চোখের চাতক

চোখের চাতক

‘চোখের চাতক’ প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মুতাবিক ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে। প্রকাশক শ্রীগোপালদাস মজুমদার; ডি. এম. লাইব্রেরি, ৬১ কর্ণওয়ালিশ ষ্ট্রীট, কলিকাতা। মুদ্রাকর শ্রীসতীশচন্দ্র রায়, সুধা প্রেস, ১৯৮/১ কর্ণওয়ালিশ ষ্ট্রীট, কলিকাতা। পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪+৭৮;Continue Reading

চোখের চাতক

আমার কোন কূলে আজ ভিড়ল তরী

১ খাম্বাজ-পিলু–দাদরা আমার কোন কূলে আজ ভিড়ল তরী এ কোন্ সোনার গাঁয়। আমার ভাটির তরী আবার কেন উজান যেতে চায়॥ আমার দুঃখেরে কাণ্ডারী করি আমি ভাসিয়েছিলাম ভাঙা তরী, তুমি ডাক দিলে কে স্বপনপরী নয়ন-ইশারায়॥ আমারContinue Reading

চোখের চাতক

কাঁদিতে এসেছি আপনারে লয়ে

২ জয়জয়ন্তী–একতালা কাঁদিতে এসেছি আপনারে লয়ে কাঁদাতে আসিনি হে প্রিয় তোমারে। এ মম আঁখি-জল আমারি নয়নের ঝরিবে না এ জল তোমার দুয়ারে॥ ভাল যদি বাসি একাকী বাসিব, বিরহ-পাথারে একাকী ভাসিব। কভু যদি ভুলে আসি তবContinue Reading

চোখের চাতক

ছাড়িতে পরান নাহি চায়

৩ খাম্বাজ–দাদরা ছাড়িতে পরান নাহি চায় তবু   যেতে হবে, হায়! মলয়া মিনতি করে তবু   কুসুম শুকায়॥ রবে না এ মধু-রাতি জানি তবু মালা-গাঁথি, মালা চলিতে দলিয়া যাবে তবু   চরণে জড়ায়॥ যে কাঁটারContinue Reading

চোখের চাতক

কে তুমি দূরের সাথী

৪ পুরবী–একতালা কে তুমি দূরের সাথী এলে ফুল ঝরার বেলায়। বিদায়ের বংশী বাজে ভাঙা মোর প্রাণের মেলায়॥ গোধূলির মায়ায় ভুলে এলে হায় সন্ধ্যা-কূলে, দীপহীন মোর দেউলে এলে কোন্ আলোর খেলায়॥ সেদিনও প্রভাতে মোর বেজেছে আশাবরি,Continue Reading

চোখের চাতক

আজি এ শ্রাবণ-নিশি

৫ মিঁয়া কী মল্লার–কাওয়ালি আজি এ শ্রাবণ-নিশি কাটে কেমনে গুর দেয়া-গরজন কাঁপে হিয়া ঘনঘন শনশন কাঁদে বায়ু নীপ-কাননে॥ অন্ধ নিশীথ, মন খোঁজে কারে আঁধারে, অন্ধ নয়ন ঝরে শাওন-বারিধারে। ভাঙিয়া দুয়ার মম এস এস প্রিয়তম, শ্বসিছেContinue Reading

চোখের চাতক

আজি বাদল ঝরে

৬ ভৈরবী-আশাবরি–আদ্ধা কাওয়ালি আজি বাদল ঝরে মোর একেলা ঘরে হায় কী মনে পড়ে মন এমন করে॥ হায় এমন দিনে কে নীড়হারা পাখি যাও কাঁদিয়া কোথায় কোন্ সাথিরে ডাকি। তোর ভেঙেছে পাখা কোন্ আকুল ঝড়ে॥ আয়Continue Reading

চোখের চাতক

মোর ঘুম ঘোরে এলে

৭ ভৈরবী-গজল–দাদরা মোর ঘুমঘোরে এলে মনোহর নমো নম, নমো নম, নমো নম। শ্রাবণ-মেঘে নাচে নটবর ঝমঝম ঝমঝম ঝমঝম॥ শিয়রে বসি চুপি চুপি চুমিলে নয়ন মোর বিকশিল আবেশে তনু নীপসম নিরুপম মনোরম॥ মোর ফুলবনে ছিল যতContinue Reading

চোখের চাতক

কেউ ভোলে না কেউ ভোলে

৮ মান্দ–কাহারবা কেউ ভোলে না কেউ ভোলে অতীত দিনের স্মৃতি। কেউ দুখ লয়ে কাঁদে, কেউ   ভুলিতে গায় গীতি॥ কেউ শীতল জলদে হেরে   অশনির জ্বালা, কেউ মঞ্জুরিয়া তোলে তার   শুষ্ক কুঞ্জ-বীথি॥ হেরে কমল-মৃণালেContinue Reading

চোখের চাতক

যাও যাও তুমি ফিরে

৯ ভৈরবী–দাদরা যাও যাও তুমি ফিরে এই   মুছিনু আঁখি। কে বাঁধিবে তোমারে হায়   বনের পাখি॥ মোর এত প্রেম আশা মোর এত ভালোবাসা আজ সকলই দুরাশা আর   কী দিয়ে রাখি॥ এই অভিমান-জ্বালা মোরContinue Reading

