বছরটা ঠিক মনে নেই। ইংরাজি চুয়াল্লিশ কিংবা পঁয়তাল্লিশ সাল। দেশ জুড়ে চলেছে মন্বন্তর। দক্ষিণ বাংলার যে অঞ্চলে আমর আস্তানা, একদিন সে অন্ন জুগিয়েছে সারা বাংলার ঘরে ঘরে। সরকারী নথিপত্রে তার নাম ছিল Granary of Bengal। সেদিন এক গ্রেন শস্য নেই তার ভাণ্ডারে। মাঠভরা পাকা ধান। তারই পাশে দাঁড়িয়ে বিহুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে চাষীর দল। অজন্মা নয়, তাদের ‘সোনার ক্ষেত শুষিছে মানুষ প্রেত!’ তার একহাতে দাঁড়িপাল্লা আর এক হাতে বন্দুক। তাই একদিকে চলেছিল অন্নের ছড়াছড়ি, আর এক দিকে নিরন্নের হাহাকার।
দেশের লক্ষ্মী যখন ছেড়ে যায়, জেলখানার তখন বাড়-বাড়ন্ত। যে জেলটা আমি তখন আগলে আছি, তার স্থায়ী পোষ্য ছিল পাঁচ-ছশো। গোটা কয়েক ধাপ ডিঙিয়ে সংখ্যাটা হঠাৎ হাজারের কোঠা ছাড়িয়ে গেল। ওদিকটায় যেমন জোয়ারের জোর, ভাঁড়ারে তেমনি ভাঁটার টান। সেই নিত্যবর্ধমান গহ্বর কেমন করে পূর্ণ করি, এই ভাবনায় আমার ঘুম নেই।
একদিন সন্ধ্যাবেলা অফিসে বসে বসে সেই কথাই ভাবছিলাম। পাঁচ-সেরী চাবির গোছা হাতে ঝুলিয়ে কুণ্ঠিত ভাবে এসে দাঁড়ালেন আমার স্টোর-কীপার, বিরাজ মুন্সী; জেল পরিভাষায় যার নাম—গুদামী বাবু। কারা-ভাণ্ডারের অন্নপূর্ণা, সুতরাং সহকর্মীদের চিরন্তন ঈর্ষার পাত্র, কিন্তু ঘটনাচক্রে সেদিন তাঁর অবস্থাটা ঠিক অভাবগ্রস্ত বৃহৎ পরিবারের গৃহিণীর মতো। অপ্রসন্ন মুখে ‘বাড়ন্ত’ ছাড়া আর কোনও বার্তা নেই। দর্শনমাত্রেই কর্তার মেজাজ সপ্তমে চড়ে ওঠে। আমি যখন জিজ্ঞাসু চোখে মুন্সীর দিকে তাকালাম, সেখানেও তেমনি ফুটে উঠল সেই বিরক্তির রূক্ষতা।
বিরাজবাবু বিনা ভূমিকায় নিস্পৃহ কণ্ঠে রিপোর্ট দিলেন, আর পঁচিশ বস্তা আছে, স্যর।
পঁচিশ বস্তা! অর্থাৎ দিন তিনেকের সংস্থান। খবরটা আমার অজানা নয়, অপ্রত্যাশিতও বলা যায় না। তবু রূঢ় কণ্ঠ চাপা রইল না–মোটে পঁচিশ বস্তা! এই না সেদিন দুশ বস্তা যোগাড় করলাম কত কাণ্ড করে! এরই মধ্যে উড়ে গেল!
মুন্সীর মুখে মৃদু হাসি দেখা দিল। অনাবশ্যক মনে করে আমার প্রশ্নের জবাব আর দিলেন না।
চাল-সংগ্রহের প্রাথমিক প্রয়োজন—একখানা সরকারী পারমিট। তখন সিভিল-সাপ্লাই নামক স্বনামধন্য সংস্থা জন্মলাভ করলেও ডালপালা বিস্তার করে চারিদিকটা জাঁকিয়ে বসে নি। পারমিট বস্তুটির ভার ছিল একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে। সেই রাত্রেই তাঁর দ্বারস্থ হলাম। বৈঠকখানা ঘরে অফিস। হিসাবপত্র দেখেশুনে বললেন আপনার এই রাক্ষুসে খাঁই মেটাবার মতো মাল আমার হাতে নেই, মশাই। আপনি সাহেবের কাছে যান।
সাহেব, অর্থাৎ কালেক্টর ছিলেন একজন জবরদস্ত শ্বেতাঙ্গ সিভিলিয়ন। সন্ধ্যার পরে দ্রব্যগুণে তিনি এমন এক ঊর্ধ্বরাজ্যে বিচরণ করতেন যেখানে আমার মতো সামান্য ব্যক্তি কিংবা চালডালের মতো তুচ্ছ বস্তুর প্রবেশ একরকম অসম্ভব। তবু নিতান্ত নিরুপায় হয়েই তাঁর দরজায় ধরণা দিলাম, এবং বহু সাধ্যসাধনার পর দর্শনলাভও করা গেল। তথ্যাদি সহ আমার দাবী পেশ করে ব্যাপারটা যে অত্যন্ত জরুরি এবং সরকারের প্রাথমিক দায়িত্বের অন্তর্গত, সে বিষয়ে একটা ছোটখাটো বক্তৃতা যোগ করে দিলাম। সাহেব অত্যন্ত ধীরভাবে আমার বক্তব্য শেষ পর্যন্ত শুনে গেলেন এবং ততোধিক ধীরভাবে প্রশ্ন করলেন জেলে একটা আর্মারি আছে না?
