» » চক্রান্তের মূল নায়করা

বর্ণাকার

দেশীয় চক্রান্তকারী

দেশীয় ষড়যন্ত্রীরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে পলাশি চক্রান্ত সংগঠিত করেছিল এটা বলা যায় না। তাদের ভূমিকা ছিল গৌণ। সন্দেহ নেই, বিভিন্ন কারণে তারা সিরাজদ্দৌল্লার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে ইচ্ছুক ছিল কিন্তু এগিয়ে এসে এ-ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নিতে তাদের সাহস হয়নি। কিন্তু তারা যখন দেখল যে ইংরেজরা ষড়যন্ত্র করতে এবং তার নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত, তখনই তারা সিরাজদ্দৌলাকে হঠাতে ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলায়, তাও অত্যন্ত গোপনীয়তা ও সতর্কতার সঙ্গে। তারা পর্দার অন্তরালেই থাকতে চেয়েছিল এবং একেবারে শেষ মুহূর্তেই শুধু বাইরে বেরিয়ে এসেছিল। খুব সম্ভবত তারা দু’দিকেই তাদের পথ খোলা রাখতে চেয়েছিল এবং ষড়যন্ত্রে পুরোপুরি সামিল হতে চায়নি। মনে হয় তাদের কৌশল ছিল বেড়ার ধারে অপেক্ষা করা এবং শেষপর্যন্ত যে-পক্ষ জয়ী হবে, সে-পক্ষে যোগ দেওয়া, যাতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদের মুখোশ খুলতে না হয়। এ-বক্তব্যের সমর্থন পাওয়া যাবে ওয়াটসের লেখায়— ইংরেজদের মধ্যে একমাত্র ব্যক্তি যিনি মুর্শিদাবাদ দরবারের রাজনীতি সম্বন্ধে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন।

মীরজাফর

পলাশি চক্রান্তের নায়ক মীরজাফরই এবং তিনিই আসল বিশ্বাসঘাতক—এ-ধারণা বহুল প্রচলিত। বাংলায় মীরজাফর নামটাই বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক হয়ে গেছে— ওটা বিশ্বাসঘাতকতার সমার্থক শব্দ। এ ধরনের বিকৃত ধারণা সমাজে চলে আসছে এই বিশ্বাস থেকে যে, পলাশির চক্রান্ত এবং পলাশির যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌল্লার পরাজয়ের জন্য দায়ী শুধু মীরজাফরই। সুতরাং মীরজাফরই ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে যে ধারণা বহুদিন ধরে প্রচলিত তা কতটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য তার তথ্য-ভিত্তিক বিচার-বিশ্লেষণ খুবই প্রয়োজন।

এখানে বলে নেওয়া দরকার, মীরজাফর পলাশি চক্রান্তে যোগ দিয়েছিলেন এবং পলাশির যুদ্ধক্ষেত্রে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন, এটা খুবই সত্য। এটাকে অস্বীকার করার কোনও চেষ্টা এখানে করা হচ্ছে না। যে মূল প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজছি তা হল, মীরজাফরই কি একমাত্র ব্যক্তি যিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন বা পলাশি চক্রান্তের আসল নায়ক কে বা কারা? বস্তুত আমাদের কাছে এমন তথ্য-প্রমাণ আছে যা থেকে সন্দেহাতীত ভাবে বলা যায় যে পলাশি চক্রান্তের মূল নায়ক ইংরেজরা, সঙ্গে দোসর ছিল জগৎশেঠরা। আমরা দেখেছি ইংরেজরা প্রথমে সিরাজের জায়গায় নবাব হিসেবে ইয়ার লতিফ খানকে বসাবার মতলব করেছিল কিন্তু শেষপর্যন্ত তারা জগৎশেঠদের মনোনীত প্রার্থী মীরজাফরের দিকে ঝুঁকল কারণ তারা জানত জগৎশেঠদের সমর্থন ছাড়া বাংলায় কোনও রাজনৈতিক পালাবদল সম্ভব নয়।

