দুই
রাতে উল্লেখযোগ্য আর কিছু ঘটল না, কর্নেলের কাশিও বিশেষ শুনলুম না। তবে একবার মনে হয়েছিল, বাইরে বারান্দায় কার বা কাদের চলাফেরার শব্দ শুনছি। ভাল করে শোনার আগেই সেটা থেমে গেল।
আমার ঘুম ভাঙে দেরিতে। অভ্যাস মতো লক্ষ্য করলুম, প্রকৃতিবিদ নিত্য নৈমিত্তিক প্রাতঃভ্রমণে গেছেন। দরজা ভেজানো রয়েছে।
থাক গে, নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। ভেবেছিলুম, কাশিটা রাতারাতি বেড়ে যাবে। বাড়েনি এবং জ্বরজ্বালা এসে কাহিল করেনি বুড়োকে। করলে এ বিদেশ বিভুয়ে কেলেংকারি হতো। ভ্রমণের আনন্দ মাঠে মারা যেত।
প্রকৃতি আজ হাসিখুশি ও পরিচ্ছন্ন। আকাশ পরিষ্কার নীল। রোদে ভেসে যাচ্ছে পাহাড় ও সবুজ বনস্থলী। হিমালয় জঙ্গলের তাবৎ পক্ষিকুল যেন এক সঙ্গে গলা ছেড়ে গান ধরেছে।
একটু পরে বদ্রী দিনের প্রথম সেলামসহ চা দিতে এলে বললুম– খবর বলল বদ্রী!
বদ্রী হাসল। সে টের পেয়েছে, আমি কী জানতে চাইছি। বলল, খবর ভাল স্যার! পাশের ঘরের বাবুসাবকে দেখতে পাচ্ছি না। মেমসাব একা আছেন। উনিও ভি চলে যাবেন বললেন। বেলা সওয়া ন’টায় বাস আসবে। বাসে তুলে দিতে হবে ওনাকে।
বদ্রী চলে গেলে একটু নিরাশই হলুম। নাটকটা জমল না।
চা খেয়ে সিগারেট টানতে টানতে বেরোলুম। বারান্দা থেকে লনে নামতেই পেছনে আস্তে কেউ ডাকল-শুনুন!
ঘুরেই আমার চক্ষু চড়কগাছ। প্রায় চেঁচিয়ে উঠলুম–প্রণতি! তুমি এখানে!
প্রণতিও ভীষণ অবাক হয়ে গেল। দরজা থেকে পর্দা তুলে আমাকে ডেকেছিল– এখন ছিটকে বারান্দায় বেরিয়ে এল। বলল, জয়ন্ত! তুমি এখানে?
প্রণতির গলার স্বর কাল রাতে কেন চিনতে পারিনি, তার কারণ নিয়ে মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ বাহুল্য। আসলে এমন একটা দুর্গম জায়গায় তার অস্তিত্ব স্বপ্নেও ভাবা যায় না।
কো-এডুকেশনের কলেজে প্রণতি আমার সহপাঠিনী ছিল। তার সঙ্গে প্রেম করার কথা ভুলেও ভাবিনি কোনওদিন। তবে তার প্রতি মোহ ছিল না এমন নয়। সে-মোহ ওর সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিত্বের প্রতি। তাছাড়া আমাকে সে পাত্তা দেবেই বা কেন? এম. এ. পড়তে গিয়ে লক্ষ্য করেছিলুম, প্রণতি পিছিয়ে পড়েছে। আমার মতো সেও ইংরেজি নিয়ে পড়ত। তার পিছিয়ে পড়ার কারণ শুনেছিলুম বিয়ে। যতদুর জানতুম, সে ছিল একটা সওদাগরী আপিসের সাধারণ কেরানীর মেয়ে। এক্ষেত্রে মেয়ের সৌন্দর্য থাকলে নিম্নবিত্ত অভিভাবকরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেন না।
