কমললতা

কমললতা উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত ১৩৬৯ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ মাসে। প্রকাশক শ্যামাপদ সরকার; কামিনী প্রকাশালয়, ১১৫, অখিল মিস্ত্রি লের, কলিকাতা-৭০০০০৯। প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন পার্থপ্রতিম বিশ্বাস। মুদ্রক শ্রীমথুর মোহন গাঁতাইত, কামিনী প্রিণ্টার্স, ১২, যতীন্দ্রমোহন এভিনিউ, কলিকাতা-৭০০০০৬। উপন্যাসটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৌলিক রচনা নয়; লেখকের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস শ্রীকান্তের চতুর্থ পর্বের পঞ্চম পরিচ্ছেদ থেকে চতুর্দশ পরিচ্ছেদ, অর্থাৎ শ্রীকান্ত, চতুর্থ পর্বের শেষ দশ পরিচ্ছেদ নিয়ে কমললতা উপন্যাসটি গ্রন্থিত হয়েছে।

কমললতা উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে কমললতা নামে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছিল। পরিচালনা করেছিলেন হরিসাধন দাসগুপ্ত। চলচ্চিত্রটি ১৯৬৯ সালে চারুচিত্র ব্যানারে মুক্তি পেয়েছিল। এর সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন রবিন চট্টোপাধ্যায়। এই চলচ্চিত্রটির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, তরুণ কুমার, পাহাড়ী সান্ন্যাল প্রমুখ।

কমললতা ছিলেন একজন বৈষ্ণবী, দ্বারিকা দেভোর আখড়ায় বাস করতেন এবং শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতেন। গহর মিঞাঁ একজন মুসলিম যুবক, গীতিকবি, গায়ক ও সাধক। তিনি শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে ভক্তিমূলক গান লিখতেন। তিনি আখড়ায় আসতেন এবং দ্বারিকার সঙ্গে তার লেখা গান নিয়ে আলোচনা করতেন। কমললতা এবং তিনি ভাল বন্ধু হয়েছিলেন এবং গহর কমললতার প্রেমে পড়েছিলেন। এই সময়ে গহরের বাল্যবন্ধু শ্রীকান্ত আখড়ায় থাকতে এসেছিলেন। কমললতা তার জন্য রান্নার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কমললতা শ্রীকান্তের প্রেমে পড়েন। একদিন তিনি শ্রীকান্তকে প্রস্তাব দেন এবং তাকে তার গল্প বলেন যে তিনি একজন জমিদারের মেয়ে। শৈশবে, তিনি একজন ব্যক্তির সাথে বিয়ে করেন তাঁর নামও ছিল শ্রীকান্ত যিনি মারা যান এবং কমললতা কলকাতায় বিধবার জীবনযাপন শুরু করেন। তিনি একটি ম্যানেজারের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন এবং ঘটনাক্রমে কমললতা গর্ভবতী হন। ম্যানেজার তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন এবং ঊষাঙ্গিনী তার নাম পরিবর্তন করে কমললতা রাখেন। এরপর শ্রীকান্ত কলকাতার উদ্দেশে রওনা হন। কমললতাকে গহরের সাথে সম্পর্ক থাকার জন্য দোষারোপ করা হয় এবং আখড়া থেকে দূরে পাঠানো হয়। শ্রীকান্ত ফিরে এসে সবকিছু জানতে পারে। তিনি কমললতাকে সঙ্গে নিতে চেয়েছিল কিন্তু কমললতা রাজি হন নি এবং বৃন্দাবনে চলে গিয়েছিলেন।