ষোলো সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ সোনালীর জন্মদিনের একদিন আগেই আমরা দুজনে রানীডিহি পৌঁছলুম। রিফাইনারি থেকে দূরে চমৎকার পাহাড়ী এলাকায় ডিরেক্টর সায়েবের বাংলো এবং অন্যান্য অফিসারদের কোয়ার্টার। ছবির মতো দেখাচ্ছিল ঘরবাড়িগুলো। প্রাকৃতিক দৃশ্যও অপূর্ব।
সবে শুক্লপক্ষের চাঁদ উঠেছে। কর্নেল ড্রয়িং রুমে গল্প করছে। আমি দক্ষিণের বারান্দায় গিয়ে বসলুম। টিলার ওপর বাংলোটা। তাই জ্যোৎস্নায় নীচের উপত্যকাটা ভাগ্নি রহস্যময় দেখাচ্ছিল। বারান্দার ওপরে একটা হাল্কা আলোর বাল্ব রয়েছে। আলোটা নিভিয়ে দিলে বাইরের সৌন্দর্য পুরোপুরি ফুটত ভেবে সুইচ খুঁজছি, এমন সময় সোনালী, রত্না, দীপ্তি আর একটি অচেনা যুবক এল। সোনালী বলল—আলাপ করিয়ে দিই জয়ন্তবাবু। রত্নার দাদা দিব্যেন্দু। মানে আমারও মাসতুতো দাদা। দির্য, তোমাকে তো এঁর কথা বলেছি। জয়ন্ত চৌধুরী…।
দিব্যেন্দু নমস্কার করল হাসিমুখে।—দৈনিক সত্যসেবকে আপনার রিপোর্টগুলো আমি কিন্তু মন দিয়ে পড়ি। খুব ইন্টারেস্টিং!
রত্না বলল—তার চেয়েও ইন্টারেস্টিং ব্যাপারটা এবার আলোচনা করা যাক দিব্য। সোনালী, তুই শুরু কর।
চারটি মুখে ষড়যন্ত্রসঙ্কুল হাসি দেখছিলুম। বললুম—কী ব্যাপার?
সোনালী দ্রুত এদিক ওদিক দেখে নিয়ে চাপা গলায় বলল—জয়ন্তবাবু, ভয়ে বলব, না নির্ভয়ে? আপনি নিশ্চয় ওই গোয়েন্দা ভদ্রলোকের অ্যাসিস্ট্যান্টের রোলেও কাজ করেন?
হেসে ফেললুম। ব্যাপার কী? অবশ্য, আমি ওঁর নিছক ভ্রমণসঙ্গী।
সোনালী ফিসফিস করে বলল—কর্নেলকে নিয়ে আমরা একটু মজা করলে মানে জাস্ট এ ফান—আপনার আপত্তি হবে না তো?
—মোটেও না। বরং আমি আপনাদের দলে ঢুকে পড়ব। কিন্তু সাবধান, বুড়ো ভারি ধুরন্ধর।
রত্না বলল, —এত নাম ডাক শুনেছি। এত অদ্ভুত ব্যাপার নাকি করতে পারেন! এবার দেখা যাক্ হাতে নাতে!
সোনালী বলল—আমরা একটা মার্ডার কেস সাজাব, বুঝলেন?
—হ্যাঁ, বলে যান।
এই সময় ড্রয়িং রুমের দরজা থেকে একটি মুখ উঁকি মারল— চিনলুম। একটু আগেই আলাপ হয়েছে। অনিরুদ্ধের পি. এ. রণধীর চোপরা! বেশ স্মার্ট হাসিখুশি যুবক। এসে বিশুদ্ধ বাংলায় বলল—ডিসটার্ব করলুম না তো?
