৩
৩৫/৩/১, লিণ্ডসে ক্রেসেণ্টে যখন উপস্থিত হইলাম বেলা তখন প্রায় তিনটা হইবে।
বাড়িটা একেবারে নূতন, সময় হিসাবেও নূতন, আবার স্টাইল হিসাবেও নূতন। ঢালাই-করা কংক্রিটের বাড়ি; রেলিং, জানালার সান্-শেড, ছাদের আলিসা, থাম, সিঁড়ির পাড়, কোনখানেই স্থাপত্য-অলঙ্কারের চিহ্নমাত্র নাই; সব জ্যামিতির সোজা কিংবা বৃত্তাভাস রেখার নানা রকম সমন্বয়ে গড়া। বাহির হইতে যতটা বোঝা যায় বাড়ির ঘরদালানও ঐ ধরনের। কোণ-কানের বালাই খুব অল্পই; যেখানে কোণ-কানের সম্ভাবনা সেখানেই একটু ঘুরিয়া যেন এড়াইয়া গেছে। সব মিশাইয়া ঠিক যে সৌন্দর্যের অভাব বলিব তাহা নয়, তবে আমার মত অনভ্যন্তের চোখে নিরাভরণ অতি-আধুনিকত্বের একটা অস্বস্তি জাগায় যেন।
বেশ বড় হাতার মধ্যে বাড়িটা। বাঁ-দিকে একটা মাঝারি সাইজের বাগান, মাঝখানটিতে একটি ব্যাডমিণ্টন কোর্ট, তাহার চারিদিকে কতকগুলি কামিনী গাছ, প্রত্যেক গাছটি একরকম করিয়া দুই তিন থাকে পরিপাটি করিয়া ছাঁটা; একটি পাতার, কি একটি ডালের বাহুল্য নাই। ফুল? সে নিশ্চয় এ সব গাছের কাছে আকাশ-কুসুম মাত্র। এদিকে-ওদিকে কয়েক রকম মরশুমী ফুলের বেড্। তারের জাল দিয়া মোড়া কয়েকটা লোহার পাতের খিলান—তাহার উপর কয়েক রকম বিলাতী লতার ঝাড়, ছুরি-কাঁচির শাসনে কোথাও একটু বাহুল্য নাই, চারা গাছটি হইতে আরম্ভ করিয়া সবাই দিব্য বেশ সংযত। কোটের উপর বাড়ি আর বাগান দুই-ই যেন এক ছন্দে রচা, ছাঁটাকাটা, মাজা-ঘষা, তকতকে ঝকঝকে।
বাড়ির ডান দিকে গ্যারেজ, চাকরদের আউট-হাউস। সমস্ত চৌহদ্দিটা এক-বুক উঁচু-দেওয়াল দিয়া ঘেরা, মাঝখানে ঢালা লোহার এক জোড়া গেট। গেটের থামে পালিশ-করা পিতলের ফলকে কালো অক্ষরে ইংরেজীতে নাম লেখা—জি. পি. রে. বার্-এট্-ল।
সমস্ত পথটা নিজের মনেই ব্যারিস্টারের বিরুদ্ধে আফালন করিতে করিতে আসিলাম। মনে মনে কোথায় যেন একটু আশা ছিল ৩৫/৩/১ ত্র্যহস্পর্শযুক্ত গোলমেলে নম্বরটা বোধ হয় শেষ পর্যন্ত খুঁজিয়াই পাওয়া যাইবে না। চেষ্টা করাও হইবে, অথচ ভালয় ভালয় বিফলমনোরথ হইয়া ফিরিয়াও আসা যাইবে। বাড়িটা পাইয়া দমিয়া গেলাম, সঙ্গে সঙ্গেই যে গেটের মধ্যে পা দিব এমন সাহস হইল না। অথচ একজন জলজ্যান্ত ব্যারিস্টারের গেটের সামনে হাঁ করিয়া দাঁড়াইয়া থাকাও নিরাপদ নয়। কি করা যায়?
