পত্র[১]

কাশী গিয়ে হু হু ক’রে কাটলো কয়েক মাস তো,

কেমন আছে মেজাজ ও মন, কেমন আছে স্বাস্থ্য

বেজায় রকম ঠাণ্ডা সবাই করছে তো বরদাস্ত?

খাচ্ছে সবাই সস্তা জিনিস, খাচ্ছে পাঁঠা আস্ত?

সেলাই কলের কথাটুকু মেজদার দু’কান

স্পর্শ ক’রে গেছে বলেই আমার অনুমান।

ব্যবস্থাটা হবেই, করি অভয় বর দান;

আশা করি, শুনে হবে উল্লসিত প্রাণ।

এতটা কাল ঠাকুর ও ঝি লোভ সামলে আসতো,

এবার বুঝি লোভের দায়ে হয় তারা বরখাস্ত।

চারুটাও হয়ে গেছে বেজায় বেয়াড়া,

মাথার ওপরে ঝোলে যা খুশীর খাঁড়া।

নতেদা’র বেড়ে গেছে অঙ্গুলি হাড়া,

ঘেলুর পরীক্ষাও হয়ে গেছে সারা;

এবার খরচ ক’রে কিছু রেল-ভাড়া

মাতিয়ে তুলতে বলি রামধন পাড়া।

এবার বোধহয় ছাড়তে হল কাশী,

ছাড়তে হল শৈলর মা, ইন্দু ও ন’মাসি।

দুঃখ কিসের, কেউ কি সেথায় থাকে বারোমাসই

কাশী থাকতে চাইবে তারা যারা স্বর্গবাসী,

আমি কিন্তু কলকাতাতেই থাকতে ভালবাসি।

আমার যুক্তি শুনতে গিয়ে পাচ্ছে কি খুব হাসি?

লেখা বন্ধ হোক তা হলে, এবার আমি আসি॥

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. ১৯৪৫ সালে সুকান্ত মেজবৌদি রেণু দেবীর সঙ্গে কাশী বেড়াতে যান। সুকান্ত ফিরে এসে শ্যামবাজারের বাড়ি থেকে এই চিঠিটি তাঁকে লিখেছিলেন। চিঠিটি শ্রীরাখাল ভট্টাচার্য স্মৃতি থেকে উদ্ধার করে দিয়েছেন।