প্রণতির বিয়ের নেমন্তন্ন আমি পাইনি। তার সঙ্গে বেশ কয়েকটা বছর দেখা হয়নি। গত বছর রাস্তায় হঠাৎ দেখা হয়ে যায়। কিন্তু তার সেই উজ্জ্বল লাবণ্য আর তত ছিল না। গায়ে মেদও জমেনি। বরং আরও রোগা হয়ে গেছে। কারণ হিসেবে সে অসুখ বিসুখের কথাই বলেছিল। স্বামী সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলেনি। তখনই আমার মনে হয়েছিল, দাম্পত্য জীবনে প্রণতি সুখী নয় হয়তো।
ডমরুনাথে এসে তার সঙ্গে এ-ভাবে দেখা হওয়ার কথা স্বপ্নেও ভাবিনি। প্রণতির চেহারা গতবছর যেমন দেখেছিলুম, প্রায় তেমনি রয়েছে। প্রথম বিস্ময় কেটে যাবার পর আমরা বারান্দার চেয়ারে বসলুম। তারপর প্রণতি ডমরুনাথে আসার কারণ যা বলল, তা এই: তার স্বামী নীতিশ ইঞ্জিনিয়ার। এখান থেকে তিন মাইল দূরে সারাঙ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সে সম্প্রতি বদলি হয়ে এসেছে। সারাঙে যেতে হলে ডমরুনাথে নামতে হয়। এখান থেকে দুর্গম পাহাড়ি পথ। তাই বিকেলে পৌঁছে এই বাংলোয় আশ্রয় নিয়েছে। খবর না দিয়ে আসার জন্য এই গণ্ডগোল। ভোরে খবর পাঠিয়েছে। নীতিশ জিপ নিয়ে এসে যাবে–সেই প্রতীক্ষা এখন।
হ্যাঁ, এক আত্মীয়ের সঙ্গেই এসেছে প্রণতি। তিনি ভোরে সারাঙ চলে গেছেন খবর দিতে।…
প্রণতির এই বিবরণ শোনার পর বলা বাহুল্য মনে মনে আমি হাসলুম। প্রণতি কতটা সত্য বলছে, তা জানি না। কিন্তু কতটা মিথ্যা বলছে, তা ধরতে পারছি, প্রথমত, ‘আত্মীয়’ ভদ্রলোকের সঙ্গে রাতে সেইসব রহস্যময় ঝগড়াঝাটি ও কান্নাকাটি–দ্বিতীয়ত, বদ্রীকে বলেছে, সওয়া ন’টার বাসে তুলে দিতে।
আমি ধূর্ত প্রশ্ন ছাড়লুম-খবর না দিয়ে এভাবে আসা কি ঠিক হয়েছে? ধরো, যদি নীতিশবাবু দৈবাৎ কোথাও গিয়ে থাকেন, তোমার আত্মীয় ভদ্রলোক কী করবেন? খামোক হয়রান হয়ে ফিরে আসবেন।
প্রণতি জবাব দিতে দেরি করল না। ভুরু কুঁচকে বলল, আমি ফিরে যাব।
সে কী?
প্রণতি জবাব দিল না। একটু চুপ করে থাকার পর বললুম– তোমার এখানে অপেক্ষা করার অসুবিধে নেই অবশ্য। নীতিশবাবু যদি সারাঙে নাই থাকেন এবেলা, তুমি অপেক্ষা করবে। আর যদি বলল, আমি এখানেই জিপের ব্যবস্থা করে তোমাদের পৌঁছে দিয়ে আসব’খন।
প্রণতি গুম হয়ে শুধু মাথাটা দোলাল।
বললুম– ব্যাপারটা কী বলো তো প্রণতি?
কী ব্যাপার?
