» » তৃতীয় কিস্তি

বর্ণাকার

প্রচেত গুপ্ত

একটু পরে রোদ উঠবে

একুশ

কমলকান্তি শান্তভাবে বললেন, ‘কী করবি?’

বারিধারা বলল, ‘দাদু, তুমি জানো, আমি কী করব।’

কমলকান্তি বললেন, ‘আন্দাজ করতে পারছি। মোস্ট ইনটেলিজেন্ট লিস্টে এক নম্বরে যে বোকার নাম রয়েছে, এই ধরনের সিচুয়েশনে সে কী করতে পারে, তার একটা আন্দাজ হচ্ছে। তার পরেও বল। তোর মুখ থেকেই সরাসরি শুনি। অনেক সময় বোকার মুখ থেকে বোকামি শুনতে ভালো লাগে।’

বারিধারা বলল, ‘আমি মধুজা রায়কে গিয়ে বলব, সরি ম্যাডাম, আমি আপনার আদেশ মানতে পারলাম না। আমি যা করেছি, ঠিক করেছি। ক্ষমা চাইবার কোনও প্রশ্ন ওঠে না।’

কমলকান্তি একটু ভাবলেন। তার পর হালকা করে ভুরু কুঁচকে বললেন, ‘আমি আঁচ করছিলাম এই ধরনের কোনও কথাই তুই বলবি। আমি এখনকার সিস্টেমটা জানি না। আমাদের সময় স্কুল-কলেজে স্বদেশী করে অনেক দীপান্তরিত হত। এখন সম্মান বাঁচাতে গিয়ে কোন ধরনের সাজা হতে পারে, আমার জানা নেই। তুই তো জানিস বৃষ্টি খবরের কাগজ, টিভির সঙ্গে আমি নেই। ইন ফ্যাক্ট ওরাই আমার সঙ্গে নেই বলতে পারিস। এই ডিশিশনের কারণে তোর কী কী বিপদ হতে পারে আমি কি জানতে পারি?’

বারিধারা চুপ করে রইল। বিপদ যে অনেক রকম হতে পারে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। মুখে যতই সাহস দেখাক, আজ সকাল থেকে তার নার্ভাস লাগছে। নার্ভাস লাগাটাই স্বাভাবিক। যত সময় যাচ্ছে সে বুঝতে পারছে, সত্যি বড় ধরনের ঝামেলার মধ্যে সে জড়িয়ে পড়তে চলেছে। মধুজা রায় তাকে এমনি হুমকি দেয়নি। নিজের ক্ষমতা বুঝেই দিয়েছে। সব থেকে মুশকিল হয়েছে, ঘটনা কাউকে না বলায়। এতে বেশি অস্বস্তি হচ্ছে। বাড়িতে বলবার তো কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কাকে বলবে? কে বুঝবে? এক দিদিকে বলা যেতে পারত। ক্রাইসিস সত্যি হলে দিদির মাথা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে সে বংশীবাদককে নিয়ে নাজেহাল। বংশীবাদক বাঁশির অংশ বাদ দিয়ে নানাবিধ জ্বালাতন করছে। আজ নাকি ভোর চারটেতে উঠে বাঁশি বাজাতে শুরু করেছিল। জামাইবাবু ঘুম ভেঙে উঠে বলেছে, ‘রোমাঞ্চকর’! অ্যালার্মের বদলে বাঁশি শুনে ঘুম ভাঙা রোমাঞ্চকর ঠিকই, কিন্তু সেটা একদিনের জন্য। রোজ ভোর রাতে যদি এই কাণ্ড হয়, তাহলে বিপদ। বাঁশি তখন বাঁশি থাকবে না। গুঁতো হয়ে যাবে। সবথেকে যেটা বিপজ্জনক সেটা হল, জামাইবাবু আজ ব্রেকফাস্ট টেবিলে ঘোষণা করেছেন, বাঁশি শিখবেন। দরকার হলে অফিস থেকে লম্বা ছুটি নেবেন। বাঁশি শিক্ষা ঠিকমতো হলে, চাকরিবাকরি ছেড়েও দিতে পারেন। তারপর বিবাগী হয়ে বংশীবাদকের মতো পথে পথে বাঁশি বাজিয়ে ঘুরবেন। জামাইবাবুর এই সিদ্ধান্ত দিদি মেনে নিতে পারছে না। বাঁশি শেখা খুবই সুন্দর একটা ব্যাপার, কিন্তু তা বলে ঘরসংসার ছেড়ে পথে বেরিয়ে পড়বার ইচ্ছা ভয়ঙ্কর। সকালে বোনকে এই বিষয়ে টেলিফোন করে একপ্রস্থ বলা হয়েছে।