নবাব সুজাউদ্দিনের অধীনে সাধারণ সৈনিক হিসেবেই মীরজাফর তাঁর জীবন শুরু করেন। আরব দেশের নজফ (Najaf) থেকে আসা সৈয়দ আহমেদ নজাফী ছিলেন তাঁর পিতা। হাজি আহমেদ ও আলিবর্দি খানের বৈমাত্র ভগিনী শা’ খানমের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। বাঁকিবাজার (Banki Bazar) থেকে অস্টেন্ড (Ostend) কোম্পানিকে বিতাড়িত করে যোদ্ধা হিসেবে তিনি সুনাম অর্জন করেন এবং এখান থেকেই তাঁর উন্নতির সূত্রপাত।1 তবে তাঁর জীবনে নানা উত্থান-পতন দেখা গেছে—কখনও কখনও তিনি উচ্চপদ থেকে অপসারিত হয়েছেন আবার নানা উপায় অবলম্বন করে সে-পদে পুনর্বহালও হয়েছেন। সরফরাজের বিরুদ্ধে গিরিয়ার যুদ্ধে (১৭৪০) তিনি আলিবর্দির হয়ে যুদ্ধ করেন এবং তাতে তিনি আলিবর্দির বিশ্বাস অর্জন করেন। এরপর ১৭৪৫ সালের নভেম্বরে মারাঠাদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান করে নবাব আলিবর্দির সুনজরে পড়েন। নবাব তাঁকে উড়িষ্যার ছোট নবাব (ডেপুটি গভর্নর) এবং মেদিনীপুর ও হিজলির ফৌজদার পদে নিযুক্ত করেন—তাঁর পূর্বতন বক্সিপদও বহাল রইল।2

কিন্তু কিছুদিন পরেই তিনি নবাবের রোষানলে পড়েন এবং তাঁর পদ থেকে অপসারিত হন। নবাব আলিবর্দি তাঁকে মারাঠাদের প্রতিহত করতে উড়িষ্যাতে পাঠান। পথিমধ্যে মেদিনীপুরে তিনি মারাঠাদের সম্মুখীন হন। কিন্তু ফারসি ঐতিহাসিকদের মতে তিনি যেহেতু আলস্য ও ভোগবিলাসে মত্ত থাকতেন এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের (হাকিম বেগের পুত্র গোলাম আলি ও মীর আলি খান ছিলেন নীচ এবং বিকৃত রুচির লোক) সঙ্গে মূর্খের মতো দিনরাত মদ্যপান ও ইন্দ্রিয় সুখে বিভোর হয়ে পড়ে ছিলেন, তাই মারাঠাদের হঠাতে তিনি কোনও প্রচেষ্টাই করলেনু না, ভয় পেয়ে বর্ধমানে পালিয়ে গেলেন। তাঁর এই নিকৃষ্ট আচরণে আলিবর্দি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন এবং তাঁকে হিজলির ফৌজদার ও বক্সিপদ থেকে অপসারিত করেন। এই দুই পদে নবাব যথাক্রমে সুজন সিং ও নিরুল্লা বেগ খানকে নিযুক্ত করেন।3 কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই মীরজাফর ঢাকার নবাব ও আলিবর্দির ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা, নওয়াজিস মহম্মদ খানকে হাতে পায়ে ধরে বক্সিপদে পুমহাল হন। এর কিছুদিন পরে আবার তিনি তাঁর পদগুলি হারান কারণ মারাঠারা যখন আবার মুর্শিদাবাদের দিকে আসছিল, তিনি তাদের বাধা দিতে অক্ষম হন। তা ছাড়া খাজা আব্দুল হাদি খান সৈন্যবাহিনীর হিসেবপত্র পরীক্ষা করে বার করেন যে মীরজাফর জালিয়াতি করে সৈন্যবাহিনীর তহবিল তছরুপ করেছেন।4 নবাব আলিবর্দি তাই আব্দুল হাদিকেই বক্সিপদে নিযুক্ত করেন এবং মীরজাফরের ‘রিসালা’ থেকে একশত সৈন্য ছাঁটাই করেন। এভাবে মীরজাফর নবাবের বিশ্বাসভাজন ব্যক্তি থেকে অপসারিত হন এবং নবাবের বিশ্বাসচ্যুত হন।5

