☼ প্রচেত গুপ্ত ☼
একটু পরে রোদ উঠবে
সাতান্ন
বিমলকান্তি নিজের অফিসঘরে চুপ করে বসে আছেন। তিনি যেন খানিকটা ঘোরের মধ্যে আছেন।
কর্ণিকা দরজা সরিয়ে মুখ বাড়িয়ে বলল, ‘স্যর, আসব?’
বিমলকান্তি মাথা নাড়লেন। কর্ণিকা ঘরে ঢুকে বলল, ‘স্যর, বাড়ি যাবে না?’
বিমলকান্তি ঘোর কাটিয়ে হাত ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখলেন। চাপা বললেন, ‘যাব। তুমি চলে যাও কর্ণিকা। ইস, তোমাকে অনেকক্ষণ আটকে রেখেছি। তোমার এখন কত কাজ।’
কর্ণিকা চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। বিমলকান্তি বললেন, ‘দাঁড়িয়ে আছ কেন?’
কর্ণিকা চুপ করেই রইল। বিমলকান্তি এবার হালকা বিরক্ত হলেন। বললেন, ‘কী হল। বললাম তো চলে যাও। তোমার দেরি হয়ে গেছে। গাড়ি আছে তো?’
কর্ণিকা মৃদু গলায় বলল, ‘হ্যাঁ, স্যর আছে।’
বিমলকান্তি বললেন, ‘তাহলে আর দেরি কোরো না। বাড়িতে ফোন করে দিয়েছ?’
কর্ণিকা মাথা নীচু করে বলল, ‘দিয়েছি।’
বিমলকান্তি এবার বেশ বিরক্ত হলেন। গলা একটু কঠিন করে বললেন, ‘আমার নিজের কিছু কাজ আছে কর্ণিকা। সেই কাজ আমাকে একা করতে হবে।’
কর্ণিকা বসের ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের টেবিলে এসে বসল। আটটা বাজে। অফিস ফাঁকা। অ্যাকাউন্টসে দুজন আছে। কাল মাল ডেলিভারি আছে। চালান তৈরি করছে। কর্ণিকা মোবাইলে নম্বর টিপল। ওপাশে ফোন ধরল বারিধারা।
‘কী হয়েছে কর্ণিকা?’
কর্ণিকা নীচু গলায় বলল, ‘স্যর তো উঠছেন না। এই মাত্র আমি গিয়ে রিকোয়েস্ট করলাম।’
বারিধারা চিন্তিত গলায় বলল, ‘কী করছে বাবা?’
কর্ণিকা তার বসের দরজার দিকে তাকিয়ে গলা আরও নামিয়ে বলল, ‘কিছু করছে না। চুপ করে বসে আছে। বুঝতে পারছি খুব মনখারাপ।’
বারিধারা টেলিফোনের ওপাশে একটু চুপ করে থেকে বলল, ‘মন খারাপ তো হবারই কথা। খুব বড় ধাক্কা…।’
কর্ণিকা বলল, ‘তুমি একবার ফোন করবে?’