প্রশ্নটা ধাক্কা খাবার মতো হলেও জবাব দিলাম, আছে।
—কত বন্দুক হবে?
—একশো।
—এস. পি.-কে বলে দিচ্ছি, আর একশো ওদের স্টক্ থেকে ধার নিন। আপনার কয়েদী বললেন, এক হাজার? তাহলে রাইফেল পিছু পাঁচজন করে পড়ছে। কতক্ষণ লাগবে মনে করেন? পাঁচ মিনিট! না হয়, বড়জোর দশ মিনিট! কী বলেন?
বলা বাহুল্য, অঙ্কটা নির্ভুল হলেও প্রশ্নটার জবাব দিতে পারলাম না। কালেক্টর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে একটা সিগারেট ধরিয়ে বললেন, পারবেন না? বেশ; তাহলে এক কাজ করুন! দুটো গেট একসঙ্গে খুলে দিন। তারপর এক-একটা জানোয়ার ধরে এনে (অঙ্গবিশেষের নাম করে বললেন, তার উপর) কষে গোটাকয়েক লাথি মেরে ঘাড় ধরে বের করে দিন।….. আর তাও যদি না পারেন, চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে যান।
আপাতত সেটাই একমাত্র পন্থা বুঝতে পেরে নিঃশব্দে উঠে দাঁড়ালাম। দরজা পার হয়ে বারান্দায় পড়েছি, এমন সময় আবার ডেকে ফেরালেন কালেক্টর। বললেন, কত চাল চাই আপনার?
—যত দিতে পারেন। আমার দৈনিক প্রয়োজন সাড়ে বাইশ মণ।
বিড়বিড় করে গোটা কয়েক টমি-সুলভ শপথ উচ্চারণ করে কলিং বেলটা ঠুকে দিলেন। চাপরাসী ছুটে আসতেই হুকুম হল, হ্যারিকৃষ্টোবাবু। মিনিট তিনেকের মধ্যে চাপরাসীর পেছনে হ্যারিকৃষ্টো অর্থাৎ আমাদের হরেকৃষ্ণ হালদার এসে উপস্থিত। নিচেই কোথাও অপেক্ষা করছিলেন, মনে হল। এই দুর্দান্ত শীতে একটা টুইলের শার্ট এবং তার উপর একখানা সাধারণ আলোয়ান ছাড়া আর কোনও আচ্ছাদন নেই! শহরের সবচেয়ে বড় আড়তদার। টাকা যে কত, লোকে বলে, সে হিসাব ওর নিজের জানা নেই! হয়তো তার গরমে আর শীতবস্ত্রের প্রয়োজন হয় নি। আমার দিকে ক্রুদ্ধ ভ্রুকুটি চালিয়ে কোমর দু-ভাঁজ করে সেলাম ঠুকলেন সাহেবের সামনে। সাহেব কড়া সুরে হুকুম করলেন, জেলের জন্যে দুশো মণ চাল চাই।
—কবে, হুজুর?
