আবূ উমামাহ্ বর্ণিত হাদীসের প্রত্যেকটি (৪৯টি) অংশের সমর্থনে বর্ণিত বিভিন্ন শাহিদ হাদীসসমূহ। এ অধ্যায়ে আবূ উমামাহ্ বর্ণিত হাদীসের প্রতিটি অংশকে এক একটি অনুচ্ছেদ হিসেবে পৃথক করে তার সমর্থনে বর্ণিত হাদীস সহ ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করা হবে।[১]

(আবূ উমামাহ্ বর্ণিত হাদীসের সানাদ যদিও দুর্বল) কিন্তু হাদীসটি সহীহ পর্যায়ের। হাদীসের অংশগুলো পৃথক পৃথকভাবে বহু হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। অবশ্য কিছু অংশ বাদে, যার শাহিদ বর্ণনা অথবা শক্তিশালী করার মতো কিছু আমি পাইনি, যেমন এর বর্ণনা অচিরেই আসছে। পাঠকদের সহজে বুঝার জন্য এর ব্যাখ্যা ও তাখরীজ আমি যথাস্থানে ধারাবাহিকভাবে ক্রমিক নম্বরসহ উল্লেখ করবো। সুতরাং আমি বলব:

অনুচ্ছেদ ১

এ অংশের অনেকগুলো হাদীস রয়েছে:

প্রথম: হিশাম ইবনু ‘আমির হতে মারফূভাবে বর্ণিত এ শব্দে:

ما بين خلق آدم إلى قيام الساعة خلق أكبر من الدجال (وفي رواية: فتنة أكبر من فتنة الدجال)

“আদম সৃষ্টি হতে ক়িয়ামাত ক়ায়িম হওয়া পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দাজ্জালের চেয়ে অধিক ভয়ানক সৃষ্টি আর নেই। (অন্য বর্ণনায় রয়েছে: অধিক বড় ফিতনা আর নেই)।”

মুসলিম (৮/২০৭), হাকিম (৪/৫২৮), আহমাদ (৪/২০১২১)। এর অন্য বর্ণনার একটি হচ্ছে হাকিমের বর্ণনা, তাতে অতিরিক্ত রয়েছে:

“আল্লাহ নিকট।” হাকিম বলেন: বুখারীর শর্তে সহীহ। তবে বুখারী এটি বর্ণনা করেননি। তিনি যেরূপ বলেছেন। সম্ভবত তার শব্দের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। অন্যথায় মুসলিম এটি বর্ণনা করেছেন, যেমন আমি উল্লেখ করেছি। এছাড়া আদ-দানী (১৭৬/২, ১৭৭/১) এবং তিনি বৃদ্ধি করেছেন:

(قد أكل الطعام ومشى في الأسواق)

“যে খাদ্য খাবে এবং বাজারে চলাফেরা করবে।”

দ্বিতীয়: ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্‌ফাল হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

(ما أهبط الله تعالى إلى الأرض – منذ خلق آدم إلى أن تقوم الساعة – فتنة أعظم من فتنة الدجال وقد قلت فيه قولا لم يقله أحد قبلي: إنه آدم جعد ممسوح عين اليسار على عينه ظفرة غليظة وإنه يبرئ الأكمه والأبرص ويقول: أنا ربكم . فمن قال: ربي الله فلا فتنة عليه ومن قال: أنت ربي . فقد افتتن يلبث فيكم ما شاء الله ثم ينزل عيسى ابن مريم مصدقا بمحمد صلى الله عليه و سلم على ملته إماما مهديا وحكها عدلا فيقتل الدجال) فكان الحسن يقول: ونرى ذلك عند الساعة

“মহান আল্লাহ আদমকে (আ.) সৃষ্টি থেকে ক়িয়ামাত পর্যন্ত দাজ্জালের চাইতে অধিক বড় ফিতনা অবতীর্ণ করেননি। আর আমি দাজ্জাল সম্পর্কে এমন কথা বলেছি যা আমার পূর্বে কেউ বলেননি। সে হবে কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট লোক। তার বাম চোখ এমনভাবে মিশানো হবে যে, এর উপর মোটা চামড়ায় ঢাকা হবে। সে অন্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে আরোগ্য করবে। সে বলবে: আমি তোমাদের রব্ব। জবাবে যে ব্যক্তি বলবে, আমার রব্ব হচ্ছেন আল্লাহ, তার উপর কোন ফিতনা নেই। আর যে ব্যক্তি বলবে, তুমিই আমার রব্ব, সে তো ফিতনায় পতিত হলো। আল্লাহ যতদিন চাইবেন দাজ্জাল তোমাদের মাঝে অবস্থান করবে। অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম অবতরণ করবেন মুহাম্মাদ (সা.)-কে সত্যায়নকারী হিসেবে তাঁরই মিল্লাতের একজন হিদায়াতপ্রাপ্ত ইমাম ও ন্যায়পরায়ন শাসকরূপে। অতঃপর তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন।”