‘আমার কী হবে বৃষ্টি?’

‘কী আর হবে, তুইও জ্যোতিষ্কদার সঙ্গে পথে বেরিয়ে পড়বি। বাউলানির মতো তুই হবি বাঁশিয়ানী।’

দিদি কঠিন গলায় বলল, ‘ফাজলামি করছিস? বাড়িঘর, সংসার ফেলে আমি তোর জামাইবাবুর সঙ্গে পথে ঘুরব?’

বারিধারা সামান্য হেসে বলেছে, ‘বাড়িঘর, সংসার ফেলে ঘুরবি কেন! সঙ্গে নিয়ে ঘুরবি। বাউল ফকিরের ঘরসংসার তো তাদের পথ, তাদের মুক্তি। তারা ইটকাঠের ঘর সংসারের মায়ায় আটকে থাকে না। তুই এটা জানিস না?’

দিদি কান্নাভেজা গলায় বলছে, ‘তোর জ্যোতিষ্কদাকে তুই তো জানিস বৃষ্টি। একবার যখন মাথায় পাগলামি ঢোকে, তখন সেটা কিছুতেই বেরোতে চায় না। চেপে বসে। সত্যি যদি এখন অফিস-টফিস ছুটি নিয়ে সে বাড়িতে বাঁশি শিখতে বসে, তাহলে কী হবে? আমার কান্না পাচ্ছে।’

বারিধারা বলল, ‘জ্যোতিষ্কদার বাঁশি শেখাটা কোনও ব্যাপার নয় দিদি, বাঁশি বাজিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়াটাই চিন্তার। বংশীবাদককে তো এখন আমার আরও ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে রে দিদি। ঠিক যেন হ্যামলিনের বাঁশিওলা। জ্যোতিষ্কদা, তুই, তোদের রান্নার মাসি, গাড়ির ড্রাইভার সবাইকে বাঁশি শুনিয়ে, মেসমারাইসড করে টেনে নিয়ে চলে যাবে।’

‘চড় খাবি বৃষ্টি। আমি আর তোর সঙ্গে একটা কথা বলব না।’

দিদি রেগেমেগে ফোন কেটে দেয়। সম্ভবত কাঁদতে চলে যায়। এই মানুষকে এখন ইউনিভার্সিটির ঝামেলার কথা বলে কী হবে? মাথা কাজ করবে না। বারিধারা একবার ভেবেছিল, তিথিকে ফোন করে জানাবে। নিজেই পিছিয়ে গেল। তিথি ভীতু মেয়ে। ঘাবড়ে যাবে। হয়তো কাঁপা গলায় বলবে, ‘কী হবে বারিধারা?’

‘কী আবার হবে, যা হওয়ার তাই হবে।’

‘ম্যাম তো মারাত্মক খেপে যাবেন।’

‘গেলে কী করব? ওই নোংরা ছেলের পা ধরে ক্ষমা চাইব?’