সোনালী উৎসাহ দেখিয়ে বলল—ব্যস, মেঘ না চাইতেই জল। রণধীরদা, তোমাকে দলে নিলুম তাহলে। ব্যস, আমরা মোট ছ’জন ব্যাপারটা জানলুম। এবার প্ল্যানটা বলি। আমরা একটা চমৎকার মার্ডার কেস সাজাব। কিছু ক্লু রাখব। দেখব, কর্নেলের গোয়েন্দা বুদ্ধি কতখানি।
রত্না বিরক্ত হয়ে বলল—আহা, বলেই ফেল না বাবা। শুধু ভূমিকা করছিস।
সোনালী সিরিয়াস হয়ে চাপা গলায় বলতে শুরু করল—ওই যে গেট রয়েছে, তার বাইরে ঝোপঝাড়গুলোর মধ্যে একজায়গায় আমরা একটা ডেডবডি রাখব।
চোপরা বিস্ময়মেশানো আতঙ্কে বলল—সর্বনাশ! ডেডবডি?
সোনালী ধমক দিয়ে বলল—ভ্যাট, কিস্যু বোঝে না! রিয়েল ডেডবডি নয় নকল। আমরা দীপ্তিকে ডেডবডি করব। আমাদের থিয়েটার ক্লাবের একটা টিনের ছোরা আছে। ছোরাটার ডগাটা চাপ দিলে ভেতরে ঢুকে যায় এবং বডিতে আটকে পড়ে। কেমন? দীপ্তির বুকে সেটা আটকে থাকবে।
দীপ্তি এতক্ষণ চুপচাপ শুনছিল। এবার বলে উঠল—না, না! পিঠে!
—বেশ, পিঠেই। পিঠে আটকে দিয়ে লাল রঙ ছড়িয়ে দেব। সে আমি ম্যানেজ করব’খন। একেবারে টাটকা দল-দলা রক্তের মতো দেখাবে। দীপ্তি মড়া সেজে পড়ে থাকবে। এবার ক্লু। ক্লু থাকবে একটা পোড়া দেশলাই কাঠি, আধপোড়া সিগারেট তিন চারটে…
দিব্য বলল—তাহলে আমাকে ধরে ফেলবে। আমি চেইন স্মোকার।
চোপরা বলল—আমাকেও। আমিও চেইন স্মোকার।
সোনালী বলল—তাহলে অন্য ক্লুর কথা ভাববো। জয়ন্তবাবু কী বলেন?
বললুম—কিন্তু তার আগে বলুন, আপনারা খুনী হিসেবে একজনকে নিশ্চয় ধরে রাখছেন! সে রোলটা কে নিচ্ছেন?
—দিব্য। দিব্য, তুমি রাজী তো?
দিব্যেন্দু আমতা হেসে বলল—বেশ। কিন্তু…
সোনালী বলল—কোনও কিন্তু নয়। তুমিই কিলার। এবার জয়ন্তবাবু বলুন।
বললুম—ক্লু খুব সহজ হওয়া চাই। কারণ, এটাতো জাস্ট এ গেম। নিছক খেলা! কর্নেলের যা স্বভাব, প্রথমে সত্যিকার খুন ভেবে খুব সিরিয়াস হয়ে পড়বেন এবং তক্ষুণি পুলিশ ডাকতে বলবেন। ফোরেন্সিক বিশেষজ্ঞ আসতে বলবেন। এবং অ্যাম্বুল্যান্স ইত্যাদি এসে যাবে।
সোনালী ব্যস্তভাবে বলল—সর্বনাশ! তাহলে তো ওঁকে…
বাধা দিয়ে বললুম—উনি ডেডবডি দেখে তেমন কিছু করার আগেই আপনারা দৌড়ে গিয়ে তখন বলবেন, আপনিই হত্যাকারীকে খুঁজে বের করুন! দেখি, আপনি কেমন গোয়েন্দা! না পারলে পুলিশ তো আছেই।
সবাই হেসে উঠল। সোনালী বলল—ইউরেকা! একটা ক্লু আমার মাথায় এসেছে। নীচের দিকে নদীতে এখন ফ্লাডটা কমেছে। কিন্তু পলি জমে আছে পাড়ের জঙ্গলে। দিব্যর পায়ে জুতোর সেই কাদা লেগে থাকবে। এবং দীপ্তির ডেডবডির কাছে কিছু কাদা ফেলে রাখা হবে। যতক্ষণ খেলা চলবে, দিব্য সেই জুতোই পরে থাকবে। কেমন? জয়ন্তবাবু, কর্নেল অত খুঁটিয়ে কি লক্ষ্য করবেন?
