» » পঞ্চম কিস্তি

বর্ণাকার

প্রচেত গুপ্ত

একটু পরে রোদ উঠবে

পঁয়তাল্লিশ

পূজনীয়া মণিকুন্তলা মাসি,

আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি।

উচিত ছিল দেখা করে নিজের মুখে তোমাদের কথাটা বলে যাওয়া। আমি পারলাম না। তার কারণ তোমরা বারণ করলে আমি দ্বিধার মধ্যে পড়তাম। পৃথিবীর সবাইকে অস্বীকার করবার মতো মনের জোর আমার হয়েছে, কিন্তু এ বাড়িকে অস্বীকার করবার মতো ক্ষমতা আমি এখনও অর্জন করতে পেরেছি কিনা সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। সম্ভবত পারিনি। তাই কাউকে না জানিয়েই চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাকে ক্ষমা কোরো মাসি। মাসি আমি জানি, তোমরা বারণ করতে। তুমি, মেসোমশাই, বৃষ্টি, মেঘদি সবাই মিলে আমাকে বোঝাতে। বলতে, আমি যেন লেখাপড়া শেষ না করে এই ধরনের হঠকারী কাজ না করি। বাইরে যে ক’জন আমার চলে যাওয়ার কথা জানে তারাও বারণ করেছে। এমনকী আমার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরুও। তাঁরা ঠিক কাজই করেছেন। তোমরাও করতে। তোমরা বেশি জোর করতে। সে অধিকার তোমাদের আছে।

মাসি, তুমি তো জানো আমি ছোটবেলা থেকেই অন্যরকম। শুধু নিজের মতো থাকতে পারি না। বিচার বুদ্ধি, ঠিক-বেঠিক, ভালো-মন্দ বোধ তৈরি হওয়ার পর থেকে চারপাশের মানুষ, সমাজ, দেশ, সময় আমাকে ভাবায়। আমি মন দিয়ে যেমন লেখাপড়া করেছি, মন দিয়ে দেশের মানুষের দুঃখ, কষ্ট, শোষণ, বঞ্চনা বোঝবার চেষ্টা করেছি। বারবারই মনে হয়েছে, আমিও তো একজন হতদরিদ্র মানুষ হতে পারতাম। হয়তো আমার বাবা একজন সামান্য ভাগচাষী বা মজুর হতে পারত। অথবা আমি এমন একজন শ্রমিকের ঘরের সন্তান হতে পারতাম যার কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দিনের পর দিন যাদের না খেয়ে, আধখানা খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়। পথ চলতে গিয়ে নিজেকে কতদিন ফুটপাথের ছিন্নমূল পরিবারের ছেঁড়া কাঁথায় নিয়ে গিয়ে ফেলেছি তার ঠিক নেই।ফ্যামিলি ট্যুর প্যাকেজ

মাসি, আমি ভাগ্যে বিশ্বাস করি না। আমি কোন ঘরে জন্মাব, কোন ঘরে মানুষ, আমার বুদ্ধিকে লেখাপড়া করে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারব কিনা সবটাই একটা চান্স। আমি যদি তোমাদের মতো মানুষ না পেতাম, আমার কী হত বলো তো? আমি বিশ্বাস করি, আমরা যারা দুবেলা পেট ভরে খেয়ে, মাথার ওপর নিশ্চিন্ত ছাদ পেয়ে, লেখাপড়া শেখবার সুযোগ পেয়েছি, তাদের অনেক দায়িত্ব, অনেক। যারা কিছু পায়নি, তাদের কথা আমাদেরই তো ভাবতে হবে। তাই না?

