‘লৌহকপাট’ সম্পর্কে একটা খবর হয়তো কিছু কিছু পাঠকের জানা নেই। দেশ পত্রিকার এককালের সম্পাদক সাগরময় ঘোষ তাঁর ’হীরের নাকছাবি’ বইয়ে এটির উল্লেখ করেছেন। সাগরময় ঘোষের স্কুলের এক বন্ধু তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তার একটি পাণ্ডুলিপি এক সময়ে দেশ পত্রিকার অফিসে এসে জমা দিয়ে যান। এক্সারসাইজ বুক বাঁধানো মোটায় রচনার নাম ‘লৌহযবনিকা’, লেখক ‘বিশ্ববন্ধু’। লেখা বা লেখকের নাম কোনটাই সাগরময়বাবুর কৌতূহল জাগায় নি, পাণ্ডুলিপিটিকে তিনি ড্রয়ারে চালান করেন। এর চার-পাঁচ মাস বাদে বন্ধুর একটা চিঠি পান। একটু কাতরভাবেই বন্ধু লিখেছেন যে, যদি লেখাটা ছাপার অযোগ্য মনে হয়, তাহলে সেটা যেন রেজিস্ট্রিযোগে ওঁর কাছে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে লেখাটার কথা সাগরময়বাবু বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন। বন্ধুর চিঠি পেয়ে একটু লজ্জিত হয়েই খাতা খুঁজেপেতে বার করলেন। ফেরত পাঠানোর আগে দুয়েকপাতা পড়তে গিয়ে কখন এক ঘণ্টা সময় কেটে গেছে খেয়ালও হয় নি। খাতাটা সেদিন বাড়ি নিয়ে রাত একটা পর্যন্ত পড়ে শেষ করলেন। তার পনেরো দিন পরেই ‘লৌহযবনিকা’ ‘লৌহকপাট’ নামে আর ‘বিশ্ববন্ধু’র বদলে ‘জরাসন্ধ’ নাম দিয়ে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হতে আরম্ভ করে। এর কিছুদিন পরে ১৯৫৪ সালে ‘লৌহকপাটে’র প্রথম খণ্ড গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশিত হয়। ১৯৫৮ সালে তপন সিংহ সেটি চিত্রায়িত করেন।