☼ প্রচেত গুপ্ত ☼
একটু পরে রোদ উঠবে
পঁচিশ
বারিধারার দিকে তাকিয়ে কমলকান্তি সেন মুচকি মুচকি হাসছেন।
হাসবারই কথা। খানিক আগে তিনি নাতনিকে মারাত্মক একটা প্ল্যান বাতলেছেন। এমন প্ল্যান যে বারিধারার মতো সাহসী মেয়েও চমকে গেছে। তার মুখ হাঁ হয়ে গেছে। চোখ হয়ে গেছে বড় বড়। কমলকান্তির মনে হল, অবাক হওয়ার কারণে তার ছোট নাতনিকে বেশি সুন্দর লাগছে।
নাতনিদের সৌন্দর্যের ব্যাপারে কমলকান্তি চিরকালই বাড়াবাড়ি ধরনের দুর্বল। তার বিশ্বাস, তাঁর দুই নাতনি পৃথিবীর এক নম্বর এবং দু’নম্বর সুন্দরী। কে ‘এক’ আর কে ‘দুই’ চট করে বলা যাবে না। একেক সময় একেক জন। এই জিনিস তিনি আজ হঠাৎ করে মনে করছেন না। নাতনিদের জন্মের পর থেকেই মনে করছেন। মেঘবতী হওয়ার পর নার্সিংহোমে নাতনিকে দেখে বাড়ি ফিরে ঘোষণা করেছিলেন, ‘দুনিয়ার সবথেকে সুন্দরী মেয়ে সেনবাড়িতে জন্ম নিল। রূপে এই মেয়েকে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। এরপর যখন বারিধারা হল, তখন বললেন, ‘এতদিনে আমার বড় নাতনিকে টক্কর দেওয়ার মতো একজন সুন্দরীকে পেলাম। ব্যাপারটা ওয়ান সাইডেড হয়ে যাচ্ছিল। একতরফা কোনও কিছুই ঠিক নয়। এখন কে বেশি সুন্দর তাই নিয়ে দুই বোনে লড়াই হবে মনে হচ্ছে।’
স্বাভাবিকভাবেই এই কথায় সবাই হাসাহাসি করত। বলত, নাতনিদের নিয়ে দাদুর বাড়াবাড়ি। মেঘবতী, বারিধারাও মজা পেত। ছোটবেলায় তারা দাদুর কাছে এসে বলত, ‘আমাদের মধ্যে কে বেশি সুন্দর দাদু?’
কমলকান্তি চোখ-নাক কুঁচকে চিন্তার ভাব করতেন। বলতেন, ‘একটু পরে বললে হবে? বিষয়টা জটিল। ভাবনাচিন্তার জন্য সময় লাগবে।’
মেঘবতী কাঁদো কাঁদোভাবে বলত, ‘না, এখনই বলতে হবে।’
বারিধারা ঠোঁট উলটে কান্না কান্না গলায় বলত, ‘দিদি আমার সঙ্গে ঝগড়া করছে। বলছে ও নাকি আমার থেকে বেশি সুন্দর। বড় হয়ে আমরা যখন বিউটি কনটেস্টে নাম দেব ও মিস ইউনিভার্স হবে।’
মেঘবতী তেড়েফুঁড়ে বলত, ‘অবশ্যই আমি বেশি সুন্দর। আমার গায়ের রং ফর্সা।
বারিধারা বলত, ‘আমার নাক টিকোলো, গালে টোল, চোখ টানা। সেটা কিছু নয়?’