নিজেকে অনেকবার জিগ্যেস করেছিলাম, লেখাপড়া শেষ করলে সমস্যাটা কোথায়? লেখাপড়ার সঙ্গে মানুষের জন্য কাজ করায় তো কোনও বিবাদ নেই। না নেই। বরং তাই ভালো। যত শেখা যাবে, শিক্ষাকে তত কাজে লাগানো যাবে। তারপরেও অনেক ভেবেছি। ভেবে আমার ভয় করেছে। মাসি, আমি যদি আমার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার লেখাপড়া শেষ করি, এরপরই আমাকে কেরিয়ারের ফাঁদে পড়তে হবে। হবেই। এরকম হাজার হাজার ছেলেমেয়ে আছে, যারা ছাত্রজীবনে রাজনীতি করে কেরিয়ারের কাছে বশ্যতা স্বীকার করেছে। একসময় যারা গলা ফাটিয়ে স্লোগান দেয়, মাইলের পর মাইল মিছিল করে, একটা সময় রাজনীতি তাদের কাছে মুখরোচক আলোচনা ছাড়া আর কিছুই থাকে না। তোমারা যাকে ‘ব্রিলিয়ান্ট’ বলো, তারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশনের পলিটিক্স সেরে নিজেরটা গোছানোর জন্য হাঁকপাক করতে থাকে। একসময় আমাদের দেশে উগ্র বামপ্রন্থী দলের সঙ্গে কত ভালো ছেলেমেয়েই না জড়িয়ে পড়েছিল। তাদের অধিকাংশই আজ পুঁজির কাছে আপস করেছে। শুধু আপস করেনি, ধনীকে কীভাবে আরও ধনী করা যায় তার জন্য নিজেদের মেধা বুদ্ধি খরচ করছে। সাম্রাজ্যবাদের কালো হাত গুঁড়িয়ে দাও, ভেঙে দাও বলে যারা কলেজ স্ট্রিট তোলপাড় করেছিল, তাদের অনেকেই এখন যোগ্যতার সঙ্গে আমেরিকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছে। সেখানকার নাগরিক হয়ে গেছে। বাংলার গ্রামের ভাঙা প্রাথমিক স্কুলের আধপেটা খাওয়া ছেলেমেয়ের কথা আর তাদের মনে পড়ে না। পড়লে প্রবন্ধ লিখে কুমিরের কান্না কাঁদে।

মাসি, আমি যে রাজনীতিতে বিশ্বাস করি, তা উগ্র নয়। তা মানুষকে নিজের অধিকার, নিজের প্রাপ্য সম্পর্কে সচেতন করে। দেশের সংবিধান মেনে, নিয়মকানুন মেনে, নিজের প্রাপ্য কীভাবে বুঝতে হয় এবং আদায় করে নিতে হয় সেই শিক্ষা দেয়। আমি যতটা লেখাপড়া শিখেছি, তাতে এই কাজ আমি পারব। আমার কয়েকজন বন্ধু গ্রামে চলে গিয়ে কাজ করছে। আমি তাদের সঙ্গে যোগ দেব। আমাদের পার্টি এখন যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে তাতে গ্রামের মানুষকে রাজনৈতিক শিক্ষা দেওয়ার কাজটা সবথেকে জরুরি। শহরের মসৃণ রাজনীতি আমার আর ভালো লাগছে না।

মাসি, ভয় করে। আমি যদি লেখাপড়ার শেষ ডিগ্রি নিই, তাহলে আমিও হয়তো একজন শখের রাজনীতি করা ছাত্র হয়ে যাব। ভালো রেজাল্ট করার ফলে, আমার কাছে হাতছানি আরও লোভনীয়ভাবে আসবে। তার থেকে এই ভালো। পড়াশোনা ভালো হল, কিন্তু ডিগ্রিটা হল না। আমি যা চেয়েছি আমাকে তোমরা তাই করতে দাও।