হাসান বলতেন: আমরা তা প্রত্যক্ষ করব ক়িয়ামাতের সন্নিকটে।

হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তাবারানী ‘কাবীর’ ও ‘আওসাত’ গ্রন্থে এবং এর রিজাল সিক়াত। এর কতিপয়ের বৈপরিত্যে কোন সমস্যা নেই। যেমন বলেছেন “মাজমাউয যাওয়ায়িদ” গ্রন্থে (৭/৩৩৬)।

আর চোখের বাক্যটির শাহিদ বর্ণনা রয়েছে আনাস বর্ণিত হাদীসে এ শব্দে:

(إن الدجال أعور العين الشمال عليها ظفرة غليظة مكتوب بين عينيه: كافر )

“দাজ্জালের বাম চোখ হবে কানা। তার চোখের উপর মোটা চামড়ায় ঢাকা হবে। তার দুই চোখের মধ্যবর্তী স্থানে লিখা থাকবে: কাফির।” আহমাদ (৩/১১৫, ২০১) সহীহ সানাদে।

তৃতীয়: হুযাইফাহ হতে। তিনি বলেন:

ذكر الدجال عند رسول الله صلى الله عليه و سلم فقال: (لأنا لفتنة بعضكم أخوف عندي من فتنة الدجال ولن ينجو أحد مما قبلها إلا نجا منها وما صنعت فتنة منذ كانت الدنيا – صغيرة ولا كبيرة – إلا لفتنة الدجال)

‘একদা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট দাজ্জালের উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন: “অবশ্যই আমি তোমাদের পরষ্পরের ফিতনাকে দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও অধিক ভয় করি। যে ব্যক্তি পূর্ববর্তী ফিতনাসমূহ থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকেও নিরাপত্তা পাবে। দুনিয়ার সূচনা হতে ছোট বড় যত ফিতনা হয়েছে তা দাজ্জালের ফিতনার জন্যই সংঘটিত হয়েছে।”

আহমাদ (৫/৩৮৯), ইবনু হিব্বান (১৮৯৭)।[২]

আমি বলি: এর সানাদ সহীহ এবং রিজাল সিব্বাত, বুখারী ও মুসলিমের রিজাল। আল্লামা হায়সামী বলেন (৭/৩৩৫): ‘হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ, বায্‌যার এবং এর রিজাল সহীহ।’

চতুর্থ: জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত, তার হাদীস সামনে আসবে।

অনুচ্ছেদ ২

এ অংশের সমর্থনে কয়েকটি হাদীস রয়েছে:

প্রথম: ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সা.) লোকদের মাঝে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। অতঃপর দাজ্জালের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন:

(إني لأنذركموه وما من نبي إلا وقد أنذره قومه [ لقد أنذره نوح قومه ] ولكني سأقول لكم فيه قولا لم يقله نبي لقومه: [ تعلموا ] أنه أعور وإن الله ليس بأعور)

“আমি তোমাদেরকে দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্ক করছি। এমন কোন নাবী নেই যিনি স্বীয় জাতিকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক না করেছেন। [নূহ (আ)] তাঁর কওমকে সতর্ক করেছেন। কিন্তু আমি শীঘ্রই তার ব্যাপারে এমন কথা বলবো যা অন্যান্য নাবী তার কওমকে বলেননি। তোমরা জেনে রাখ, সে হবে কানা। আর আল্লাহ কানা নন।”

‘আবদুর রাযযাক ‘মুসান্নাফ’ ( ১১/৩৯০/২০৮২০), এবং তার থেকে আহমাদ (২/১৪৯)।

(إن المسيح الدجال أعور العين اليمني كأن عينه عنبة طافية )

“নিশ্চয়ই মাসীহ দাজ্জালের ডান চোখ কানা। যেন তার চোখ জ্যোতিহীন; ফুলে উঠা আঙ্গুর সদৃশ।”