দাঁতে নখ খুঁটিতে খুঁটিতে দেওয়ালের আড়ালে ফুটপাতের উপর খানিকটা এমুড়ো-ওমুড়ো পায়চারি করিলাম, শক্তি সঞ্চয় করিতেছি। যে-সঙ্কল্প লইয়া আজ বাড়ি যাওয়া স্থগিত রাখিলাম, সামান্য দ্বিধা—হয় তো ভীরুতারই জন্য সে-সঙ্কল্প ত্যাগ করিয়া গেলে জীবন তাহার ব্যর্থতা লইয়া নিশ্চয় একদিন জবাবদিহি চাহিবে।
দেওয়ালের আড়ালেই : কোঁচা দিয়া জুতাটা ঝাড়িয়া লইলাম। তাহার পর হাত দিয়া চুলটা গুছাইয়া এবং প্রথম সওয়াল-জবাবে যে ইংরেজী কথাগুলা দরকার হইতে পারে—সেগুলা আবার একবার মনে মনে আওড়াইয়া লইয়া গেট ঠেলিয়া ভিতরে ঢুকিয়া পড়িলাম।
গা ছমছম করিতেছিল। সুরকির রাস্তার উপর চলিবার মস্মস্ শব্দ হইতেছে, মনে হইতেছে বাড়ির গাঢ় নিস্তব্ধতার গায়ে যেন সিঁদ কাটিবার আওয়াজ হইতেছে। …দেখিয়া থাকিবেন—আধুনিক ভদ্রোচিত বাড়ি সব নিস্তব্ধ। শব্দ স্বাভাবিক নিশ্চয়। কিন্তু স্তব্ধতাই সভ্যতা। পূর্বে সৌন্দর্য দিত অবগুণ্ঠন আজকাল ‘অবগুণ্ঠন’ টানে শব্দে। রেডিও-র হুংকার? সেটা ব্যতিক্রম,—আধুনিকতা অতিরিক্ত বেহায়াপনা।
সুরকির রাস্তার শেষে একটি তেরছা বারান্দার সামনে গোল সিঁড়ির নীচে আসিয়া দাঁড়াইলাম। বুকটা টিপটিপ করিতেছে। সামনেই ঘর, বোধ হয় হল ঘর। শব্দ হইল যেন লোক আসিতেছে, একটা খসখসে শব্দ—নিশ্চয় বিলাতী ঘাসের চটিপরা ব্যারিস্টার। বুকটাকে একটু চাপিয়া ধরিতে হইল। ঘরের ভারী পর্দটা নড়িয়া পর্দা ঠেলিয়া যে বাহির হইয়া আসিল সে ব্যারিস্টার নয়, চাকর। এসব বাড়িতে এদের অভিধেয় বোধ হয় ‘বেয়ারা’। গায়ে একটা পরিষ্কার ফতুয়া, দেহটি বেশ পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন তেলচুকচুকে। বাম বাহুতে একটা সোনার তাগা। কাঁধের উপর একটা ঝাড়ন; বাড়ির চাকরের মত তাহার ঝাড়নও বেশ পরিষ্কার। এসব স্থানে চাকর শুধু থাকা দরকার, তাহাকে বিশেষ কাজ করিতে হয় না, তাহার একটি ঝাড়ন থাকাও দরকার, তবে তাহা দিয়া বেশি ময়লা ঝাড়িতে হয় না।
প্রশ্ন হইল, “কাকে চান?”
কথাটা গলায় কোথায় আটকাইয়া গিয়াছিল, চেষ্টা করিয়া বলিলাম, “গুরুপ্রসাদবাবু মানে এই ব্যারিস্টার সাহেবকে।”
“তিনি নেই এখানে।”
এত মধুর সংবাদ জীবনে কখনও শুনি নাই। বুকে যে হাওয়াটা আটকাইয়া ছিল একটি তৃপ্তির নিশ্বাসে সেটা মুক্ত হইয়া গেল। নিজের সৌভাগ্যকে বিশ্বাস করিতে পারিলাম না। একটু মুখের পানে চাহিয়া প্রশ্ন করিলাম, “কোথায় গেছেন? আসবেন কবে?”