বারিধারা বলল, ‘করছি। কিন্তু আমার কথা শুনে বাড়ি চলে আসবে বলে মনে হচ্ছে না।’
কর্ণিকা বলল, ‘তাও একবার কোরো। নইলে ম্যাডামকে বোলো। স্যরের উচিত বাড়িতে গিয়ে রেস্ট করা।’
বারিধারা চিন্তিত গলায় বলল, ‘দেখছি। সেরকম হলে আমি অফিসে গিয়ে বাবাকে গিয়ে নিয়ে আসছি। কর্ণিকা, তুমি বাড়ি চলে যাও। তোমার অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।’
কর্ণিকা একটু চুপ করে থেকে দৃঢ় গলায় বলল, ‘আমি থাকব। স্যার যতক্ষণ থাকবেন, আমিও থাকব। তুমি স্যারকে ফোন কোরো।’
গত দু দিন ধরে ভয়ঙ্কর অবস্থা চলছে।
বুধবার সকালে অফিসে এসেই কর্ণিকা সোজা চলে গিয়েছিল এইচ আর ডিপার্টমেন্টে। রেজিগনেশন লেটার জমা দেয়। এইচ আর হেড চিঠি পড়ে তো আকাশ থেকে পড়লেন। একরকম চেপে ধরে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কর্ণিকার কাছ থেকে সব খবর বের করলেন। কীভাবে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হল। সে কী করে? বিয়ের পর কর্ণিকা কী করবে? শুধু ঘরসংসার? নাকি কাজেকর্মে ঢুকবে? কর্ণিকার মনে হচ্ছিল, পালাতে পারলে বাঁচি।
বিমলকান্তি আসবার পরেই সেই চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হল তার টেবিলে। বিমলকান্তি চিঠি পড়ে কর্ণিকাকে ঘরে ডেকে পাঠান। কর্ণিকা দুরু দুরু বুকে ঘরে ঢোকে। যতই হোক, ফট করে কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। স্যর নিশ্চয় বিরক্ত হবেন। গম্ভীর বিমলকান্তি একগাল হেসে হাত বাড়িয়ে দিলেন।
‘কনগ্র্যাচুলেশন কর্ণিকা। খুব ভালো খবর। তুমি বিয়ে করে বাইরে চলে যাচ্ছ এবং সেখানে নতুন করে কর্মজীবন শুরু করছ জেনে খুব খুশি হলাম।’
কর্ণিকা প্রথমে বাড়ানো হাত ছুঁয়ে, তারপর টেবিল ঘুরে এসে বসকে প্রণাম করে।
বিমলকান্তি বললেন, ‘বিয়েতে কিন্তু জমিয়ে খাওয়াদাওয়া চাই। মাকে বলবে।’
কর্ণিকা চোখের জল সামলে বললেন, ‘অবশ্যই স্যর।’
বিমলকান্তি এর পর পাত্র সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। কর্ণিকা লজ্জায় মুখ লাল করে ছোট ছোট বাক্যে উত্তর দেয়।
‘আমি এত তাড়াতাড়ি রাজি হচ্ছিলাম না স্যর…মা জোর করলেন…।’
বিমলকান্তি বললেন, ‘এটা তো শুধু বিয়ে নয়, বাইরে গিয়ে নিজের মতো কাজ করতে পারবে, সেটাও খুব বড় কথা। আমাদের দুর্ভাগ্য, মেয়েদের বেলায় আমরা বিয়ে-টিয়েগুলো খুব বড় করে দেখি। কাজটাকে দেখি না। তুমি সেই সুযোগ পেলে।’
কর্ণিকা আবেগ সামলে বলল, ‘থ্যাঙ্কু স্যর।’
বিমলকান্তি বললেন, ‘সবথেকে বড় কথা সিরিয়াস হওয়া। তুমি সিরিয়াস বলেই বিয়েটাকে যেমন সিরিয়াস ভাবে নিয়েছ, এই কাজটাকেও নিয়েছ। যখন নতুন জীবনে ঢুকতে হয়, তখনও যেমন সিরিয়াস হতে হয়, যে জীবন ছেড়ে যাচ্ছ, তার প্রতিও সিরিয়াস হতে হয়। তুমি চলে গেলে সেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের যেমন ক্ষতি, আমারও পার্সোনাল ক্ষতি হবে। কিন্তু এটাই তো নিয়ম মাই ডটার।’