বললুম—কে জানে! তবে বুড়ো বড্ড সেয়ানা।
দিব্যকে নার্ভাস দেখাচ্ছিল। বলল—তাহলে সন্দেহ তো একজনের ওপরেই পড়ার মতো ক্লু রাখা হচ্ছে। এমন সব চিহ্ন রাখো, যাতে কর্নেল প্রত্যেককেই সন্দেহ করেন।
রত্না সায় দিয়ে বলল—এই! দাদা কিন্তু ঠিকই বলেছে রে! রণধীরদা, তোমাকে সন্দেহ করার মতো কী চিহ্ন রাখা যায় বলে তো?
চোপরা একটু ভেবে নিয়ে বলল—আমার লাইটারটা ফেলে রাখব কোথাও। ডেডবডির কাছাকাছি। তার মানে, আমি ও দীপ্তি ধরো কথা বলছিলুম ওখানে। আমি চলে এলুম, দীপ্তি থাকল। তারপর খুন হয়ে গেল ও।
সোনালী বলল—চমৎকার। আমরা সাক্ষী দেব, মানে আমিই বলব যে দীপ্তি আর রণধীরদার ঝগড়া হচ্ছিল ওখানে। বাংলোর এই বারান্দা থেকে শুনেছি।
চোপরাকেও এবার নার্ভাস দেখাল। সে বলল—তাহলে দুজন মোটে সাসপেক্ট?
সোনালী বলল—আরেকজন হলে ভাল হতো। কর্নেলকে গোলমালে ফেলা যেত। কিন্তু পুরুষমানুষ ছাড়া মার্ডারার হয় না। মানায়ও না!
দিব্য আপত্তি করে বলল—মোটেও না। মেয়েরাও ছোরা চালায়।
সোনালী, রত্না, দীপ্তি একসঙ্গে বলে উঠল—না, না! মোটেও না।
আমি একটু হেসে বললুম—হ্যাঁ, ছোরাটোরা মেয়েদের মার্ডার উইপন নয় সচরাচর। রিভলবার বরং চালাতে শুনেছি। তবে সেটা বিরল কেস। সচরাচর বিষই মেয়েদের মার্ডার উইপন! এক্সকিউজ মি, এ কিন্তু স্বয়ং কর্নেলেরই সিদ্ধান্ত।
চোপরা বলল—মহিলা গোয়েন্দাকাহিনীকার আগাথা ক্রিস্টিরও এই মত।
মেয়েরা একসঙ্গে সায় দিয়ে হেসে বলল—খানিকটা কারেক্ট।
সোনালী বলল—তৃতীয় পুরুষমানুষ অবশ্য জয়ন্তবাবু আছেন। কিন্তু…
বললুম— কর্নেল আমাকে হিসেবে ধরবেনই না। সুতরাং আমারই খুনী হবার স্কোপ ছিল এবং আপনারা কর্নেলকে পরাস্ত করতে পারতেন।
দিব্যেন্দু অমনি ব্যস্ত হয়ে উঠল। বলল—সোনালী! তোমরা বরং জয়ন্তবাবুকেই খুনী করো।
সোনালী রত্না ও দীপ্তির দিকে তাকাল। ইতিমধ্যে ওদের ফানটা আমার দারুণ ভাল লেগে গেছে। কর্নেলকে নিয়ে এমন মজা করার সুযোগ কখনও পাইনি। তাই বলে উঠলুম-ঠিক আছে। আমিই খুনী হলুম। নদীর পলিতে হেঁটে আসব আমিই। আর দিব্যবাবু বরং অন্যতম সাসপেক্টেড হয়ে ওঠার জন্য অন্য কোনও ক্লু রাখবেন।
দিব্যেন্দু বলল—আমি…আমি ওখানে আমার একটা বিশেষ ব্ৰাণ্ডের সিগ্রেটের টুকরো ফেলে আসব। এই সিগ্রেট জয়ন্তবাবু বা রণধীর খান না। খান কি?