কমলকান্তি হাত তুলে বলতেন, ‘দুজনেই সুন্দর।’
মেঘবতী গোঁ ধরে বলত, ‘তা বললে চলবে না দাদু। ঠিক করে বলতে হবে।’
কমলকান্তি হেসে বলতেন, ‘আমার চোখে তো দুজনেই সমান রূপসি। পৃথিবীর রূপসিরা ডানাকাটা পরি হয়, আমার দুই নাতনির অদৃশ্য ডানা আছে। তোমরা যদি চাও আমি রাংতা দিয়ে তোমাদের জন্য ডানাও বানিয়ে দিতে পারি।’
বারিধারা দাদুর গলা জড়িয়ে বলত, ‘এসব তোমার ফাঁকিবাজির কথা দাদু। তুমি আগে বলো, আমাদের মধ্যে কে বেশি সুন্দর।’
কমলকান্তি তখন দুই নাতনিকে আদর করে দুপাশে বসাতেন। মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেন, ‘মানুষ কি গায়ের ফরসা রং, টিকোলো নাক, টানা টানা চোখ দিয়ে সুন্দর হয়? মোটেও নয়। ওসব তো বাইরের ব্যাপার। তোমরা যখন বড় হবে তখন দেখবে বাইরের রূপ রং-চং দিয়ে বানিয়ে নেওয়া যায়। আর ক’টা দিন বাদে আমি যখন ফোকলা হয়ে যাব, বাঁধানো দাঁত লাগিয়ে ঘুরে বেড়াব। সবাই বলবে, আরে বাবা! বুড়োমানুষটার কী সুন্দর দাঁত! কথাটা তো ঠিক নয়। ওটা তো নকল দাঁত। কেউ বুঝতে পারে না, ঠকে যায়। ভুল বিচার করে। আসলে মানুষ সুন্দর হয় ভিতর থেকে। যে মানুষের ভিতরটা যত ভালো, সে তত সুন্দর। এই সৌন্দর্য রং-চং দিয়ে বানানো যায় না। মনের ভিতর থেকে আলো জ্বালাতে হয়। আমি যে আমার দুই নাতদিকে সুন্দর বলি সে কি তাদের গায়ের রং বিচার করে বলি? একেবারেই নয়। আমি দেখতে পাই আমার দুই নাতনির মনের ভিতরটা আলো ঝলমল করছে। ভালো হওয়ার আলো। আর সেই কারণেই তারা সবথেকে সুন্দর। যত বড় হবে ভিতরের ভালোটাকে যত্ন করে ধরে রাখবে। দেখবে কোনওরকম রং-চং, মেকাপ ছাড়াই সুন্দর হয়ে গেছ। শুধু বিউটি কনটেস্ট নয়, পৃথিবীর সব কনটেস্টেই তখন জিতে যাবে। সবাই বলবে, এই মেয়ে দুটো সবথেকে সুন্দর। মনে রাখবে, মানুষ অতি অভাগা। সে ‘সুন্দর’ শব্দটার মানে ঠিকমতো বুঝতে পারে না। যদি বুঝতে পারত, পৃথিবীটা মাঝে মাঝে এত খারাপ হত না।’
দুই বোন অবাক হয়ে দাদুর কথা শুনেছিল। বেশিটাই বুঝতে পারেনি। তবে ভালো লেগেছিল। বারিধারা বলেছিল, ‘দাদু, মনের ভিতরে আলো কী করে জ্বালাতে হয়?’
কমলকান্তি বললেন, ‘ওই যে বললাম, ভালো হয়ে। মানুষ হয়ে।’
মেঘবতী বলল, ‘ভালো মানে কি শান্ত মেয়ে? মা যে বলে, শান্ত মেয়েরা ভালো।’
কমলকান্তি দরজার দিকে তাকিয়ে গলা নামিয়ে মুচকি হেসে বলল, ‘মাকে যদি না বলিস তো তা হলে একটা কথা বলব।’
বারিধারা দাদুকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘বলো।’
কমলকান্তি বললেন, ‘সবসময় শান্ত হলে ভালো হওয়া যায় না। যেখানে অশান্তি দরকার সেখানে গোলমাল পাকাতে হবে। দুষ্টুমি করতে হবে।’
ভালো হতে গেলে অশান্ত হতে হয়, গোলমাল পাকাতে হয়, দুষ্টুমি করতে হয় এমন কথা দুই বোন সেই বয়সে শোনেনি। বরং সবসময়ে উলটোটাই জেনেছে। তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
মেঘবতী চোখ বড় করে বলল, ‘কীরকম গোলমাল দাদু?’