‘আমার খুব ভয় করছে বারিধারা।’

‘তোর কেন ভয় করবে? তোকে তো কোনও ঝামেলায় পড়তে হয়নি। হবেও না। চড় মেরেছি আমি, মধুজা ম্যাডামের কথা আমি অমান্য করব। উনি কোনও অ্যাকশন নিলে আমার বিরুদ্ধে নেবেন। তুই এর মধ্যে কোথা থেকে আসছিস? ঘটনাটা তোকে নিয়ে শুরু, তাই জানিয়ে রাখলাম।’

তিথি ঢোক গিলে হয়তো বলবে, ‘সেই জন্যই তো আমার বেশি ভয় করছে। ইস আমার খুব খারাপ লাগছে।’

‘তুই ফালতু চাপ নিচ্ছিস তিথি। আমি ঠিক সামলে নেব।’

তিথি বলবে, ‘তোকে ঘটনাটা না বললেই হত। সবাই আমার ওপর রাগ করবে। বলবে, তোর জন্য মেয়েটা মাথা গরম করে বিপদে পড়ল।’

‘মাথা গরম করাটাই বড় হল তিথি! অপমানটা কিছু নয়? অতগুলো ছেলেমেয়ের সামনে ওই বাস্টার্ড তোকে অমন একটা নোংরা কথা বলল…সেটা কিছু নয়?’

তিথি হয়তো আমতা আমতা করে বলবে, ‘সে তো কত লোকেই নোংরা হয় বারিধারা। পথেঘাটে, বাসে-ট্রামে দেখিসনি? ছুতোনাতায় মেয়েদের গায়ে হাত দেয়। খারাপ কথা বলে।’

‘পথেঘাটে, বাসে-ট্রামের নোংরা লোক আর সহপাঠী, সহকর্মী, চেনা লোকের নোংরামি এক হবে?’

তিথি নিশ্চিত এসব যুক্তি কানে নিত না। বলত, ‘ইস, কেন যে মরতে তোকে বলতে গেলাম। আমারই দোষ। ওসব কথা গায়ে না মাখলেই হত। তোকে যদি আমি না বলতাম, তুইও চড় মারতিস না। মধুজা রায় খুব পাওয়ারফুল….তোর কেরিয়ারের সমস্যা করে দিতে পারে।’

‘শুধু মধুজা রায় কেন? তার সঙ্গে ছেলেটার এক রিলেটিভও জুটেছে। তার নাকি আরও বেশি পাওয়ার। দুই পাওয়ার মিলে সুপারপাওয়ার আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে।’

তিথি এসব শুনলে আরও ঘাবড়ে যাবে। অবশ্যই কাঁদো কাঁদো গলায় বলবে, ‘এখনও ঠাট্টা করছিস বারিধারা! আমার তো হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে।’

‘তুই একটা কাজ কর তিথি। হট ওয়াটার ব্যাগে গরম  জল নিয়ে বসে হাত-পা গরম কর। আমি আমার কাজ করি।’

