জরাসন্ধ ছদ্মনামের আড়ালে আসল মানুষটি হলেন চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (১৯০২-১৯৮১)। অর্থনীতিতে এম.এ পাশ করে দার্জিলিং-এ ডেপুটি জেলার হিসেবে কর্মজীবন সুরু করেন। তিরিশ বছর নানা জায়গায় কাজ করার পর ১৯৬০ সালে আলীপুর সেণ্ট্রাল জেলের সুপারিন্টেনডেন্ট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

তাঁর লেখার বৃহত্তর অংশ জেলের বন্দীদের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত। চাকরির কারণে জেল জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে লেখকের। কয়েদীদের কাছ থেকে শুনেছেন তাদের অপরাধের কাহিনী। সেসব কাহিনীর আলোকে লেখা ‘লৌহকপাট’। প্রথম তিনখণ্ড চাকরিজীবনে প্রকাশিত। শেষখণ্ডটি অবসরের পর প্রকাশিত হয়।

এছাড়া ছোটগল্প এবং ছোটদের জন্য লেখা গল্পও তার বেশ কিছু আছে। তাঁর শিশুদের জন্য নিবেদিত কিছু বই এ প্রথমদিকে তাঁর মূল নাম প্রকাশিত হয়েছিল।

প্রথম অখণ্ড (চার খণ্ড একত্রে) সংস্করণ – আশ্বিন ১৩৭৫

প্রচ্ছদপট অঙ্কন : আশু বন্দ্যোপাধ্যায়

উৎসর্গ

লৌহকপাটের অন্তরালে যারা শেষ নিশ্বাস রেখে গেল,
সেই সব বিস্মৃত মানুষের উদ্দেশে

 

ফ্লাপের  লেখা

লেখক জরাসন্ধ নিজে বলেছেন, – “এইটুকু শুধু বলতে পারি, জীবনে এমন একটা পথে আমাকে চলতে হয়েছে, যেটা প্রকাশ্য রাজপথ নয়। সে এক নিষিদ্ধ জগৎ। সেখানে যাদের বাস, তাদের ও আমাদের এই দৃশ্যমান জগতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে লৌহদণ্ডের যবনিকা।” এই লৌহদণ্ডের যবনিকার ওপারের কোনো কোনো প্রাণী অকস্মাৎ কোনোদিন খুলেছিল তাদের অন্তরদুয়ার, দেখা গেল তাদেরও আছে বৈচিত্র্যময় জীবনকাহিনী— সুখে সমুজ্জ্বল, দুঃখে পরিম্লান, হিংসায় ভয়ংকর, প্রেমে জ্যোতির্ময়। লৌহকপাট গ্রন্থে তাদেরই কথা লেখক বলেছেন অসীম মমতায় পরম সহানুভূতির সঙ্গে। এই গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক ক্লাসিক উপন্যাসের স্থান নিয়েছে।