বারিধারা ফিসফিস করে বলে, ‘চিৎকার?’
কমলকান্তি গল্প বলবার ঢঙে বললেন, ‘অবশ্যই চিৎকার করতে হবে। সেরকম হলে দু-ঘা দিতেও হবে।’
মেঘবতী ছোটবেলা থেকেই শান্ত। সে ভয়ে ভয়ে বলল, ‘কাকে দু-ঘা দিতে হবে দাদু?’
কমলকান্তি হেসে বললেন, ‘কাকে দিতে হবে নিজেরাই বুঝতে পারবে। যত বড় হবে বুঝতে পারবে, চারপাশে দু-ঘা দেওয়ার মতো অনেক লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যায় দেখলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। হাত-পা চালাতেও হবে। অন্যায় দেখে মুখ বুজে থাকলে ভালো হওয়া হবে না। তখন আর তোমাদের কেউ সুন্দরও বলবে না। সে যতই ফরসা হও আর যতই চোখ টানা টানা হোক।’
বড় হওয়ার পর দুই বোন ‘সুন্দর’ হওয়ার কথা মনে রাখেনি, তবে দাদুর ‘দু-ঘা’-র কথা মনে রেখেছে। বাসে, ট্রামে, বাজারে কেউ অসভ্যতা করলে ‘দু-ঘা’ দিতে বিশেষ কুণ্ঠা বোধ করেনি। তবে একবার লজ্জায় পড়েছিল। অমনটা যে ঘটতে পারে ভাবতেও পারেনি।
মেঘবতীর তখনও বিয়ে হয়নি। এক বিকেলে এসপ্ল্যানেড যাচ্ছিল মেট্রোতে। ভিড় বিশেষ ছিল না। তাও পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রসভ্য দেখতে বয়স্ক একজন বারবার ঘেঁষে আসে এবং নানা কায়দায় গায়ে হাত দিতে চেষ্টা করে। মেঘবতী সরে গেলে লোকটাও সরে আসে। কয়েকবার কড়া চোখে তাকায় মেঘবতী। চাপা ধমকও দেয়।
‘ঠিক করে দাঁড়ান।’
ধমকের কয়েক মুহূর্তের মধ্যে লোকটি মেঘবতীর ডানদিকের বুকে হাত দিয়ে বসে। হাত সরিয়ে নেওয়ার ফাঁকেই ঘুরে দাঁড়ায় মেঘবতী। তার মাথায় আগুন ধরে যায়। লোকটাকে খপ করে চেপে ধরে হাত মুচড়ে ধরে। টি শার্ট, জিনস পরা শান্ত মুখের সুন্দরী এরকম একটা কাজ করতে পারে লোকটার সম্ভবত ধারণা ছিল না। সে হকচকিয়ে যায়। তারপর যথারীতি কাঁউমাঁউ করে ওঠে।
‘ব্যাপারটা কী? আমার হাত ধরেছেন কেন?’
মেঘবতী দাঁত চেপে বলে, ‘ব্যাপারটা কী বুঝতে পারছেন না?’
লোকটা চোখ পাকিয়ে বলে, ‘হাত ছাড়ুন। ভালো হবে না বলছি।’
মেঘবতী দাঁত কিড়মিড় করে বলল, ‘হাত ছাড়া ছিল বলে আপনি এতক্ষণ কী করছিলেন?’