শ্রবণের ব্যাপারও তাই। সে তিথির মতো ঘাবড়ে না গেলেও চিন্তিত হবে। ওর নিজের কাজকর্ম আছে। বেশিটাই ভাবনা-চিন্তার কাজ। মাথায় এসব ঢুকলে সেই কাজে গোলমাল হবে। প্রেমের ব্যাপারে যতই ক্যাবলা হোক না কেন, ছেলেটা যে গুণী, সে বিষয়ে তো কোনও সন্দেহ নেই। বাঁধাধরা নিয়ম নয়, নিজের গুণ দিয়ে উপার্জন করতে চায়। বিজ্ঞাপনের কনসেপ্ট তৈরি এখন ইন থিঙ্ক। গোটা দুনিয়াই বিজ্ঞাপনের ওপর চলছে। আবার এই লাইনে ভিড়ও খুব হচ্ছে। ইনোভেটিভ, ইমাজিনেটিভ ছেলেমেয়েরা আসছে। কেউ গাইতে পারে, কেউ আঁকতে পারে, কেউ ফটো তুলতে পারে, কেউ ভাবতে পারে। কেউ আবার মার্কেট অ্যানালিস্ট, প্রাোডাক্ট এক্সপার্ট, ম্যানেজমেন্ট এফিসিয়েন্ট। প্রতিযোগিতাও খুব। তবে এখানে তেমন কাজ নেই। এখানে ছোটখাটো কাজ করতে করতে হাত পাকিয়ে চলে যেতে হবে মুম্বাই। শ্রবণও হয়তো তাই যাবে। এখন খুব খাটছে। কাল বিকেলে শাম্বদের চিলেকোঠার ঘর থেকে বেরিয়ে দুজনে ট্যাক্সি নিয়েছিল। সোজা নন্দন চত্বর। কলকাতায় এখন প্রেম করবার জন্য নানারকম জায়গা হয়েছে। সুন্দর সুন্দর পার্ক। গঙ্গার ঘাটটাও চমৎকার হয়েছে। বসবার জায়গা, হাঁটবার বাঁধানো পথ, আলো। শপিং মলে ঢুকে গেলেও হয়। এক কাপ চা বা কফি নিয়ে যে-কোনও জায়গায় বসে যাও। নিউ টাউনের ইকো পার্ক তো খুবই সুন্দর। আর পকেটে পয়সা থাকলে তো কথাই নেই। সিসিডি, বারিস্তা তো এখন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। তবে প্রেম করবার জন্য বারিধারার সবথেকে বেশি পছন্দ নন্দন, নয়তো হন্টন। হয় নন্দন চত্বরে বসো, নয় পথে হেঁটে হেঁটে গল্প, ঝগড়া ভাব-ভালোবাসা করো। নন্দনের ওপর বারিধারা দুর্বল। সেখানেই শ্রবণের সঙ্গে তার আলাপ হয়েছিল। আলাপের ইস্যু ছিল আছাড়। কোনও প্রেম হয় দর্শনে, কোনও প্রেম হয় আকর্ষণে, কোনও প্রেম হয় শাসনে। এই প্রেম হয়েছিল আছাড়ে।

সেদিনটা চিরকাল মনে থাকবে বারিধারার। সকাল থেকে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। আকাদেমির পাশ দিয়ে নন্দন চত্বরে ঢোকবার মুখটা ছিল কাদা কাদা। মাথায় ছাতা নিয়ে বারিধারা ঢুকছিল। নন্দনে সিনেমা দেখবে। পা টিপে হাঁটছিল বারিধারা। পিছলে না যায়। হঠাৎই ধপাস আওয়াজে মুখ ফিরিয়ে দেখে, পাশে পঁচিশ-ছাব্বিশ বছরের একটা ছেলে চিৎপটাং হয়ে পড়ে আছে। বোঝাই যাচ্ছে, তাড়াহুড়োর কারণে পা হড়কেছে। ছেলেটির কাঁধের ব্যাগ ছিটকে পড়েছে। ব্যাগ থেকে কাগজের বান্ডিল, রংতুলি, প্যালেট উঁকি মারছে। আর্টিস্ট। নন্দন চত্বরে আর্টিস্ট কোনও বড় বিষয় নয়। আর পাঁচজন পা হড়কে পড়লে যেমন বোকার মতো হাসে, এই ছেলেও হাসছিল। বারিধারার তাড়া ছিল, তার পরেও থমকে দাঁড়াল। সহজভাবে হাত বাড়িয়ে দিল। ছেলেটি লজ্জা লজ্জাভাবে হাত ধরে বলল, ‘ধন্যবাদ। এত কাদা…।’

বারিধারা বলল, ‘ইটস ওকে। সাবধানে উঠুন।’

ছেলেটি বলল, ‘সাবধানেই উঠছি… আপনাকে ধন্যবাদ…।’

আধখানা উঠে ছেলেটি আবার পা হড়কাল এবং আছাড় খেল।

একটা কাদামাখা মানুষকে ছেড়ে সিনেমা দেখতে যাওয়া কঠিন। তার ওপর মানুষটি একজন শিল্পী। ছোট হোক, বড় হোক, মেজো হোক শিল্পী তো বটে। বারিধারা নীচু হয়ে বসে মাটিতে ছড়িয়ে পড়া আঁকার সরঞ্জাম তুলতে থাকে। নিজের রুমাল দিয়ে কিছু কিছু মুছেও দেয়। শ্রবণ খুবই লজ্জা পেয়েছিল।