“কুমিল্লায় একটা সিডিশ্যন কেসে গেছেন, দিন-পনের লাগতে পারে?”
চাকরের মুখে শুদ্ধ উচ্চারণে ‘সিডিশন কেস’ কথাটা শুনিয়া একটু বিস্মিতভাবে চাহিলাম, তখনই কিন্তু ভাবিলাম—ব্যারিস্টারের বেয়ারা, এমন আর আশ্চর্য হইবার কি আছে?
যাই হোক, বাঁচা গেল। চেষ্টা করিলাম, গৃহকর্তা বাড়ি নাই, আমি আর কি করিতে পারি? এ-আফসোস তো আর থাকিবে না যে, জীবনে মস্ত বড় একটা সুবিধা পাইয়াও গাফিলতি বা ভয়ে নষ্ট করিয়া ফেলিলাম?
ফিরিতেছি, বেয়ারা জিজ্ঞাসা করিল, “কি দরকার ছিল আপনার?”
দরকারটা বলিলাম।
বেয়ারা বলিল, “ছোট দিদিমণির মাস্টারির জন্যে? তাহলে আপনি একটু অপেক্ষা করুন।”
শঙ্কিত এবং সন্দিগ্ধভাবে ফিরিয়া চাহিলাম। লোকটা কি ভাবছিল আমি চাঁদা আদায় করিতে আসিয়াছি? একটু বিরক্তও আসিল। যতটা সম্ভব মুখের ভাবটা ফিরাইয়া আনিয়া প্রশ্ন করিলাম, “আছেন সাহেব? –তবে যে তুমি বললে ..?”
বলিল, “সাহেব নেই, তবে মাস্টার ঠিক করা মীরা দিদিমণির হাতে, তাঁকে ডেকে দেই গে! আপনি বসেন উঠে এসে।” বলিয়া বারান্দার একটা উইকারের চেয়ার সামান্য একটু সামনে ঠেলিয়া নির্দিষ্ট করিয়া দিয়া ভিতরে চলিয়া গেল।
ব্যারিস্টার সম্বন্ধেই ভাবিয়া আসিয়াছি, তাহার কন্যাদের সম্বন্ধে কোনরকম গড়াপেটা ধারণা নাই। এ জীবগুলি আবার কি জাতীয় হওয়া সম্ভব, চেয়ারে বসিয়া নানারকম জল্পনা-কল্পনা করিতেছি, এমন সময় মীরা উপর হইতে নামিয়া আসিয়া একটি চেয়ারের পিছনে দাঁড়াইল। মাথায় পরিষ্কার বাঁকা সিঁথি, হাতে একখানি রাঙা মলাটের বই; একটি আঙুল তাহার মধ্যে গোঁজা, পায়ে এক জোড়া জরির কাজ-করা মখমলের স্যাণ্ডেল। প্রথম দর্শনেই মীরার সব খুঁটিনাটি দেখিয়া লওয়া অল্প দক্ষতার কাজ নয়; অন্তত আমি তো পারি নাই; তবে এই তিনটি জিনিস চোখে যেন আপনিই পড়িয়া গিয়াছিল, বিশেষ করিয়া বাঁকা সিঁথি; তাই এগুলোর উল্লেখ করিলাম। মেয়েদের মাথায় বাঁকা সিঁথি তখন সবে উঠিয়াছে, অতি আধুনিকতার বিদ্রোহের বাঁকা অসি।
আমি দাঁড়াইয়া উঠিয়া নমস্কার করিলাম।
মীরা প্রতিনমস্কার করিয়া একবার তীক্ষ্ণ চকিত দৃষ্টিতে আমার আপাদমস্তক ভাল করিয়া দেখিয়া লইল। এমন একটা দৃষ্টি যে আমার সমস্ত অন্তরাত্মাকে মানিয়া লইতে হইল—হ্যাঁ, ব্যারিস্টারের কন্যা বটে। প্রশ্ন করিল —”টুইশ্যনের জন্য এসেছেন?”
