» সুহৃদ্‌বরেষু

কাব্যকে জানিতে হয়, দৃষ্টিদোষে নতুবা পণ্ডিত শব্দের ঝঙ্কার শুধু যাহা ক্ষীণ জ্ঞানের অতীত। রাতকানা দেখে শুধু দিবসের আলোকপ্রকাশ, তার কাছে অর্থহীন রাত্রিকার গভীর আকাশ। মানুষ কাব্যের শ্রষ্টা, কাব্য কবি করে না সৃজন, কাব্যের নতুন জন্ম,Continue Reading

» পটভূমি

অজাতশত্রু, কতদিন কাল কাটলো: চিরজীবন কি আবাদ-ই ফসল ফলবে? ওগো ত্রিশঙ্কু, নামাবলী আজ সম্বল টংকারে মূঢ় স্তব্ধ বুকের রক্ত। কখনো সন্ধ্যা জীবনকে চায় বাঁধতে, সাদা রাতগুলো স্বপ্নের ছায়া মনে হয়, মাটির বুকেতে পরিচিত পদশব্দ, কোনContinue Reading

» ভারতীয় জীবনত্রাণ-সমাজের মহাপ্রয়াণে

অকস্মাৎ মধ্যদিনে গান বন্ধ ক’রে দিল পাখি, ছিন্নভিন্ন সন্ধ্যাবেলা প্রাত্যহিক মিলনের রাখী; ঘরে ঘরে অনেকেই নিঃসঙ্গ একাকী। ক্লাব উঠে গিয়েছে সফরে, শূন্য ঘর, শূন্য মাঠ, ফুল ফোটা মালঞ্চ প’ড়ে ত্যক্ত এ ক্লাবের কক্ষে নিষ্প্রদীপ অন্ধকারContinue Reading

» “নব জ্যামিতি”র ছড়া

Food Problem (একটি প্রাথমিক সম্পাদ্যের ছায়া অবলম্বনে) সিদ্ধান্ত: আজকে দেশে রব উঠেছে, দেশেতে নেই খাদ্য; ‘আছে’, সেটা প্রমাণ করাই অধুনা ‘সম্পাদ্য’। কল্পনা: মনে করো, আসছে জাপান অতি অবিলম্বে সাধারণকে রাখতে হবে লৌহদৃঢ় ‘লম্বে’। “খাদ্য নেই”Continue Reading

» জবাব

আশংকা নয় আসন্ন রাত্রিকে মুক্তি-মগ্ন প্রতিজ্ঞা চারিদিকে হানবে এবার অজস্র মৃত্যুকে; জঙ্গী-জনতা ক্রমাগত সন্মুখে। শত্রুদলে গোপনে আজ, হানো আঘাত এসেছে দিন; পতেঙ্গার রক্তপাত আনে নি ক্রোধ, স্বার্থবোধ দুর্দিনে? উষ্ণমন শানিত হোক সংগীনে। ক্ষিপ্ত হোক, দৃপ্তContinue Reading

» চরমপত্র

তোমাকে দিচ্ছি চরমপত্র রক্তে লেখা; অনেক দুঃখে মথিত এ শেষ বিদ্যে শেখা; অগণ্য চাষী-মজুর জেগেছে শহরে গ্রামে সবাই দিচ্ছি চরমপত্র একটি খামে; পবিত্র এই মাটিতে তোমার মুছে গেছে ঠাঁই, ক্ষুব্ধ আকাশে বাতাসে ধ্বনিত ‘স্বাধীনতা চাই’।Continue Reading

» মেজদাকে : মুক্তির অভিনন্দন

তোমাকে দেখেছি আমি অবিচল, দৃপ্ত দুঃসময়ে ললাটে পড়ে নি রেখা ক্রূরতম সংকটেরও ভয়ে; তোমাকে দেখেছি আমি বিপদেও পরিহাস রত দেখেছি তোমার মধ্যে কোন এক শক্তি সুসংহত দুঃখে শোকে, বারবার অদৃষ্টের নিষ্ঠুর আঘাতে অনাহত, আত্মমগ্ন সমুদ্যতContinue Reading

» পত্র

কাশী গিয়ে হু হু ক’রে কাটলো কয়েক মাস তো, কেমন আছে মেজাজ ও মন, কেমন আছে স্বাস্থ্য বেজায় রকম ঠাণ্ডা সবাই করছে তো বরদাস্ত? খাচ্ছে সবাই সস্তা জিনিস, খাচ্ছে পাঁঠা আস্ত? সেলাই কলের কথাটুকু মেজদারContinue Reading

» মার্শাল তিতোর প্রতি

কমরেড, তুমি পাঠালে ঘোষণা দেশান্তরে, কুটিরে কুটিরে প্রতিধ্বনি,— তুলেছে মুক্তি দারুণ তুফান প্রাণের ঝড়ে তুমি শক্তির অটুট খনি। কমরেড, আজ কিষাণ শ্রমিক তোমার পাশে তুমি যে মুক্তি রটনা করো, তারাই সৈন্য: হাজারে হাজারে এগিয়ে আসেContinue Reading

» ব্যর্থতা

আজকে হঠাৎ সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হ’তে সাধ জাগে, মনে হয় তবু যদি পক্ষপাতের বালাই না নিয়ে পক্ষীরাজ, চাষার ছেলের হাতে এসে যেত হঠাৎ আজ। তা হলে না হয় আকাশবিহার হত সফল, টুকরো মেঘেরাContinue Reading

