বিন্দুর ছেলে

বিন্দুর ছেলে গল্পটি ১৩২০ বঙ্গাব্দের বৈশাখ সংখ্যা “যমুনা” পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় এবং প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় শ্রাবণ, ১৩২১ বঙ্গাব্দে (৩রা জুলাই, ১৯১৪)। গ্রন্থের নাম “বিন্দুর ছেলে ও অন্যান্য গল্প”, প্রকাশক ‘গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স’,Continue Reading

এক : যাদব মুখুয্যে ও মাধব মুখুয্যে

যাদব মুখুয্যে ও মাধব মুখুয্যে যে সহোদর ছিলেন না, সে কথা নিজেরা ত ভুলিয়াই ছিলেন, বাহিরের লোকও ভুলিয়াছিল। দরিদ্র যাদব অনেক কষ্টে ছোটভাই মাধবকে আইন পাশ করাইয়াছিলেন এবং বহু চেষ্টায় ধনাঢ্য জমিদারের একমাএ সন্তান বিন্দুবাসিনীকেContinue Reading

দুই : ইহার বছর-চারেক পরে

ইহার বছর-চারেক পরে যেদিন খুব ঘটা করিয়া অমূল্যের হাতেখড়ি হইয়া গেল, তাহার পরদিন সকালে অন্নপূর্ণা রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত ছিলেন, বাহির হইতে বিন্দুবাসিনী ডাকিয়া কহিল, দিদি, অমূল্যধন প্রণাম করতে এসেচে, একবারটি বাইরে এস। অন্নপূর্ণা বাহিরে আসিয়াContinue Reading

তিন : এক মায়ের দুই ছেলে

এক মায়ের দুই ছেলে জননীকে আশ্রয় করিয়া যেমন করিয়া বাড়িয়া উঠিতে থাকে, এই দুইটি মাতা তেমনি একটিমাত্র সন্তানকে আশ্রয় করিয়া আরো ছয় বৎসর কাটাইয়া দিলেন। অমূল্য এখন বড় হইয়াছে, সে এন্ট্রাস স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে।Continue Reading

চার : পিসতুতো বোন

ইঁহাদের পিসতুতো বোন এলোকেশীর অবস্থা ভাল ছিল না। যাদব তাঁহাকে প্রায়ই অর্থসাহায্য করিয়া পাঠাইতেন। কিছুদিন হইতে তিনি তাঁহার পুত্র নরেনকে এইখানে রাখিয়া লেখাপড়া শিখাইবার ইচ্ছা জানাইয়া চিঠিপত্র লিখিতেছিলেন, এই সময়ে তিনি ছেলে লইয়া উত্তরপাড়া হইতেContinue Reading

পাঁচ : ঠাকুরঝি দেখিতে বোকা

ঠাকুরঝি দেখিতে বোকার মতন ছিলেন, কিন্তু সেটা ভুল। তিনি যেই দেখিলেন, নিঃসন্তান ছোটবৌর অনেক টাকা, তিনি তখ্‌খনি সেই দিকে ঢলিলেন, এবং প্রতি রাত্রে স্বামী প্রিয়নাথকে একবার করিয়া ভর্ৎসনা করিতে লাগিলেন, তোমার জন্যই আমার সব গেল।Continue Reading

ছয় : বিন্দু বাপের বাড়ি

বিন্দু বাপের বাড়ি হইতে ফিরিয়া আসিবার দিন-দশেক পরে একদিন মধ্যাহ্নে অন্নর্পূণা তাহার ঘরে ঢুকিতে ঢুকিতে বলিলেন, ছোটবৌ? ছোটবৌ একরাশ ময়লা কাপড়-জামার সুমুখে স্তব্ধ হইয়া বসিয়া ছিল। অন্নর্পূণা বলিলেন, ধোপা এসেছে? ছোটবৌ কথা কহিল না। অন্নর্পূণাContinue Reading

সাত : নূতন বাড়িতে যাদব

নূতন বাড়িতে যাদব, অন্নপূর্ণা ও অমুল্য ব্যতীত আর সকলেই আসিয়াছিল। বাহির হইতে বিন্দুর পিসি, পিসির মেয়ে, নাতি-নাতনি, বাপের বাড়ি হইতে তাহার বাপ-মা, তাঁহাদের দাস-দাসী প্রভৃতিতে সমস্ত গৃহ পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছিল। এখানে আসিবার দিনটাতেই শুধু বিন্দুকেContinue Reading

আট : বাড়ির সুমুখ দিয়া

বাড়ির সুমুখ দিয়া ইস্কুল যাইবার পথ। প্রথম কয়েকদিন অমূল্য ছাতি আড়াল দিয়া এই পথেই গিয়াছিল, আর দু’দিন ধরিয়া সেই লাল রঙের ছাতাটি আর পথের একধার বাহিয়া গেল না। চাহিয়া চাহিয়া বিন্দুর চোখ ফাটিয়া জল পড়িতেContinue Reading

নয় : কতদিন হইতে বিন্দু

কতদিন হইতে যে বিন্দু অনাহারে নিজেকে ক্ষয় করিয়া আনিতেছিল, তাহা কেহই জানিতে পারে নাই। বাপের বাড়ি আসিয়া জ্বর হইল। দ্বিতীয় দিন দুই-তিনবার মূর্ছা হইল—তাহার শেষ মূর্ছা আর ভাঙ্গিতে চাহিল না। অনেক চেষ্টায় অনেক পরে যখনContinue Reading