গান
ওঠো জাগো ও দেশবাসী,
আমরা যে রই উপবাসী,
আসছে মরণ সর্বনাশী ।
হও তবে সত্বর—
দুয়ারে উঠল মহাঝড়।
সংকলিতা
কিন্তু তোমার এই এতবড় রাজ্য
এখানে পেলাম নাকো কোনোই সাহায্য।
রাজদূতের প্রবেশ
রাজদূত
প্রজারা সহসা ক্ষিপ্ত হয়েছে যে মহারাজ—
রাজপ্রাসাদের পাশে ভিড় ক’রে আছে আজ।
প্রস্থান
মহারাজ
বলো মেয়ে তাদের আমি শান্ত করি কী দিয়ে?
সংকলিতা
ধনাগার আজ তাদের হাতে এখুনি দাও ফিরিয়ে।
মহারাজ
তাও কখনো সম্ভব?
অবশেষে ছাড়বো বিপুল বৈভব?
কুবের শেঠ
(করজোড়ে)
শ্রীচরণে নিবেদন করি সবিনয়—
কখনই নয়, প্রভু কখনই নয়।
মহারাজ
কিন্তু কুবের শেঠ,
বড়ই উতলা দেখি এদের ক্ষুধিত পেট।
কুবের শঠ
এ এদের ছল, মহারাজ!
নতুবা নির্ঘাত দুষ্ট চাষীদের কাজ।
মহারাজ
তুমিই যখন এদের সমস্ত,
এদের খাওয়ার সকল বন্দোবস্ত
তোমার হাতেই করলাম আজ ন্যস্ত।
কুবের শঠ
(বিগলিত হয়ে)
মহারাজ ন্যায়পরায়ণ!
তাইতো সদাই সেবা করি ও চরণ!
মহারাজের সঙ্গে শঠের প্রস্থান
ইন্দ্রসেন
বাঘের ওপর দেওয়া হল ছাগ পালনের ভার,
কোতোয়াল হে! তোমাদের যে ব্যাপার চমৎকার!
কোতোয়াল
বটে! বটে! বড় যে সাহস?
গর্দান যাবে তবে রোস!
সংকলিতা
ছেলের দলের সামনে সাহস ভারি,
যোগ্য লোকের কাছে গিয়ে ঘোরাও তরবারি।
কোতোয়াল
চুপ করে থাক্ মেয়ে, চুপ করে থাক্,
তুই এনেছিস দেশে ভীষণ বিপাক।
যেদিন এদেশে তুই এলি ভিখারিণী
অশুভ তোরই সাথে এলো সেই দিনই।
সত্যকাম
কে বলে একথা কোতোয়াল?
ও হেথা এসেছে বহুকাল;
এতদিন ছিল না আকাল।
প্রজার ফসল করে হরণ
তুমিই ডেকেছ দেশে মরণ,
সে কথা হয় না কে স্মরণ?
জমানো তোমার ঘরে শস্য,
তবু তুমি করো ওকে দূষ্য?
কোতোয়াল
কে হে তুমি? দেখছি চোরের পকেটকাটা সাক্ষী,
বলছ কেবল বৃহৎ বৃহৎ বাক্যি?
ইন্দ্রসেন
কোতোয়ালজী, আজকে হঠাৎ রাগের কেন বৃদ্ধি?
তোমার কি আজ খাওয়া হয় নি সিদ্ধি?
কোতোয়াল
চুপ কর্, ওরে হতভাগা!
এটা নয় তামাসার জা’গা!
(দাঁতে দাঁতে ঘ’সে সংকলিতার প্রতি)
এই মেয়ে বাড়িয়েছে ছেলেদের বিক্রম,
তাইতো আমাকে কেউ করে নাকো সম্ভ্রম।