এটি বর্ণিত আছে সহীহাহ (হা/১৮৫৭)।

দ্বিতীয়: আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

( ما من نبي إلا وقد أنذر أمته الأعور الكذاب ألا إنه أعور وإن ربكم ليس بأعور مكتوب بين عينيه: ك ف ر [ يقرؤه كل مسلم ])

“এমন কোন নাবী নেই যিনি স্বীয় উম্মাতকে মিথ্যাবাদী কানা দাজ্জাল সম্পর্কে সাবধান না করেছেন। জেনে রাখ, সে হবে কানা, আর তোমাদের রব্ব কানা নন। তার দুই চোখের মাঝখানে লিখা থাকবে: কাফ, ফা, র। [যা প্রতিটি মুসলিম পড়তে পারবে]।”

বুখারী (১৩/৮৫), মুসলিম (৮/১৯৫), আবূ দাঊদ (২/২১৩), তিরমিযী (২২৪৬) তিনি একে সহীহ বলেছেন, আহমাদ (৩/১০৩, ১৭৩, ২৭৬, ২৯০), হাম্বাল (ক়াফ ৫১/২), ইবনু খুযাইমাহ্ ‘আত্-তাওহীদ’ (৩২ পৃ.), ইবনু মানদাহ (৯৭/১), অতিরিক্ত অংশটুকু মুসলিম, আহমাদ ও অন্যান্য। অন্য অনুচ্ছেদে আবূ সাঈদ আল-খুদরী হতে ‘মাজমাউয যাওয়ায়িদ’ (৭/৩৩৬-৩৩৭) এবং আসমা বিনতু ইয়াযীদ আনসারিয়্যাহ হতে, যা সামনে আসবে। এছাড়া ‘আয়িশাহ্ ও উম্মু সালামাহ্ হতে, যা সামনে আসছে।

অনুচ্ছেদ ৩

এ অংশটি পৃথকভাবে দুই বা ততোধিক হাদীসে এসেছে:

প্রথম: আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত।  তিনি বলেন:

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: (قلت: وذكر حديث فضل الصلاة في مسجده صلى الله عليه وسلم) (فإني آخر الأنبياء وإن مسجدي آخر المساجد)

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: (তিনি মাসজিদে নাব্ববীতে সলাত আদায়ের ফাযীলাতের কথা উল্লেখ করেন) “আমিই নাবীদের মধ্যে সর্বশেষ আর মাসজিদ সমূহের মধ্যে আমার এ মাসজিদ হলো সর্বশেষ মাসজিদ।”

মুসলিম (৪/১৩৫) এর অসংখ্য শাহিদ বর্ণনা রয়েছে। যেমন, একটি প্রসিদ্ধ হাদীস ‘আলী (রাযি.) সম্পর্কে: তুমি আমার কাছে মূসার নিকট হারূনের অবস্থানের মতো। তবে একথা ভিন্ন যে, আমার পরে কোন নাবী নেই!” এটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ, শাইখাইন ও অন্যান্যরা অনেকগুলো সূত্রে।

দ্বিতীয়: ইবনু ‘আব্বাস হতে বর্ণিত।  নাবী (সা.) বলেছেন:

(نحن آخر الأمم وأول من يحاسب يقال: أين الأمة الأمية ؟ فنحن الآخرون الأولون)

“উম্মাতসমূহের মধ্যে আমরাই সর্বশেষ উম্মাত। তবে আমাদের হিসাব হবে সবার আগে। বলা হবে: উম্মী উম্মাত কোথায়? আবির্ভাবে আমরাই সর্বশেষ। জান্নাতে প্রবেশে আমরাই সর্বাগ্রে।”

ইবনু মাজাহ (২/৫৭৫)।

আমি বলি: এর সানাদ সহীহ, যেমন আল্লামা বুসাইরী বলেছেন তার ‘আয-যাওয়ায়িদ’ গ্রন্থে (২৬৫/১)।

তৃতীয়: মু‘আবিয়্যাহ্ ইবনু হাইদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি:

(إنكم وفيتم سبعين أمة أنتم آخرها وأكرمها على الله عز و جل)

“তোমরা সত্তরটি উম্মাত পূর্ণ করেছ। তোমরাই হলে সর্বশেষ এবং মহান আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত (উম্মাত)।”

