☼ প্রচেত গুপ্ত ☼
একটু পরে রোদ উঠবে
তেইশ
কর্ণিকা শেষ রাতে একটা স্বপ্ন দেখেছে। ঘুম ভাঙার পর থেকে স্বপ্নটা সমস্যা করছে। স্বপ্ন মনে থাকবার কথা নয়। জেগে ওঠবার কিছুক্ষণের মধ্যেই মন থেকে আবছা হতে হতে মিলিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এই স্বপ্নের বেলায় ঘটনা ঘটছে অন্যরকম। বার বার মনে পড়ছে। তাতে একই সঙ্গে কর্ণিকার লজ্জা করছে, আবার ভালোও লাগছে।
বাড়িতে খুশির হাওয়া। কাল বাড়ি এসে প্রাোমোশনের কথা বলেছে কর্ণিকা। বাবা-মা-ভাই তিনজনের তিনরকম প্রতিক্রিয়া। মা চিবুকে হাত ঠেকিয়ে আদর করল। ছলছল চোখে বলল, ‘হ্যাঁরে, কাজ পারবি তো? এইটুকু মেয়ে। অত বড় অফিস!’
কর্ণিকা বলল, ‘না, পারব না।’
মা বলল, ‘তোকে এখন কী করতে হবে?’
কর্ণিকা খাটের ওপর চিৎ হয়ে শুয়ে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ঠিক বুঝতে পারছি না মা। মনে হচ্ছে অফিস ঝাঁট দিতে হবে। ঝাঁট দিয়ে সোনাদানা খুঁজে বের করতে হবে।’
মা বলল, ‘সবসময় ঠাট্টা করিস না।’
কর্ণিকা হাত বাড়িয়ে মায়ের একটা হাত ধরল। অন্যমনস্ক গলায় বলল, ‘ঠাট্টা করছি না। সত্যি আমি জানি না, ঠিক কী করতে হবে। মনে হয়, আমার কাজটা হবে খবরদারি। খবরদারি মানেই তো ঝাঁট দেওয়া। কে সোনাদানা ফেলে গেল, কে সোনাদানা ঠিকমতো চিনতে পারল না, কে সোনাদানার বদলে ছাইভস্ম তুলে নিল। কমপ্লিকেটেড বিষয়। তুমি বুঝবে না। তার কারণ, তুমি অফিসে কাজ করো না বলে নয় মা, তার কারণ, বিষয়টা আমিও বুঝতে পারিনি।’
মা চোখ বড় করে বলল, ‘সে যাই হোক, তোর ভালো হয়েছে এটাই ভালো। সাবধানে থাকবি। কাজে ভুল করবি না।’
কর্ণিকা ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ‘সাবধানে থেকে লাভ হবে না। আমাদের স্যার একজন অদ্ভুত মানুষ। কাজ ভুল করলে রাগ করেন না। কিন্তু…।’
মা বলল, ‘কিন্তু কী…?’
কর্ণিকা উঠে বসে, হেসে বলল, ‘কিন্তু শুনে লাভ নেই। তুমি এখন ঘর থেকে দ্রুত কেটে পড়ো মা। আমি স্নান করতে যাব। কিছু খাবার ব্যবস্থা করো তো। খিদে পেয়েছে। আজ সারাদিন একই সঙ্গে শরীরে টেনশন এবং খুশি—দুটো এফেক্ট কাজ করছে। মিক্সড এফেক্ট। এতে খিদে বাড়ে।’
মা বলল, ‘বাবাকে বলেছিস?’
‘না।’
মা অবাক গলায় বলল, ‘সে কী! চাকরির উন্নতির খবর বাবাকে বলবি না!’