কথা শেষ করে হাসলেন বিমলকান্তি।
কর্ণিকা এবার নিজেকে সামলাতে পারল না। তার চোখে জল।
বিমলকান্তি বললেন, ‘তোমার মায়ের সঙ্গে আমি কথা বলব। মণিকুন্তলা, বারিধারাকে নিয়ে যাব।’
কর্ণিকা আবেগবিহ্বল গলায় বলল, ‘খুব ভালো হবে স্যর।’
বিমলকান্তি বললেন, ‘ছেলেটির সঙ্গেও আমি কথা বলতে চাই। ফোনে ধরিয়ে দেব।’
কর্ণিকা কী বলবে বুঝতে পারছে না। এটা যেন একটা অন্য বিমলকান্তি সেন। যে মানুষটা কঠিন, মূলত রাগী, অফিসে ব্যক্তিগত কথাবার্তা মোটে পছন্দ করেন না, তাঁকে মনে হচ্ছে পরম আত্মীয়। যেন নিজের মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। আজ আবার প্রমাণ হল, বাইরে থেকে একজন মানুষকে যতটা দেখা যায়, সেটা মানুষটার একটুখানি। বাকি বিশাল অংশটা থাকে ভিতরে। ভালোবাসা, স্নেহ, আদর মানুষ চট করে কাউকে দেখাতে চায় না। পছন্দের মানুষের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। কর্ণিকার নিজেকে পরম সৌভাগ্যবতী বলে মনে হল…।’
‘স্যর, আপনার অসুবিধে হবে…।’
বিমলকান্তি হেসে বললেন, ‘তোমার আগামী কর্মজীবন যদি সাকসেসফুল হয়, তাহলে কিন্তু আমার সুবিধে হবে কর্ণিকা। আমি বুঝতে পারব, একটা কোম্পানি চালাতে এসে আমি মানুষ চিনতে ভুল করিনি। তোমার মতো কম বয়েসের একজন মেয়েকে যখন গুরুদায়িত্বে বসিয়েছিলাম, তখন ভাবিনি। কেউ আপত্তি করবার সাহসও পায়নি। কিন্তু সংশয় ছিল, তুমি পারবে কিনা। তুমি পেরেছ।’
কর্ণিকা অস্ফুটে বলল, ‘থ্যাঙ্কু স্যর।’
‘কবে তুমি রিলিজ চাইছ?’
কর্ণিকা মাথা নামিয়ে দ্বিধা জড়ানো গলায় বলল, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।’
বিমলকান্তি বললেন, ‘ফাইন। আমি এখনই বলে দিচ্ছি। কাল থেকেই তুমি ছুটিতে চলে যাও। পরে এসে হিসেব-টিসেব বুঝে নিও।’
কর্ণিকা একটু বাধো বাধো করে বলল, ‘স্যর, আমি কি কাউকে চার্জ বুঝিয়ে দেব?’
বিমলকান্তি হেসে বললেন, ‘তুমি চলে গেলে এই পোস্টটা থাকবে কিনা, এখনও ভাবিনি। ডোন্ট ওয়ারি মাই ডটার। আমি সামলে নেব।’
বসের ঘর থেকে কর্ণিকা বেরিয়ে আসবার একটু পরেই বারিধারা তাকে ফোন করে অভিনন্দন জানাল।
‘দারুণ খুশির খবর পেলাম কর্ণিকা। আমি কিন্তু তোমার কাছে বেড়াতে যাব।’
কর্ণিকা বলল, ‘অশব্যই যাবে। তার আগে আমি আর মা তোমাদের বাড়ি যাচ্ছি।’
বারিধারা বলল, ‘না এলেও কোনও সমস্যা নেই। আমি তোমার বিয়েতে তিনদিন খাব। নেমন্তন্নে খাওয়ার থেকে নেমন্তন্ন ছাড়া খেতে বেশি মজা। খাবারের টেস্ট বেশি পাওয়া যায়।’
দুজনেই খুব হাসতে লাগল। ফোন ধরলেন মণিকুন্তলাও।