হাসলুম। …অনেক খটকা লাগছে। মানে হঠাৎ তোমার এভাবে আসা…
প্রণতি কথা কেড়ে বলল, কী করব? একটা চরমহেস্তনেস্ত করা তো দরকার। কলকাতা থেকে সেজন্যে ছুটে এসেছি।
আপত্তি না থাকলে ব্যাকগ্রাউণ্ডটা জানাতে পারো। আস্তে এবং সহানুভূতি মিশিয়ে কথাটা বললুম–।
প্রণতি একটু চুপ থাকার পর বলল, তুমি তো আগে ভীষণ ইনটেলিজেন্ট ছিলে। টের পাচ্ছ না?
অতি সামান্য।
সেই যথেষ্ট। বলে প্রণতি উঠে দাঁড়াল।
তাকে হঠাৎ ব্যস্ত মনে হলো। ঘড়ি দেখল সে। তারপর মুখটা ঘুরিয়ে ওপাশে নিচে রাস্তার দিকে তাকাল। হাসতে হাসতে বললুম– কিছু যদি মনে না করো, আমার কথা শোনো। তুমি এখানে অপেক্ষা করো। আমি তোমার দূত হয়ে বরং বেরিয়ে পড়ি। আমার হাতে অঢেল সময়। তাছাড়া করার মতো একটা কাজও জুটে গেল বরাতে।
প্রণতি গম্ভীরমুখে শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে বলল, শমীক তো গেছে।
শমীক কে?
আমার পিসতুতো দাদা–যার সঙ্গে এসেছি।
উনি সারাঙের রাস্তা চেনেন তো? বড্ড গোলমেলে এ এলাকার রাস্তাঘাট।
চেনে।
প্রণতির হাবভাব আমার বরদাস্ত হচ্ছিল না। উঠে দাঁড়িয়ে বললুম– ঠিক আছে। আমি একটু ঘুরতে বেরুব। যদি অসুবিধে হয় জানিও।
প্রণতি কোনও কথা বলল না। আমি হনহন করে গেট পেরিয়ে টিলা থেকে নামতে থাকলুম। নিচের রাস্তায় গিয়ে এদিক ওদিক তাকালুম। এমন উজ্জ্বল সকালে প্রণতির ব্যাপারটা নিয়ে মাথা ঘামানোর মানে হয় না। মোড়ে এগিয়ে বাঁদিকে একটা সঙ্কীর্ণ পিচের পথ দেখতে পেলুম। সেখানে একটা ফলকে লেখা আছে সারাঙ চার কি. মি.। একটা তীরচিহ্নও আছে। সেই পথ ধরে আনমনে হাঁটতে থাকলুম। পথটা আঁকাবাঁকা। একপাশে পাহাড়ের দেয়াল, অন্যপাশে অতল খাদ। তাকালে মাথা ঘুরে ওঠে। কিছুদূর চলার পর আবছা জলের শব্দ কানে এল। খুঁজতে খুঁজেত আবিষ্কার করলুম, বাঁকের ওধারে একটা ঝর্ণা রয়েছে।
ঢালু ধাপবন্দী পাথর বেয়ে নেমে ঝর্ণার নিচে গেলুম। হাত পঁচিশেক চওড়া একটা নদীর ধারা সৃষ্টি করেছে ঝর্ণাটা। তার ওধারে বালি ও পাথরে ভর্তি অনেকটা চওড়া জায়গায় ছোট ছোট ঝোপ গজিয়েছে। ঝোপে অজস্র নীল ফুল ফুটেছে। পাথরে পা রেখে ডিঙিয়ে সেই ঝোপগুলোর কাছে গেলুম। জলের শব্দে কান ঝালাপালা হচ্ছিল।
একটা উঁচু পাথরে পা ঝুলিয়ে বসে হাত বাড়িয়ে একটা নীল ফুল ছিঁড়তে গিয়েই চমকে উঠলুম।
ওপাশে বালির ওপর উপুড় হয়ে পড়ে আছে কেউ। পরনে প্যান্ট, শার্ট, পায়ে জুতো রক্তে মাখামাখি অবস্থা। রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে এবং রঙটা কালচে হয়ে। গেছে।
তাকানোর সঙ্গে সঙ্গে যে আতঙ্ক ও বিস্ময় চেপে ধরেছিল, তার মধ্যেই দুটো জিনিস মাথায় এল। এটা একটা হত্যাকাণ্ড এবং হত্যাকাণ্ডটা ঘটেছে বৃষ্টি ছেড়ে যাবার অনেক পরে। সম্ভবত ভোরের দিকে।