আমার অতিরিক্ত সঙ্কোচের কারণটা পরে ভাবিয়া দেখিবার চেষ্টা করিয়াছি। প্রথমত এত সপ্রতিভ অপরিচিতা তরুণীর সঙ্গে সাক্ষাৎ কথাবার্তা আমার এই প্রথম দ্বিতীয়ত ওরই হাতে টিউটর নিয়োগের ভারটা থাকায় ওর গুরুত্বটা সেই সময় আমার কাছে খুব বাড়িয়া গিয়াছিল।
ওর পিতার সামনে যেমন করিয়া উত্তর দিতাম বলিয়া আমার বিশ্বাস, কতকটা সেই রকম ভাবেই শঙ্কিত বিনয়ের পরে উত্তর দিলাম, “আজ্ঞে হ্যাঁ?”
“গ্র্যাজুয়েট?”
“আজ্ঞে হ্যাঁ।”
“এইবার পাস করেছেন?”
তিনবার “আজ্ঞে হ্যাঁ” করিতে করিতে আমার দৃষ্টি আপনা-আপনিই নত হইয়া পড়িয়াছে। মীরা একটু চুপ করিল। বোধ হয় নত দৃষ্টির সুযোগে আবেদনকারীকে আরও ভাল করিয়া লক্ষ্য করিয়া লইল, তাহার পর বলিল, “আমাদের একজন অভিজ্ঞ লোক দরকার বলে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল।”
আমি একটু ধোকায় পড়িয়া গেলাম। প্রতিদিন আট-দশটা টুইশ্যন করিবার কথাটা বলা নিরাপদ হইবে কিনা ভাবিতেছি, মীরা নিজেই বলিল, “বেশ থাকুন। টুইশ্যনের আবার অভিজ্ঞতা কি তাও তো বুঝি না।”
আমি একটু বিস্মিত হইয়া মুখ তুলিয়া চাহিলাম; ঠিক এত সহজে আর এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধিলাভ আশা করি নাই।
মীরা বইটা চেয়ারের পিঠে দুইবার ঠুকিয়া প্রশ্ন করিল, “কত মাইনে চান?”
অস্বীকার করিব না, এত সহজে নিয়োগের পর এমন উদার প্রশ্নে একবারে কৃত-কৃতার্থ হইয়া গিয়াছিলাম। মুখে একটু কৃতজ্ঞ খোশামোদের ভাব ফুটিয়া থাকে তো কিছু আশ্চর্য হইবার নাই তাহাতে। পূর্বে তিন-চার দিনের কম হাটাহাটি করিয়া কোন টুইশ্যন সংগ্রহ করিতে পারি নাই, গার্জেন সম্প্রদায়কে ভিজাইবার অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও।
বলিলাম, “যা আপনাদের সুবিধে হয় দেওয়া।”
মীরার নাসিকার ডান দিকটা সামান্য একটু কুঞ্চিত হইয়া উঠিল। একটু যেন অন্তমনস্ক হইয়া চুপ করিয়া রহিল। তাহার পর আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে চাহিয়া প্ৰশ্ন করিল, “আমাদের সুবিধের জন্যেই কি আপনি এতটা পথ বেয়ে এসেছেন?”