‘অনেক আশীর্বাদ কর্ণিকা। খুব ভালো হল।’
কর্ণিকা লজ্জা পাওয়া গলায় বলল, ‘এভাবে করলে হবে না ম্যাডাম, এসে করতে হবে।’
একটু পরে মেঘবতীও ফোন করল। ফোন করে ফিচ করে একটু যেন কেঁদেও ফেলল।
‘তুমি বাবাকে যেভাবে দেখতে…চলে গেলে কী যে হবে…তুমি বয়সে ছোট, তার পরেও বলি, আমরা তোমার কাছে খুবই গ্রেটফুল কর্ণিকা…।’
কর্ণিকা নিজেকে কোনও রকমে সামলে বলল, ‘অমন করে বলো না দিদি। আমি আমার ডিউটি করেছি মাত্র। তবে চিন্তা করো না, স্যর নিশ্চয় আমার থেকে অনেক এফিসিয়েন্ট কাউকে খুঁজে পাবেন।’ ফোন ছেড়ে দিয়ে কর্ণিকার ভীষণ ভালো লাগল। সেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের মালিকের বাড়ির মানুষ সে নয়, সামান্য কর্মচারীর সুখবরে তারা যেভাবে খুশি, এটা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এমন কি আজকাল হয়? না, হয় না। কর্পোরেট জীবন মানুষের এই সব আবেগ, কৃতজ্ঞতা কেড়ে নিয়েছে। মানুষ আর পুরো মানুষ নেই। সভ্যতার জন্য, এগিয়ে চলবার জন্য সেটাই হয়তো ঠিক। সেটাই উচিত। তবে তাতে উপার্জন করা যায় বেশি কিন্তু ঠিকমতো বাঁচা যায় না। কর্মজীবনটাও তো বাঁচার মধ্যে পড়ে। আসলে সেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস এখনও পাকা মাথার কর্পোরেট হয়ে উঠতে পারেনি। এখনও সে পারিবারিক ব্যবসা। পরিবারের স্নেহ, মমতা জড়িয়ে আছে। কর্ণিকা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল, সে যেখানেই থাক, এই কোম্পানিকে সে ভুলবে না।
বিমলকান্তি কর্ণিকার রেজিগনেশন লেটারের ওপর নোট দিয়ে এইচ আর ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়ে দিলেন। টাকা-পয়সার হিসেব দ্রুত তৈরি করতে বললেন। কর্ণিকা বিদেশে চলে যাবে। তার পক্ষে বার বার এসে ছোটাছুটি করা সম্ভব নয়। মেয়েটাকে কি বেশি কিছু দেওয়া যায় না? না, সেটা ঠিক হবে না? কোম্পানির নিয়ম সবার জন্য সমান। বিয়ের উপহার হিসেবে যা দেওয়া হবে সেটা সেনবাড়ির পক্ষ থেকেই যাবে, অফিস থেকে নয়।
সারাদিনের কাজের মধ্যেই বিমলকান্তি এক ধরনের তৃপ্তি অনুভব করলেন। এইটুকু মেয়েকে বড় দায়িত্ব দেওয়ার সময় তিনি সংশয়ের মধ্যে ছিলেন, কিন্তু ভুল করেননি। কর্ণিকা বিয়ে করবার সময় বিদেশ দেখেনি, তার কাজকে যে পছন্দ করেছে তাকেই গ্রহণ করেছে। খুব ভালো।
বিমলকান্তি এই সময় কফি খান না। তার পরেও ক্যান্টিনে ফোন করে কফি পাঠাতে বললেন। কফি আসবার সামন্য পরেই থানা থেকে ফোন আসে।
‘বিমলকান্তি সেন বলছেন?’
‘বলছি।’
‘নিখিলেশ উপাধ্যায় নামে আপনাদের কোম্পানিতে কেউ কাজ করেন?’
বিমলকান্তি উদ্বিগ্ন গলায় বললেন, ‘কাজ করেন মানে, উনি খুব সিনিয়ার, আমার বাবার বন্ধু, আমাদের অ্যাডভাইসার। কেন কী হয়েছে?’