অনেক বছর ধরে প্রখ্যাত এক গোয়েন্দার সহবাসে এসব জিনিস দেখার সাধারণ আতঙ্ক আমি অনেকটা এড়াতে শিখে গেছি। সেই সঙ্গে গোয়েন্দাসুলভ তদন্তবৃত্তিও অবলম্বন করতে শিখেছি।
আতঙ্ক ও বিস্ময় জোর করে তাড়িয়ে প্রথমে আশেপাশে বালির দিকে তাকালুম। জুতোর ছাপ আছে অনেকগুলো। ধস্তাধস্তির চিহ্ন প্রকট।
সেই ছাপের মধ্যে নিজের জুতোর ছাপ জুড়ে দেওয়া সঙ্গত মনে করলুম না। পাথরের ওপর পা রেখে হামাগুড়ি দিয়ে ঝুঁকে লোকটার মুখ দেখার চেষ্টা করলুম। মুখটা কাত হয়ে আছে। চোখ দুটো একটু ফাঁক। মনে হলো, আক্রমণ ঘটেছিল আচম্বিতে। লোকটা এখানে বসে কারুর জন্য অপেক্ষা করছিল কি?
আশেপাশে খুঁজতে খুঁজতে আরেকটা জিনিস চোখে পড়ল। পাথরে লাফ দিয়ে দিয়ে এগিয়ে ঝুঁকে দেখি, এইখানে অনেকটা বালি সরানো। গর্ত হয়ে রয়েছে। কেউ বা কারা বালির তলা থেকে কিছু উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
আবার লোকটার দিকে তাকালুম। আমারই বয়সী। প্রণতির পিসতুতো দাদা শমীক নয় তো? শিউরে উঠলুম। তারপর পাথর ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে ফের তার কাছে চলে এলুম। ঝুঁকে হাত বাড়িয়ে তার বুকপকেটে ঢোকানোর চেষ্টা করলুম। যদি কোনো কাগজপত্র পেয়ে যাই!
কিন্তু সেই সময় আচমকা আমার পাশেই ঠকাস করে একটা ঢিল পড়ল। লাফিয়ে উঠলুম। মুখ তুলে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি, ঠকাস করে আরেকটা ঢিল পড়ল পাথরে।
এবার দেখতে পেলুম, ঝর্ণার ওপর বাঁদিকের প্রকাণ্ড পাথরে দাঁড়িয়ে আছেন আমার বৃদ্ধ বন্ধু কর্নেল নীলাদ্রি সরকার। টাক ঢাকা সাদা টুপি রোদে ঝলমল করছে। গলায় কম্ফোর্টার জড়ানো। এক হাতে প্রজাপতি ধরা জাল, অন্যহাতে একগুচ্ছের ঢিল।
বুঝলুম, স্বরভঙ্গ যথার্থ ঘটেছে। তাই এই ঢিল। কিন্তু হাসবার মতো মনের অবস্থা নয়। ওঁকে দেখামাত্র সাহস ও উৎসাহ বেড়ে গেল। কীভাবে হাঁচড়-পাঁচড় করে ওই তিরিশ-পঁয়ত্রিশ ফুট উঁচু জায়গায় উঠে গেলুম বলতে পারব না।
পৌঁছেই হাঁফাতে হাঁফাতে বললুম– ওখানে একটা ডেডবডি পড়ে আছে কর্নেল। রীতিমত মার্ডার। রক্তে ভেসে গেছে।
কর্নেলের মুখটা গম্ভীর। হাতের ঢিল ফেলে নিজের মুখ হাঁ করে আঙুল দিয়ে বোঝালেন, স্বরভঙ্গ ঘটেছে। তারপর বোবার ভঙ্গিতে ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন, কিছুক্ষণ আগে তিনিও লাশটা আবিষ্কার করেছেন এবং একজন পথিককে দিয়ে ডমরুনাথ পুলিশ ফাঁড়িতে খবরও পাঠিয়েছেন। তারপর এখানে বসে শকুনের মতো অপেক্ষা করছিলেন, এমন সময় আমি হাজির হয়েছি। আমি কতটা কী করি, আমুদে বুড়ো তা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছে। শেষে আমি বাড়াবাড়ি করছি দেখে ঢিল ছুঁড়ে আমাকে সতর্ক করে দিয়েছেন।
আমি প্রণতির ব্যাপারটা বলার পর প্রশ্ন করলুম, এ দুইয়ে কি কোনও সম্পর্ক আছে?
