» সাত

নিজের জন্মতিথি উপলক্ষে বাটীতে আজ মহোৎসবের বিপুল আয়োজন হইতেছে, প্রতি বৎসরই ইহা হইত, কিন্তু এবার জাঁকজমক কিছু বেশি। সমস্ত বাটীময় ফল, ফুল ও রংদার পাতায় সাজান হইতেছে, সহস্র দীপ নানাবর্ণ বিচিত্র কাচপাত্রের ভিতরে সজ্জিত হইয়াContinue Reading

» আট

আরও তিন দিন নিঃশব্দে অতিবাহিত হইয়া গেল। এইবার, এতদিন পরে লিওর চক্ষে খুব বড় দু’ ফোঁটা জল আসিয়া পড়িল। আজ মাসাধিক কাল হইল মেরি অল্পে অল্পে সরিয়া দাঁড়াইয়াছে, সামর্থ্যানুযায়ী অবহেলা তাচ্ছিল্য করিতে ত্রুটি করে নাইContinue Reading

» নয়

এক সপ্তাহও অতিবাহিত হয় নাই, মেরি চার্লসকে হঠাৎ বলিল, ‘তুমি আমার একটা উপকার করিতে পারিবে?’ আজ মেরির চক্ষু দুটা কতকটা উন্মাদের মত চকচক করিতেছে। চার্লস কহিল, ‘কি রকম উপকার?’ মেরি একটু থামিয়া বলিল, ‘তবে শোন,Continue Reading

» দশ

নোটিশ পাইয়া লিওপোল্ডের সমস্ত সংসার অন্ধকার বোধ হইল। সমস্ত রাত্রি চিন্তা করিয়াও সে কূল দেখিতে পাইল না। প্রাতঃকালে, মেরি আপনার কক্ষে বসিয়া রক্তবর্ণ চক্ষু নত করিয়া কি ভাবিতেছিল, এমন সময় ভৃত্য আসিয়া কহিল, ‘নীচে লিওContinue Reading

» এগার

পনর দিনের মধ্যে লিওর রীতিমত সংজ্ঞা হইল না; পনর দিন মেরি তাহার শয্যা ত্যাগ করিল না। ডাক্তার বলিল, ‘মেরি, অত পরিশ্রম করিলে তুমিও পীড়িত হইয়া পড়িবে।’ মেরি ম্লান হাসিয়া উত্তর দিল, ‘ডাক্তার মহাশয়, এ সময়েContinue Reading

» বিচার

বিচার গল্পটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ে অপ্রকাশিত ও পরিত্যাক্ত রচনাবলীর অন্তর্ভূক্ত। বিচার গল্পের পরিচ্ছেদ সমূহContinue Reading

» এক

রাঠোন রাজকুমারী যমুনাবাই ছেলেবেলায় তাহার পিতার ক্রোড়ে বসিয়া বলিত—‘বাবা, তুমি সিংহাসনে বসিয়া বিচার কর না কেন?’ অজয় সিংহ কন্যার শির চুম্বন করিয়া বলিতেন—‘মা, তোমার বুড়ো বাবার বড় ভুল হয়, তাই সে আর বিচার করে না—সিংহাসনেContinue Reading

» দুই

রাজরাজেশ্বরী যমুনাবাই স্বর্ণসিংহাসনে বসিয়া মাথার হেমমুকুট ধীরে ধীরে কম্পিত করিয়া বলিলেন—’রাঠোন রাজ্যে মহোৎসবের আয়োজন কর মন্ত্রি, সাত দিনের মধ্যে নগরে যেন কোন দুঃখের চিহ্ন না দেখা যায়। যে দরিদ্র তাহাকে অর্থ দাও। যাহার যাহাতে প্রয়োজনContinue Reading