কর্ণিকা খাট থেকে নেমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে ঘরে পরবার জামাকাপড় নিতে লাগল। বলল, ‘তুমি বলো।’
মা এগিয়ে এসে মেয়ের কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘ছি। এটা কেমন কথা কনি? তুই নিজের মুখে বললে মানুষটা খুশি হবে।’
কর্ণিকা হাতে জামাকাপড় নিয়ে মায়ের দিকে ঘুরে দাঁড়াল। বলল, ‘কে বলল এটা কোনও ফ্যাক্টর নয়। খবরটা পেলেই তো হল। তুমি তো জানো মা, বাবার সঙ্গে কথা বলাটা একটা ঝামেলা, একটুক্ষণের মধ্যে মুড অফ হয়ে যাবে। এমন সব কথা বলবে, মেজাজ ঠিক রাখতে পারব না। আজকের দিনে মেজাজ খারাপ করতে ভালো লাগছে না।’
মা মাথা নেড়ে গম্ভীর গলায় বলল, ‘এটা ঠিক নয় কনি। সব মানুষ এরকম হয় না। তোর বাবাও নয়। তার পরেও সে তোর বাবা। এখন আর রাগ করে সময় নষ্ট নয়। যাও প্রাোমোশনের খবরটা বলে এসো।’
কর্ণিকা একটু চুপ করে থেকে বলল, ‘ঠিক আছে। বাথরুম থেকে ঘুরে এসে বলছি। তার আগে তুমি জানিয়ে রাখো, তাহলে আর আমাকে বেশি বকতে হবে না।’
মা ঘর থেকে বেরোতে বেরোতে বলল, ‘আমি কিছু বলব না। যা বলবার তুমি বলবে।’
কর্ণিকা স্নান সেরে বাবার কাছে গেল। দরজার কাছে থমকে দাঁড়াল। সুখময়বাবু টিভির সামনে বসে আছেন। টিভিতে রোগা-পাতলা একটা লোক বসে। খালি গা। গলায় গাদাখানেক রুদ্রাক্ষের মালা, কপালে চন্দনের তিলক। মুখটা চোয়াড়ে, নাকটা টিয়াপাখির মতো লম্বা। ভাগ্য গণনা চলছে। লাইভ ভাগ্যগণনা। টেলিফোন আসছে। জ্যোতিষসম্রাট উত্তর দিচ্ছে। তার মুখ অবশ্য নামানো। সামনে রাখা খাতায় পেন্সিল দিয়ে কিছু একটা নোট নিচ্ছে।
‘প্রণাম জানবেন ঠাকুর।’
রোগা-পাতলা নাক টেনে বলল, ‘আপনাকে প্রণাম। আমাকে ঠাকুর বলবেন না। আমি ঠাকুর নই। আমি ঠাকুরের শিষ্য। তার ইচ্ছেতেই মানুষের সেবায় মন দিয়েছি।’
‘স্যার, আমি বড় কঠিন সমস্যায় পড়েছি।’
রোগা-পাতলা নোটখাতায় কীসব লিখতে লিখতে বলল, ‘আগে নাম বলুন, ঠিকানা বলুন।’
‘নাম-ঠিকানা বলা যাবে না গুরুদেব। ফেঁসে যাব।’
‘আচ্ছা, বলতে হবে না। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে ঘটনাই তার পরিচয়। নাম-ঠিকানায় কার কী আসে যায়? ঘটনা বলুন।’
‘ঘটনা খুব গুরুতর। আমার বউ একটা বিচ্ছিরি কেসে ফেঁসে গেছে।’
রোগা-পাতলা এবার মুখ তুলে ক্যামেরার দিকে তাকাল। ভুরু কোঁচকাল। ভুরু সম্ভবত ফলস। নরমাল ভুরু এত ঘন হতে পারে না। ‘আপনার স্ত্রীর সমস্যা, আপনি বলছেন কেন? তিনি কি কথা বলতে পারেন না?’