বেশ একটু অপ্রস্তুত হইয়া পড়িলাম, একেই খুশি করিতে গিয়াছি, আর এর কাছেই উল্টা প্রশ্ন? বলিলাম—সংলগ্ন কিছুই বলিলাম না, “আজ্ঞে—মানে হচ্ছে—আসল কথা…” বলিয়া মাঝখানেই থামিয়া গেলাম।
মীরার নাসিকার কুঞ্চনটা মিলাইয়া গিয়া কতকটা কৌতুকপূর্ণ হাসিতে ঠোঁট দুইটি একটু প্রসারিত হইল। বোধ হয় কথাটি শেষ করিতে পারি কিনা দেখিবার জন্য আমার মুখের পানে একটু চাহিয়া রহিল, তাহার পর ঈষৎ হাসির সঙ্গে বলিল, “বলুন আসল কথাটা। আমরা ওটা খুব বুঝি, দ্বিধা করবার দরকার নেই; জানেন তো ব্যারিস্টারের বাড়ি, বাবা আসল কথা আগে ঠিক না করে মক্কেলের কাগজপত্র ছোঁন না”—বলিয়া বেশ ভালভাবেই খিল খিল করিয়া হাসিয়া উঠিল।
মীরা তাহার বাবার মক্কেলের সঙ্গে ব্যবহারের কথায় হাসে নাই, এত হাসিবার কথা নয় সেটা। আমার এই অকূল পাথারে পড়িবার মত অবস্থা দেখিয়া ওর হাসি চাপিতে পারিতেছিল না, একটা ছুতা করিয়া প্রাণ খুলিয়া একটু হাসিয়া লইল।
পরক্ষণেই কিন্তু নিজেকে সামলাইয়া লইল—প্রগল্ভতা হইয়া যাইতেছে বুঝিয়া হোক, কিংবা আমি আরও সংকুচিত হইয়া পড়িয়াছি দেখিয়াই হোক। বলিল, “না, আপনি কুণ্ঠিত হচ্ছেন; আচ্ছা ধরুন…”
হঠাৎ সচকিত হইয়া বলিল, “কিন্তু, আপনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন কেন?—বাঃ বসুন!”
আমার বসা উচিত ছিল না, একজন অপরিচিতা যুবতী দাঁড়াইয়া সামনে; তবু মীরার বলিবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বসিয়া পড়িলাম এবং রাগ হইল মীরার উপর। মেয়েটা আসিয়াই আমাকে দাঁড় করাইয়াছিল—তাহার নীরব সন্ত্রম-জাগানো উপস্থিতির দ্বারা, এখন বসাইয়া দিল—তাহার ছোট্ট একটি হুকুমের দ্বারা। মরিয়া হইয়৷ খুব মোটা রকম মাহিনা চাহিয়া আজকের এ পর্ব শেষ করিয়া যাইব, এমন সময় স্কুল হইতে আমার ভাবী ছাত্রী আসিয়া উপস্থিত হইল। মীরা বলিল, “তোমার নতুন মাস্টার মশাই তরু, ঘরটা দেখিয়ে দাও। আপনি কাল সকালেই আসবেন তাহলে।”
সকালেই আসিবার অসুবিধা ছিল, হাসিটাও বড় তীক্ষ্ণভাবে বিঁধিতেছিল ‘ওঠ্-বোস্’ করিবার ব্যাপারটাও মনে তখনও টাটকা—অর্থাৎ সেটা যে আমারই দুর্বলতা সেটা ভাবিয়া দেখিবার অবসর তখনও হয় নাই আমার, তাহার উপর শেষের এই হুকুমটা—মোটেই সুপাচ্য নয়। সান্ত্বনা মাত্র এই যে, চাকরি ওর নয়, ওর পিতার, অর্থাৎ একজন পুরুষের। আহত আত্মসম্মানকে সান্ত্বনা দিলাম—আসিব, কিন্তু অন্তত একটা দিন দেরি করিয়া। ওর প্রথম হুকুমটা অমান্য করিয়া।
তাহার পর সন্ধ্যায় কিছু কেনাকাটা করিয়া, রাত্রি সাড়ে দশটা পর্যন্ত সব গোছ-গাছ করিয়া, এদের বলিয়া কহিয়া রাখিয়া পরদিন ভোরেই আসিয়া উপস্থিত হইলাম।