কর্নেল পকেট থেকে একটুকরো সাদা চকপাথর বের করলেন। বুঝলুম, কোথাও কুড়িয়েছেন স্বরভঙ্গের দরুন ও পাহাড় পর্বতে জিনিসটা কাজে লাগবে বলে।
খড়ি দিয়ে পাথরের ওপর লিখলেন : যদি নিহত ব্যক্তিটি সেই শমীক হয়, তাহলে তো সম্পর্ক থাকছেই। যদি না হয়, তাহলে কিসের সম্পর্ক?
বললুম– যাই বলুন। প্রণতির ব্যাপার-স্যাপার বড় গোলমেলে। খুব রহস্যময়।
কর্নেল লিখলেন : রহস্যময় কি না, সেটা বোঝা যাবে সারাঙ বিদ্যুৎকেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে। যদি সত্যি ওখানে নীতিশবাবু নামে কোনও ইঞ্জিনীয়ার থাকেন, তাহলে গোলমাল কিসের?
বললুম– রাতে ওই যে সব কথাবার্তা শুনলুম শমীক ও প্রণতির–তার মানেটা কী?
কর্নেল লিখলেন : মানেটার সঙ্গে কোনও ক্রাইম জড়িত না থাকতেও পারে। যাই হোক, আর কথা নয়। চুপচাপ বসে পুলিশের অপেক্ষা করা যাক। এ আমাদের নাগরিক কর্তব্য।
বললুম– ফাঁড়িতে তো শুধু সেপাইরা থাকবে। দেখবেন, গণ্ডগোলে না যেন পড়তে হয়। বিহারের পুলিশ সম্পর্কে আমার আতঙ্ক আছে।
কর্নেল চুপচাপ চুরুট ধরিয়ে টানতে থাকলেন। আমার কথাও গ্রাহ্য করলেন না।
কিছুক্ষণ পরে ওপাশে রাস্তায় জনা দুই সেপাইকে আস্তে-সুস্থে আসতে দেখলুম। তাদের পেছনে একজন দেহাতি মজুর গোছর লোক। বুঝলুম, ওকে দিয়েই কর্নেল খবর পাঠিয়েছিলেন।
দেহাতি লোকটা ক্রমে আঙুল দিয়ে নিচে লাশটার দিকে সেপাই দুটোর দৃষ্টি আকর্ষণ করল। তারপর আমাদের দেখতে পেয়ে চেঁচিয়ে কিছু বলল।
আমরা নেমে গেলুম লাশের কাছে। সেপাই দুজন হোমরা-চোমরা ভঙ্গিতে জেরা শুরু করল। সব জবাব আমিই দিলুম। সেইসঙ্গে কর্নেলের স্বরভঙ্গের কথাও জানালুম। তখন দেহাতি লোকটা ফিক করে হেসে হিন্দিতে বলল, আমি ভেবেছিলুম বুড়োসায়েব বোবা-কালা!
সেপাইরা থানায় খবর পাঠিয়ে দিয়েছে। পাঁচমাইল দূরের থানা থেকে অফিসাররা এসে পড়বেন। ততক্ষণ আমাদেরও থাকতে হবে।..