শ্রীকান্ত

শ্রীকান্ত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি জীবনচরিত মূলক উপন্যাস। তিনি এই উপন্যাসটি মোট চার খণ্ডে সমাপ্ত করেন। চারটি খণ্ড একসাথে লিখেন নি। যথাক্রমে ১৯১৭, ১৯১৮, ১৯২৭ এবং ১৯৩৩ সালে চারটি খণ্ড লেখা শেষ করেন।

প্রথম পর্ব, ১৯১৭

১৩২২ বঙ্গাব্দের মাঘ মাস থেকে ১৩২৩ বঙ্গাব্দের মাঘ মাস পর্যন্ত মোট তেরোটি সংখ্যায় ভারতবর্ষ মাসিক পত্রিকায় শ্রীকান্তর ভ্রমণ কাহিনী নামে এই উপন্যাস প্রকাশিত হয়। মাঘ ও ফাল্গুন মাসের সংখ্যায় লেখকের নাম হিসেবে লেখা হয় শ্রী শ্রীকান্ত শর্মা। পরের দুইটি সংখ্যায় লেখকের নাম শ্রীশরচ্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও অবশিষ্ট সংখ্যাগুলিতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থাকে। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ১২ই ফেব্রুয়ারি ভারতবর্ষ পত্রিকার মালিক গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স এই তেরোটি সংখ্যায় প্রকাশিত রচনা নিয়ে শ্রীকান্ত প্রথম পর্ব নাম দিয়ে পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন।

দ্বিতীয় পর্ব, ১৯১৮

১৩২৪ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাস থেকে ১৩২৫ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাস পর্যন্ত ভারতবর্ষ পত্রিকায় শ্রীকান্তর ভ্রমণ কাহিনী আবার প্রকাশিত হয়। এই সময় ১৩২৪ বঙ্গাব্দের আশ্বিন ও কার্তিক মাস এবং ১৩২৫ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাসের সংখ্যায় উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়নি। এই রচনাংশ নিয়ে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে সেপ্টেম্বর গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স শ্রীকান্ত দ্বিতীয় পর্ব নাম দিয়ে পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন।

তৃতীয় পর্ব, ১৯২৭

১৩২৭ বঙ্গাব্দের পৌষ মাস থেকে ১৩২৮ বঙ্গাব্দের পৌষ মাস পর্যন্ত ভারতবর্ষ পত্রিকায় এই উপন্যাসের তৃতীয় পর্যায় আবার প্রকাশিত হয়। এই সময় ১৩২৭ বঙ্গাব্দের চৈত্র এবং ১৩২৮ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ, শ্রাবণ, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের সংখ্যায় উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়নি। ১৩২৮ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে নবম পরিচ্ছেদ সমাপ্ত হওয়ার পর শরৎচন্দ্র পাঠক ও প্রকাশকের অনুরোধ সত্ত্বেও অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে বহুদিন এই পর্বের অসমাপ্ত অংশ শেষ করেননি। পাঁচ বছর পরে আরো ছয়টি পরিচ্ছেদ লেখা হলে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ না করে সরাসরি ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স শ্রীকান্ত তৃতীয় পর্ব নাম দিয়ে পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন।

চতুর্থ পর্ব, ১৯২৭

১৩৩৮ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাস থেকে ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের মাঘ মাস পর্যন্ত বিচিত্রা পত্রিকায় এই উপন্যাসের চতুর্থ পর্যায় শ্রীকান্ত চতুর্থ পর্ব নামে আবার প্রকাশিত হয়। এই বারোটি সংখ্যা নিয়ে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই মার্চ গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন। এরপর শরৎচন্দ্র এই উপন্যাসের পঞ্চম পর্ব রচনা করবেন বলে মনে করলেও তিনি তা করেননি।