দারিমী (২/৩১৩), আহমাদ (৫/৩, ৫)।

আমি বলি: এর সানাদ হাসান। এটি রয়েছে মিশকাত (৬২৯৪)।

অনুচ্ছেদ ৪

এ অংশের সমর্থনে হুবহু শব্দে আমি হাদীস পাইনি। তবে এর কাছাকাছি পেয়েছি আবূ হুরাইরাহ বর্ণিত হাদীসে। তিনি বলেন: আমি সত্যবাদী ও সত্যায়িত আবূল কাসিমকে বলতে শুনেছি:

(يخرج أعور الدجال مسيح الضلالة قبل المشرق في زمن اختلاف الناس وفرقة فيبلغ ما شاء الله أن يبلغ من الأرض في أربعين يوما – الله أعلم ما مقدارها – فيلقى المؤمنون شدة شديدة ثم ينزل عيسى ابن مريم صلى الله عليه وسلم من السماء فيؤم الناس ( ۱ ) فإذا رفع رأسه من ركعته قال: سمع الله لمن حمده قتل الله المسيح الدجال وظهر المسلمون)

“পথভ্রষ্টকারী কানা মাসীহ দাজ্জাল বের হবে পূর্বদেশ থেকে মানুষের মতভেদ ও দলাদলির যুগে। আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী যে চল্লিশ দিনে পৃথিবীর যেখানে পৌঁছার পৌঁছবে। এর পরিমাণ সম্পর্কে আল্লাহই অধিক জ্ঞাত। তখন মু’মিনরা খুবই কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। অতঃপর ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন এবং লোকদের ইমামতি করবেন (নেতৃত্ব দিবেন)।[৩] তিনি যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাবেন তখন বলবেন: সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ। আল্লাহ মাসীহ দাজ্জালকে ধ্বংস করেছেন এবং মুসলিমদের বিজয়ী করেছেন।”

আল্লামা হায়সামী বলেন (৭/৩৪৯): হাদীসটি বর্ণনা করেছেন বাযযার। এর রিজাল সহীহ রিজাল। তবে ‘আলী ইবনুল মুনযিব সিক়াহ রাবী। আর হাফিয বলেন: (১৩/৮৫): এর সানাদ জাইয়্যিদ।’ দেখুন মাওয়ারিদুয যামআন (১৮৯৮)।

দাজ্জাল বের হওয়া সংক্রান্ত স্পষ্ট হাদীসাবলীর সংখ্যা প্রচুর। যার কিছু শীঘ্রই আসছে ইনশাআল্লাহ তা‘আলা। কিন্তু তাতে দৃঢ় অর্থবোধক শব্দ নেই, যেমন তার উক্তি: (لامحالة) অথবা (إنه لحق)। বরং দাজ্জাল সম্পর্কিত হাদীসসমূহের প্রত্যেকটি তার বের হওয়ার বিষয়টি জোরদার করেছে, তাকিদ দিয়েছে। আর নাবী (সা.)-এর হাদীসের প্রত্যেকটিই সত্য, হাক়। তিনি সবই সত্য বলেছেন চাই তা সীগায়ে তাকিদ (জোরালো শব্দে) বর্ণিত হোক বা না হোক। “তিনি (মুহাম্মাদ) নিজের পক্ষ হতে খেয়াল মতো কথা বলেন না, তার নিকট যা কিছু ওয়াহী করা হয় তিনি শুধু তা-ই বলেন।” (সূরাহ্ আল-নাজম: ৩, ৪ )

হ্যাঁ, আদ-দানী ‘আল-ফিতান’ গ্রন্থে (১৪১/১) হাসান হতে মুরসালভাবে ঈসা (আ) সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন:

(وإنه نازل لا محالة فإذا رأيتموه فاعرفوه …)

“তিনি অবশ্যই অবতরণ করবেন: তোমরা তাকে দেখেই চিনতে পারবে …।”

হাদীসটি আরো বর্ণনা করেছেন ইবনু হিব্বান (১৯০৪) সালিহ ইবনু ‘উমার হতে, ‘আসিম ইবনু কুলাইব থেকে তার পিতার মাধ্যমে আবূ হুরাইরাহ সূত্রে। তবে তাতে এ কথাটি নেই: “আমি শপথ করে বলছি, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন …।”

এর সানাদ সহীহ।

আর ক্রোধান্বিত হওয়ার বাক্যটি রয়েছে মুসলিম (৮/১৯৪), ইবনু হিব্বান (৬৭৫৫), আহমাদ (৫/২৮৪)।