» তিন

যমুনা কহিল, ‘ভাই মলিনা, ভরত সিংহকে বড় দেখিতে ইচ্ছা করে, সে নাকি বড় যোদ্ধা, বড় সাহসী বীরপুরুষ।’ মলিনার মুখের উপর কাল ছায়া পড়িল, বলিল, ‘বাবা বলেন, তাহার তুল্য যোদ্ধা রাজপুতের মধ্যে নাই, শত হস্তের মধ্যেContinue Reading

» চার

যমুনা ভরত সিংহের হাত আপনার হাতে লইয়া বলিল, ‘রাজপুত্র, এই ক্ষীণ বাহুতে এত শক্তি, আমার ত বিশ্বাস হয় না।’ রাজপুত্র হাসিয়া কহিল, ‘লোকে বেশী বাড়াইয়া বলে।’ যমুনা জিজ্ঞাসা কহিল—’এই বালক বয়সের মধ্যে এত বড় যোদ্ধাContinue Reading

» পাঁচ

তার পরদিন সমর সিংহ রাজপুত্রকে ধরিয়া বসিল, ‘কাল তোমাদের বিচার, তুমি রানীর নিকট প্রাণভিক্ষা চাহিয়ো।’ রাজপুত্র হাসিয়া উঠিল, ‘তাই ত ভাই, ওরূপ ব্যবসা যে কখন করি নাই।’ —নাই করিলে, এখন প্রাণের জন্য সব করিতে হয়।Continue Reading

» ছয়

বিচার সভা! স্বর্ণখচিত হীরক-মণিমুক্তাশোভিত, বিচিত্র পট্টবস্ত্রাবৃত স্বর্ণসিংহাসনে যমুনাবাই রাজরাজেশ্বরী বেশে বসিয়া আছে। মন্ত্রী, সভাপণ্ডিত, সভাসদ্‌, প্রভৃতি সারি দিয়া বসিয়া আছে। অসংখ্য প্রহরী রক্তবর্ণ সজ্জায় সুশোভিত হইয়া শান্তিরক্ষা করিতেছে। ‘জয় মহারানীর জয়! জয় মহারানীর জয়!’ শৃঙ্খলেরContinue Reading

» অন্তর্যামী

ভীমচাঁদ নিজের বাঁ হাতের উপর সজোরে ডান হাত চাপড়াইয়া তাহার ষোড়শী স্ত্রীর কাছে আস্ফালন করিয়া কহিল, ‘মানুষের মুখের পানে চেয়ে যদি তার মনের কথাই না জানতে পারলুম ত এ দুটো চোখ বৃথাই রাখি! ওগো আমাকেContinue Reading

» জাগরণ

জাগরণ ধারাবাহিকভাবে মাসিক বসুমতী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৩০ ও ১৩৩১ বঙ্গাব্দে। প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ‘শুভ রথযাত্রা, ১৩৬৯ বঙ্গাব্দে। প্রকাশক শ্যামাপদ সরকার, ১১৫, অখিল মিস্ত্রি লেন, কলিকাতা-৭০০০০৯। প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন পার্থ প্রতিম বিশ্বাস। মুদ্রক নিরঞ্জন ঘোষ,Continue Reading

» এক

ব্যারিস্টার মিস্টার আর. এম. রে ব্রাহ্ম ছিলেন না, গোঁড়া হিন্দু ত ছিলেনই না, হয়ত বা আঠারো আনা ‘বিলাত ফেরতের জাতি’ও নাও হইবেন; তবে এ কথা সত্য যে, তাঁহার পিতা-মাতা যখন আরাধ্য দেব-দেবী স্মরণ করিয়া সপ্তপুরুষেরContinue Reading

» দুই

পিতার সঙ্গে আলেখ্য জীবনে এই প্রথম তাহার স্বর্গীয় পিতামহগণের পল্লীবাসভবনে আসিয়া উপস্থিত হইল। বয়স তাহার বেশী নয়, তথাপি এই বয়সেই সে তিনবার য়ুরোপ ঘুরিয়া আসিয়াছে। দার্জিলিং ও সিমলার পাহাড় বোধ করি কোন বৎসরেই বাদ পড়েContinue Reading