—আজ রাতের মধ্যে।
—এত চাল তো হাতে নেই, স্যর।
–হোয়াট!-–সাহেবের রক্তচক্ষু বিস্তৃত হল।
হরেকৃষ্ণ মাথা চুলকে বললেন, আজ্ঞে আমার রিটার্নটা যদি দেখেন হুজুর, তাহলে—
—হ্যারিকৃষ্টোবাবু!’ গর্জে উঠলেন কালেক্টর। সঙ্গে সঙ্গে টেবিলের উপর বিপুল বজ্রমুষ্টি।
হরেকৃষ্ণ আর মুখ খুললেন না; হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে রইলেন। সাহেব কিঞ্চিৎ সুর নামিয়ে বললেন, লুক্ হিয়ার, হ্যারিকৃষ্টোবাবু, তোমার সঙ্গে বেশি কথা বলার সময় আমার নেই। এক ঘণ্টার মধ্যে মাল ডেলিভারি না দিলে আমি তোমার সমস্ত স্টক সীজ করব।
—আজ্ঞে, হুজুর যখন আদেশ করছেন, যেমন করে হোক দিতেই হবে যোগাড় করে। তবে-
—ব্যস্।
হরেকৃষ্ণবাবুর সঙ্গে এক গাড়িতেই ফিরলাম। পথে আসতে আসতে বললেন, দেখলেন ব্যাটার চোট? মদ খেলে আর কাণ্ডাকাণ্ডজ্ঞান থাকে না। আরে ভালো করে বললেই তো হয়। আমি কি বলেছি, দেবো না? বিশেষ করে যখন গবর্মেন্টের দরকার….। আমার কোনও সাড়া না পেয়ে এবার ব্যঙ্গের সুরে বললেন, স্টক্ সীজ করবেন! হুঁঃ সীজ অমনি করলেই হল! আমার হাতেও কলকাঠি আছে, মশাই। একটিবার ঘুরিয়ে দিলে আপনার জেলখানায় চাঁদের হাট বসে যাবে।…
বলে টেনে টেনে হাসতে লাগলেন। আমি তার মাঝখানেই বলে ফেললাম, চালটা তাহলে কখন দিচ্ছেন, হরেকৃষ্ণবাবু?
—দাঁড়ান, আর একটু রাত হোক। রাস্তায় লোকচলাচল বন্ধ হোক। তা না হলে রক্ষা আছে? আর আপনিই বা মিছিমিছি কষ্ট করবেন কেন? বাসায় চলে যান। একজন কেরানী-টেরানী কাউকে পাঠিয়ে দেবেন। ওজন করে মাল বুঝে নিয়ে যাবে।
বললাম, আবার কাকে পাঠাব? এতটা যখন এসেই পড়েছি, চলুন নিজেই নিয়ে যাই।
মনে মনে বললাম, তোমাকে এখনও বুঝতে বাকী আছে, হ্যারিকৃষ্ট? এক মিনিট কাছছাড়া হলে এমন ডুব মারবে যে, আমার কেরানী কেন, তাদের সমস্ত পিতৃকুল এসেও তোমার টিকিটি খুঁজে পাবে না।
জেল-গেটে মাল পৌঁছে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরলাম রাত প্রায় একটা। ফটকের সামনে মনে হল একটা কাপড়ের পুঁটলি পড়ে আছে। আমার সাড়া পেয়ে ছিটকে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ল পায়ের উপর। কাছেই যে সেন্ট্রি টহল দিচ্ছিল, রা-রা করে ছুটে এল। হাত তুলে থামিয়ে দিলাম। এদিকে পায়ের উপর যে পড়ল, তার আর নড়াচড়ার নাম নেই।
অনেক টানাটানির পর যখন মাথা তুলল, মুখটা দেখে মনে হল চেনা-চেনা। চোদ্দ- পনেরো বছরের একটা কলঙ্কসার দেহ। পরনে ছেঁড়া প্যান্ট। তার উপর জড়ানো একখানি জীর্ণ চাদর। বললাম, কে তুই?
—আমি ফটিক।
—ফটিক কে রে?
—আপনার জেলে ছিলাম। ছ’মাস মেয়াদ খেটে বেরিয়েছি আজ সাত দিন।
–এখানে এসেছিস কী করতে?
—তিনদিন কিছু খাই নি হুজুর। আমাকে আবার জেলে ভর্তি করে নিন। যা কাজ দেবেন, সব করব!—বলে মাথাটা আবার ঘষতে লাগল আমার জুতোর উপর।
সেন্ট্রি হেসে উঠল এবং তারপরেই একটা মোক্ষম ধমক দিয়ে টেনে তুলল হাত ধরে।
বললাম, জেলে ভর্তি করব কি রে! এটা কি হোটেল যে যাকেতাকে ঢোকালেই হল!
—আপনি সব পারেন, হুজুর, রুদ্ধ কণ্ঠে বলল ফটিক। ক্ষীণ আলোতেও দেখা গেল, তার দু-চোখের কোল বেয়ে বয়ে চলেছে জলের ধারা।
প্রশ্ন করলাম, কে আছে তোর? এ কদিন কোথায় ছিলি?
উত্তরে যা বলল, তার থেকে মোটামুটি ইতিহাসটা পাওয়া গেল।
শহর থেকে মাইল দশ-বারো দূরে কী একটা গ্রামে ওদের বাড়ি। অবস্থা একেবারে খারাপ ছিল না। খেয়ে-পড়ে কোনোরকমে চলে যেত। জেল থেকে বেরিয়ে গিয়ে দেখে খাঁ খাঁ করছে বাড়ি। বাপ মা দুজনেই মারা গেছে খেতে না পেয়ে। একটা বয়স্থা বোন ছিল, সেও নেই। সবাই বলল, মকবুল চৌধুরীর ছেলের সঙ্গে কোথায় নাকি চলে গেছে। বছর দশেকের ছোট ভাই ছিল একটা। তার খোঁজ কেউ জানে না। গ্রামে কোনও কাজ নেই। কাজ দেবার মতো লোকও নেই। শহরে ফিরে এসেও কিছু জোটাতে পারে নি।
বললাম, সরকারী লঙ্গরখানায় যাস নি কেন?