সূত্রনির্দেশ ও টীকা

  1. অনুবাদক
  2. তার শব্দ হলো : (إنها ليست من فتنة صغيرة  ولا كبيرة إلا تتضع لفتنة الدجال ) وزاد : ( مكتوب بين عينيه : كافو) — “ছোট বড় কোন ফিতনাই দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে ভয়ঙ্কর নয়।” এবং তিনি বৃদ্ধি করেছেন : “তার দুই চোখের মাঝখানে লিখা থাকবে : কাফির।” — মুসিলম (৮/১৯৫) এবং আহমাদ (৫/৩৮৬) বৃদ্ধি করেছেন : “শিক্ষিত ও অশিক্ষিত প্রতিটি মু’মিন তা পড়তে পারবে।” এ অতিরিক্ত অংশটুকু রয়েছে হাম্বালে (৫১/১) তার থেকে ভিন্ন সানাদে, এবং বুখারী (১৩/৮০-৮১ ফাতহুল বারী) শব্দাবলী তার, এবং মুসলিম (৮/১৯৩) উভয় অতিরিক্ত অংশ তার, অনুরূপ তিরমিযী (২২৩৬), আবূ দাউদ (৪৭৫৭), ইবনু মানদাহ ‘ঈমান’ (৯৬/২) সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ হতে, এবং খতীব (তারীখ (৭/১৮৩-১৮৪)। অন্য বর্ণনায় আহমাদ (২/১৩৫) ও ইবনু মানদাহ (৯৭/১) গ্রন্থে মুহাম্মাদ ইবনু যায়িদ আবূ ‘উমার বিন মুহাম্মাদ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন : ‘আবদুল্লাহ বলেছেন : অতঃপর অনুরূপ উল্লেখ করেন এ শব্দে : (ما بعث الله من نبي إلا قد أنذره أمته لقد أنذره نوح صلى الله عليه وسلم أمته والنبيون عليهم الصلاة والسلام من بعده ألا ما خفي عليكم من شأنه فلا يخفين عليكم أن ربكم ليس بأعور ألا ما خفي عليكم من شأنه فلا يخفين عليكم أن ربكم ليس بأعور ) — “আল্লাহ যত নাবী পাঠিয়েছেন প্রত্যেকেই স্বীয় উম্মাতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন। নূহ (আ.) তাঁর উম্মাতকে দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন এবং তার পরবর্তী নাবীগণও (আ.)। সাবধান! দাজ্জালের বিষয় তোমাদের কাছে গোপন নয়। আর তোমাদের কাছে গোপন নয় যে, তোমাদের রব কানা নন। দাজ্জালের বিষয় তোমাদের কাছে গোপন নয়। আর তোমাদের কাছে গোপন নয় যে, তোমাদের রব কানা নন।”
    আমি বলি : এর সানাদ বুখারী ও মুসলিমের শর্তে সহীহ। হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইবনু হিব্বান (১৮৯৬), ইবনু মানদাহ আত্‌-তাওহীদ (৮২/২) তৃতীয় আরেকটি সানাদে তার সূত্রে অনুরূপ এবং তিনি বৃদ্ধি করেছেন; “তার দুই চোখের মাঝে লেখা থাকবে : কাফির। যা প্রত্যেক শিক্ষিত ও অশিক্ষিত মু’মিন পড়তে পারবে।” এর সানাদ সহীহ। এবং বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন নাফি‘ হতে ইবনু ‘উমার সূত্রে একটি দীর্ঘ হাদীসে। তাতে রয়েছে : (إن المسيح الدجال أعور العين اليمني كأن عينه عينه طافية) — “নিশ্চয়ই মাসীহ দাজ্জালের ডান চোখ কানা। যেন তার চোখ জ্যোতিহীন; ফুলে উঠা আঙুর সদৃশ।” এটি বর্ণিত আছে সহীহাহ (হা/১৮৫৭)।
  3. অর্থাৎ বাইতুল মাকদিসে। আর দামিস্কে তাঁর প্রথম অবতরণ হবে। সেখানে তিনি মাহদীর ইকতিদা করবেন। বর্ণনাকারী শপথ করে বলেন, নিশ্চয় সত্যবাদী ও সত্যায়িত আবূল কাসিম বলেছেন : (إنه لحق وإما إنه قريب فكل ما هو آت قريب) — “এটা অবশ্যই ঘটবে, হয়তো তা শীঘ্রই ঘটবে, আর প্রত্যেক আগত জিনিসই নিকটবর্তী (অচিরেই সংঘটিত হবে)।”