টেলিফোনের ও প্রান্তে পুলিশ অফিসার একটু চুপ করে থেকে বললেন, ‘একটা ব্যাড নিউজ আছে মিস্টার সেন।’
বিমলকান্তি নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, ‘অ্যাকসিডেন্ট?’
‘না, হি ইজ মার্ডারড। তাকে খুন করা হয়েছে।’
বিমলকান্তি দু হাতে ফোন চেপে ধরে কাঁপা গলায় বললেন, ‘কী বলছেন?’
‘আপনাকে একবার আসতে হবে মিস্টার সেন। বডি আইডেনটিফাই করতে হবে। তবে অমরা মার্ডারারকে ট্র্যাক করে ফেলেছি। আশা করি আজ-কালকের মধ্যে ধরে ফেলব।’
বিমলকান্তি বিহ্বল গলায় বললেন, ‘কে? ওর মতো একজন ভালোমানুষকে কে খুন করল…।’
‘থানায় আসুন, যতটা জানতে পেরেছি বলব। একজন মহিলা কাজটা করেছে।’
এই ক’টা দিন ঝড়ের মতো কেটে গেল। মর্গ, পুলিশ, পোস্টমর্টেম। উপাধ্যায়ের একমাত্র মেয়ে বেঙ্গালুরু থেকে এলেন। পুলিশ কয়েকবার অফিসে এল। তবে খুনি পরদিনই ধরা পড়েছে। থানায় গিয়ে বিমলকান্তি তাকে দেখেছেন। পুলিশই ব্যবস্থা করেছিল। বিমলকান্তি তাকে চিনতে পারেননি। বয়স্ক মহিলা খুব স্বাভাবিক ভাবে হাত তুলে তাকে নমস্কার জানিয়েছেন। বিমলকান্তি অবাক হন। এই মানুষ নিখিলেশ উপাধ্যায়কে খুন করেছে। কেন? কোর্টে হাজিরা দিয়ে পুলিশ পাঁচ দিনের জন্য মহিলাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। মহিলার নামে নাকি আরও অনেক মামলা আছে। আরও তদন্তের দরকার। মহিলা নিখিলেশ উপাধ্যায়কে হত্যার ব্যাপারে কিছুতেই মুখ খুলছেন না। শুধু বলছেন, ‘পুরোনো রাগ।’ পুলিশ বিশ্বাস করছে না। তাদের সন্দেহ, এই ঘটনার সঙ্গে সেন এন্ড অ্যাসোসিয়েটসের কোনও যোগসূত্র আছে।
তদন্তে কী কী জানা যাচ্ছে, নিয়মিত পুলিশ বিমলকান্তিকে জানাচ্ছে।
চাকরি ছেড়ে দিলেও কর্ণিকা অফিস রিলিজ অর্ডার নেয়নি। বিয়ে তো অতি সামান্য ব্যাপার। মরে গেলেও সেই ভয়ংকর অবস্থায় ‘স্যার’কে ছেড়ে, অফিস ছেড়ে যাবে না। বাড়িতে তো বলেছেই, ভাবী শাশুড়িকেও জানিয়ে দিয়েছে। অবস্থা খানিকটা নর্মাল হলে তবে বিয়ের মার্কেটিং হবে। ‘স্যর’ যতক্ষণ অফিসে থাকছে, কর্ণিকাও থাকছে। আজও তাই করছে।
কথা ছিল বারিধারা ফোন করে ‘মনখারাপ’ করা বাবাকে বাড়ি যেতে বলবে। সে নিজেই চলে এল।’
বারিধারাকে দেখে উঠে দাঁড়াল কর্ণিকা।
বারিধারা অবাক হয়ে বলল, ‘তুমি এখনও বসে আছ?’
কর্ণিকা নীচু গলায় বলল, ‘স্যর না গেলে কী করে বেরোব?’
বারিধারা এগিয়ে এসে কর্ণিকাকে জড়িয়ে ধরল।