‘দাদা, আমার স্ত্রী লজ্জায় বলতে পারছে না।’
রোগা-পাতলা ফের নোটখাতায় মুখ নামাল। বলল, ‘সংসারে আমাদের এই হল জটিলতা। অনেক সময়েই আমরা নিজেরা আমাদের সব সমস্যা নিজের মুখে ব্যক্ত করতে পারি না। তা করলে কী করে হবে? সমস্যা সমাধানের পথ তো আমাকেই সন্ধান করে নিতে হবে। মুক্তির পথ তো আমারই হাতে। শ্লোকে বলেছে, যঃ স্থাপিত নিজস্ব পথেচ, তদবি চলিতানি দিবসরাত্রি। এর অর্থ কী? এর অর্থ হল…যাক, এর অর্থ শুনে আপনার কাজ নেই। আপনি বলুন। বলুন আপনার স্ত্রীর সমস্যা কী?’
টিভিতে কোনও কথা নেই। রোগা-পাতলা মুখ তুলে বিরক্ত গলায় বলল, ‘কী হল বলুন? নাকি আপনারও সমস্যা?’ তার পরেও প্রশ্নকর্তার কোনও কথা নেই।
‘চুপ করে আছেন কেন? আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন? এই যে হ্যালো…হ্যালো, শুনতে পাচ্ছেন না?’
কর্ণিকার মাথা ঝাঁ ঝাঁ করে উঠল। একটা সুস্থ পুরুষমানুষ টিভির সামনে বসে ভর সন্ধেবেলা এসব কী দেখছে। এই সময়টা কিছু কাজকর্ম তো করতে পারত। কাজকর্ম না করুক বাইরে কোথাও গিয়ে পরিচিতদের সঙ্গে গল্পটল্প করে আসতে পারত। ক্লাবে গিয়ে তাস খেলতে পারে। তা না করে এসব কী? টিভিতে ভাগ্যবিচার দেখছে! অসুখ থেকে উঠেছে অনেক দিন। তার পরেও একটানা ঘরে বসে আছে। মা বলে, মানুষটা নড়বড়ে হয়ে গেছে। কর্ণিকার বিশ্বাস, ওসব কিছু নয়। বাবার কাজ করবার অভ্যেস নষ্ট হয়ে গেছে। তার ওপর মেয়ের উপার্জনের পয়সা যখন আসছেই, তখন আর সংসার নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ কী? সবই এই লোকটার দোষ। শরীর-টরীর কিছু নয়।
মুখটা তেতো খাওয়া মতো করে কর্ণিকা সুখময়বাবুর থেকে দূরত্ব রেখে বেতের সোফায় বসল।
‘বাবা, টিভিটা বন্ধ করো।’
সুখময়বাবু মুখ তুলে মেয়ের দিকে তাকালেন। রিমোট দিয়ে টিভির সাউন্ড কমালেন।
‘বাবা, এসব কী হাবিজাবি জিনিস দেখছ?’
সুখময়বাবু চোখ কপালে তুলে গদগদ গলায় বললেন, ‘হাবিজাবি কী বলছিস কনি! ভদ্রলোক কত বড় অ্যাস্ট্রোলজার জানিস? আট জায়গায় চেম্বার। সপ্তাহে সাতদিন সাত জায়গায়, একদিন ডবল জায়গায়। ওনার সব কথা অব্যর্থ। তুই যদি ওনাকে এখন ফোন করে কিছু জিগ্যেস করিস, ঠিক বলে দেবেন। ধর…ধর…জানতে চাইলি কর্মক্ষেত্রে উন্নতি হবে কিনা। উনি তোর ডেট অফ বার্থ, টাইম অফ বার্থ, কোষ্ঠী বিচার করে ঠিক বলে দেবেন।’
কর্ণিকার বিরক্তি বাড়ল। এই জন্যই সে বাবার কাছে চট করে আসতে চায় না। নিজেকে সামলাল। সামনে টেবিল থেকে একটা পুরোনো ম্যাগাজিন টেনে পাতা উলটোতে লাগল।
‘বাবা, আমার কিছু জানতে হবে না। অফিসে আমার একটা প্রাোমোশন হয়েছে।’
সুখময়বাবু রিমোট টিপে ফট করে টিভিটা বন্ধ করলেন। ঘুরে বসলেন মেয়ের দিকে।
‘সে কী! এতক্ষণ বলিসনি কেন?’
