়লণ্ঠন, দেওয়ালে-দেওয়ালে দেওয়ালগিরি। সকালে ভাত, রাতে বিরিয়ানি।’
‘তোমার লজ্জা করে না বড়দা? তোমার আক্কেল কবে হবে? একজন তোমাকে একটা ভাঙা মোটরগাড়ি ড্যাম চিপ বলে চৌত্রিশ হাজারে গছিয়ে গেল। সেই গাড়ি অ্যায়সা তেল খেতে আরম্ভ করল যে, শেষে সংসারটাই খেয়ে ফেলে আর কী! এমন এক ড্রাইভার আনলে সাত মাসে সাতবার অ্যাকসিডেন্ট, গচ্চা আরও সাত হাজার। এই করতে-করতে চৌত্রিশ লাখে উঠল। সেই গাড়ি পড়ে আছে গোয়ালে। বেড়ালের আঁতুর ঘর। তোমাকে আমি মেঝে করতে দেব না। যা আছে, বেশ আছে, সুন্দর আছে।’
মেজোমামা আমতা-আমতা করে বললেন, ‘একটা ইচ্ছে যখন হয়েছে, স্বপ্নে পাওয়া নির্দেশ, ফুলফিল না করলে পূর্বপুরুষদের ক্রোধ হবে, সংসারের ক্ষতি হবে, ইত্যাদি, ইত্যাদি।’
মাসিমা ভেংচি কেটে বললেন, ‘ইত্যাদি, ইত্যাদি। তোমরা তোমাদের গ্রেট, গ্রেট, গ্রেট গ্র্যাণ্ডফাদারকে দেখেছ! মিথ্যে বলতে গিয়ে এতটাই পেছিয়েছ যে, অরণ্যের কালে চলে গেছ। সেই সময় তোমাদের গ্রেটেস্ট গ্র্যাণ্ডফাদার বল্কল পরে ঘুরতেন, ঝলসানো মাংস খেতেন আর গুহায় থাকতেন। মার্বেল পাথরের গুহা হলেও বোঝা যেত। অর্ডিনারি পাথরের গুহা। রুপোর জামবাটি, গোবিন্দভোগ, স্বপ্নই বটে! আলমসাহেব, মেঝেফেজে হবে না। যেখানকার-যেখানকার জিনিস সব সেইখানে-সেইখানে ফিট করে দিন।’
টেবিল এতক্ষণ আট হাতের চ্যাংদোলায় দোল খাচ্ছিল, ঠক ঠকাস করে মেঝেতে নেমে এল। আলমসাহেব বারকতক হাতের ব্যায়াম করে নিয়ে বললেন, ‘বড়বাবু গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল করবেন না। পাথর রইল পাহাড়ে আপনি হুকুম দিয়ে দিলেন মেঝে খুঁড়ে ফেল। মায়েদের পরামর্শ না নিয়ে কেন কাজ করতে যান! বেকার পরিশ্রম হল।’
এই বেকার শব্দটাই হল কাল। বড়মামা ইদানীং অনেক সাধনার মধ্যে এই সাধনাটাও ঢুকিয়েছিলেন, কিপ আইসকুল। শতকাণ্ডেও মেজাজ বরফ। এর নাম তিতিক্ষা। সেই তিতিক্ষা সামান্য একটা শব্দের গুলিতে তাসের ঘরের মতো চুরমার হয়ে গেল। সম্বোধন তুমি থেকে তুই-এ নেমে এল, ‘কী বললি, বেকার! কত টাকা তোকে দিতে হবে বল! ফুলরোজ দিয়ে দেব। সুধাংশু মুকুজ্যে বেকার কাজ করায় না। বল তোদের কত টাকা রোজ।’
আলমসাহেব থতমত খেয়ে বললেন, ‘বড়বাবু, টাকার কথা কি আমি একবারও বলেছি? আমাদের এটা কথার মাত্রা।’
সঙ্গে-সঙ্গে বড়মামা বললেন, ‘মেঝে আজই খোঁড়া হবে। পাহাড় থেকে পাথর না আসে, দোকান থেকে আসবে। বিশ-বাইশ লাখ যা লাগে এই সুধাংশু মুকুজ্যেই ক্যাশডাউন করবে।’
মাসিমা গম্ভীর মুখে বললেন, ‘তোমার অ্যাকাউন্টে বাইশ হাজারও নেই।’
‘কেন নেই?’
‘বদখেয়ালে উড়িয়ে দিয়েছ।’
‘কুছ পরোয়া নেই, বাড়ি বিক্রি করে দেব। তিরিশ থেকে চল্লিশ লাখ টাকার প্রপার্টি।’
‘বাড়িই যদি বিক্রি করে দিলে, তা হলে মেঝেটা হবে কোথায়! আমাদের মাথায়! যতসব আজগুবি কথা।’ বড়মামার মুখটা দেখার মতো হল। অসহায়, করুণ।
নিজের মনেই প্রশ্ন করলেন, ‘মেঝে তা হলে হবে না!’
মাসিমা বললেন, ‘না, সুখে থাকতে আর ভূতে কিলোবে না। অনেক খেলা তুমি দেখিয়েছ, এইবার রেস্ট।’
বড়মামা আবার উত্তেজিত, ‘রেস্ট! আমার খেলা শেষ হবে না কালীচরণ! সারাজীবন আমি খেলব। আমি দুবাই যাব।’
মেজোমামা এতক্ষণে কথা বললেন, ‘দুবাই যাবে কি সোনা আনতে?’
‘না, পেট্রোডলার আনতে। কাগজে দেখেছি, দুবাই ভারতীয় ডাক্তার চাইছে। তিন বছর ডাক্তারি করে তিরিশ লাখ টাকা কামিয়ে ফিরে আসব।’
মাসিমা আলমদের বললেন, ‘ব্যস, একেবারে পাকা কথা, আজ থেকে তিন বছর পরে কাজ শুরু হবে।’
বড়মামা বললেন, ‘না না, অত দেরি নয়, লোনে সব হবে। এসে ঝটাঝট শোধ করে দেব।’
‘তোমাকে লোনটা কিসের এগেনস্টে দেবে?’
‘এই বাড়িটা। শোধ করতে না পারলে, বাড়ি, জমি, সব তোমার, আমি ডিড সই করে দেব।’
মাসিমা বললেন, ‘এটার মাথায় তিন বালতি বরফজল ঢেলে দে ভাগনে। প্রাণায়ামের বায়ু ফুসফুসে না ঢুকে মাথার চড়ে বসেছে। তাতেও না হলে রাঁচি।’
আলমসাহেব বললেন, ‘সব বেক…।’
ঢোক গিলে সামলে নিলেন। বলতে চাইছিলেন, সব বেকার হয়ে গেল। জোর করে একমুখ হেসে বললেন, ‘ফালতু টাকা নষ্ট করে কী হবে! এমন সুন্দর বিলিতি পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের মেঝে, আয়নার মতো চকচক করছে। এক যদি হাওলার টাকা ধরতে পারতেন, তা হলে গোটা বাড়িটাই মার্বেলে মোড়া যেত। বরং কোথাও মার্বেলের একটা রক করে নিন। সকাল, বিকেল সবাই একসঙ্গে বসে চা-বিস্কুট খাবেন। গল্প করবেন।’