নারীর মূল্য

নারীর মূল্য প্রথম ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয় ১৩২০ বঙ্গাব্দের বৈশাখ থেকে আষাঢ় এবং ভাদ্র ও আশ্বিন সংখ্যা যমুনা মাসিক পত্রিকায়; শ্রীমতী অনিলা দেবী ছদ্মনামে। চৈত্র, ১৩৩০ বঙ্গাব্দ (১৮ই মার্চ, ১৯২৪) এই ধারাবাহিক লেখাগুলো প্রথম পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়।

‘নারীর মূল্য’র ভূমিকা

১৩২০ সালের ‘যমুনা’ মাসিকপত্রে ‘নারীর মূল্য’ প্রবন্ধগুলি ধারাবাহিকরূপে যখন প্রথম প্রকাশিত হয়, তখন আমরা এগুলি গ্রন্থাকারে ছাপিবার অনুমতি লাভ করি।

কি মনে করিয়া যে শরৎবাবু তখন আত্মগোপন করিয়া শ্রীমতী অনিলা দেবীর ছদ্মনাম গ্রহণ করিয়াছিলেন, সে তিনিই জানেন। তবে, তাঁহার ইচ্ছা ছিল এমনি আরও কয়েকটি ‘মূল্য’ লিখিয়া ‘দ্বাদশ মূল্য’ নাম দিয়া পরে যখন গ্রন্থ ছাপা হইবে, তখন তাহা নিজের নামেই বাহির করিবেন। তারপরে, এই দীর্ঘ দশ বৎসর কাটিয়া গেল, না লিখিলেন তিনি আর কোন ‘মূল্য’, না হইতে পাইল ‘দ্বাদশ মূল্য’ ছাপা। আমরা গিয়া বলি, মশায়, আপনার দ্বাদশ ‘মূল্য’ আপনারই থাক, পারেন ত আগামী জন্মে লিখিবেন, কিন্তু যে ‘মূল্য’ আপাততঃ হাতে পাইয়াছি, তাহার সদ্ব্যবহার করি,—তিনি বলেন, না হে, থাক, এ আর বই করিয়া কাজ নাই। কিন্তু কারণ কিছুই বলেন না। এমনি করিয়াই দিন কাটিতেছিল। অথচ, তাঁহার মতের পরিবর্তন হইয়াছে তাহাও নয়,—আমাদের শুধু মনে হয়, তখনকার কালে নারীরা নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে কথা কহিতে শিখে নাই বলিয়াই এ কাজ তিনি করিয়াছিলেন, কিন্তু এখন কাগজে কাগজে ইঁহাদের দাবী-দাওয়ার প্রাবল্য ও পরাক্রান্ত নিবন্ধাদি দর্শন করিয়া এই বৃদ্ধ গ্রন্থকার ভয় পাইয়া গেছেন। তবে, এ কেবল আমাদের অনুমান, সত্য নাও হইতে পারে। কিন্তু এ কথা ঠিক যে, এ বই ছাপাইবার তাঁহার প্রবৃত্তি ছিল না। তাঁহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইহা প্রকাশ করিয়া ভাল করিয়াছি, কি মন্দ করিয়াছি, তাহা পাঠক বলিতে পারেন, আমাদের ত মনে হয় মন্দ করি নাই। কিন্তু ইহার যত কিছু দায়িত্ব সে আমাদেরই।

নারীর মূল্য : সূচি

এই সূচিটি মূল গ্রন্থে নেই, এই শিরোনামগুলোও লেখকের প্রদত্ত নয়। কিন্তু নারীর মূল্য প্রবন্ধটি অতিদীর্ঘ, তাতে একটানা পড়তে পাঠক বিরক্তবোধ করতে পারেন বিবেচনায় কতগুলো শিরোনামে বিভক্ত করে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রবন্ধের সংশ্লিষ্ট অংশের আলোচ্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে শিরোনামগুলো স্থির করা হয়েছে।