» দেবদারু গাছে রোদের ঝলক

দেবদারু গাছে রোদের ঝলক, হেমন্তে ঝরে পাতা, সারাদিন ধ’রে মুরগীরা ডাকে, এই নিয়ে দিন গাঁথা রক্তের ঝড় বাইরে বইছে, ছোটে হিংসার ঢেউ, খবরে কাগজ জানায় সেকথা, চোখে দেখি নাকো কেউ॥Continue Reading

সুকুমার সাহিত্য সমগ্র

» সুকুমার সাহিত্য সমগ্র

উপেন্দ্রকিশোর রায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র সুকুমারের জন্ম ১৮৮৭ খ্রীষ্টাব্দে। ১৯০৬-এ পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন দুই বিষয়েই অনার্স নিয়ে বি. এস্‌সি পাশ করার পর ১৯১১-য় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুরুপ্রসন্ন ঘোষ বৃত্তি লাভ করে মুদ্রণ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভেরContinue Reading

সুকুমার সাহিত্য সমগ্র

» জীবনচরিত

এটি জীবনচরিত নয়, অসামান্য প্রতিভাবান মানুষের চরিত্রের কিছু ঘটনার ধারাসমাবেশ আর যে দুটি উপাদানে মানুষ গড়ে ওঠে—বংশগতি ও পরিবেশ এখানে সেই দুটির সূত্রানুসন্ধান। গবেষণার পথে বিস্তারিত জীবনচরিত রচিত হতে পারে, সুকুমার রায়েরও হবে। অনেক বইপত্রContinue Reading

রাইফেল, রোটি, আওরাত

» রাইফেল, রোটি, আওরাত

ভূমিকা মানুষ এবং পশুর মধ্যে বড় একটা পার্থক্য হচ্ছে, পশু একমাত্র বর্তমানকেই দেখে, মানুষ দেখে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে এক সঙ্গে বিচেনা করে। যখন কোন ব্যক্তি এবং সমাজ একমাত্র বর্তমানের মধ্যেই আবর্তিত হতে থাকে তখনContinue Reading

রাইফেল, রোটি, আওরাত

» প্রথম পরিচ্ছেদ

বাংলাদেশে নামল ভোর। ভোরেই ঘুম ভাঙ্গে সুদীপ্তর। আজো তার ব্যতিক্রম হ’ল না। হ’তে পারতো। কতো রাত অবধি ঘুম হয় নি। আজো তো সারারাতেই মাঝে মাঝেই গুলির আওয়াজ শোনা গেছে। আর ভয় হয়েছে। মৃত্যুভয় নয়। মৃত্যুকেContinue Reading

রাইফেল, রোটি, আওরাত

» দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

পাক মুল্লুকে তরক্কির জন্য সুদীপ্তকে নাম লুকোতে হয়েছিল। এবং সেই রাতে বাঁচার জন্য লুকোতে হয়েছিল খাটের নীচে। কখনো খুব একজন সাহসী ব’লে সুনাম ছিল না সুদীপ্তর। তা হ’লেও জীবনে কখনো খাটের নিচে শুয়েছেন এমন কোনContinue Reading

রাইফেল, রোটি, আওরাত

» তৃতীয় পরিচ্ছেদ

কীর্তিমান পুরুষ বটে মালেক সাহেব। এম. এ. পাস করেছেন ১৯৪৫-এর দিকে। সে সময়ে তিনি কমিউনিস্টদের গাল দিয়ে মাসিক ‘মোহাম্মদী’তে কবিতা লিখতেন। কেন না ঐটেই সবচেয়ে নিরাপদ ছিল সেই সময়। দেশ স্বাধীন হ’লে মুসলিম লীগ অথবাContinue Reading

রাইফেল, রোটি, আওরাত

» চতুর্থ পরিচ্ছেদ

সে প্রায় এক বছর আগের ঘটনা। তখন ডঃ খালেকের সাথে সুদীপ্তর পরিচয়ের সবে সূত্রপাত। সুদীপ্ত তখনও জানতেন না যে, ডঃ খালেক আধুনিক পাকিস্তানি মুসলমান। সে জন্য কথায় কথায় ভারত-বিদ্বেষ প্রচার করে থাকেন। কখনো নামাজ-রোজা করেনContinue Reading

রাইফেল, রোটি, আওরাত

» পঞ্চম পরিচ্ছেদ

বিছানা ছেড়ে কিছুতেই আজ উঠতে ইচ্ছা করছে না। কিন্তু ফিরোজ তো উঠে গেছেন। শূন্য ঘরে সুদীপ্ত একটি শপথ নিতে চাইলেন মনে মনে। এইসব যা ঘটে গেল তা ভেবে কিছুতেই মন খারাপ হ’তে দেওয়া হবে না।Continue Reading

রাইফেল, রোটি, আওরাত

» ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

সুদীপ্ত বেরিয়ে পড়লেন। কোথায় যাবেন? এমনই পথে পথে ঘুরবেন কিছুক্ষণ? ওরে বাবা, তার সাধ্যি কি! দলে দলে মিলিটারি টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে রাস্তায়—তাদের দিকে চাওয়া যায় না। প্রবল চেষ্টায় সুদীপ্ত একবার শুধু তাকিয়েছিলেন একটা দলের পানে।Continue Reading