—গিয়েছিলাম হুজুর। দু-দিন যাবার পর একটা পুলিশ চিনে ফেলল। রটিয়ে দিল এটা জেলখাটা দাগী চোর। তারপর আর তারা খেতে দেয় না। বাবুরা তাড়া করে, বলে, শালা পকেট মারতে এসেছে। একদিন খুব মেরেছিল। এই দেখুন, বলে কাঁদতে লাগল। দেখলাম, গোটা হাতটা ফুলে আছে।
পকেটে মনিব্যাগ ছিল। গোটা দুই টাকা বের করে ফটিকের হাতে দিতে গেলাম। হাত বাড়াল না। মাথা নেড়ে বলল, টাকা চাই না, বাবু। আমাকে জেলে ভর্তি করে দিন। আপনি হুকুম করলেই হবে। আপনার পায়ে পড়ি–আরেকবার পা জড়িয়ে ধরবার উপক্রম করতেই আটকে দিল আমার সেন্ট্রি।
অনেক করে বোঝাবার চেষ্টা করলাম, জেলে ভর্তি করবার ক্ষমতা আমার নেই। কোর্ট থেকে ওয়ারেন্ট নিয়ে যারা আসে, তারাই শুধু ঢুকতে পারে জেলখানায়। এ-সব আইন- কানুনের কথা সে কানে তুলতেও চাইল না। বললাম, আজ এই টাকা দুটো নিয়ে যা। কিছু কিনে-টিনে খেয়ে নে। কাল আবার আসিস। যাহোক একটা ব্যবস্থা করে দেব। কিন্তু ফটিক নাছোড়বান্দা। যেমন করে হোক, জেলেই তাকে ফিরিয়ে নিতে হবে। তা না হলে নড়বে না। অগত্যা বাকী রাতটুকুর জন্যে আমার বাইরের বারান্দায় তার থাকবার ব্যবস্থা করে দিলাম। সেন্ট্রি আপত্তি করতে লাগল। এই সব চোর-চোট্টার উপর দয়া দেখাতে গিয়ে অনেকের অনেক বিপদ ঘটেছে, তার কয়েকটা পুরনো নজিরও দাখিল করল। একটা কড়া নজর রাখবার নির্দেশ দিয়ে কোনও রকমে তাকে নিরস্ত করলাম।
পরদিন সকাল বেলা ও. সি.-র নামে একটা চিঠি দিয়ে একজন সিপাই-এর জিম্মায় ফটিককে পাঠিয়ে দিলাম কোতোয়ালি থানায়।
বিকেলে আফিসে যেতে হয়েছিল কী একটা দরকারী কাজে। টেলিফোন বেজে উঠল। পুলিশ সাহেবের গলা—কী কাণ্ড বলুন তো?, একেবারে বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা! খোদ কত্তার পকেটে হাত! তাও তাঁরই এক পুরনো মক্কেল! ভাগ্যিস, হাতে হাতে ধরে ফেলেছিলেন! যে-রকম দিনকাল পড়েছে মশাই, রাত-বিরেতে না বেরোনোই ভালো।
বললাম, আজই পাঠাচ্ছেন তো?
—বাপরে। আপনি দেখছি, বেজায় রেগে আছেন ব্যাটার ওপর। বাগে পেলে এক হাত না দিয়ে ছাড়বেন না? কিন্তু দেখছেন তো ক্রাইমের ঠেলা। বড় বড় রুই-কাতলা ধরে কূল পাচ্ছি না; আর ওটা তো একটা চুনোপুঁটি, ছিঁচকে চোর। ও-সব যদি ধরতে শুরু করি জায়গা দেবেন কোথায়? খাওয়াবেন কী…হ্যাঁ, আপনার চিঠি ও. সি. আমাকে পাঠিয়েছিল। আমি কিন্তু ব্যাটাকে ছেড়ে দিতে বলে দিয়েছি।
—ছেড়ে দিয়েছেন! হঠাৎ বেরিয়ে গেল আমার মুখ থেকে।
—হ্যাঁ; তবে একেবারে খালি হাতে যায় নি। দাওয়াই যা পড়েছে, বাছাধনকে এ জীবনে আর কারও পকেটে হাত দিতে হবে না। এ বিষয়ে আমার ও. সি.-টির বেশ হাতযশ আছে—বলে হেসে উঠলেন পুলিশ-প্রধান।