সিরাজদ্দৌল্লার আমলে মীরজাফর প্রথমে নবাবের প্রিয়পাত্র ছিলেন না। কিন্তু কলকাতা আক্রমণের সময় বীরত্ব ও নৈপুণ্য প্রদর্শন করে তিনি নবাবের নেকনজরে আসেন ও বিশ্বাসভাজন হয়ে বক্সিপদ লাভ করেন।6 কিন্তু সিরাজ অল্পদিনের মধ্যেই মীরজাফরের সম্বন্ধে সন্দেহভাজন হয়ে পড়েন এবং ইংরেজদের চন্দননগর দখল করার পর তাঁর বিশ্বাসঘাতকতা সম্বন্ধে কিছুটা নিঃসন্দেহ হন। তাই তিনি তাঁকে বক্সিপদ থেকে সরিয়ে দেন এবং আব্দুল হাদিকে ওই পদে নিযুক্ত করেন।7 আবার কিছুদিন পরে সিরাজদ্দৌল্লা তাঁকে বক্সিপদ ফিরিয়ে দেন কারণ নবাব সম্ভবত ইংরেজদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। নবাবের ঘনিষ্ঠ এবং অনুগত সেনাপতিরা—মীর মর্দান, মোহনলাল, আব্দুল হাদি খান প্রভৃতি—এতে প্রবল আপত্তি করেছিলেন কিন্তু তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি।8 ফারসি ঐতিহাসিকরা সবাই লিখেছেন যে পলাশিতে রায়দুর্লভ এবং ইয়ার লতিফের সঙ্গে মীরজাফরও তাঁর ‘মনিব’ সিরাজদ্দৌল্লার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন—তিনি তাঁর সৈন্যদল নিয়ে নীরব দর্শকের মতো শুধু দুরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।9 আসলে এটা বলা হয় যে আলিবর্দি মীরজাফরের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন যে তিনি সিরাজকে সাহায্য করবেন। এটা হয়তো ঠিক যে প্রথমদিকে মীরজাফরের সাহায্য ছাড়া সিরাজদ্দৌল্লার পক্ষে মসনদে বসা খুবই কঠিন হত। অবশ্য মুজাফ্‌ফরনামা-র লেখক করম আলি জানাচ্ছেন যে মীরজাফর প্রথম থেকেই একটি ‘দল’ তৈরি করে সিরাজদ্দৌল্লার পতন ঘটাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।10

তবে এ-বিষয়ে সন্দেহ নেই যে সিরাজদ্দৌল্লার সিংহাসন আরোহণের কয়েক মাস পরেই মীরজাফর নবাবকে হঠাবার মতলব ভাঁজতে থাকেন। তার কারণ হিসেবে বলা হয় যে নতুন নবাব তাঁর প্রতি অবিচার ও অসম্মান দেখাতে শুরু করেছিলেন। আবার এটাও বলা হয়ে থাকে যে মীরজাফর পুর্ণিয়ার নবাব শওকত জঙ্গকে লেখেন সিরাজের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে, তা হলে সৈন্যবাহিনীর কয়েকজন সেনাপতি ও দরবারের কিছু অমাত্যকে নিয়ে তিনি তাঁর সঙ্গে যোগ দেবেন। কিন্তু শওকত জঙ্গের অবহেলায় ও নেতৃত্ব দেওয়ার অক্ষমতায় এই পরিকল্পনা সফল হয়নি।11 পলাশি চক্রান্তে মীরজাফরের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই যদিও সম্ভবত তিনি জগৎশেঠ ও দুর্লভরামের হাতের পুতুল ছিলেন মাত্র। আসলে ইংরেজরা ইয়ার লতিফকে বাদ দিয়ে তাঁকে নবাব করতে চেয়েছিল কারণ তিনি ছিলেন শেঠদের পছন্দের লোক। তাঁর কোনও বিশেষ গুণাবলীর জন্য তারা তাঁকে বেছে নেয়নি যদিও ওয়াটস বলেছেন যে তিনিই নবাবের পদে ‘সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি।’12 কিন্তু ইংরেজরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মীরজাফরের ওপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখতে পারছিল না। সম্ভবত তাঁর উদ্দেশ্য ছিল নিজেকে সম্পূর্ণ উন্মোচন না করে বেড়ার ধারে অপেক্ষা করা এবং যে-দল শেষ পর্যন্ত জয়ী হবে, তার সঙ্গে যোগ দেওয়া।