আমি ও চোপরা ওর ব্রাণ্ড দেখে বললুম—না।
সোনালী খুব খুশি হয়ে উঠে দাঁড়াল। বলল-এবার কফি খাওয়া যাক। এতক্ষণ তৈরি নিশ্চয়। কফি খেতে-খেতে আরও ডিটেলস আলোচনা করা যাবে।
ওকে সতর্ক করে দিয়ে বললুম—দেখবেন, কর্নেল যেন এদিকে না এসে পড়েন! কী অবস্থায় আছেন, দেখে আসবেন কিন্তু।
সোনালী মাথা দুলিয়ে চলে গেল। আমি দীপ্তির দিকে তাকালুম। দীপ্তি কি নার্ভাস হয়ে পড়ছে ক্রমশ? তাকে কেমন অন্যমনস্ক দেখাচ্ছিল। হেসে বললুম— ভয় পেয়েছেন দীপ্তি?
দীপ্তির হাসিতে শুকনো ভাবটা ঢাকা গেল না। রত্ন বলল-ও ভয় পাবে কী? আপনি তো জানেন না, আমাদের থিয়েটার ক্লাবের সবচেয়ে পাকা অভিনেত্রী ও। নাচতে গাইতেও পারে। কাল সোনালীর জন্মদিনে ওর কীর্তি দেখে আপনার তাক লেগে যাবে।
দীপ্তি যেন বিরক্ত হলো। বললবাজে বকিসনে, রত্না। জয়ন্তবাবু কলকাতায় থাকেন, ভুলে যাস্ নে। আদাড়ে গাঁয়ে শেয়াল রাজা আমি।
কথা কেড়ে রত্না বলল-রানী বলো, দীপ্তি।
সবাই হাসল। চোপরা বলল—কাল ফাংশানের প্রোগ্রাম কি এখনও আমায় জানানো হয়নি কিন্তু। একেবারে লাস্ট মোমেন্টে বলবে, তখন ম্যানেজ করতে পারব না বলে দিচ্ছি। প্রোগ্রাম ডিরেক্টর নিশ্চয় রত্না?
রত্নাকে একটু বিরস দেখাল। বলল—বেশি কিছু করা যাবে না। মেসোমশাই বলেছেন—খুব ধুমধাম করা হবে না। বেশি কেউ আসছেনও না। লোকাল লোক আর বাইরের মিলে বড় জোর জনা দশ বারো। অবশ্য ড্রইংরুমটা বড়ো। স্টেজ হবে না। দীপ্তিই নাচবে-গাইবে!
দীপ্তি বলল—এবং তুমিও।
রত্না কী বলতে যাচ্ছিল, সোনালী ও একজন পরিচারিকা ট্রে নিয়ে এল। সোনালী ফিসফিস করে বলল-কর্নেল গম্ভীর মুখে কী একটা প্রকাণ্ড বই পড়ছেন। বাবা পাশে তেমনি গম্ভীর মুখে বসে আছেন। কিন্তু মুশকিল হয়ে গেছে। মা জানতে পেরেছেন সব। বারণ করেছিলেন। আমার ভয় করছে বাবার কানে না তোলেন!
রত্না বলল—এই রে! সেরেছে! মাসিমাকে জানাল কে?
দিব্য বলল—আমি তো কিছু বলিনি। নিশ্চয় দীপ্তি বলেছে।
কাঁচুমাচু হয়ে দীপ্তি বলল—মানে, ওঘরে যখন সোনালী আর রত্নার সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা করছিলুম, মাসিমার কানে গিয়েছিল। আমি বেরোলে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন—মার্ডার-টার্ডার কী সব বলছি? উনি যা মানুষ, হইচই করে ফেলবেন—এই ভয়ে বলতে হলো। উনি আমাকে নিষেধ করছিলেন।
চোপরা কফিতে চুমুক দিয়ে বলল—তাহলে দি গেম ইজ ফিনিশ। উনি বাধা দেবেন। আই নো ইট।
সোনালী একটু ভেবে বলল—এক কাজ করা যাক। টাইমটা পাল্টে সকাল ন’টার বদলে ভোর ছটা। অত সকালে মায়ের ঘুম ভাঙবে না। রণধীরদা, তুমি কিন্তু ভোর পাঁচটায় আসছ। দিব্য, রত্না, দীপ্তি—সবাই ঠিক ওই সময়ে। জয়ন্তবাবু, আপনার ঘুম ভাঙবে তো?
