» চার

বুড়ো রাত বাড়তে লাগলো ধীরে ধীরে। কাল কি হবে কেউ জানে না। রাস্তায় পুলিশ নেমেছে। পুলিশের গাড়ি ইতস্তত ছুটোছুটি করছে। পথঘাটগুলো জনশূন্য। একটা খালি রক পেয়ে তার উপরে গামছা বিছিয়ে শুয়ে পড়লো গফুর। দুটো শাড়িContinue Reading

» তিন

সদরঘাটে যেখানে অনেকগুলো খেয়ানৌকা ভিড় করে থাকে তার কাছাকাছি একটা ইট টেনে নিয়ে বসে পড়লো গফুর। ক্ষিদে পেয়েছে। খাবে। পুটলীটা ধীরে ধীরে খুললো সে। শহরের লোকজনদের সে বলতে শুনেছে— কাল নাকি হরতাল। শহরের সমস্ত দোকানপাটContinue Reading

» দুই

অর্থ আর প্রাচুর্যের অফুরন্ত সমাবেশ। অভাব বলতে কিছু নেই। মকবুল আহমদের জীবনে। বাড়ি আছে। গাড়ি আছে। ব্যাঙ্কে টাকা আছে। ছেলেমেয়েদের ইনসুরেন্স আছে কয়েকখানা। ব্যবসা একটা নয়। অনেক। অনেকগুলো। পানের ব্যবসা। তেলের ব্যবসা। পাটের ব্যবসা। পারমিটেরContinue Reading

» এক

কচু পাতার উপরে টল টল করে ভাসছে কয়েক ফোঁটা শিশির। ভোরের কুয়াশার নিবিড়তার মধ্যে বসে একটা মাছরাঙা পাখি। ঝিমুচ্ছে শীতের ঠাণ্ডায়। একটা ন্যাংটা ছেলে, বগলে একটি স্লেট আর মাথায় একটা গোল টুপি গায়ে চাদর। পায়েContinue Reading

» একুশে ফেব্রুয়ারি

বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলন শুধু এদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে নয়, শিল্প সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও নতুন চেতনাপ্রবাহ সৃষ্টি করেছিলো। এই চেতনা ছিলো অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং সামাজিক মূল্যবোধসঞ্জাত। আমাদের শিল্প সাহিত্যে যাঁরা এই চেতনার ফসল, তাঁদের ভেতর জহির রায়হানেরContinue Reading

» পাঁচ

মেজ ছেলের ঘর। স্বামী-স্ত্রী দুজনে বিছানায় শুয়ে। পাশাপাশি। কারো চেখে ঘুম নেই। দুজনেই ঈষৎ উত্তেজিত। মনে হলো অনেকক্ষণ ধরে তারা অদূর ভবিষ্যতের নানা সমস্যা নিয়ে কিছুটা বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়ে পড়েছিলো। এখনো তার রেশ চলছে। মেজContinue Reading

» চার

আমেনা তার স্বামীর কাছে চিঠি লিখছিলো তখন। আমি নিরাপদে এসে পেীছেছি। পথে কোন কষ্ট হয়নি। মামা আর মামী আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে রাতের ট্রেনে চাটগাঁয়ে চলে গেছেন। এখানে ভাবীরা আমার দিকে চেয়ে চেয়ে মুখ টিপেContinue Reading

» তিন

ঘরের মধ্যে বুড়ো কর্তা আহমদ আলী শেখ তাঁর বিছানায় ঘুমোচ্ছন। মাঝে মাঝে মৃদু নাক ডাকছে তার। বাচ্চা ছেলেটার চোখেও ঘুম। তবু বসে সে তার পরীক্ষার পড়া মুখস্ত করছে তখননা। আল্লাহতায়ালা বলিলেন, ইহাদের সেজদা করো। ইবলিশContinue Reading

» দুই

আমেনার দিকে চেয়ে চেয়ে তিন বউ মুখ টিপে হাসলো। বড় বউ বললো : কিরে মাস? ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে লজ্জায় মুখখানা অনা দিকে সরিয়ে নিলো আমেনা। জানি না। তিন বউ ওকে তিন দিক থেকে হেঁকেContinue Reading