জাঁ ল লিখেছেন যে মীরজাফর ছিলেন সাহসী ও নির্ভীক, কিন্তু স্ক্র্যাফ্‌টন বলছেন যে ইংরেজরা কলকাতা পুনরুদ্ধার করার আগে নবাবের সৈন্যদের সঙ্গে ক্লাইভের ইংরেজ বাহিনীর যে হাতাহাতি যুদ্ধ (skirmish) হয়, তাতে মীরজাফরের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক—তিনি কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে শেষপর্যন্ত কী হয় তাই দেখছিলেন।13 পলাশির যুদ্ধে তাঁর ভূমিকা নিয়ে ক্লাইভ শুধু নন, এখনকার ঐতিহাসিকরাও বলছেন যে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে ইংরেজদের কোনওরকম সাহায্য করেননি, শুধু দুরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ-কথা বলে অবশ্য পলাশি যুদ্ধের ইংরেজ সাফল্যে মীরজাফরের যা অবদান তার গুরুত্ব হ্রাস করা হচ্ছে। এভাবে, মীরজাফর তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে নবাবের সৈন্যদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে ইংরেজদের যে পরোক্ষভাবে কতটা সাহায্য করেছিলেন তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হচ্ছে। নবাবের সেনাপতি হয়েও তাঁর সঙ্গে যোগ না দিয়ে তিনি প্রকৃতপক্ষে ইংরেজদের বিরাট সাহায্য করেছিলেন।14 স্ক্র্যাফ্টন ও অবশ্য পলাশি বিপ্লবে মীরজাফরের ভূমিকা গৌণ করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন এবং তাঁকে নবাব করার ব্যাপারে ইংরেজদের ‘মহানুভবতার’ ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি লিখছেন:15

আমাদের সাফল্যে মীরজাফরের অবদান কতটা সামান্য তা হয়তো তিনি নিজেই জানেন। কিংবা আমাদের হাতে সমস্ত ক্ষমতা চলে আসা সত্ত্বেও আমাদের বিনম্র ব্যবহারে তিনি হয়তো মুসলমান হিসেবে অবাক হয়ে গেছেন। তাই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে আমরা তাঁকে এত উচ্চপদে বসাতে চাইছি। অনেক চেষ্টা করে মি. ওয়াটস ও আমি শেষ পর্যন্ত তাঁকে নবাবের গদিতে বসাতে সমর্থ হয়েছি।