বললুম—হ্যাঁ। তবে কর্নেলেরও ভাঙবে। এবং উনি অভ্যাসমত বেড়াতে বেরোবেন।
সোনালী বলল—বাঃ! তাহলে তো চমৎকার সুযোগ। উনি ফিরলেই আমরা ঝটপট দীপ্তিকে ওখানে রেখে চলে আসব। খবর দেবে—এই রে! মার্ডারটা কার প্রথম চোখে পড়বে ঠিক করা হয়নি যে!
রত্না বলল-দাদাই দিক না। দাদাও ধরো মর্নিংওয়াকে বেরিয়েছিল। ফিরে এসে চোখে পড়েছে! ব্যস!
দিব্য বলল—বেশ। কিন্তু মোটিভ কী রাখছ খুনের? বলে সে দীপ্তির দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসতে থাকল।
রত্না মুখ টিপে হেসে বলল—মোটিভ ইজ প্রেমের প্রতিহিংসা। দাদা, চোপরা এবং জয়ন্তবাবু তিনজন প্রেমিক, একজন প্রেমিকা।
দীপ্তি হইচই করে বলল—যাঃ!
তার মুখ রাঙা দেখাচ্ছিল। বললুম—এতে সংকোচের কী আছে মিস দীপ্তি? জাস্ট এ গেম। অভিনয়। আপনি নিশ্চয় প্রেমিকার ভূমিকায় থিয়েটারে অভিনয় করেছেন।
সোনালী বলল—একশোটা করেছে। তুলনাহীন অভিনয়।
দীপ্তি হঠাৎ ঘুরে বলল—আচ্ছা, ধরুন যদি এমন হয়—মানে, আপনারা তিনজনের একজন কোনও গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন এবং আমি সেটা টের পেয়েছিলুম বলেই আমাকে… মানে…
চোপরা হো হো করে হেসে বলল—চমৎকার! কিন্তু ষড়যন্ত্র কিসের?
ধরুন, এখানে অয়েল রিফাইনারিতে কোনও সাবোটাজ করার জন্য …‥
দিব্য বাধা দিল—এক মিনিট। ব্যাপারটা খুব জটিল আর কষ্টকল্পিত।
দীপ্তি যেন জেদ ধরল। কেন? এমন হচ্ছে না আজকাল? সরকারী প্রজেক্টে বিদেশী এজেন্টের লোকেরা অন্তর্ঘাত করার চেষ্টা করেছে না?
চোপরা বলল—ব্রিলিয়ান্ট! খুব স্বাভাবিক মোটিভ। কিন্তু তার তো ক্লু থাকা চাই।
দীপ্তি বলল—ধরুন, আমার কাছে কোনও টুকরো কাগজ থাকবে এবং তাতে কোনও সাংকেতিক কিছু লেখা থাকবে! ভাববেন না, সে আমি নিজেই ম্যানেজ করব’খন। কাগজটা ছেঁড়া হবে এবং আমার মুঠোর মধ্যে লুকানো থাকবে।…
সোনালী হাসতে হাসতে বলল-বুঝেছি। দীপ্তি এই তিনজনের প্রেমিকা হতে চায় না! পছন্দ হচ্ছে না। তাই বাপস! অয়েল রিফাইনারিতে সাবোটাজ! বাবাকেও জড়াচ্ছে! তবে এই মোটিভটা খুব সিরিয়াস। গেমটা আরও জমবে। কর্নেলের বুদ্ধি গুলিয়ে যাক্ না!
আমি কিন্তু চমকে উঠেছিলুম। দীপ্তির মুখে কী একটা টের পাচ্ছিলুম। সেটা ঠিক কী, বর্ণনা দেওয়া অসম্ভব। একটা দৃঢ়তাই কি দেখলুম? অস্বস্তি হলো। সেই মুহূর্তে কর্নেলকে দেখা গেল দরজায়। আমরা তাকালুম। কিন্তু কর্নেল ফের ঢুকে গেলেন। সোনালী চাপা হেসে সন্দিগ্ধ মুখে বলল—শুনলেন না তো কিছু?