অনেক কথা লিখে ফেললাম। হয়তো নিজেকে কৈফিয়ত দিলাম। রাগ কোরো না। আমি মাঝে মাঝে তোমাদের কাছে আসব। তবে পরিস্থিতি যা তাতে নানারকম অজুহাতে পুলিশ আমাকে হেনস্থা করবে। এটা পার্ট অফ মাই পলিটিক্স। সবসময়ে সোনার চামচ নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। এসব তো খুব সামান্য। ব্রিটিশদের দেশছাড়া করতে গিয়ে আমার থেকেও ছোট ছেলেমেয়েরা সব ছেড়েছুড়ে জেলে জীবন কাটিয়েছে। একজন-দুজন নয়, হাজার হাজার। একজনকে দেখে, আর-একজন উৎসাহিত হয়েছে। আমি তো অতি সামান্য, যাই হোক, আমি চাই না পুলিশি হুজ্জুতির মধ্যে সেনবাড়ি থাকুক।

তোমরা ভালো থেকো। কমলকান্তিদাদুর ‘রোদ উঠবে’ প্রজেক্ট সফল হোক এই কামনা করি। আমি যদি সরাসরি রাজনীতির মধ্যে জড়িয়ে না থাকতাম, তাহলে অবশ্যই এখানে কাজ করতাম। জানি না, ভবিষ্যতে কী হবে। যদি সেরকম হয়, হয়তো কয়েক বছর পরে ঝাড়গ্রামে গিয়ে আমি হাজির হয়ে যাব।

তুমি প্রণাম জেনো। বড়দের প্রণাম দিও। মেসোকে বোলো তার স্নেহ আমি কোনওদিন ভুলব না। বারিধারা আর মেঘবতীর মতো বোন পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার। ওদের বোলো আমাকে যেন ভুল না বোঝে। আমি কোন গ্রামে কাজ করব জানিয়ে দেব। যদি কোনওদিন চায় ওরা বেড়াতে আসতে পারে। যে ভালোবাসা তোমরা আমাকে দিয়েছ তা আমার মতো অভাগাজনের পাওয়ার কথা নয়। আমার যে আশ্রয়ের খুব কিছু প্রয়োজন ছিল এমন নয়। আমি আমার কলেজের হস্টেলেই জায়গা পেতে পারতাম। নিজের খরচ চালিয়ে নেওয়ার মতো স্কলারশিপ এবং টিউশন দুটোই আমার ছিল। তার পরেও সেনবাড়ি আমাকে পরম যত্নে তার বাড়ির একজন করে রাখতে চেয়েছিল তাকে আমি এড়াতে পারিনি। অথচ আমার যা স্বভাব তাতে আমার একা থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল। হয়তো শুধু ভালোবাসা নয়, আমি নিজেও একটা পরিবারের মধ্যে থাকতে চেয়েছিলাম। যারা অনাথ হয় তারা পরিবারে স্নেহ-ভালোবাসার জন্য মুখিয়ে থাকে।

ইতি

অর্চিন

পুঃ মাসি, এতদিন জানাইনি, আজ জানাচ্ছি। আমি আমার পরিচয় জেনে ফেলেছি। কীভাবে জেনে ফেলেছি সে প্রসঙ্গ অবান্তর। যতই হোক, আমি তো একজন বুদ্ধিমান ছেলে। তাই না? আর একটা কথা। একজন মহিলা মাঝে মাঝে এই বাড়ির সামনে ঘুরঘুর করেন। একদিন আমি তার পিছু নিই। উনি কার্যত পালিয়ে যান। ভিড়ে মিশে যান। আরেক দিনও চেষ্টা করেছিলাম। সেদিন ভদ্রমহিলা একটা ট্যাক্সি ডেকে উঠে পড়েন। আর পিছু নিইনি। যিনি নিজে আড়ালে থাকতে চান, তাকে আড়ালে থাকতে দেওয়াটাই সম্মানের। নিজের মা হলেও। তাই না?

