শাস্ত্র-শকুন নীতি-ন্যাকার

রুচি-শিবার হট্টরোল

ভাগাড়ে শ্মশানে উঠিল ঘোর,

কাঁদে সমাজ চর্মলোল!

ঊর্ধ্বে যতই কাদা ছিটায়

হিংসুকের নোংরা কর

সে কাদা আসিয়া পড়ে সদাই

তাদেরই হীন মুখের পর!

চাঁদে কলঙ্ক দেখে যারা

জ্যোৎস্না তার দেখেনি, হায়!

ক্ষমা করিয়াছ তুমি, তাদের

লজ্জাহীন বিজ্ঞতায়!

আজ যবে সেই পেচক-দল

শুনি তোমার করে স্তব,

সেই তো তোমার শ্রেষ্ঠ জয়,

নিন্দুকের শঙ্খ-রব!

ধর্মের নামে যুধিষ্ঠির

‘ইতি গজের’ করুক ভান!

সব্যসাচী গো, ধরো ধনুক –

হানো প্রখর অগ্নিবাণ!

‘পথের দাবি’র অসম্মান

হে দুর্জয়, করো গো ক্ষয়!

দেখাও স্বর্গ তব বিভায়

এই ধুলার ঊর্ধ্বে নয়!

দেখিছ কঠোর বর্তমান,

নয় তোমার ভাব-বিলাস,

তুমি মানুষের বেদনা-ঘায়

পাওনি গো ফুল-সুবাস।

তোমার সৃষ্টি মৃত্যুহীন

নব ধরার জীবন-বেদ,

করনি মানুষে অবিশ্বাস

দেখিয়া পাপ পঙ্ক ক্লেদ।

পুষ্পবিলাস নয় তোমার

পাওনি তাই পুষ্প-হার,

বেদনা-আসনে বসায়ে আজ

করে নিখিল পূজা তোমার!

অসীম আকাশে বাঁধনি ঘর

হে ধরণির নীল দুলাল!

তব সাম-গান ধুলামাটির

রবে অমর নিত্যকাল!

হয়তো আসিবে মহাপ্রলয়

এ দুনিয়ার দুঃখ-দিন

সব যাবে শুধু রবে তোমার

অশ্রুজল অন্তহীন।

অথবা যেদিন পূর্ণতায়

সুন্দরের হবে বিকাশ,

সেদিনও কাঁদিয়া ফিরিবে এই

তব দুখের দীর্ঘশ্বাস।

মানুষের কবি! যদি মাটির

এই মানুষ বাঁচিয়া রয় –

রবে প্রিয় হয়ে হৃদি-ব্যাথায়,

সর্বলোক গাহিবে জয়!