বয়স্ক হম্বিতম্বি করে বলল, ‘আপনি ভুল করছেন। ভিড় ট্রেনে উঠলে অমন হতেই পারে…আপনি হাত ছাড়ুন…আপনি মিথ্যে অভিযোগ করছেন…।’
মেঘবতী বলে, ‘আপনি ইনটেনশনালি বারবার আমার গায়ে হাত দিচ্ছিলেন। আমি আপনাকে সতর্ক করি, তারপরেও করেছেন।’ বলতে বলতে হাতটা আরও জোরে মুচড়ে ধরে মেঘবতী। বলে, ‘বলুন দিচ্ছিলেন কি না। সবার সামনে স্বীকার করুন।’
ট্রেনের যাত্রীকুল ততক্ষণে মজা পেয়ে গেছে। তারা নানারকম মন্তব্য করতে শুরু করে। তড়পাতে থাকে।
‘কান ধরে ওঠবোস করান।’
‘পুলিশের হাতে দিন।’
‘পুলিশকে দিয়ে কী হবে? দশ টাকা পকেটে গুঁজে ছাড়া পেয়ে যাবে।’
‘বরং সবাই মিলে চাঁদা করে পেটানো উচিত।’
মেঘবতী পাত্তা দেয় না। এ সব সময়ে যারা বেশি হম্বিতম্বি করে তারা এই ধরনের কাজ বেশি করে। সে লোকটার হাত মুচড়ে বলে, ‘আগে স্বীকার করুন অন্যায় করেছেন, তারপর আপনার হাত ছাড়ব।’
বয়স্ক লোকটা খানিকটা বেঁকে দাঁড়িয়ে ‘আ’, ‘উ’ করতে থাকে।
‘খুব ভালো হয়েছে মেয়ে।’
‘ছাড়বেন না দিদি।’
‘আরও জোরে মোচড় দাও বোনটি।’
‘এ সব লোকের হাত ভেঙে দেওয়া উচিত ম্যাডাম।’
অন্যদের মন্তব্য তখন মেঘবতীর কানে ঢুকছে না। রাগে মাথা ঝাঁ ঝাঁ করছিল। তার জেদ চেপে গেছে। এত বড় সাহস! লোকটাকে দিয়ে অপরাধ স্বীকার করিয়ে তবে ছাড়বে। এর মাঝেমাঝেই ট্রেন এসে স্টেশনে দাঁড়ায়। কামরার দরজা খুলে যায়। কয়েকজন নামলে, উঠেও আসে বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে একদল কমবয়সি ছেলেমেয়ে রয়েছে। ট্রেন ছাড়লে তারা এদিক-ওদিক ছড়িয়ে পড়ে। একটি শাড়ি পরা মেয়ে সিট খুঁজতে খুঁজতে এগিয়ে আসে। মেয়েটির বয়স মেঘবতীর কাছাকাছি। হঠাৎই তার চোখ পড়ে মেঘবতীদের দিকে। দৃশ্যটা দেখে থমকে দাঁড়ায়। সামনের সিট থেকে একজন চাপা গলায় হেসে ওঠে।
‘বেটা মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়ার সাজা পাচ্ছে। সত্যি কথা না বলা পর্যন্ত সাজা চলবে।’ মেয়েটি বিস্ফারিত চোখে লোকটির দিকে তাকায়। বয়স্ক লোক মুখ নামায়। মেয়েটির কাঁধে একটা হালকা নীল রঙের শান্তিনিকেতনি ব্যাগ ছিল। সে ব্যাগটা চেপে ধরে। মেঘবতীর উদ্দেশে বিড়বিড় করে বলে, ‘কী হয়েছে?’