‘এই তো বাড়ি ফিরলাম।’
সুখময়বাবু উজ্জ্বল মুখে বললেন, ‘বেতন কত বাড়ল?’
কর্ণিকার মেজাজটা দুম করে বিগড়ে গেল। প্রথমেই বেতনের কথা? মেয়ের অফিসে উন্নতি মানে, শুধু বেতন বাড়া? কী কাজ, কী দায়িত্ব, সেসব জানবার কোনও উৎসাহ নেই? মায়ের মতো একজন সাধারণ ঘরসংসার করা মহিলা যে-কথা ভাবে, এই মানুষটা সেকথাও ভাবতে পারে না। শুধু টাকা আর টাকা!
কর্ণিকা কোলের ওপর রাখা ম্যাগাজিনটা বন্ধ করে বলল, ‘জানি না।’
সুখময়বাবু বিরক্তি দেখিয়ে বললেন, ‘সে কী! প্রাোমোশন হল, মাইনে কত বাড়ল জানলি না! এই হল হাঁদার মতো কাজ। কালই গিয়ে জানবি। ভালো করে খোঁজ নিবি।’
কর্ণিকা সোফা ছেড়ে উঠে পড়ল। কড়া গলায় বলল, ‘কেন?’
‘কেন! কেন আবার কী? টাকাই তো আসল। বাজারের কী অবস্থা জানিস? জানবি কী করে? শুধু অফিস আর ঘর করিস, দোকান-বাজার তো করতে হয় না। করতে হলে বুঝতিস।’
কর্ণিকার চোখমুখ কুঁচকে গেল। উফ! এই জন্যই আসতে চাইছিল না। ক’টা বাজে কথা শুনতে হবে। বলতেও হবে। নিজেকে কতক্ষণ সামলে রাখা যায়?
‘ভাগ্যিস বুঝতে পারি না। তাহলে সারাদিন তোমার মতো কোনও কাজকর্ম না করে বাড়িতে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে হত। অপেক্ষা করতাম, জ্যোতিষী কখন আমার উন্নতির কথা বলবে।’
সুখময়বাবু মেয়ের কথায় বোকা বোকা হাসতে লাগলেন। কর্ণিকা সেই ফাঁকে ঘর থেকে চলে গেল। গেল ছাদের ঘরে। ভাইয়ের কাছে।
মানা তার দিদির প্রাোমোশনের ব্যাপারটা নিজের মতো করে নিল।
ছাদের এই ঘরটা মানা বছর খানেক হল দখল করেছে। তার নাকি লেখাপড়া করতে সুবিধে হবে। বাবা বেদম চেঁচামেচি করেছিল। এইটুকু ছেলের আবার আলাদা ঘর কীসের? লেখাপড়া করবে না কচু করবে। যে ছেলে লেখাপড়ার ধারে-কাছে যায় না, তার এসব কী ফুটানি! পরীক্ষায় দুটো থেকে তিনটে সাবজেক্টে ফেল না করলে ভাত হজম হয় না। এই ছেলের জন্য ঘর নয়, চাবুক দরকার। মা-ও মানার ওপর রাগারাগি করল। সেটা অবশ্য অন্য কারণে। ছাদের ঘর ধুলো, ঝুল আর আবর্জনায় ভর্তি। তার ওপর একটা মাত্র জানলা। সেটাও ছোট। ওই ঘরে গেলে ছেলের শরীর খারাপ হয়ে পড়বে। কর্ণিকাই শুধু মানার পাশে ছিল।
‘ঘরটা যখন পড়েই আছে, মানা গিয়ে থাকুক না। সমস্যা কী? সাফসুতরো করে নেবে।’
সুখময়বাবু দাঁত কড়মড় করে বললেন, ‘কেন? তুই কেন ভাইয়ের হয়ে ওকালতি করছিস?’
