» » সূর্য-প্রণাম : উদয়াচল

বরণ

বর্ণনা

হঠাৎ আলোর আভাস পেয়ে কেঁপে উঠল

ভোরবেলা, কোন্ পুলকে, কোন্ অজানা সম্ভাবনায়?

রুদ্ধশ্বাসে প্রতীক্ষা করে অন্ধকার।

শিউলি বকুল ঝ’রে পড়ে শেষ রাত্রির কান্নার মতো,

হেমন্ত-ভোরের শিশিরের মতো।

অস্পষ্ট হল অন্ধকার; স্বচ্ছ আরও স্বচ্ছ

মৃতপ্রায়ের আগ্রহের মতো পাণ্ডুর আলো এসে পড়ে

আশীর্বাদের মতো ঝরা ফুলের মরা চোখে,

শুভ্র কপোলে,—ঘুমন্ত হাসির মতো তার মায়া।

পৃথিবীর ছেলেমেয়েরা এল উচ্ছ্বসিত বন্যার বেগে,

হাতে তাদের আহরণী-ডালা;

তারা অবাক হয়ে দেখলে

একী! নতুন ফুল ফুটেছে তাদের আঙিনায়

রবির প্রথম আলো এসে পড়েছে তার মুখে,

ওরা বললে, ওতো সূর্যমুখী।

পিলু-বারোয়াঁর সুর তখনও রজনীগন্ধার বনে

দীর্ঘশ্বাসের মতো সুরভিত-মওতায় হা- হা করছে;

কিন্তু তাও গেল মিলিয়ে। শুধু জাগিয়ে দিয়ে

গেল হাজার সূর্যমুখীকে।

সূর্য উঠল। অচেতন জড়তার বুকে ঠিকরে

পড়তে লাগল, বন্ধ জানলায় তার কোমল

আঘাত, অজস্র দীপ্তিতে বিহ্বল।

পৃথিবীর ছেলেমেয়েরা ফিরে গেল উজ্জ্বল, উজ্জ্বল হয়ে

বুকে তাদের সূর্যমুখীর

অদৃশ্য সুবাস।