» এক

গলিটা অনেক দূর সরল রেখার মতো এসে হঠাৎ যেখানে মোড় নিয়েছে ঠিক সেখানে আহমদ আলী শেখের বসতবাড়ি। বাড়িটা এককালে কোন এক বিত্তবান হিন্দুর সম্পত্তি ছিলো। দেশ ভাগ হয়ে যাওয়ার পর তাদের চব্বিশ পরগণার ভিটেবাড়ি, জমিজমা,Continue Reading

» চার

চারপাশে ধুধু বালির চর। আর আলকাতরার মতো যেন অন্ধকার। ভয়াবহ ক্লান্তির অবসাদে ভেঙ্গে পড়া তপু আর ইভার দুচোখে গভীর উৎকণ্ঠা। একটি জীবন কিছুক্ষণের মধ্যে পৃথিবীর বুক থেকে বিদায় নেবে। কুড়িয়ে পাওয়া আহত ছেলেটি একটু পরেContinue Reading

» তিন

ইভা আর তপু তখন ছুটছে। পালাচ্ছে ওরা। দীর্ঘ পথ চলায় ওরা ক্লান্ত। বিবর্ণ বিধ্বস্ত। তবু জীবনের জন্য। বাঁচার জন্যে। সুখের জন্যে। ওরা দুটছে। সহসা থমকে দাঁড়ালো ওরা। ইভা আর তপু। দেখলো। সামনে সীমাহীন সমুদ্র। আরContinue Reading

» দুই

মায়ের মন আতঙ্কে শিউরে উঠলো। এখানেও জীবনের কোন অস্তিত্ব নেই। প্রশস্ত পথ জুড়ে ভাঙ্গা কাচের টুকরো। ইটের টুকরো। আর মৃতদেহ। কুকুরের। বিড়ালের। পাখির। আর মানুষের। চারপাশে একবার তাকালো তপু। ধ্বনির পশুরা তাড়া করছে ওকে। ডানে।Continue Reading

» এক

তবু মানুষের এই দীনতার বুঝি শেষ নেই। শেষ নেই মৃত্যুরও। তবু মানুষ মানুষকে হত্যা করে। ধর্মের নামে। বর্ণের নামে। জাতীয়তার নাম। সংস্কৃতির নামে। এই বর্বরতাই অনাদিকাল ধরে আমাদের এই পৃথিবীর শান্তিকে বিপন্ন করেছে। হিংসার এইContinue Reading

» আর কত দিন

আর কত দিন (১৯৭০) – জহির রায়হান। অবরুদ্ধ ও পদদলিত মানবাত্নার আন্তর্জাতিক রূপ এবং সংগ্রাম ও স্বপ্নের আত্নকথা।Continue Reading

» উপসংহার

সকালের ডাকে আসা চিঠিখানা বারকয়েক নেড়েচেড়ে দেখলো লিলি। আঁকাবাঁকা অক্ষরে মাহমুদের নাম আর ঠিকানা লেখা। অপরিচিত হস্তাক্ষর। দুপুরে সে বাসায় এলে লিলি বললো, তোমার চিঠি এসেছে একখানা। টেবিলের ওপর রাখা আছে। খামটা ছিড়ে চিঠিখানা পড়লোContinue Reading

» তারও আগে যা ঘটেছিল

সরু গলিটা জুড়ে ধীরে ধীরে এগুতে লাগলো রিক্সাটা। কিছুদূর এলে, মরিয়ম বললো, এবার নামতে হবে লিলি। সামানে আর রিক্সা যাবে না। বলতে বলতে রিক্সা থেকে নেমে পড়লো সে। তার পিছু পিছু লিলিও নামল নিচে। চারপাশেContinue Reading

» উপসংহারের আগে

উত্তরের জানালাটা ধীরে ধীরে খুলে দিলো লিলি। এক ঝলক দমকা বাতাস ছুটে এসে আলিঙ্গন করলো তাকে। শাড়ির আঁচলটা কাঁধ থেকে খসে পড়লো হাতের উপর। নিকষকালো চুলগুলো ঢেউ খেলে গেলো। কানের দুল জোড়া দোলনার মত দুলেContinue Reading

» বরফ গলা নদী

বরফ গলা নদী প্রথম প্রকাশিত হয় ‘উত্তরণ’ সাময়িকীতে; গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ খৃষ্টাব্দে। অর্থনৈতিক কারণে বিপর্যস্ত ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্ত পরিবারের অসহায়ত্ব গাথা।Continue Reading