চিঠি পড়া শেষ করে বিমলকান্তি মুখ তুললেন।

‘ভুল করল। খুব ভুল করল। এমন ভালো একটা ছেলে…ছি ছি।’

মণিকুন্তলা হাত বাড়িয়ে চিঠিটা নিলেন। বললেন, ‘কী আর করা যাবে।’

বিমলকান্তি বিরক্ত মুখে বললেন, ‘কী আর করা যাবে মানে! তোমার আটকানো উচিত ছিল। একটি ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে এলেই হয় না, তাকে দু’বেলা খাওয়া-পরা দিলেই হয় না, সে যাতে বিপথে না যায় সেটাও দেখতে হয়।’

মণিকুন্তলা অবাক হয়ে বললেন, ‘আমি কি জানতাম ও এরকম একটা হঠকারী কাজ করবে?’

‘জানতে না কেন? ছেলেটা তো আমাদের বাড়িরই একজন ছিল, তার খোঁজখবর রাখবে না, সে কী করে? কোথায় যায়? কখন বাড়ি ফেরে?’

মণিকুন্তলা বললেন, ‘একজন লেখাপড়ায় খুব ভালো, শান্ত প্রকৃতির, ভদ্র ছেলের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করতে হয় জানতাম না। তাছাড়া জেনেই বা কী করতাম। ও যে পলিটিক্স করে সেখান থেকে আমি ওকে ফেরাতে পারতাম? পলিটিক্সের আমি কী বুঝি? আমার কথা অর্চিন শুনতই বা কেন?’

বিমলকান্তি মুখে চুকচুক আওয়াজ করে নিজের মনে মাথা নাড়তে লাগলেন। অর্চিনের এভাবে চলে যাওয়াটা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর খারাপ লাগছে। তিনি মুখে স্ত্রীকে বকাঝকা করলেও, মনে মনে নিজেকে দায়ী করলেন। বাড়িতে পুলিশ এসে অতবড় একটা অভিযোগ করবার পরই সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। বোঝা উচিত ছিল তলে তলে কোনও একটা গোলমাল চলছে। ছেলেটাকে ডেকে বোঝানো উচিত ছিল। বাবার মৃত্যু, কোম্পানির ঝামেলায় এসব কথা মাথায় এল না। কোম্পানিতে একটা ঝামেলা হয়েছে। বিচ্ছিরি ঝামেলা। ভাগ্যিস কমলকান্তি সেন বেঁচে নেই! শুনলে আঘাত পেতেন।

বিমলকান্তি নীচু গলায় বললেন, ‘আমাদের দেশে পলিটিক্স সবথেকে ক্ষতি করেছে। কীভাবে ভালো ছেলেগুলোকে মাথা খেয়ে নষ্ট করছে। ছিছি। লেখাপড়ার একেবারে শেষ স্টেজে এসে এই পাগলামি! নেতাগুলো এর জন্য দায়ী। দেখবে পেছনে কেউ আছে, কেউ উসকেছে।’

মণিকুন্তলা চাপা গলায় বললেন, ‘চিঠির শেষটা পড়েছ?’

বিমলকান্তি ভুরু কুঁচকে বললেন, ‘অতটা খেয়াল করিনি। অর্চিন কোনও একজন মহিলার কথা লিখেছে। কে বলো তো?’

মণিকুন্তলা এক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বললেন, ‘অর্চিন যা বলেছে তা যদি ঠিক হয় তাহলে সমস্যা। অর্চিনের মা ঝামেলা পাকাবে। আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইবে।’

বিমলকান্তির মনে পড়ল, ক’দিন আগে সকালে এক মহিলা দেখা করতে এসেছিল। সেই মহিলা নয় তো? অর্চিনের মা?