কর্ণিকা বলল, ‘ওকালতি কিছু করছি না। এই বয়সে একটা স্পেস লাগে।’
সুখময়বাবু ঝাঁঝিয়ে উঠে বললেন, ‘স্পেস! কেন আমাদের তো কখনও ওসব লাগেনি। সবাই মিলে থেকেছি। বিড়ি খাবার জন্য লাটসাহেবকে ঘর দিতে হবে?’
কর্ণিকা হেসে ফেলল। বলল, ‘বাবা, বিড়ি-সিগারেট খাবার হলে বাইরে গিয়েও খেতে পারবে। এভাবে আটকানো যাবে না। মানা এমন একটা বয়সের মধ্যে দিয়ে চলেছে, যেখানে সর্বক্ষণ বাবা-মা-দিদির মাঝখানে থাকতে ভালো লাগবার কথা নয়। একটা ঘর যখন পড়ে আছে, ও ব্যবহার করুক।’
সুখময়বাবু বললেন, ‘কই, তোর তো আলাদা ঘর লাগেনি। তুইও তো একসময়ে এই বয়সে ছিলি। নাকি শিশু থেকে লাফ মেরে ধেড়ে হয়ে গিয়েছিস?’
কর্ণিকা বলল, ‘ছেলে আর মেয়ে এক ব্যাপার নয় বাবা। মেয়েরা অনেক কিছু মেনে নেয়। তাছাড়া আমার তো সুযোগ ছিল না। আমি ছাদের ঘরে একলা থাকব শুনলে তোমরা রাগতে না, ভয়ে মরে যেতে। থাক ওসব কথা। মানাকে ”হ্যাঁ” বলে দাও। সবিতামাসিকে দিয়ে ঘরটা পরিষ্কার করে দিলেই হবে।’
দিদির সাপোর্ট পেয়েই সিঁড়ির পাশের এই লম্বাপনা ঘরটা পেয়েছে মানা। টেবিল-চেয়ার, টেবিল ফ্যান, বইয়ের তাক। দেওয়ালে ঘুড়ি, মারাদোনা, শচীনের ফটো। ঘরের সবথেকে মজা, দরজাটা আটকালেই বাড়ির থেকে আলাদা। কর্ণিকা কাল রাতে যখন এই ঘরে উঠে এল, মানা খাটে শুয়ে পড়ছিল। কর্ণিকা রাগী গলায় বলল, ‘এ কী পড়াশোনার কায়দা? শুয়ে শুয়ে পড়া হয়? ওঠ এক্ষুনি। উঠে বসে পড়।’
মানা অতি বিরক্তির সঙ্গে উঠে বসল। কর্ণিকা তক্তাপোষের ওপর বসে ভাইয়ের পিঠে হাত রাখল। নরম গলায় বলল, ‘জানিস, মানা, অফিসে আমার প্রাোমোশন হয়েছে। কাজ বেড়েছে।’
মানা বলল, ‘খুব ভালো হয়েছে। কাজ যখন বেড়েছে নিশ্চয় এবার থেকে দেরি করে বাড়ি ফিরবি। বাঁচা যাবে। আমিও শুয়ে শুয়ে পড়তে পারব। এসে খিটখিট করবি না।’
এখন কর্ণিকা দাঁড়িয়ে আছে বাথরুমে। শাওয়ারের তলায়। একটু পরেই অফিসের গাড়ি চলে আসবে। মানার কথাটা মনে পড়ায় হাসি পেল। যার যাতে সুবিধে। দিদি দেরি করলে পড়ায় ফাঁকি দেওয়া যাবে। একই সঙ্গে রাতের স্বপ্নটাও মনে পড়ে গেল কর্ণিকার। কান-মাথা ঝাঁ ঝাঁ করে উঠল। ওই স্বপ্নে অর্চিন তাকে আদর করেছে। সেই সময় তার গায়ে জামাকাপড় কিছু ছিল না। ঠিক এখনকার মতো। মাগো!
কর্ণিকা বাথরুমে দরজায় ঝোলানো তোয়ালের দিকে হাত বাড়াল।