সিরাজদ্দৌল্লার চরিত্রের জন্য তাঁর তীক্ষ্ণ সমালোচনা করা হয়। মীরজাফর যে তাঁর চেয়ে বেশি চরিত্রবান ছিলেন তা কিন্তু নয়। আমরা আগেই দেখেছি মীরজাফর যে আলস্যে ও ইন্দ্রিয়সুখে নিমগ্ন ছিলেন তা ফারসি ঐতিহাসিক ইউসুফ আলি পরিষ্কার জানিয়েছেন। তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের মধ্যে ছিলেন গোলাম আলি ও মীর আলি খানের মতো নীচ ও জঘন্য প্রকৃতির লোকজন।16 সিয়র-এর লেখক ঐতিহাসিক গোলাম হোসেন মীরজাফরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও দোসর খাদিম হোসেন খানের চরিত্রের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। মীরজাফরের বোন যাঁকে বিয়ে করেন, তাঁর অপর এক স্ত্রীর গর্ভে এই খাদিম হোসেনের জন্ম এবং সেই সূত্রে ইনি মীরজাফরকে ‘মামু’ বলে ডাকতেন। গোলাম হোসেন লিখেছেন: ‘ইনি মীরজাফরের প্রায় সমবয়সী। এঁর কামাসক্তি ছিল বড় প্রবল, বিশেষ করে একপ্রকার অস্বাভাবিক রমণাভিলাষের প্রতি তাঁর অপ্রতিরোধ্য ঝোঁক ছিল যা তাঁদের দু’জনের [তিনি ও মীরজাফর] ছোটবেলা থেকে অভ্যেস হয়ে গিয়েছিল এবং এ-ব্যাপারে দু’জনে পরস্পরের সঙ্গে আশ্লিষ্ট ছিলেন। তাঁরা প্রায়ই একসঙ্গে থাকতেন এবং একসঙ্গে শুতে যেতেন।’ তিনি আরও লিখেছেন যে নবাব হওয়ার পর মীরজাফরের চরিত্র আরও জঘন্য হয়ে পড়ে এবং তাঁর লোভের বিকৃত মানসিকতা আরও বেড়ে যায়। রাজ্যের কাজকর্মের দিকে কোনও নজর না দিয়ে তিনি সবরকমের ইন্দ্রিয়সুখে ডুবে রইলেন।17

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. রজতকান্ত রায় (পলাশী, পৃ. ১৩৫) লিখেছেন যে মীরজাফর বাঁকিবাজার থেকে ডাচদের বিতাড়িত করেন—এটা সম্পূর্ণ ভুল।
  2. ইউসুফ আলি, আওয়াল-ই-মহবৎ-জঙ্গ, যদুনাথ সরকারের Bengal Nawab গ্রন্থে উদ্ধৃত, পৃ: ১১৬-১১৯; মুজাফ্‌ফরনামা, পৃ. ২৬।
  3. ইউসুফ আলি, পূর্বোক্ত, পৃ. ১১৯-২১; মুজাফ্‌ফরনামা, পৃ. ২৬।
  4. ইউসুফ আলি, পূর্বোক্ত, পৃ. ১২৮, ১৪২-৪৩।
  5. মুজাফ্‌ফরনামা, পৃ. ৪৯, ৫৬।
  6. ঐ, পৃ. ৪৯-৪৫।
  7. ঐ, পৃ. ৬৪; রিয়াজ, পৃ. ৩২৩।
  8. ইউসুফ আলি, পূর্বোক্ত, পৃ. ৭২-৭৪; রিয়াজ, পৃ. ৩৭০; সিয়র, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৮৬ তারিখ-ই বাংগালা-ই-মহবৎজঙ্গী, পৃ. ১৩১।
  9. সিয়র, ২য় খণ্ড, পৃ: ১৩১; রিয়াজ, পৃ: ৩৭৫; মুজাফ্‌ফরনামা, পৃ. ৭৫।
  10. মুজাফ্‌ফরনামা, পৃ. ৭৫; Hill, III, p. 217.
  11. সিয়র, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৯৬-৯৯।
  12. Watts’, Memoirs, p. 82; ক্লাইভকে ওয়াটস, ৩ জুন ১৭৫৭, Hill, II, p. 397; ৫ জুন ১৭৫৭, Hill, II, p. 398; সিয়র, পৃ. ১৯৭, ২২৭-৩০; রিয়াজ, পৃ. ৩৭০।
  13. Law’s Memoir, Hill, III, p. 211; Scrafton, Reflections, pp. 72, 82.
  14. Select Committee Proceedings, Fort William, 26 June 1756, Hill, II, p. 430; Narrarve of Plassey, Hill, II, p. 450; যেমন পিটার মার্শাল, Bengal; রজতকান্ত রায়, পলাশী ; ‘Colonial Penetration’.
  15. Scrafton, Reflections, p. 98.
  16. ইউসুফ আলি, পৃ. ১২০।
  17. সিয়র, ২য় খণ্ড, পৃ. ২৫৩।