মেঘবতী হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, ‘কী আর হবে, এই ধরনের নোংরা লোক বাসে-ট্রামে-ট্রেনে যা করে। ভদ্র পোশাকে থাকে, সুযোগ পেলে মেয়েদের গায়ে হাত দেয়। তারপর ছুঁচোর মতো অস্বীকার করে। তবে এই লোক যতক্ষণ না সবার সামনে অপরাধ স্বীকার করছে ততক্ষণ ছাড়ব না।’
মেয়েটি মাথা নামিয়ে এক মুহূর্ত কী যেন ভাবল। তারপর মুখ তুলে বলল, ‘দিদি, এই ভদ্রলোক আমার বাবা। আপনি চিন্তা করবেন না, আমি ওকে অপরাধ স্বীকার করতে বলছি।’
মেয়েটি বয়স্ক লোকটির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘বাবা, তুমি অপরাধ স্বীকার করো।’
এবার মেঘবতীর কেঁপে ওঠবার পালা ছিল। এমন একটা বিশ্রী ঘটনা যে এরকম নাটকীয় মোড় নেবে সে কল্পনাও করতে পারেনি। গল্প-উপন্যাসেও এরকম শোনা যায়নি। তার বয়সি এই ফুটফুটে মেয়েটি এই নোংরা লোকের মেয়ে! মেঘবতী দ্রুত লোকটির হাত ছেড়ে দেয়। বিব্রত ভঙ্গিতে বলে, ‘ঠিক আছে, ঠিক আছে…আমি ঠিক বুঝতে পারিনি….ঠিক আছে আপনি যান…।’
মেয়েটি কঠিন গলায় বলে, ‘কিছুই ঠিক হয়নি। বাবা, তুমি অপরাধ স্বীকার করো। ওর সামনে বলো, তুমি কী বিশ্রী কাজ করেছ। বলো তুমি।’
কাছে থাকা যেসব যাত্রী ঘটনা পুরো দেখেছে তারা স্তম্ভিত হয়ে পড়ে। মেঘবতী অস্বস্তিতে পড়ে। সে আবার বলে, ‘ঠিক আছে বললাম তো। কিছু বলতে হবে না। যান স্টেশন এসে গেছে, নেমে যান।’
মেয়েটির শান্ত মুখে যেন আগুন লেগেছে। রাগে-অপমানে-দুঃখে লাল হয়ে সে এগিয়ে গিয়ে লোকটির হাত ধরে। চাপা গলায় বলে, ‘বাবা, আগে তুমি সবার সামনে নিজের অপরাধ স্বীকার করো। তারপর গাড়ি থেকে নামবে।’ বলতে বলতে মেয়েটি ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে।
ঘটনাটা মেঘবতী অনেকদিন পর্যন্ত মনে রেখেছিল।
আজকের ঘটনা বারিধারা মনে রাখবে। খানিকক্ষণ ‘হাঁ’ অবস্থায় থাকবার পর সে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, ‘কিন্তু দাদু…।’
কমলকান্তি ইজিচেয়ারে সোজা হয়ে বসে হাত তুললেন।
‘আর কিন্তু নয় বৃষ্টি। এবার তোমার ব্যাপার। তোমার এই মধুজা ম্যাডাম, তার বন্ধু মানিনী আর ওই বদ ছেলেটা, কী যেন নাম বললে ছোকরার? দর্শন না সুদর্শন কী যেন? যে নামই হোক, এদের শায়েস্তা করবার জন্য তোমাকে প্ল্যান দিলাম। সেই প্ল্যান তুমি কাজে লাগাতে পারবে কি না সেটা তোমার ব্যাপার।’
বারিধারা বলল, ‘সে তো বুঝলাম দাদু, কিন্তু…।’
কমলকান্তি চোখ পাকিয়ে বললেন, ‘আবার কিন্তু?’
বারিধারা হেসে ফেলল। বারিধারার সবথেকে বড় গুণ হল, টেনশনের মধ্যেও সুন্দর করে হাসতে পারে।
‘আচ্ছা, আর কিন্তু নয়। তবে এমন মারাত্মক একটা প্ল্যান দেওয়ার জন্য তোমাকে কি আমি একটা হামি খেতে পারি?’
কমলকান্তি ফের ইজিচেয়ারে হেলান দিলেন। বললেন, ‘না পারো না। কারণ তুমি এতক্ষণ নিজের কথা বললে, কিন্তু আমার ইম্পর্ট্যান্ট কথাটা শোনোনি।’
বারিধারা ঝুঁকে পড়ে দাদুর গলা জড়িয়ে ধরল। হেসে বলল, ‘কী কথা?’