‘আমি করে নিচ্ছি। আপনি কাজে যান।’

বারিধারা সে কথায় পাত্তা দেয় না। উঠে দাঁড়িয়ে ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে বলে, ‘হাতদুটো পাতুন।’

শ্রবণ বলে, ‘না না, ঠিক আছে।’

বারিধারা কঠিন গলায় বলে, ‘হাত না ধুলে আপনি যেটাই ধরবেন কাদা লেগে যাবে। কাগজ, ছবি, রং, তুলিতে কাদা লাগলে ভালো হবে? নিন, হাতটা এগিয়ে দিন। দেরি করবেন না। আমার তাড়া আছে।’

হাত ধোওয়ার পর শ্রবণ নিজেকে অনেকটাই সামলে নেয়। বারিধারা বিদায় নিয়ে দ্রুত পা চালায়। সিনেমার দেরি হয়ে গেল। সে আরও দ্রুত হাঁটে। কয়েক পা এগিয়ে ছোট লাফ দিয়ে খানিকটা  জল টপকাতে যায় এবং এবার সে আছাড় খেয়ে পড়ে।

শ্রবণ প্রায় ছুটে এসে তাকে তুলতে যায়। বারিধারা কোনওরকমে উঠে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারে, সে দাঁড়াতে পারছে না। তার বাঁ পা মচকেছে। তার যাবতীয় রাগ গিয়ে পড়ে অচেনা তরুণটির ওপর। তার জন্যই দেরি, তার জন্যই তাড়াহুড়ো, তার জন্যই আছাড়, তার জন্যই পা মচকানো। তারপর…।

তারপর যাই ঘটুক, এই হল আছাড় প্রেম। আর এই কারণেই নন্দন চত্তরের প্রতি বারিধারা দুর্বল। বিশেষ করে যেখানে দুজনে আছাড় খেয়েছিল, সেদিকটা। কালও শ্রবণকে নিয়ে সেখানে গিয়েছিল। রবীন্দ্র সদনের টিকিট কাউন্টারের সিঁড়িতে বসে চা খেল। চা খেতে খেতে বুঝল, তার ঠোঁটটা একটু ছড়ে গেছে। জ্বালা জ্বালা করছে। নিশ্চয় চুমু খাবার সময় শ্রবণের দাঁতে লেগেছে। জ্বালাটা ভালো লাগছে।

শ্রবণ বলল, আমাকে একটু হেল্প করবে বারি?’

বারিধারা বলল, ‘কী হেল্প? বাড়ি পৌঁছে দেব?’

শ্রবণ হেসে বলল, ‘না ধারা, তুমি আমাকে একটা অ্যাড কনসেপ্ট বলে দাও।’

বারিধারা বলল, ‘কীসের অ্যাড?’

‘ছাতা।’

বারিধারা হেসে বলল, ‘ছাতা!’

শ্রবণ চিন্তিত হয়ে বলল, ‘আমি দু-একটা বানিয়েছি, কিন্তু জমছে না। চেনা চেনা হয়ে যাচ্ছে। সেই রোদ, বৃষ্টি, সুইমিং পুল। ধ্যুস। এদিকে টাফ কম্পিটিশন।’

এই ছেলেকে মধুজা রায়ের ঝামেলা বলে লাভ কী?

তার পরেও মনে হল, কারও সঙ্গে শেয়ার করা দরকার। সে ঘটনাটা গোপন রাখবে। আবার পরামর্শও দেবে। এই কাজটা একমাত্র পারে ওই বুড়ো মানুষটা। কমলকান্তি সেন। একানব্বুই বছর বয়সেও চিন্তাভাবনা কী পরিষ্কার! নিজের দাদু না হলে বিশ্বাস হত না। মনে হত, মিথ্যে বলছে। বারিধারা তাই তিনতলায় দাদুর কাছে এসেছে।

তখনও সে জানত না, কমলকান্তি সেন তাকে একটা মারাত্মক কাজ করতে বলবেন। বারিধারা চমকে উঠল।