‘ওসব নিয়ে চিন্তা কোরো না। ওই ধরনের চিটিংবাজ বদ মহিলাকে কীভাবে শায়েস্তা করতে হয় আমার জানা আছে। তার ছেলে তাকে নিয়ে ইমোশনাল হতে পারে, আমি হব না। নেহাত মহিলাকে আমি চিনি না, দেখিনি কোনওদিন। মুখোমুখি দেখা হলে তাকে আমি জেলে দেব। এবার একবার বাড়িতে এসে দেখুক না। এখান থেকে থানায় ফোন করব। যাক, ওসব বাজে কথা থাকুক। দেখো, ছেলেটাকে ট্রেস করতে পারো কিনা। ধরে আনতে হবে। পড়াশোনা শেষ করে যেখানে খুশি যাক, যত খুশি দেশোদ্ধার করুক। আমাদের দায়িত্ব পালন করব।’

মণিকুন্তলা অসহায় গলায় বললেন, ‘কোথায় খুঁজব?’

বিমলকান্তি বললেন, ‘আহা, ওর কোনও বন্ধু টন্ধুকে চেনো না? বৃষ্টি কিছু বলতে পারবে না?’

মণিকুন্তলা অন্যমনস্কভাবে বললেন, ‘আচ্ছা দেখছি।’

বিকেলেই বারিধারা ঋষার সঙ্গে দেখা করল। পরিচয় খুব গভীর নয়। এক-দু’বারই দেখা হয়েছে। বন্ধুদের সূত্রেই তার কাছে খবর আছে অর্চিন এই মেয়েটির সঙ্গে প্রেম করে। বাড়িতে দিদি আর মাকেও বলেছিল।

‘জানো মা, অর্চিদার একজন গার্লফ্রেন্ড আছে।’

মণিকুন্তলা চোখ বড় বড় করে বলেছিলেন, ‘ওমা! তাই নাকি! ওই ছেলেকে তো দেখলে মনে হয় না, প্রেম টেম করতে পারে। অমন ভালো ছেলে।’

মেঘবতী সেই আড্ডায় ছিল। বলেছিল, ‘ভালো ছেলেরা প্রেম করে না এমন কথা তোমায় কে বলল মা?’

মণিকুন্তলা থতমত খেয়ে বলেছিলেন, ‘না, তা নয়। অনেক সময় হয় না?’

বারিধারা হেসে বলল, ‘কী হয়? ভালো ছেলেরা প্রেম দেখলে পালায়?’

দুই বোন হেসে উঠল। মেঘবতী বলল, ‘বাদ দে তো বৃষ্টি। মেয়েটা কে? কেমন দেখতে? কী করে?’

বারিধারা দিদির উৎসাহে মজা পেল। পৃথিবীর যে-কোনও মেয়েই অন্যের প্রেমের ব্যাপারে কৌতূহলী। চরম শত্রু হলেও ছাড়বে না। কানে একবার কথাটা এলেই হল। সব জানা চাই।

বারিধারা বলল, ‘যতদূর খবর পেয়েছি, মেয়েটির নাম ঋষা। আমার থেকে খারাপ কিন্তু তোর থেকে ভালো দেখতে দিদি। আর করার মধ্যে মেইন কাজ হল কবিতা লেখা।’

ঋষার সঙ্গে তারপর দু-একবার  যোগাযোগ হয়েছে। একবার ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট ফেস্টে এসেছিল। একবার নন্দনে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। অর্চিনের মাসতুতো বোন জেনে ফোন নম্বরও দিয়েছিল ঋষা।

‘তোমার আর মেঘদির কথা খুব শুনেছি।’

বারিধারা হেসে বলেছিল, ‘আমরা কিন্তু তোমার কথা কিছুই শুনিনি। অর্চিনদা কথাই বলে না। মনে হয় আমাদের মোটে পছন্দ করে না।’

ঋষা হাত ধরে বলেছিল, ‘মোটেও না। তোমাদের খুব পছন্দ।’

বারিধারা বলেছিল, ‘ঠিক আছে, একদিন বাড়িতে এসো।’

তারপর আর যোগাযোগ হয়নি। মায়ের কাছ থেকে সব শুনে রাতেই ফোন করল ঋষাকে।