চোখের চাতক

ফাগুন-রাতের ফুলের নেশায়

১০ পিলু–কাহারবা ফাগুন-রাতের ফুলের নেশায় আগুন-জ্বালায় জ্বলিতে আসে। যে দীপশিখায় পুড়িয়া মরে পতঙ্গ ঘোরে তাহারি পাশে॥ অথই দুখের পাথার-জলে সুখের রাঙা কমল-দোলে, কূলের পথিক হারায় দিশা দিবস নিশা তাহারি বাসে॥ সুখের আশায় মেশায় ওরা বুকেরContinue Reading

চোখের চাতক

নিশীথ-স্বপন তোর ভুলে যা

১১ ভৈরবী–দাদরা নিশীথ-স্বপন তোর ভুলে যা এ নিশি-শেষে বাদল-অবসানে আকাশ উঠেছে হেসে॥ চখার পাশে আসে বিরহ-রাতের চখি। আঁধার লুকাল ঐ দূর বনে এলোকেশে॥ শরম-রাঙা গালে জাগিল কুমারী উষা, তরুণ অরুণ ঐ এল রাঙা বর-বেশে॥Continue Reading

চোখের চাতক

ঘোর তিমির ছাইল রবি শশী

১২ বাগেশ্রী–কাওয়ালি ঘোর তিমির ছাইল রবি শশী গ্রহ তারা। কাঁপে তরাসে ভীতা ধরণী অসীম আঁধারে হারা॥ প্রলয়েশ মহাকাল এলায়েছে জটাজাল, নাচিছে ঝড়ের বেগে সুরধুনী-জলধারা॥ চমকি চমকি ওঠে চপলা চপল-ফণা, লুকাইল শিশুশশী, মুরছিতা দিগঙ্গনা। চাতকী চাতক-বুকেContinue Reading

চোখের চাতক

দারুণ পিপাসায় মায়া-মরীচিকায়

১৩ জয়জয়ন্তী–একতালা দারুণ পিপাসায় মায়া-মরীচিকায় চাহিতে এলি জল বনের হরিণী। দগ্ধ মরুতল কে তোরে দেবে জল ঝরিবে আঁখি-নীর তোরই নিশিদিনি॥ নিবায়ে গৃহদীপ আপন নিশাসে আলেয়ার পিছে এলি সুখ-আশে, সে সুখ অবসান সমুখেতে শ্মশান পিছনে অন্ধকারContinue Reading

চোখের চাতক

এত কথা কি গো কহিতে জানে

১৪ খাম্বাজ-দেশ–দাদরা এত কথা কি গো কহিতে জানে চঞ্চল ওই আঁখি। নীরব ভাষায় কী যে কহে যায় মনের বনের পাখি– চঞ্চল ওই আঁখি॥ মুদিত কমলে ভ্রমরেরই প্রায় বন্দি হইয়া কাঁদিয়া বেড়ায়, চাহিয়া চাহিয়া মিনতি জানায়Continue Reading

চোখের চাতক

মন কেন উদাসে

১৫ (শুদ্ধ) সারং–একতালা    মন কেন উদাসে। (এই)   ফাগুন-বাতাসে॥  যাহারে না পাইনু কভু এ জীবনে,  সে কেন গো কাঁদাতে আসে নিতি স্মরণে। কুসুমের গন্ধে গো তারই সুবাস ভাসে॥ কেন এ সমীরে  সে আসে ফিরে ফিরে,Continue Reading

চোখের চাতক

আমার গহীন জলের নদী

১৬ ভাটিয়ালী–কাহারবা আমার গহীন জলের নদী। আমি তোমার জলে রইলাম ভেসে জনম অবধি॥ তোমার বানে ভেসে গেল আমার বাঁধা ঘর চরে এসে বসলাম রে ভাই ভাসালে সে চর। এখন সব হারায়ে তোমার জলে রে আমিContinue Reading

চোখের চাতক

তোমায় কূলে তুলে বন্ধু

১৭ ভাটিয়ালি–কার্ফা তোমায় কূলে তুলে বন্ধু আমি নামলাম জলে। আমি কাঁটা হয়ে রই নাই বন্ধু তোমার পথের তলে॥ আমি তোমায় ফুল দিয়েছি কন্যা তোমার বন্ধুর লাগি যদি আমার শ্বাসে শুকায় সে ফুল তাই হলাম বিবাগি।Continue Reading

চোখের চাতক

আমার সাম্পান যাত্রী না লয়

১৮ ভাটিয়ালি–কার্ফা আমার সাম্পান যাত্রী না লয় ভাঙা আমার তরী। আমি আপনারে লয়ে রে ভাই এপার ওপার করি॥ আমায় দেউলিয়া করেছে রে ভাই যে নদীর জল আমি ডুবে দেখতে এসেছি ভাই সেই জলেরই তল। আমিContinue Reading

চোখের চাতক

ওরে মাঝি ভাই

১৯ ভাটিয়ালি–কাহারবা ওরে মাঝি ভাই। তুই কী দুখ পেয়ে কূল হারালি অকূল দরিয়ায়॥ তোর ঘরের রশি ছিঁড়ে রে গেল– ঘাটের কড়ি নাই, তুই মাঝদরিয়ায় ভেসে চলিস ভাসিয়ে তরি তাই। ও ভাই দরিয়ায় আসে জোয়ার-ভাটি রেContinue Reading